নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মাঝে মাঝে মনে হয় জীবনটা অন্যরকম হবার কথা ছিল!

শেরজা তপন

অনেক সুখের গল্প হল-এবার কিছু কষ্টের কথা শুনি...

শেরজা তপন › বিস্তারিত পোস্টঃ

গান্ধীজীর দেশে ফেরা

১৬ ই এপ্রিল, ২০২৩ রাত ৮:৫০


শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে, ইতিহাস কখনও বিপরীত মেরুর দুই নক্ষত্রকে বিশ্ব মঞ্চে একত্রিত করার বিষয়ে কৃপণতা করেনি। তবুও, প্রাক-দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ইতালিতে, একটি অদ্ভুত জুটি কিছু সময়ের জন্য বিপরীত মেরুর দুই মহারথী একত্রিত হয়েছিলেন- যা সারা বিশ্বব্যাপী আলোড়ন তুলেছিল। যখন তপস্বী, ভারতীয় স্বাধীনতা, অহিংস নাগরিক অবাধ্য নেতা মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী ১৯৩১ সালের ডিসেম্বরে রোমে যুদ্ধবাজ, ইতালীয় ফ্যাসিবাদী একনায়ক বেনিটো মুসোলিনির সাথে দেখা করেছিলেন।
১৯২০ এবং ১৯৩০ এর দশকে, মুসোলিনি গণনা করার মতো একজন ব্যক্তি ছিলেন। চার্চিল এবং জর্জ বার্নার্ড শ, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং মহাত্মা গান্ধীর মতো বিখ্যাত মানুষ তাঁর প্রশংসা করেছিলেন। দুই মহৎ এবং বিশ্বস্ত আত্মা যাদেরকে মুসোলিনি ইতালিতে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন, তাদের প্রতি তার সর্বোত্তম ব্যবহার বা আচরণ করে বাধ্য করত তার কৃতিত্বের প্রশংসা করতে।

সুভাষ চন্দ্র বসু ১৯৪১-১৯৪৩ সালে মুসোলিনির বন্ধু হয়েছিলেন। ১৯৪১ সালের জানুয়ারিতে কলকাতা থেকে পালিয়ে যাওয়ার পর তিনি যখন কাবুলে পৌঁছান, তখন তিনি কাবুল থেকে বার্লিন পর্যন্ত যাত্রার জন্য একটি ইতালীয় নাম ধরেছিলেন - অরল্যান্ডো ম্যাজোটা।

১৯৩১ সালের ডিসেম্বরে লন্ডনে দ্বিতীয় গোলটেবিল সম্মেলনে যোগদানের পর ভারতে ফেরার পথে মহাত্মা গান্ধী এক সপ্তাহের জন্য জেনেভায় ছিলেন। তিনি রমা রঁলার সাথে প্রতিদিন কয়েক ঘণ্টা আলোচনা করতেন, যার মহাত্মার সংক্ষিপ্ত জীবনী (১৯২৪ সালে প্রকাশিত) ইউরোপে গান্ধীর খ্যাতি বাড়িয়েছিল। এই কথা গান্ধী নিজেই স্বীকার করেছিলেন।

৮ ডিসেম্বর, গান্ধী রঁলাকে মুসোলিনির সাথে দেখা করতে রোমে যাওয়ার ইচ্ছার কথা জানান। রমা রঁলা গান্ধীকে নিরুৎসাহিত করার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করেছিলেন। "আপনাকে বিচ্ছিন্ন করে বন্ধ করে দেওয়া হবে। আপনার চারপাশের সবাই ফ্যাসিস্ট হবে, এমনকি বিদেশী সাংবাদিকরাও।" রমা রঁলা গান্ধীকে ১৯২৬ সালে ঠাকুরের সফরের কথা মনে করিয়ে দেন-যে সেই সফরে মুসোলিনির প্রশংসা করার জন্য রবীন্দ্রনাথকে, চাটুকার ও ফ্যাসিষ্ট উপাধী দেয়া হয়েছিল। গান্ধী রমা রঁলার সতর্কবাণী উপেক্ষা করে মুসোলিনির সাথে সাক্ষাৎ করার ব্যাপারে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ থাকেন।
গান্ধী মিলান থেকে একটি বিশেষ ট্রেনে ভ্রমণ করেছিলেন (যেখানে বিশাল জনতা তার আগমনে উল্লাস করেছিল)। রোমে তিনি রোল্যান্ডের এক বন্ধু জেনারেল মরিস মন্টের সাথে থাকতেন। মুসোলিনি ২০ মিনিটের জন্য তার সাথে দেখা করেছিলেন। তিনি তার প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং মনোযোগী ছিলেন, ভারত সম্পর্কে প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেছিলেন।
তবে এই সাক্ষাতের পরে তার সমস্ত বিবৃতি, বক্তৃতা সংবাদপত্রে নোংরাভাবে প্রচার করা হয়েছিল, ইচ্ছাকৃত-ভাবে ফ্যাসিস্টপন্থী দেখানো হয়েছিল। গান্ধী- তার উপর চালানো কৌশল সম্পর্কে অবগত ছিলেন না। তাঁর সমস্ত বক্তৃতা থেকে "অহিংসা" শব্দটি বাদ দেওয়া হয়েছিল। সহজ কথায়, ঠাকুরকে যেভাবে অপদস্থ করা হয়েছিল তার ব্যাপারে তেমনি পন্থা ব্যাবহার করেছিল ইউরোপীয় মিডিয়া ও বুদ্ধিজীবী মহল। বহুল পঠিত Giornale D' Italia-এ মহাত্মার একটি জাল সাক্ষাৎকার প্রকাশিত হয়েছিল।
গান্ধী, ২০শে ডিসেম্বর ১৯৩১ তারিখে রমা রঁলাকে মুসোলিনি সম্পর্কে প্রশংসাসূচক ভাষায় লিখেছেন: “মুসোলিনি আমার কাছে একটি রহস্য। তার করা অনেক সংস্কার আমাকে আকৃষ্ট করেছে। তিনি কৃষকদের জন্য অনেক কিছু করেছেন বলে মনে হয়… আমাকে যা আঘাত করে তা হল মুসোলিনির নির্মমতার পিছনে মানুষের সেবা করার উদ্দেশ্য। এমনকি তার চাতুর্যময় দুর্দান্ত বক্তৃতার পিছনেও তার জনগণের আন্তরিকতা এবং ভালবাসার বলয় রয়েছে। এটাও আমার কাছে মনে হয় যে বেশিরভাগ 'ইতালীয়রা মুসোলিনির লোহার শাসন পছন্দ করে...'

মহাত্মা গান্ধী কখনই কোন মানুষের মধ্যে মন্দকে দায়ী করেননি, কিন্তু তাঁর সাধুতা ও পবিত্রতা তাঁকে একাধিকবার ভুল পথে যেতে বাধ্য করেছিল।
*****
উপোরোক্ত নিবন্ধটা একটা ইতিহাস যা অনেকেই জানেন। কিন্তু ইতালি সফর শেষে তিনি স্বদেশে জাহাজে ফিরে আসার সময়ে বেশ চমকপ্রদ একটা ঘটনা ঘটে। কোন ইতিহাসেই সেটা উল্লেখ নেই- অবশ্য থাকবার কথাও নয়। শুধু বাংলাভাষার সর্বকালের সেরা রম্য রচয়িতা সৈয়দ মুজতবা আলী সেই জাহাজের এক স্টুয়ার্টের জবানীতে আকর্ষনীয় রম্য ঢঙ্গে সেই গল্পটুকু পাঠকদের জন্য তুলে না ধরত তবে সেটা চিরকাল সবার অগোচরেই থেকে যেত।

গান্ধীজীর দেশে ফেরা; সাল ১৩৬৩ ৷ ~সৈয়দ মুজতবা আলী
১৯৩২ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে ইতালি থেকে জাহাজে ফিরছিলাম ; ঝকঝকে চকচকে নতেন জাহাজ, তিলটি পড়লে কুড়িয়ে তোলা যায়। যাত্রী পালের সুখে-সুবিধার তদারক করনেওয়ালা স্টয়ার্ডের সঙ্গে আমার বেশ ভাব হয়ে গিয়েছিল। তাকে বললাম, “এরকম সাফফা জাহাজ কখনো দেখিনি।”

সে বিশেষ উৎসাহ না দেখিয়ে বললে, “হবে না! নতুন জাহাজ। তার উপর এই কিছুদিন আগে তোমাদের মহাত্মা গান্ধী এই জাহাজে দেশে ফিরেছেন।”

আমার অদ্ভুত লাগল। মহাত্মাজী শরীর খুব পরিষ্কার রাখেন জানি, কাপড়-চোপড়, বাড়ি-ঘর-দোরও, কিন্তু এত বড় জাহাজখানাও কি তিনি মেজে ঘষে—? বললাম, “সে কি কথা ?”
স্টুয়ার্ড' বলল — “মশায়, সে এক মস্ত ইতিহাস । এ যাত্রায় খুব বেঁচে গেছি। ইংরেজ যদি ঘন ঘন গোলটেবিল বৈঠক বসায়, আর তোমাদের ঐ গান্ধী যদি নিত্যি নিত্যি এই জাহাজে যাওয়া আসা আরম্ভ করেন, তবে আর বেশী দিন বাঁচতে হবে না।”

আমি বললাম – “তোমার কথাগুলো নতুন ঠেকছে। গান্ধীজী তো কাউকে কখনো জ্বালাতন করেন না।”
স্টুয়ার্ড বলল – “আজব কথা কইছেন স্যার ; কে বললে গান্ধী জ্বালাতন করেন ? কোথায় তিনি, আর কোথায় আমি।
ব্যাপারটা হল; নন- ইতালির বন্দরে জাহাজ বাঁধা। দিব্যি খাচ্ছি-দাচ্ছি-ঘুমোচ্ছি, কাজকর্ম চুকে গেছে, এমন সময় বলা নেই, কওয়া নেই, শুনতে পেলাম কাপ্তেন সাহেব পাগল হয়ে গেছেন ৷ ছুটে গেলাম খবর নিতে। গিয়ে দিখি তিনি দু’হাত দিয়ে মাথার চুল ছিঁড়ছেন আর সাতান্নবার করে একই টেলিগ্রাম পড়ছেন ! খবর সবাই জেনে গেছে ততক্ষণে। মুসোলীনি (ইল,দুচে) টেলিগ্রাম করেছেন, মহাত্মা গান্ধী এই জাহাজে করে দেশে ফিরছেন। বন্দোবস্তের যেন কোনো ত্রুটি না হয়৷

তারপর যা কাণ্ড শুরু হল, সে ভাবলেও গায়ে কাঁটা দেয়। গোটা জাহাজ- খানাকে চেপে ধরে ঝাড়ামোছা, ধোওয়া-মাজা, মালিশ-পালিশ যা আরম্ভ হল তা দেখে মনে হল ক্ষয়ে গিয়ে জাহাজাখানা কর্পুর হয়ে উবে যাবে। কাপ্তেনের খাওয়া নেই, নাওয়া নেই ৷ যেখানে যাও, সেখানেই তিনি তদারক করছেন । দেখছেন, শুনেছেন, শুকছেন, চাখছেন, আর সবাইকে কানে কানে বলছেন, 'গোপনীয় খবর, নিতান্ত তোমাকেই আপনজন জেনে বলছি, মহাত্মা গান্ধী আমাদের জাহাজে করে দেশে ফিরছেন।' এই যে আমি, নগণ্য স্টয়ার্ড', আমাকেও নিদেনপক্ষে বাহান্নবার বলেছেন ঐ খবরটা যদিও ততদিন সব খবরের কাগজে বেরিয়ে গেছে গান্ধীজী এই জাহাজে যাচ্ছেন ; কিন্তু কাপ্তেনের কি আর খবরের কাগজ পড়ার ফুরসত আছে ?
আমাদের ফার্স্ট ক্লাসের শোঁখিন কেবিন-(কাবিন দ্য ল্যুক্স যেটা ইংরেজীতে ডিলাক্স কেবিন হয়েছে বলে ধারনা ) গুলো দেখেছেন? সেগুলো ভাড়া নেবার মত যক্ষের ধন আছে শুধু, রাজা- মহারাজাদের আর মার্কিন কারবারীদের। সেবারে যারা ভাড়া নিয়েছিল তাদের টেলিগ্রাম(তার) করে দেওয়া হল, 'তোমাদের যাওয়া হবে না, গান্ধীজী যাচ্ছেন। অর্ধেক জাহাজ গান্ধীজীর জন্য রিজার্ভ - পল্টনের একটা দল যাবার মত জায়গা তাতে আছে।
শৌখিন কেবিনের আসবাবপত্র দেখেছেন কখনো? সোনার গিল্টি রূপোর পাতে মোড়া সব। দেয়ালে দামী সিঙ্ক, মেঝেতে ঘন সবুজে রঙের রাবার আর ইরানি গালিচা ছ ইঞ্চি পুরু, পা দিলে পা দেবে যায় ! সেগুলো পর্যন্ত সরিয়ে ফেলা হল । মুসোলিনী ভেনিসীয়-রাজপ্রাসাদ (পালাদাসো ভেনেদ,সিয়া) থেকে চেয়ার-টেবিল, খাটপালঙ্ক পাঠিয়েছেন। আর সে খাট, মশয়, এমন তার সাইজ; ফুটবলের বি টীমের খেলা তার উপরে চলে। কেবিনের ছোট দরজা দিয়ে ঢোকে কি করে। আন, মিস্ত্রী- ডাক, কারিগর- খোল, কবজা, ঢোকাও খাট। সে এক হৈ হৈ ব্যাপার—মার-মার কাণ্ড।!
খাবারদাবার আর বাদবাকী যা সব মালমশলা যোগাড় হল, সে না হয় আরেক হপ্তা ধরে শুনে নেবেন ।

সব তৈরী। ফিটফাট। ওই যে বললেন, তিলটি পড়লে কুড়িয়ে তোলা যায়, ছুঁচটি পড়লে মনে হয় হাতী শুয়ে আছে ।
গান্ধীজী যেদিন আসবেন সেদিন কাগ-কোকিল ডাকার আগে থেকেই কাপ্তেন সিঁড়ির কাছে ঠায় দাঁড়িয়ে, পিছনে সেকেন্ড অফিসার, তার পিছনে আর সব বড়কর্তারা, তার পিছনে বড় স্টুয়ার্ড', তার পিছনে লাইব্রেরিয়ান, তার পিছনে শেফ দ্য কুইজিন (পাচকদের সর্দার ), তার পিছনে ব্যাণ্ড বাদ্যির বড়কর্তা, তার পিছনে—এক কথায় শুনে নিন, গোটা জাহাজের বেবাক কর্মচারী। আমি যে নগণ্য স্টুয়ার্ড', আমার উপর কড়া হুকুম, নট নড়ন-চড়ন- নট-কিচ্ছা। বড় স্টুয়ার্ডের কাছে যেন আমি চব্বিশ ঘণ্টা থাকি। আমার দোষ ? দু-চারটে হিন্দী কথা বলতে পারি। যদি গান্ধীজী হিন্দী বলেন, আমাকে তর্জমা করতে হবে। আমি তো বলির পাঁঠার মত কাঁপছি ।

গান্ধীজী এলেন। মুখে হাসি, চোখে হাসি। ‘এদিকে সার, এদিকে সার' বলে কাপ্তেন নিয়ে চললেন গান্ধীজীকে তাঁর ঘর— কেবিন দেখাতে। পিছনে আমরা সবাই মিছিল করে চলেছি। কেবিন দেখানো হল,—এটা আপনার বসবার ঘর, এটা আপনার সঙ্গে যাঁরা দেখা করতে আসবেন তাঁদের অপেক্ষা করার ঘর, এটা আপনার পড়ার, চিঠিপত্র লেখার ঘর, এটা আপনার উপাসনার ঘর, এটা আপনার খাবার ঘর- যদি বড় খাস কামরায় যেতে না চান, এটা আপনার শোবার ঘর, এটা আপনার কাপড় ছাড়ার ঘর, এটা আপনার গোসলখানা, এটা চাকরবাকরদের ঘর । আর এ অধম তো আছেই—আপনি আমার অতিথি নন, আপনি রাজা ইমানুয়েল ও ইল দু’চের(মুসোলিনি) অতিথি ৷ অধম, রাজা আর দু’চের সেবক।'

গান্ধীজী তো অনেকক্ষণ ধরে ধন্যবাদ দিলেন। তারপর বললেন, 'কাপ্তেন সায়েব, আপনার জাহাজখানা ভারী সুন্দর। কেবিনগুলো তো দেখলাম ; বাকী গোটা জাহাজটা দেখারও আমার বাসনা হয়েছে। তাতে কোন আপত্তি—?'
কাপ্তেন সায়েব তো আহলাদে আটখানা, গলে জল। গান্ধীজীর মত লোক যে তাঁর জাহাজ দেখতে চাইবেন এ তিনি আশাই করতে পারেন নি।
‘চলুন চলুন' বলে তো সব দেখাতে শহর করলেন। গান্ধীজী এটা দেখলেন, ওটা দেখলেন, সব কিছ, দেখলেন। ভারী খুশী। তারপর গেলেন এঞ্জিন-ঘরে ৷ জানেন তো সেখানে কি অসহ্য গরম। যে-বেচারীরা সেখানে খাটে তাদের ঘেমে ঘেমে যে কি অবস্থা হয় কল্পনা করতে পারবেন না। আপনি গেছেন কখনো ?
আমি বললাম, “না।”
গান্ধীজী তাদের দিকে তাকিয়ে অনেকক্ষণ গুম, হয়ে দাঁড়িয়ে রইলেন । কাপ্তেনের মুখেও হাসি নেই। আমাদের কাপ্তেনটির বড় নরম হৃদয় ; বুঝতে পারলেন গান্ধীজীর কোথায় বেজেছে।
খানিকক্ষণ পরে গান্ধীজী নিজেই বললেন, 'চলন কাপ্তেন।' তখন তিনি তাঁকে বাকী সব দেখালেন । সেখানে কাঠফাটা রোদ-সব শেষে নিয়ে গেলেন খোলা ডেকের ওপর। কাপ্তেন বললেন, 'এখানে বেশীক্ষণ দাঁড়াবেন না, স্যার। সর্দি গর্মি' হতে পারে।'
গান্ধীজী বললেন, 'কাপ্তেন সায়েব, এ জায়গাটি আমার বড় পছন্দ হয়েছে। আপনার যদি আপত্তি না থাকে তবে এখানে একটা তাঁবু খাটিয়ে দিন, আমি তাতেই থাকবো । কাপ্তেনের চক্ষু স্থির। অনেক বোঝালেন, পড়ালেন । গান্ধীজী শখ, বলেন, 'অবিশ্যি আ-প-না-র যদি কোন আপত্তি না থাকে।' কাপ্তেন কি করেন । তাঁব, এল, খাটানো হল। গান্ধী সেই খোলা ছাদের তাঁরাতে ঝাড়া বারোটা দিন কাটালেন।
কাপ্তেন শয্যাগ্রহণ করলেন। জাহাজের ডাক্তারকে ডেকে বললেন, “তোমার হাতে আমার প্রাণ। গান্ধীজীকে কোনো রকমে জ্যান্ত অবস্থায় বোম্বাই পৌঁছিয়ে দাও। তোমাকে তিন ডবল প্রমোশন দেব।”
আমি অবাক হয়ে শুধালাম, – “সব বন্দোবস্ত ?”
স্টুয়ার্ড হাতের তেলো উঁচিয়ে বললো, “পড়ে রইল। গান্ধীজী খেলেন তো বকরীর দুধ আর পেঁয়াজের স্যুপ। কোথায় বড় বাবুর্চি, আর কোথায় গাওনা-বাজনা। সব ভণ্ডুল। গান্ধীজী শুধু, রোজ সকালবেলা একবার নেমে আসতেন আর জাহাজের সবচেয়ে বড় ঘরে উপাসনা করতেন। তখন সেখানে সকলের অবাধ গতি—কেবিন-বয় পর্যন্ত।
কাপ্তেনের সব দুঃখ জল হয়ে গেল বোম্বাই পৌঁছে। গান্ধীজী তাঁকে সই করা একখানা ফোটো দিলেন। তখন আর কাপ্তেনকে পায় কে? আপনার সঙ্গে তাঁর বুঝি আলাপ হয়নি? পরিচয় হওয়ার আড়াই সেকেণ্ডের ভিতর আপনাকে যদি সেই ছবি উনি না দেখান তবে আমি এখান থেকে ইতালি অবধি নাকে খত দিতে রাজী আছি। হিসেব করে দেখা গেছে ইতালির শতকরা ৮৪.২৭১৯ জন লোক সে ছবি দেখেছে।”

স্টুয়ার্ড কতটা লবণ লঙ্কা গল্পে লাগিয়েছিল জানি নে ; তবে এই কথাগুলো ঠিক যে—গান্ধীজী ঐ জাহাজেই দেশে ফিরেছিলেন। ‘পালাদ সো ভেনেদাসিয়া’ থেকে আসবাব এসেছিল, গান্ধীজী এঞ্জিনরুমে গিয়েছিলেন, জাহাজের দিনগুলো কাটিয়েছিলেন তাঁবুতে, আর নীচে নাবতেন উপাসনার সময়ে। অন্য লোকের মুখেও শুনেছি৷
তথ্য সংযোজন ও অনুলেখনঃ শেরজা তপন

লেখাসুত্রঃ
বড়বাবু- সৈয়স মুজতবা আলী
sundayguardian; mussolini used tagore gandhi
The florentine; mahatma Gandhi Italian visit mussolini

মন্তব্য ৩০ টি রেটিং +১২/-০

মন্তব্য (৩০) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই এপ্রিল, ২০২৩ রাত ৯:১৪

নিবর্হণ নির্ঘোষ বলেছেন: অজানা একটি বিষয়কে জানলাম । ভালো লাগলো পোস্টটা পড়ে , ভালো থাকবেন যাপিত জীবনের দুঃসময়ে !!

১৬ ই এপ্রিল, ২০২৩ রাত ১১:০২

শেরজা তপন বলেছেন: আপনাকে পেয়ে দারুন প্রীত হলাম। একটা ইনফর্মেশন শেয়ার করার কথা ছিল- কিন্তু এখনো খুঁজে সেটা পাইনি। পেলে অবশ্যই শেয়ার করব।
সময়টা দুঃসময়ের কিনা ভাববার সময় পাচ্ছিনা :)
সুন্দর মন্তব্য ও পোস্টে ভাল লাগা জানানোর জন্য সবিশেষ ধন্যবাদ। ভাল থাকুন।

২| ১৬ ই এপ্রিল, ২০২৩ রাত ৯:৫১

স্মৃতিভুক বলেছেন: সৈয়দ মুজতবা আলী'র যে অফ হিউমার - খুব কম মানুষের তা থাকে। বর্ণনার আতিশয্য নেই, ভাঁড়ামি করে (পড়ুন লিখে) মানুষ হাসাতে চান না। ওনার সব বই (সফট কপি) আমার সংগ্রহে আছে। আইপ্যাডে সেভ করে রেখেছি, ভ্রমণে আমার সবসময়ের সঙ্গী ওনার বই। বার বার পড়েও আশ মেটে না।

ধন্যবাদ তপন, আপনার লেখা মানেই চমৎকার ইনফরমেটিভ কিছু একটা। এটাও তেমনি একটা পোস্ট।

১৬ ই এপ্রিল, ২০২৩ রাত ১১:০৮

শেরজা তপন বলেছেন: তাইতো বার বার আমার পোস্টে ঘুরে ফিরে আলী সাহেবকে টেনে আনি। তাঁর লেখা পড়ে কত কত কিছু যে জানবার আছে- আমি তাঁর লেখা পড়ি আর ভাবি ইনফর্মেশন আর টেকনোলজির শিখরে বাস করেও আমাদের জানার পরিধি কতই না সীমিত। এরপরে তিনি আসলে যা জানতেন তার এক দশমাংশও লিখে যাননি- বড়ই দুর্ভাগ্য।
কে যেন বলেছিল তিনিই একমাত্র বাংলা সাহিত্যিক যিনি রময় প্রবন্ধ লিখেন :)
ঠিক বলেছেন বার বার পড়েও মনে হয় এ লেখা একেবারেই নতুন করে পড়ছি। রম্য ঢঙ্গে কঠিন কথাগুলো কি যাদুকরী ভঙ্গীতেই না লিখে গেছেন তিনি।
মন্তব্যে অনুপ্রাণিত করার আন্তিরিক ভালবাসা ও ধন্যবাদ। ভাল থাকুন সুন্দর থাকুন নিরন্তর।

৩| ১৬ ই এপ্রিল, ২০২৩ রাত ১০:৫৯

বিষাদ সময় বলেছেন: আপনার লেখা বা কোন লেখা সিলেকশনের মান নিয়ে প্রশ্ন তোলার কোন অবকাশ থাকে না।
ধরণী বড়ই দুর্ভাগা যে গান্ধীজির মতো খুব বেশি সন্তান তিনি জন্ম দিতে পারেননি।

১৬ ই এপ্রিল, ২০২৩ রাত ১১:১৪

শেরজা তপন বলেছেন: অনুরোধ থাকবে আপনার নিকটা পাল্টানোর। এমনিতেই বিষাদ দুঃখ প্রবঞ্চনায় ভরপুর আমাদের জীবন- এরপরে আপনার নিক দেখলে আরো বিষাদময় হয়ে ওঠে সময়টা।
গান্ধীজীর মত ব্যাক্তিত্বের চরিত্রে কালিমা লেপনের কি জঘন্য প্রচেষ্টেই না হয়েছে বা হচ্ছে। অথচ তার মত একজন মহামানবের জন্ম ধন্য করেছে ভারতবর্ষকে। মানুষ কেন যেন ভাবে পৃথিবীর সেরা মানুষগুলোর শুধু সদগুণ থাকবে এবং সমস্ত দোষ ত্রুটির উর্ধ্বে থাকবে তারা- কি হাস্যকর!!

চমৎকার মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ।

৪| ১৬ ই এপ্রিল, ২০২৩ রাত ১১:৩২

শায়মা বলেছেন: এ কারণেই তিনি মহাত্মা!

এত ভালোবাসা তার হৃদয়ে। গল্পটা পড়ে অবাক হলাম!

১৭ ই এপ্রিল, ২০২৩ দুপুর ১:৩৫

শেরজা তপন বলেছেন: এই লেখা থেকে আরো কিছু অংশ কেটে ছেটে ফেলেছি- যেমন পোপের সাথে দেখা করতে চাইলে পোপ তার পোষাককে অশ্লীল আখ্যা দিয়ে দেখা করতে অস্বীকৃতি জানানো। ইতালির রাজ কন্যার দাওয়াতে তার কাদি আর খড়ম পরে ছাগল নিয়ে উপস্থিত হোয়া সহ বিবিধ বিষয়। যেগুলো জানলে তার প্রতি শ্রদ্ধাবোধ বাড়বে বই কমবে না। কত সাধাসিধে সরল জীবন যাপন করেছেন তিনি তবুও তাকে ঘিরে অন্থীন সমালোচনা। এর আগে পৃথিবীর অন্য কোন নেতা অহিংসের মাধ্যমে এর বড় কর্ম সম্পাদন করতে পেরেছে বলে আমার জানা নেই।ধন্যবাদ আপু আপনাকে ভাল থাকুন।

৫| ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৩ রাত ১২:০৯

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: অসাধারণ পোস্ট। মুজ্‌তবা ভাইয়ের সংযোজিত পোস্টটি অনন্যসাধারণ। গল্পের ভেতর দিয়ে ফুটে উঠেছে (১) গান্ধীজি কত গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ছিলেন (২) বহির্বিশ্ব তাকে কতখানি গুরুত্ব দিত।

এই মহান ব্যক্তিটির প্রতি অকৃত্রিম শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা রইল।

১৭ ই এপ্রিল, ২০২৩ রাত ৮:১৪

শেরজা তপন বলেছেন: আপনার মন্তব্যের দুবার উত্তর দিতে গিয়ে দু'বারই বৈদ্যুতিক গোলযোগের জন্য মিস হয়ে গেছে। এখন বিরক্ত লাগছে তৃতীয়বারেরক মন্তব্য লিখতে। প্রথমবার যেই মুড ছিল সেটা নষ্ট হয়ে গেছে!
আপনার মন্তব্য আমার জন্য বিশেষ কিছু- আপনি যে মনযোগ দিয়ে লেখা পড়েন সেটা মন্তব্যেই স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
ধন্যবাদ চমৎকার মন্তব্যের জন্য।

৬| ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৩ রাত ১২:৪৫

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন:



- গান্ধী জীবনী পড়া হয় নাই।

১৭ ই এপ্রিল, ২০২৩ দুপুর ১:২৩

শেরজা তপন বলেছেন: আপনিতো পড়ুয়া মানুষ। সময় সুযোগ করে পড়ে নিবেন। এই লেখাটা কি পড়েছেন- তাতো বললেন না?

৭| ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৩ সকাল ১০:৫৫

মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
অজানা বিষয় পড়ে ভাললাগলো।

১৭ ই এপ্রিল, ২০২৩ দুপুর ১:২৪

শেরজা তপন বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ প্রিয় মাইদুল ভাই, নতুন কিছু জানার আগ্রহ আমার অসীম। তেমনি নতুন কিছু জানলেই ব্লগারদের সাথে শেয়ার করতে ইচ্ছে জাগে।

৮| ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৩ দুপুর ১২:০৫

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: প্রিয় তপন ভাই,
গান্ধীজীর সৌজন্যে পরের ট্রিপে ঐ জাহাজে বাড়ি ফেরা সৈয়দ মুজতবা আলীর এই বর্ণনা নিঃসন্দেহে আমাদের অনেকের কাছে সম্পূর্ণ অজানা ইউনিক কালেকশন।++ এমন একটি বিষয় শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে। কি সুন্দর বর্ণনা করেছেন।

১৭ ই এপ্রিল, ২০২৩ দুপুর ১:৩০

শেরজা তপন বলেছেন: আসলে অনেকেই মুজতবা আলীর গুনগান করেন অতি অল্প জেনে বা না বুঝে। তার প্রতিটা ভ্রমন গল্প, নিবন্ধে বা প্রবন্ধে তাবৎ বিশ্ব সন্মন্ধে কত কিছুই না জানার আছে কত কিছুই না শেখার আছে। বাংলা ভাষাভাষিরা এখনো উঁনার প্রকৃত গুণের কদর করতে পারেনি বলেই আমার বিশ্বাস। মুজতবা আলী সাহেব এক অন্য মাপের জিনিস-বরবরই আমার ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা থাকে প্রিয় এই লেখকের লেখা নিয়ে গল্প করার। তাকে নিয়ে গল্প করে এক জীবন কেটে যাবে সাচ্ছন্দ্যে :)
অনেক ধন্যবাদ প্রিয় পদাতিক ভাই- চমৎকার মন্তব্যের জন্য। আপনাদের মত গুণী মানুষের সহচর্যে নিজেকে ধন্য মনে করি সর্বদা।

৯| ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৩ দুপুর ১:০৪

রাজীব নুর বলেছেন: গান্ধী অসাধারন এক চরিত্র।
তাকে নিয়ে একটা সিনেমা তৈরি করা হয়েছে। সিনেমাটা আমি দেখেছি।

তার খালি গায় থাকাটা আমার পছন্দ না। হাতে একটা লাঠি। সাথে ছাগলও আছে।

১৭ ই এপ্রিল, ২০২৩ বিকাল ৩:২৫

শেরজা তপন বলেছেন: গান্ধীকে নিয়ে অনেকগুলো সিনেমা হয়েছে। তার ছেলে দেবদাসকে নিয়েও একটা সিনেমা হয়েছে ( গান্ধী মাই ফাদার)। অসাধারন- পারলে দেখবেন।

ধন্যবাদ আপনাকে।

১০| ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৩ দুপুর ১:৪৪

শায়মা বলেছেন: তাকে যথার্থ সন্মান দিয়েছিলেন ইংল্যান্ডের রাণী। এমনই এক গল্প শুনেছিলাম আমি। হাত ধোবার পানি চুমুক দিয়ে খেয়েছিলেন গান্ধিজী না জেনে। তাই তার যেন অসন্মান না হয় রাণীও হাত ধোবার পানি নিজেও চুমুক দিয়ে খেয়েছিলেন। জানিনা সত্য মিথ্যা তবে শুনেছি আমি এমনই গল্প।

১৭ ই এপ্রিল, ২০২৩ রাত ৮:২৯

শেরজা তপন বলেছেন: বিষয়টা আমার অজানা। এখানে বেশ বড় ধরনের ভুল থাকতে পারে সম্ভবত;
প্রথমত; প্রথম জীবনে গান্ধীজী কেতাদুরস্ত একজন বিলেতি ব্যারিস্টার ছিলেন ( ইনার টেম্পল লন্ডন থেকে ব্যারাস্টারি পাশ করেন) এবং সাউথ আফ্রিকায় প্র্যাকটিস করতেন। তার এসব সাহেবি ব্যাপার জানার কথা।
দ্বীতিয়ত তিনি কখনো রাণী ভিক্টোরিয়ার সাথে দেখা করেছেন বলে কোন তথ্য নেই। ১৯৩১ সালে তিনি ব্রিটেনের ততকালীন রাজা পঞ্চম জর্জের সাথে দেখা করেন।

১১| ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৩ দুপুর ২:৩১

অগ্নিবেশ বলেছেন: যত ভালো কামই করেন না কেন, ইসলাম কবুল করেন নাই, যাবেন তো সেই দোযকেই,
ইনারে নিয়ে অত মাতামাতির কি আছে? আমাগো গোলাম আজম কিছু সাজা পাইলেও
এক সময় বেহস্ত নসীব করবেন। তেনার গুনগান করেন, ইসলামের বিজয় হইবই।

১৭ ই এপ্রিল, ২০২৩ বিকাল ৩:২৩

শেরজা তপন বলেছেন: সব বুঝলাম কিন্তু এইটা আপনি নিশ্চিত হইলেন ক্যামনে?

তাহলে কি শুধু মুসলমান ভাল মানুষদের ভাল মানুষ বলতে হবে?

১২| ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৩ বিকাল ৪:৫৪

জটিল ভাই বলেছেন:
অজানা ইতিহাস তুলে ধরায় জটিলবাদ জানবেন প্রিয় ভাই। সেইসঙ্গে মুজতবা আলী মেশানোর জন্য বিশেষ জটিলবাদ :)
এনিওয়ে, আপনার নাসিরুদ্দিনের গাধা নিয়ে পোস্ট লিখার কথা মনে আছে? :P
আর ছাগলনাইয়্যার ইতিহাসের সঙ্গে গান্ধীজীর ছাগল বিষয়ে বিশ্লেষণমূলক কোনো পোস্ট কি পেতে পারি? =p~

১৭ ই এপ্রিল, ২০২৩ রাত ৮:৩৩

শেরজা তপন বলেছেন: জটিল ভাইকে মন্তব্যের জন্য জটিল ধন্যবাদ।
ছাগলনাইয়ার ওই ইতিহাসটা বরঞ্চ আপনি লিখুন আমরা পড়ে দোজাহানের অশেষ জ্ঞান হাসিল করি :)
নাসরেদ্দিনের গাধা নিয়ে পোস্টাবো অবশ্যই কোন একদিন।
আহা আলী সাহেবের ভক্তকে পেলে আমারও গলায় জড়িয়ে কোলাকুলি করতে মন চায়। আহেন মোলাকাত করি

১৩| ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৩ রাত ১০:৩৭

শ্রাবণধারা বলেছেন: খুব ভাল লাগলো লেখাটি । মুজতবা আলীর গল্পটিও অসাধারন।

রমা রলার নামটি আপনি "রোমেন রনাল্ড" - এভাবে কি কোন বিশেষ কারনে লিখেছেন?

গান্ধীর যে জীবনী রমা রলা লিখেছিলেন সেটি একটা চমৎকার বই- অনেকদিন আগে পড়েছিলাম। বইটার বাংলা অনুবাদ পড়েছিলাম। বইটার শুরুর দিকে গান্ধী বিষয়ে রমা রলা বলেছিলেন যে "গান্ধী লোকটা আসলে ধার্মিক (বা সাধক প্রকৃতির), কিন্তু ঠেলায় পড়ে তিনি হয়েছিলেন রাজনীতিবিদ"। গান্ধী ছিলেন রমা রলার ভাষায় "briefless barrister"

১৭ ই এপ্রিল, ২০২৩ রাত ১০:৪৪

শেরজা তপন বলেছেন: নামটা সরাসরি ইংরেজী থেকে ভাষান্তর দেখে অমনটা হয়েছে। ভুলটা ধরিয়ে দেবার জন্য আন্তরিক কৃতজ্ঞতা। এমন একজন গুণী মানুষের নাম আমার মত অর্বাচীনের ভাষান্তরের জন্য এমন বিদঘুটে রূপ পেয়েছে :(
আসলে আপনাদের মত ঋদ্ধ ব্লগারেরা আছেন বলেই ব্লগে লিখে এত আরাম পাই।
চার্চিল আবার তাকে বলেছিল 'অর্ধ উলঙ্গ ফকির'। ফকির আর সাধক একে অপরের সমার্থক।
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে ভাল থাকুন নিরন্তর।



* ভুলটা শুধরে দিলাম।

১৪| ২০ শে এপ্রিল, ২০২৩ বিকাল ৫:০১

আমি সাজিদ বলেছেন: ইতালীতে গান্ধীর আগমনের সময়ে বিশাল জনতার ঢল এবং ক্রমাগত গান্ধীবাদের জনপ্রিয়তাই কি সে সময়ের ইউরোপের মিডিয়া ও বুদ্ধিজীবীদের বাধ্য করেছে গান্ধীকে ভুলভাবে উপস্থাপন করতে? রমা রঁলাকে গান্ধী মুসোলিনি সমন্ধে যা লিখেছেন, তা বেশ চমকে দেওয়ার মতোই। জাহাজে ভারত প্রত্যাবর্তনের ব্যাপারটা পড়ার সময় মনে হচ্ছিল, গান্ধীজীর এমন কিছু একটাই করবেন। বকরীর দুধ আর পেঁয়াজের স্যুপ খেয়ে তাঁবুতে শুয়ে বসে এতোগুলো দিন কাটয়ে দিলেন!

২০ শে এপ্রিল, ২০২৩ বিকাল ৫:৪৪

শেরজা তপন বলেছেন: পুরোটা আয়েশ করে পড়ে তবেই মন্তব্য করেছেন বোঝা যাচ্ছে। সুভাষ চন্দ্র ও রবিন্দ্রনাথ ঠকুরেরট দৃষ্টিভঙ্গিও তার সন্মন্ধে একইরকম ছিল। মুসোলিনির সম্মোহন করার ক্ষমতা ছিল হয়তো। তিনি এই সব বিখ্যাত লোকদের জন্য এত বেশী জাকজমকপূর্ণ আয়োজন ও এবং এত সম্মান দিতেন যে, তার সন্মন্ধে কটু কথা কইতে ওদের মত সজ্জনের কষ্ট লাগত।

আমিও ভেবেছি এমন কিছুই হবে। :)
অনেক ধন্যবাদ প্রিয় ব্লগার।

১৫| ২১ শে এপ্রিল, ২০২৩ রাত ২:২৫

অপু তানভীর বলেছেন: রাজ কুমার হিরানীর ''লাগে রাহো মুন্না ভাই'' মুভিটি দেখার পরে গান্ধীজীর উপর আমার প্রবল আগ্রহ জন্ম নেয় । সেই সময়ে তো আড় এতো ইন্টারনেট এক্সেস ছিল না আমার কাছে, তখন কেবল আমাদের স্থানীয় পাবলিক লাইব্রেরীর সদস্য ছিলাম। সেখানে গা্ন্ধীজীর উপরে যত বই ছিল সব পড়ে ফেলেছিলাম। মুজতবা আলী এই গল্প অবশ্য আমার জানা ছিল না । আপনার লেখা থেকে জানা হল ।

২২ শে এপ্রিল, ২০২৩ বিকাল ৪:৫৭

শেরজা তপন বলেছেন: বাপরে তাই নাকি!! আপনিতো গান্ধিজীকে নিয়ে বিশাল কলেবরের একখানা নিবন্ধ রচনা করতে পারেন -এক চুটকিতে।
অতি বড় মাপের মানুষ ছিলেন তিনি- তবুও
সমস্যা হচ্ছে বাঙ্গালী সুভাষ বোসের জীবনী লিখতে গেলে গান্ধীজীর একটুখানি বদনাম করতে হয়।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.