নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
অনেক সুখের গল্প হল-এবার কিছু কষ্টের কথা শুনি...
বেশ কয়েকদিন থেকে মাথার মধ্যে বিষয়টা খোঁচাচ্ছে! গাড়িতে বসে বিশেষ একটা ধর্মীয় পুস্তকের অনুবাদে মাঝে মধ্যে চোখ বোলাই। কিছু অংশ ভাল লাগে কিছু অংশ সংশয় জাগায় কিছুটুকু গভীর চিন্তার খোরাক যোগায়। আমি আসলে জানার জন্য পড়ি- সোওয়াব হাসিলের জন্য নয়। আজ কোন মতেই মন বসাতে পারছি না। সেদিন আড্ডায় নাজিম ভাই(ছদ্ম নাম) এসেছিলেন। প্রায়শই আসেন- রাজনীতি করেন পাশাপাশি প্রথম শ্রেণীর ঠিকাদার। এলাকার এমপির সাথে সবসময় ওঠাবসা। বেশ শিক্ষিত জানাশোনা লোক- গিন্নী এমবিবিএস ডাক্তার। প্রচুর কথা বলেন- তবে ভীষণ কৃপন! আমরা বেশ শ্রদ্ধা- সহবত করি তাঁকে। কথায় কথায় তিনি বললেন, একসমুয় তিনি নাকি জাপানে চামড়া এক্সপোর্ট করতেন 'গুইসাপের চামড়া' কথাটা শুনে আমি কান খাড়া করলাম। গুইসাপের চামড়া বাংলাদেশ থেকে জাপানে। কবে কিভাবে সম্ভব?
আমি প্রশ্ন করলাম, লিগ্যালি?
- হ্যাঁ তাছাড়া কি একদম এল সি-মেল সি খুলে।
-জাপানে এসব নিতে কোন নিষেধাজ্ঞা ছিল না?
- না প্রথমে ছিল না পরে ব্যান করে দেয়।
- কত সাল পর্যত এই ব্যাবসা করেছেন?
-এরশাদের সময়- এই ছিয়াশি সালে মনে হয় শেষবার।
- মোট কতজন এক্সপোর্টার ছিল 'গুইসাপের চামড়ার'?
- আমি দিয়ে পাঁচজন।
- আপনি শেষবার কতগুলো এক্সপোর্ট করেছেন?
- আমার সবচেয়ে বেশী অর্ডার ছিল। আমার ছিল সাড়ে তের হাজার পিস। আর বাকি সবার দশ এগার হাজার।
ইয়া আল্লা বলে কি এক বছরে দেশ থেকে ষাট হাজার গুইসাপ সাবাড় হয়ে গেছে!! করেছে কি এই লোকেরা! পরিবেশের তো সারে সর্বনাশ করে ছেড়েছে!! গার্মেন্টস আমাদের বিশাল আশির্বাদ- গার্মেন্টস না থাকলে বৈদেশীক মুদ্রার জন্য ব্যাঙ গুইসাপের মত আর কি কি বেঁচে দিতাম কে জানে?
-এইগুলা কি গরু-খাসির চামড়ার মত লবন দিয়ে প্রিজার্ভ করতে হয়?
-না এইগুলা পিকেল(আচার) করতে হয়। এক ধরনের এসিড আর লবনে ভিজিয়ে রাখতে হয়।
- এক্সপোর্ট বন্ধ করল কারা?
-বাংলাদেশ সরকার- বাধ্য হয়ে, উপায় ছিল না। পরে গোপনে অনেক মাল পাচার হয়েছে - মুলত সেইসব মাল পাচার করে ধনী হয়েছে ' অমুক কোম্পানী' (সেই কোম্পানীর মালিক এখন সরকারের উচ্চপর্যায়ে অধিষ্ঠিত আছেন- কোন প্রমাণ নেই আমার কাছে, তাই নাম বলা সম্ভব নয়)
****
সেই থেকে আমার মাথায় ঘুরছে জাপান এই কাজ করেছে? এটা শুধু বাংলাদেশের ক্ষতি নয় এটা সারা বিশ্বের প্রকৃতির জন্য ক্ষতি। কমোডোর ড্রাগন প্রকৃতি পরিবেশের জন্য যতটা প্রয়োজন এই 'মনিটর লিজার্ড' বা 'ভানারাস বেঙ্গালিনসিস' পরিবেশ প্রকৃতির জন্য তাঁর থেকে শতগুন বেশী প্রয়োজন কেননা এদের প্রকৃতি চারন এরিয়া ও এদের সংখ্যাই বলে দেয় এদের প্রয়োজনীয়তা।
ছোট বেলা আমাদের যাদের গ্রাম বা মফস্বলে কেটেছে তারা হামেশাই গুইসাপের দেখা পেয়েছি। এই প্রজন্ম সম্ভবত শুধু বইপত্রেই গুইসাপ দেখেছে- সামনাসামনি দেখার সৌভাগ্য এদের হয়নি। ছোটবেলায় শুনতাম মুরগীর ডিম খাবার জন্য গুইসাপ মাঝেমধ্যেই খোয়াড়ে হানা দিত আর মাছ খাবার জন্য পুকুরে। বড়রা ভয় দেখাত; কক্ষনো গুইসাপের সামনে যাবিনা, ওরা নাকি থুতু ছেটায়। যেখানে থুতু ছেটাবে সেখানে নাকি পচে ঘা হয়ে যায়। নমশুদ্রদের দেখতাম মাঝে মধ্যে গুইসাপ মেরে মাঝে মধ্যে কাঁধে করে ঝুলিয়ে নিয়ে যেত। ওদের মাংস খেত ওরা।
পৃথিবীত যত গিরিগিটি জাতীয় প্রানী আছে তাঁর মধ্যে কমোডো ড্রাগনের পরেই দ্বিতীয় বৃহত্তম প্রানী হচ্ছে আমাদের এই গুইসাপ বা Monitor Lizard।
* আপনি জানেন কি; কোন কোন গুইসাপ লম্বায় ১০ ফুটের বেশী হতে পারে - যা লম্বায় প্রায় কমডো ড্রাগনের সমান পর্যায়ের।
কি দুর্ভাগ্য আমাদের; বাংলাদেশ এক্সপোর্ট প্রমোশন ব্যুরোর তথ্য মতে, ১৯৭৮-১৯৭৯ সালে বাংলাদেশ থেকে প্রায় ৫১ লাখ ৪৩ হাজার টাকার চামড়া রপ্তানি হয়।
ভাবা যায়; যে দেশে মাত্র সাত কোটি সাড়ে সাত কোটি লোক ছিল তখন সেখানে ৫০ ষাট লক্ষ গুইসাপ এক বছরে হত্যা!!!!
খাবার
কাঁকড়া, শামুক, ইঁদুর, হাঁস-মুরগির ডিম, পচা-গলা প্রাণীদেহ ,বড়রা মাছ, সাপ, ব্যাঙ ছোট কুমির, কুমিরের ডিম ও কচ্ছপসহ নানান পশু-পাখি ও উচ্ছিষ্ট খেয়ে এরা জীবন ধারন করে থাকে।
উপকারী
প্রকৃতি, পরিবেশের ও কৃষকের বন্ধু এই গুইসাপ ফসলের ক্ষেতের পোকাপতঙ্গ ও ধেনো ইঁদুর খেয়ে উপকার সাধিত করে।
বিলুপ্তির কারন
ক্রমশ: নগরায়নের বিস্তার, অন্য দিকে চোরাশিকার, দু’পায়ের দাপটে এই প্রাণীটি বিপন্ন হয়ে পড়েছে। প্রাণী সংরক্ষণ আইন উপেক্ষা করে অবাধে এদের হত্যা করা হচ্ছে। আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ ইউনিয়ন (আইইউসিএন) ২০০০ সালে প্রাণীটিকে বিলুপ্তির ঝুঁকিতে থাকা প্রাণী হিসেবে তালিকাভুক্ত করে। গুইসাপের চামড়া রপ্তানির কারণে পরিবেশের ওপর ক্ষতিকর প্রভাবের বিবেচনায় ১৯৯০ সালে সরকারের পক্ষ থেকে এদের হত্যায় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। (উইকি)
আমি নেট খুঁজতে থাকি। জানি জাপান এইসব তথ্য রাখবে না। কেননা জাপান তাদের সব কালিমা ঝেড়ে পুছে সাফ সুরোত পরিচ্ছন্ন চেহারা আধুনিক বিশ্বের কাছে উপস্থাপন করতে চায়। যেন তাদের কোনদিন কোন পাপ স্পর্শ করেনি।
নেটে লাইন মত খুঁজলে কি না পাওয়া যায়। আমিও পেলাম;
ট্রাফিক
দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের পরে ইউরোপ দক্ষিন আমেরিকা জুড়ে যে শিল্পবিপ্লব শুরু হয়েছিল তাঁর কালো রূপ দেখেছিল এশিয়া আফ্রিকা আর ল্যাটিন আমেরিকা। মুলত বরাবরের মত শোষনের স্বীকার হয়েছিল এরা। শিল্প বিপ্লবের হাত ধরে বিপ্লব এসেছিল ফ্যাশন শিল্পেও। এই সব গুচি ফুচি লুই ভুটন, ম-ব্লার মুল উত্থান তখনই। চামড়া শিল্পের বিকাশের নামে ফ্যাশন ও শিল্পের দোহাই দিয়ে তারা ধনবানদের হাতে তুলে দেয় বিশ্বের বিরল সব প্রানীদের গা থেকে ছাড়িয়ে নেয়া ফার আর হাইড।
আর এদের যোগানদার হয় যুদ্ধে হেরে যাওয়া পঙ্গু বিদ্ধস্ত জাপানের মত চমৎকার নীতিপরায়ণ ভীষণ সৎ নিঃশ্বংস লোভী বনিক জাতি!
তারা মাত্র তিন ডলার দিয়ে কিনে নিয়ে যেত দশ ফুটের একটা আস্ত গুই সাপের চামড়া। সেই চামড়া তাদের হাত ঘুরে যখন প্যারিসের একটা দামী শপিং মলে চকচকে কাঁচের ঘরে ঝলমলে আলোর নীচে হাজার ডলারে বিক্রি হোত। সহস্র মুক্তোর দ্যুতি বেরুত তাঁর দেহ থেকে। জানা যায় এয় গুই সাপের চামড়ার একটা জ্যাকেট গায়ে দিয়ে মাইকেল জ্যকসন নাকি স্টেজ পারফর্ম করেছেন।
এবার দেখি ট্রাফিক কি বলে;
~Water Monitor Lizard -80s থাইল্যান্ডের চিড়িয়াখনার ছবি।
*****************
*(ভিঃ V. ভারানাস)
১৯৮৩-৮৯ সময়কালে, CITES( Convention on International Trade in Endangered Species of Wild Fauna and Flora) পরিসংখ্যান অনুসারে, জাপান V. bengalensis( গুইসাপ)-এর বছরে গড়ে ১৬০০০০ চামড়া আমদানি করেছিল, যা মোট বিশ্ব বাণিজ্যের ৯৫ ভাগ ( ভেবে দেখেন বিশ্বের ৯৫ ভাগ গুইসাপের চামরা জাপান একাই আমদানী করত)। কিন্তু এখানে একটা ব্যাপার লক্ষনীয় যে, ট্রাফিক এই রিপোর্টি জাপান থেকে পায়নি কেননা জাপান এই ধরনের আমদানী বিষয়ক রিপোর্ট সঠিকরূপে সংরক্ষন করে না যে কারনে এই পরিসংখ্যানগুলি তাই শুধুমাত্র রপ্তানিকারক ( বাংলাদেশ) দেশের রেকর্ডবুক থেকে নেয়া হয়েছে। জাপানি কাস্টমস পরিসংখ্যান প্রকাশ করে যে এগুলি জাপানের সাথে বাণিজ্যের একটি উল্লেখযোগ্য অবমূল্যায়ন। CITES তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশের রপ্তানী পরিসঙ্খ্যানের সাথে জাপান-এর আমদানী পরিসংখ্যানের মধ্যে তফাত দেখা গেছে প্রায় অর্ধেকের কাছি কাছি ( জাপান ৫১%)শুল্ক পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ দ্বারা প্রকাশিত বাণিজ্য.
বাংলাদেশ ব্যতীত অন্যান্য চামড়ার প্রধান সরবরাহকারী ছিল পাকিস্তান (যা ১৯৭৬ সালে CITES-এর পক্ষ হয়ে ওঠে এবং তাই এইগুলি অবৈধভাবে রপ্তানি করত) এবং সিঙ্গাপুর, একটি উদ্যোক্তা হিসাবে কাজ করে, যা ১৯৮৭ সাল পর্যন্ত CITES-এ যোগ দেয়নি। এটা খুব সম্ভবত মনে হয় যে অনেকেই বাংলাদেশ কর্তৃক রপ্তানি করা চামড়া প্রকৃতপক্ষে ভি বেঙ্গালেনসিসের জাপানে আমদানি করা হয়নি ।বাংলাদেশ ব্যতীত অন্যান্য চামড়ার প্রধান সরবরাহকারী ছিল পাকিস্তান (যা ১৯৭৬ সালে CITES-এর পক্ষ হয়ে ওঠে এবং তাই এইগুলি অবৈধভাবে রপ্তানি করত) এবং সিঙ্গাপুর, একটি উদ্যোক্তা হিসাবে কাজ করে,
যা ১৯৮৭ সাল পর্যন্ত CITES-এ যোগ দেয়নি। এটা খুব সম্ভবত মনে হয় যে অনেকেই বাংলাদেশের রপ্তানিকৃত চামড়া প্রকৃতপক্ষে ভারতে উদ্ভূত এবং পুনরায় রপ্তানির জন্য বাংলাদেশে পাচার করা হয়।
১৯৮৬-এর পর CITES ঘোষণায় V. bengalensis-এর জাপানে কোনো আমদানি নথিভুক্ত করা হয়নি, ১৯৮৭-এর পর V. ফ্লেভেসেনস-এর কোনো উল্লেখ নেই।
V. flavescens (Yellow monitor) এবং V. bengalensis-( Monitor Lizard) এর আমদানী বিষয়ক CITES সংগ্রহ করা জাপানি কাস্টমস পরিসংখ্যান ।
১৯৮৩ সাল-৭৫৫০০০
১৯৮৪ সাল-৭৪৩,০০০
১৯৮৫ সাল -৭৭২,০০০
১৯৮৬ সাল- ৪৬৯০০০
১৯৮৭ সাল-৪৪২,০০০
গড় আমদানী ১৯৮৩ সাল থেকে ৮৭ সাল পর্যন্ত- ইয়েলো মনিটর লিজার্ড ও গুইসাপ ৬৩৬৩০০টি ( ছয় লক্ষ ছত্রিশ হাজার তিনিশ টি)। এটা জাপানে মুল আমদানীর একটা খণ্ডিত অংশের চিত্র মাত্র।
এর মধ্যে ধারনা করা যায় শুধু V. bengalensis (বেঙ্গল লিজার্ড) বা গুইসাপ যা বাংলাদেশ থেকে ( ৭৮/৭৯ সালে যদি ৫০লক্ষ গুইসাপের চামড়া রপ্তানী হয়ে থাকে তবে নিশ্চিতভাবে এর অর্ধেক চামড়া শুধু বাংলাদেশ থেকে রপ্তানী হয়েছে) ভাবতে একদিকে ভালই লাগে গুইসাপ রপ্তানীতে আমরা বিশ্বের প্রথম ছিলাম একদিন!
তবে CITES বলছে আমাদের পার্শ্ববর্তীদেশগুলো CITES-এ যোগ দেবার জন্য বাধ্যতাবাধকতার জন্য গুইসাপ রপ্তানী না করতে পারার জন্য অবৈধভাবে বাংলাদেশ দিয়ে নয়তো বাংলাদেশের ( অরিজিন ফ্রম বাংলাদেশ) নাম করে রপ্তানী করত যার মিডিয়া হিসেবে কাজ করত সিঙ্গাপুর।
বাংলাদেশ কম্বোডিয়া, চীন, হংকং, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, লাওস, মালয়েশিয়া, মায়ানমার, ফিলিপাইন, সিঙ্গাপুর, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম। এটি সম্ভবত ব্রুনাই থেকেও রপ্তানী হয়েছে।।
১৯৮৩ থেকে ১৯৮৯ সময়কালে গিরগিটি জাতীয় প্রানীর মোট বাণিজ্য প্রতি বছর ১ থেকে ১.৯ মিলিয়ন চামড়ার মধ্যে ওঠানামা করেছে, যা গড়ে ১.৪ মিলিয়ন।।
এর মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গিরগিটি জাতীয় প্রানী ছিল আমাদের গুইসাপ।
এই খবরটা দেখেও আপনি চমকে যাবেন;
CITES এর পরিসংখ্যান অনুসারে, এই গুইসাপ ও অন্যান্য গিরগিটি আমদানীর জন্য জাপান প্রায় ৩৪% দায়ী ছিল, ২৭% এর জন্য ইউরোপিয়ান কমিশন এবং নয় শতাংশের জন্য USA। উল্লেখযোগ্য আমদানি রেকর্ড করা অন্যান্য দেশগুলি হল: অস্ট্রিয়া, কানাডা, হংকং, দক্ষিণ কোরিয়া, সিঙ্গাপুর এবং সুইজারল্যান্ড। রিপোর্ট করা বাণিজ্য এই সময়ের মধ্যে বৃদ্ধি পেয়েছে, ১৯৮৩-৮৬ এর জন্য গড়ে প্রায় ১.২ মিলিয়ন এবং ১৯৮৭-৮৯ এর জন্য ১.৮ মিলিয়ন। এই প্রবণতা ১৯৯০ সালে অব্যাহত ছিল, সেই বছর ও নথিভুক্তভাবে বিশ্ব বাণিজ্যে ২.৩ মিলিয়ন চামড়া পৌঁছেছে ( তাঁর মানে চোরাই পথে কত মিলিয়ন চামড়া গিয়েছে তাঁর ইয়ত্ত্বা নেই)। অন্তত এই বৃদ্ধির কিছুটা আন্তর্জাতিক বাজার থেকে ভি.বেঙ্গালেসিস এবং ভি. ফ্লেভেসেনসের এর আপাত ভার্চুয়াল অন্তর্ধানের সাথে সম্পর্কিত হতে পারে।
~ ভি. সালভেটর
ভি. সালভেটর চামড়া অন্য দুটি প্রজাতির তুলনায় (বা ছিল) যথেষ্ট দামী ১৯৮৭ সালে US$ ৬ ( ভি.বেঙ্গালেসিস-এর জন্য US$ ৩ ভি. ফ্লেভেসেনসের জন্য US$ ১.৬ এর তুলনায়). ঐতিহ্যগতভাবে, ভি. স্যালভেটরের চামড়াগুলো তাদের বড় আকার এবং আকর্ষণীয় ত্বকের পিগমেন্টেশনের কারণে সর্বোচ্চ মানের পণ্য তৈরি করতে ব্যবহৃত হয়।
⚫ জাপান
CITES এর বার্ষিক প্রতিবেদনগুলি ১৯৮৬ সালের পর জাপানের ভি. সালভেটর স্কিন আমদানিতে উল্লেখযোগ্য পরিমান বৃদ্ধি হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে (১৯৮৩-৮৬ সালের জন্য বার্ষিক প্রায় ৩২০০০০ স্কিন গড়, ১৯৮৯ এবং ১৯৯০ উভয় ক্ষেত্রেই ৯৫০০০০ স্কিন বেড়েছে)। এটি V. bengalensis এবং V. flavescens থেকে V. salvator-এ স্থানান্তরিত হতে পারে, অথবা সম্ভবত প্রথম দুটি প্রজাতির চামড়ার কিছু ভুল ঘোষণা থাকতে পারে।
~ V. flavescens
১৯৮৭ সাল থেকে দামের বিশ্লেষণ এটির কিছু সূত্র দিতে পারে। লাক্সমুর এবং গ্রুমব্রিজ (১৯৮৯) যেমন উল্লেখ করেছেন, ভি. সালভেটরের চামড়া অন্য দুটি প্রজাতির তুলনায় যথেষ্ট ব্যয়বহুল ছিল (১৯৮৭ সালে ইউ এস ডলার ৬, V. bengalensis- ইউএস ডলার ৩ এবং ভি ফ্লেভেসেনস ইউ এস ডলার ১.৬) ঐতিহ্যগতভাবে, V. স্যালভেটর স্কিনগুলি তাদের বড় আকার এবং আকর্ষণীয় ত্বকের পিগমেন্টেশনের কারণে সর্বোচ্চ মানের পণ্য তৈরি করতে ব্যবহৃত হয়, অন্য দুটি সরীসৃ্পের চামড়ার আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে গুরুত্ব কম। ( V. bengalensis লেজ লম্বা হয় ভি. সালভেটরের দেহের আকৃতি বড় হয়)
****
মনিটর টিকটিকির চামড়ার বিশ্বব্যাপী ব্যবসা হয় -ইহা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া থেকে রপ্তানি করা সবচেয়ে সাধারণ ধরনের টিকটিকি, আন্তর্জাতিক চামড়া বাজারের জন্য ১৯৯৮ থেকে ২০০৭ সালের মধ্যে ৮.১ মিলিয়ন রপ্তানি করা হয়েছে। এশিয়ান ওয়াটার মনিটর সবচেয়ে বেশি হত্যার স্বীকার গুইসাপগুলোর মধ্যে একটি; এর চামড়া ফ্যাশন আনুষাঙ্গিক যেমন জুতা, বেল্ট এবং হ্যান্ডব্যাগের জন্য ব্যবহৃত হয় যা বিশ্বব্যাপী পাঠানো হয়, বার্ষিক ১.৫ মিলিয়ন চামড়ার বানিজ্য হয়। অন্যান্য ব্যবহারের মধ্যে রয়েছে চর্মরোগ এবং একজিমা, ইন্দোনেশিয়ার অভিনব খাবার ও পোষা প্রাণী হিসেবে।ভারত ও বাংলাদেশের বেশ কিছু উপজাতীয় সম্প্রদায় তাদের মাংস, চর্বি এবং চামড়ার জন্য এই গুইসাপ শিকার করে ও এর ডিমও সংগ্রহ করা হয়। এগুলিকে ক্ষতিকর ও অশুভ হিসাবে বিবেচনা করা হয় এবং তাদের আবাসস্থলের ক্ষতি ডিম নষ্ট করার কারণেও এদের বংশবৃদ্ধি মারাত্মক হুমকির সম্মুখীন হয়েছে।
গুইসাপ সেইসব বিরলতম প্রাণীর মধ্যে পড়ে যারা পার্থেনোজেনেসিসঃ(এককভাবে সন্তান উতপাদনে সক্ষম) মহিলারা শুক্রাণু ধরে রাখতে সক্ষম হতে পারে। বন্দী অবস্থায় থাকা মহিলারা উর্বর ডিম দিতে সক্ষম হয়েছে। কিছু প্রজাতির মনিটর টিকটিকি যেমন নীল মনিটর বেশ ভালভাবেই প্রমাণ করেছে যে এরা পার্থেনোজেনেসিস করতে সক্ষম ।
এই উভচর মনিটরকে পশ্চিম ভারতে 'বিস-কোবরা' , রাজস্থানে 'গয়রা' , বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গে গুইশাপ বা গোশাপ , ভারতের পাঞ্জাব, পাকিস্তান ও বিহার উভয় ক্ষেত্রেই 'গোহ' , মহারাষ্ট্রে 'ঘোরপদ' এবং শ্রীতে 'থালাগোয়া' নামে পরিচিত । পুরাণে এই ধারণা রয়েছে যে এই টিকটিকিগুলি, যদিও প্রকৃতপক্ষে ক্ষতিকারক নয় তবে বিষাক্ত এবং রাজস্থানে্র স্থানীয়রা বিশ্বাস করে যে টিকটিকি শুধুমাত্র বর্ষাকালে বিষাক্ত হয়ে ওঠে। গুইসাপ শিকার করে তাদের শরীরের চর্বি ফুটিয়ে নিস্কাশিত করে অনেকে বিভিন্ন রোগের প্রতিষেধক সহ একটি বিস্তৃত পরিসরে ব্যবহার করা হয়।
~ওয়াটার মনিটর বা কাবারগুয়া
শ্রীলঙ্কায়, ওয়াটার মনিটরকে (কাবারগোয়া) বিষাক্ত এবং বিপজ্জনক বলে মনে করা হয়, কিন্তু বেঙ্গল মনিটরকে (থালাগোয়া) ক্ষতিকারক ও প্রতিরক্ষাহীন বলে মনে করা হয়। ল্যান্ড মনিটর বা গুইসাপের মাংস- ভোজ্য বলে বিবেচিত হয় (বিশেষ করে আদিবাসী ভেদ্দা এবং রোদিয়ার লোকেরা) যদিও ওয়াটার মনিটরের মাংস তারা খায় না । তবে শ্রীলঙ্কায় গুইসাপকে হত্যা করা সাধারণত একটি কাপুরুষোচিত কাজ বলে বিবেচিত হয়। তাদের প্রচুর লোককাহিনীতে গুইসাপকে নিরিহ সরিসৃপ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে (গারন্দিয়া)।
লিঙ্কঃ
https://biocyclopedia.com/index/monitor_lizards/uses_of_monitor_lizards_by_man.php
* তথ্যগত ভুল-ত্রুটি মার্জনীয়। এ বিষয়ে যে কোন ভাষায় এটা সম্ভবত প্রথম নিবন্ধ (আমি অনলাইনে খুঁজে পাইনি) -তাই রেফারেন্সের অপ্রতুলতার জন্য অনেক ডেটা মিস হয়ে যেতে পারে কিংবা গড়মিল হতে পারে।
২২ শে জানুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ১:২৯
শেরজা তপন বলেছেন: অনেকদিন পরে আপনাকে পেলাম আপু মন্তব্যে বিশেষভাবে অনুপ্রাণিত হলাম।
ভালো থাকবেন। সুস্থ থাকুন আপনার শুভ কামনায়..
২| ২২ শে জানুয়ারি, ২০২৪ সকাল ১০:১১
কালো যাদুকর বলেছেন: গুই শাপ আপনার মতই ছোট বেলায় দেখেছিলাম গ্রামে। দুবছর আগেও দেখেছিলাম গ্রামে। এখন এই নতুন ১৯৯০ আইনের জন্য হয়ত এই শাপরা ফিরে আসছে। পৃথিবীর অনেক জায়গায় বিলুপ্ত প্রানীরা কিন্তু ফিরে আসছে। তবে পোচারদের জন্য অনেক প্রানীই বিপন্য।
বেশ গবেষনা করে লিখেছেন। এজন্য ধন্যবাদ। এরকম লেখা বই করেও প্রকাশ করতে পারেন।
২২ শে জানুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ১:৩১
শেরজা তপন বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ সুপ্রিয় ব্লগার কালো জাদুকর।
আপনাকে আমার ব্লগ বাড়িতে দেখে ভালো লাগলো। সূত্রে জানা গেল যে ২০০০ সালের পরেও এই সাপের চামড়া রপ্তানি হয়েছে এখনো নাকি গোপনে রপ্তানি হয় গারো পাহাড়ি অঞ্চল থেকে প্রচুর সাপ মারা হয় এবং চামড়া ছাড়িয়ে বাইরে অবৈধভাবে রপ্তানি করা হয়।
এমন মন্তব্য ভালো কিছু লেখার অনুপ্রেরণা যোগায় ভালো থাকবেন সুন্দর থাকবেন।
৩| ২২ শে জানুয়ারি, ২০২৪ সকাল ১০:২১
কামাল১৮ বলেছেন: অনেক কিছুই আমরা রপ্তনি করে বিলুপ্ত করে ফেলেছি।অনেক খাটাখাটি করে লিখেছেন।
২২ শে জানুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩
শেরজা তপন বলেছেন: আপনি তো বড় লেখা পড়তে চান না! এটা পড়েছেন তো পুরো কামাল ভাই?
অনেক ধন্যবাদ ভাই ভালো থাকবেন।
৪| ২২ শে জানুয়ারি, ২০২৪ সকাল ১০:২৮
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
গরুর চামড়ার তো কোন দামই নাই।
ছাগলের চামড়ার তো কথাই নেই।
২২ শে জানুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ১:৩৫
শেরজা তপন বলেছেন: মানুষের চামড়ার দামের কি অবস্থা বলে আপনার মনে হয়?
৫| ২২ শে জানুয়ারি, ২০২৪ সকাল ১০:৩৮
মোস্তফা সোহেল বলেছেন: আগে আমাদের বাড়ির পেছনে চাচাদের পুকুর পাড়ে প্রায় দেখতাম গুই সাপ।এখন আর দেখি না।
২২ শে জানুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ১:৩৭
শেরজা তপন বলেছেন: আমিও ছোটবেলায় অনেক দেখেছি আমাদের বাড়ির পাশের পুকুরের আশেপাশে খুব ভয় পেতাম! বড়রা বলতো ওরা থুতু ছেটায় ওদের থুতুতে নাকি ঘা হয়ে যায়- সেই ঘা শুকায় না কখনো
৬| ২২ শে জানুয়ারি, ২০২৪ সকাল ১১:৪০
বিজন রয় বলেছেন: এত তথ্য পেলেন কোথায়!!
অনেক ভালো একটি কাজ করেছেন।
এমনভাবে আগে জানা ছিল না।
পোস্টির জন্য অনেক ধন্যবাদ শেরজা তপন।
২২ শে জানুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ১:৩৯
শেরজা তপন বলেছেন: লেখাটা পড়ে দারুন অনুপ্রেরণা মূলক মন্তব্যের জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা দাদা।
*বোঝাই যায় সময় নষ্ট হয়েছে চোখের কষ্ট গেছে অনেক অনলাইনে এসব তথ্য খুঁজে বের করতে ঘাম ঝরেছে!!
৭| ২২ শে জানুয়ারি, ২০২৪ সকাল ১১:৫৪
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
যে কোন সাপ দেখলেই আমার ভয় লাগে।
সেটা গুই সাপই হোক।
আর গোখরা সাপই হোক।
২২ শে জানুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ১:৪০
শেরজা তপন বলেছেন: তাহলে তো আপনার শোল মাছ টাকি মাছ দেখেও ভয় পাওয়ার কথা?
শোল মাছকে তো ইংরেজিতে 'সাপের মাথা' মাছ বলে।
৮| ২২ শে জানুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৪
জুন বলেছেন: আমার কাছে গুইসাপের অনেক ছবি আছে, তবে সবই থাইল্যান্ডে। বাংলাদেশ হইলেতো ওদের কপালে দুক্ক আছিলো ল্যাপটপ এ বসলে দিমু, মোবাইলে নাই সেই সময় লেখা নিয়া আলাপ করা যাবে কি কন
আমার পাশেই বসা ছিল একটা সুইট মত মনিটর লিজার্ড শেরজা
+
২২ শে জানুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ১:৪২
শেরজা তপন বলেছেন: থাইল্যান্ডের লোকজনও সাপ খায়। ওই ব্যাটারা দুনিয়ার এমন জিনিস নাই যা খায় না
ঠিক আছে আপনি ল্যাপটপে এসে বসেন সুন্দর সুন্দর সাপের ছবি দেখান -আর আমরা খাতির জমায় গল্প করমুনে
৯| ২২ শে জানুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ১:১৯
রাজীব নুর বলেছেন: গুইসাপ আমার খুবই অপছন্দ। এদের দেখলে গা ঘিন ঘিন করে। কিছু কিছু গুইসাপ কুমিরের মতো বিশাল।
জংলা মতো জায়গায় এদের বসবাস। বিভিন্ন গ্রামে আমি এটা দেখেছি। গাজীপুর ন্যাশনাল পার্কে একটা দেখেছি। বিশাল সাইজ।।
২২ শে জানুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪
শেরজা তপন বলেছেন: সাপ শুধু আপনার নয় আপনার মত অনেকেরই অপছন্দের আমারও পছন্দের নয়- কিন্তু প্রকৃতিতে এদের খুবই দরকার!
১০| ২২ শে জানুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ১:৩৪
মহাজাগতিক চিন্তা বলেছেন: আমাদের এলাকায় এটাকে গুইল বলে।
২২ শে জানুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪
শেরজা তপন বলেছেন: তাই নাকি? নতুন একটা নাম শুনলাম।
১১| ২২ শে জানুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ২:১৫
গেঁয়ো ভূত বলেছেন: মুলত সেইসব মাল পাচার করে ধনী হয়েছে ' অমুক কোম্পানী' (সেই কোম্পানীর মালিক এখন সরকারের উচ্চপর্যায়ে অধিষ্ঠিত আছেন- কোন প্রমাণ নেই আমার কাছে, তাই নাম বলা সম্ভব নয়)
বিষয়টি অন্ধকার ঘরে কালো বিড়াল (আসলে ঘরে কোনো বিড়ালই নাই) খোঁজার মতো ব্যাপার হয়ে গেল না! আবার নিন্দুকেরা যদি বলে আপনি কায়দা করে গুজব ছড়াচ্ছেন, তখন কি বলবেন? এই জাস্ট জানার জন্য জিজ্ঞাসা করলাম।
ভাল থাকবেন।
২২ শে জানুয়ারি, ২০২৪ বিকাল ৩:২৬
শেরজা তপন বলেছেন: অন্ধকারে কালো বিড়াল দেখেছেন কখন ভাই?
আমারতো ধারণা বিড়ালের চোখ জ্বলে অন্ধকারে অন্তত কিছু একটা আছে এইটা বোঝা যায়।
শোনেন 'দল যার যার কিন্তু দুর্নীতিবাজ সবার'
১২| ২২ শে জানুয়ারি, ২০২৪ বিকাল ৩:০০
নয়ন বড়ুয়া বলেছেন: অনেক কষ্ট ও সময় লাগছে আপনার তাই না দাদা? সার্থক হয়েছে আপনার এই কষ্ট। পড়লাম পুরোটা। জানলামও অনেক কিছু। আমাদের গ্রামে আগে দেখা গেলেও, এখন তেমন দেখা যায় না...
২২ শে জানুয়ারি, ২০২৪ বিকাল ৩:৩২
শেরজা তপন বলেছেন: খুব বেশি কষ্ট লাগে নাই তবে একটু একটু করে লিখতে মাস তিনেক লেগেছে!! অনেক বার এডিট করেছি আবার মুছেছি।এদিক থেকে খুঁজেছি ওদিক থেকে খুঁজেছি- বিরক্ত হয়েছি ভালো লাগেনি আবার একটু লিখেছি,এইভাবে করেছি তারপর একটা কিছু দাঁড়িয়ে গেছে। অনেক ভুল ভ্রান্তি আছে ভবিষ্যতে আরো কিছু যুক্ত হবে; কখনো কারো কারো ভালো লাগে বলে কিংবা অনেকের অনুপ্রেরণা হয়তো এত শক্তি যোগায় অথবা কখনো আমার মানসিক প্রশান্তির জন্য খেটে খুঁটে যাই এইসব ছাইভস্ম লিখে যাই কে জানে...
অনেক ধন্যবাদ সুপ্রিয় ব্লগার প্রিয় ভাই ভালো থাকবেন সুন্দর থাকবেন।
১৩| ২২ শে জানুয়ারি, ২০২৪ বিকাল ৩:০০
জুন বলেছেন: আমার জানামতে থাইল্যান্ডের লোকজন সাপ খায় না। রাজা ভুমিবলের চিন্তাপ্রসুত সাফিসিয়েন্সি ইকোনোমি থাইল্যান্ডে প্রয়োগ এর ফলে ওদের দেশে এত দেশ বিদেশের খাবার উতপাদন হয় যে ওদের সাপ খাওয়ার দরকার হয় না শেরজা। এমনকি ওরা অনেক খাবার নষ্ট করে। তবে ঝিঝি পোকা ভাজি খায় স্ন্যাকস হিসেবে তাও খুব কম লোকজন এবং দরিদ্র লোকজন । ওদের বাজারে গেলে আপনি অবাক হবেন মাছ মাংস তরিতরকারি, ফলমুলের বৈচিত্র্য আর পরিমাণ দেখে। মাটিতে ঘুঘু, কবুতর ঘুরতেছে, গাছে পাকা ফল ঝুলে আছে। আমি কাউকে দেখিনি একটা ঢিল ছুরতে। এইসব খাইতে দেখছি চীনে। চিনে রাস্তায় একটা কুকুর বিড়াল নেই, আকাশে বাতাসে একটা কাক পর্যন্ত নেই। সব খাওয়া শেষ।
২২ শে জানুয়ারি, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪
শেরজা তপন বলেছেন: তা ঠিক বলেছেন ফল-ফলাদি শাক-সবজি উৎপাদনে থাইল্যান্ড সেইরকম উন্নতি করেছে। ওইখানে গিয়ে তো খাইতে খাইতে পাগল হওয়ার মত অবস্থা।
আমি ২০০৮ সালে একবার গিয়েছিলাম ওখানে। আসলেই থাইল্যান্ডের খাবার সেই রকম সুস্বাদু স্ট্রিট ফুডের তুলনাই হয় না।
একটু বেশি বলে ফেলেছি তবে অনেক ধরনের পোকামাকরা খায় শুধু ঝিঝি পোকা না এ ব্যাপারে আমি শিওর আমি থাইল্যান্ডের রাস্তায় অনেক ধরনের পোকামাকড় ভাজা বিক্রি হতে দেখেছি এত সুন্দর ভাবে পরিবেশন করছে যে ও দেখে আমারই খেতে লোভ হয়েছিল।
চিনে আমি আসলে শীতকালে গিয়েছিলাম তো ওভাবে লক্ষ্য করিনি। ঠান্ডায় একেবারে কুঁকড়ে মুকড়ে গিয়েছিলাম আকাশের দিকে তাকানোর সময় পাইনি বেইজিং এর -৮ মানে মস্কোর মাইনাস ৩৮। পুরা শুকনো ঠান্ডা এক ফোঁটা বরফ নাই চারিদিকে একদম শুকনা খটখটা।চীনের কথা শুনে আসলেই খুব কষ্ট লাগলো। তবে কুনমিংটা ভালো লেগেছে ওখানে বেশ খোলামেলা পশুপাখি ভালোই আছে মনে হল।
১৪| ২২ শে জানুয়ারি, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪০
রাজীব নুর বলেছেন: শুনেছি গুইশাপ লেজ দিয়ে বারি মারে।
বড় গুইসাপ একটা আস্তো ছাগল নাকি গিলে ফেলতে পারে।
২২ শে জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ১০:৫৩
শেরজা তপন বলেছেন: বড় গুইসাপ ছাগল গিলে ফেলতে পারে এমন কল্প কাহিনীতে সম্ভব হলেও বাস্তবে ঘটে সম্ভবত! বড়জোর মুরগী-টুরগী খতে পারে!
লেজে বেশ শক্তি দরে এরা- বারি দেয়া অস্বাভাবিক নয়।
১৫| ২২ শে জানুয়ারি, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:১৩
প্রামানিক বলেছেন: অনেক তথ্য সমৃদ্ধ লেখা পড়লাম।
২২ শে জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ১০:৫৩
শেরজা তপন বলেছেন: লেখা পাঠে মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ প্রামানিক ভাই। নিয়মিত ব্লগে আপনাকে পেয়ে ভাল লাগছে।
১৬| ২২ শে জানুয়ারি, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৪০
পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: তথ্য সমৃদ্ধ এবং পরিশ্রমী লেখা। এরকম লেখা জনসচেতনতা বৃদ্ধির জন্য জরুরি। জাপানের আচার তৈরিতে গোসাপ লাগে এই প্রথম জানলাম। ভালো লাগলো যে যা ক্ষতি হবার হয়েছে নুতন করে যাতে না ঘটে তাই রাষ্ট্র আইন করে রপ্তানি বন্ধ করে দিয়েছে। আমি ছোটবেলা আদিবাসী সম্প্রদায়ের এরকম গোসাপ মেরে কাঁধে করে নিয়ে যেতে দেখেছি। কিন্তু রপ্তানির জন্য এরকম নির্বিচারে নিধন কখনও শুনিনি। যাইহোক মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি পাক। প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষায় আমাদের করণীয় এদের বিলুপ্তিকে রুখে দিয়ে জীববৈচিত্র্যে ভরপুর বাস্ততন্ত্রকে রক্ষা করা।
২২ শে জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ১০:৫৮
শেরজা তপন বলেছেন: বাংলাদেশ থেকে যত গুইসাপ রপ্তানী হোত তাঁর একটা বড় অংশ কিন্তু ভারত থেকে ভারত থেকে এদেশে পাচার হয়ে আসত। এই রপ্তানীতে ভারতের পরিবেশের উপরেও বেশ বড় ধরনের প্রভাব পড়েছে।
আইন করেও এখণ পর্যন্ত রপ্নাঈ বন্ধ করা যায়নি- চোরাই পথে দেদারসে পাচার হচ্ছে। লোভ আর অর্থের কাছে প্রকৃতি পশু পাখি অসহায়! মানুষ সবকিছু মেরে সাফ করে দিচ্ছে!!
তবে সচেতনতা যে কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে সেটা ঠিক। কিন্তু যা ক্ষতি হবার হয়ে গেছে!
ধন্যবাদ ভাই চমৎকার মন্তব্যের জন্য। ভাল থাকুন।
১৭| ২২ শে জানুয়ারি, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৪৩
কামাল১৮ বলেছেন: পুরোটা পড়ার কি কোন দরকার আছে।যতটা জানার দরকার ততটা পড়েছি।মানুষ সেটাই পড়ে যাতে তার আগ্রহ আছে।
কিছু জানা একবার জানলেই,জানার আগ্রহ শেষ হয়ে যায়।কিছু জানার মধ্যে চিন্তার খোরাখ থাকে,সেটা যত জানবেন,জানার আগ্রহ আরো বেড়ে যাবে।
২২ শে জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ১১:০০
শেরজা তপন বলেছেন: ফের মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ ভাই। সহমত পোষন করছি।
১৮| ২৩ শে জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ১২:৪২
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
জল-জ্যান্ত আস্ত মানুষেরই কোন দাম নেই ।
সেখানে আবার মানুষের চামড়া!
দু পয়সা দিয়েও কেউ ছোঁবে না।
২৫ শে জানুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ১:৪৭
শেরজা তপন বলেছেন: কি কন ভাই জ্যান্ত মানুষের কিডনি কর্নিয়া হার্ট লিভারের দাম আছে!!
মইরা গেলে ফাউ কেউ নেয় না
১৯| ২৩ শে জানুয়ারি, ২০২৪ সকাল ১০:৩৬
রাজীব নুর বলেছেন: পোষ্টে আবার এলাম। কে কি মন্তব্য করেছেন সেটা জানতে।
২৫ শে জানুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ১:৪৬
শেরজা তপন বলেছেন: নেক ধন্যবাদ। এভাবে বার বার ফিরে আসলে মন্তব্যের পাল্লা ভারি হয়
২০| ২৩ শে জানুয়ারি, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
আমাদের এলকায় দেখেছি অকারণে এই গুইসাপকে পিটিয়ে মেরে ফেলে।
২৩ শে জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ১১:১৬
শেরজা তপন বলেছেন: একসময় মানুষ এমন নৃশংস ছিল। পশু পাখিকে এভাবে নির্দয় ভাবে পিটিয়ে মারতো। এখন অবশ্য কিছুটা পরিবর্তন আসছে...
২১| ২৩ শে জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ১১:৫০
রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ) বলেছেন: দারুণ তথ্যবহুল পোস্ট। আসলেই গুইসাপ নিয়ে এত তথ্য বা লেখা আমি আগে পড়িনি। গুইসাপ ধীরে ধীরে বিলুপ্ত হবার একটা কারণ তাহলে জানা গেলো, চামড়া পাচার।
ছেলেবেলায় এলাকায় এক বড় ভাই ছিলো, তার বাবা মাসুদ কাকা, সারাদিন ঐ লোক বিড়ি খাইত আর নানা রকম ফন্দি ফিকির করত। মাসুদ কাকা একবার বিশাল গুইসাপ মেরে ফেলল ডোবায় নেমে। আমরা সবাই বাচ্চা কাচ্চারা সে দৃশ্য দেখার জন্য চলে গেলাম। পরে শুনলাম মাসুদ কাকা সেই গুইসাপ না-কি ৫০ টাকায় কার কাছে বিক্রি করে দিছে। তিনি এভাবে কয়েকটা গুইসাপ মেরেছিলেন এবং বিক্রি করেছিলেন।
এলাকায় তিনি সে জন্য ভালো লোক হিসাবে তকমা পেয়েছিলেন, কারণ আমাদের বলা হত গুইসাপ সাপের চেয়েও বিষাক্ত। লেজ দিয়ে বাড়ি দিয়ে মানুষ মেরে ফেলে, সাপ খেয়ে ফেলে, দূর থেকে বিষ ছিটাইয়া দিতে পারে।
মাসুদ কাকার সাথে আবার কখনও দেখা হলে, জানা যেত তিনি তার কাছে ঐ জিনিস বিক্রি করেছিলেন।
২৫ শে জানুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ১:৫১
শেরজা তপন বলেছেন: চমৎকার মন্তব্যে প্রীত হলাম! দেরিতে উত্তর দেবার জন্য আন্তরিকভাবে দুঃখিত।
চিন্তা করেন একটা ফুলকপির দাম পঞ্চাশ টাকা আর একটা আস্ত গুইসাপ বিক্রি করেছে পঞ্চাশ টাকায়! মানুষ কি ভয়ঙ্কর এক জাতি।
কিছু টাকার জন্য এলিয়েনের কাছে দুনিয়াটা বেঁচে দিতে পারে
২২| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ১:২৯
জুন বলেছেন: আমার নিজের তোলা ছবি
২৫ শে জানুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ১:৪৫
শেরজা তপন বলেছেন: ভাল খানা দানা করে পেটটা ফুলিয়েছে কেমনে
কতদিন সামনা সামনি গুইসাপ দেখি না
ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য। নিজের তোলা ছবি বলে কথা।
২৩| ২৫ শে জানুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ১:৩১
জুন বলেছেন: ব্যাংককের ডুসিট এলাকায় সকালে জোয়ারের পানিতে ভেসে যাওয়া খালের মাঝে জোড়া সাতারু
ছবি আমার তোলা না
২৫ শে জানুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪
শেরজা তপন বলেছেন: ওয়াও লাভার ওয়াটার মনিটর লিজার্ড!!! চমৎকার ছবি
২৪| ২৫ শে জানুয়ারি, ২০২৪ বিকাল ৩:৫৬
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: অনেক তথ্যবহুল পোস্ট।
আমরা মাছ, মাংস, গরু-খাঁসির চামড়া রপ্তানি করতে পারলে গুইসাপ আর ব্যাঙ রপ্তানি ক্ষতিকারক হবে কেন? বর্তমানে বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন জায়গায় সাপের খামার দেখা যায়। গুইসাপের খামারও করা যায়, প্রচুর সংখ্যক গুইসাপ রপ্তানি করে বিরাট অংকের ফরেইন কারেন্সি দেশে আনা যায়। গুইসাপ কোনো ক্ষতিকর প্রাণী না, বিষধর সাপের মতো। আবার এদের যে উপকারিতার কথা বললেন, তাও খুব উল্লেখযোগ্য মনে হলো না আমার কাছে।
প্রচুর গুইসাপ দেখেছি ছোটোবেলায় এবং বড়োবেলায়ও। ছোটোবেলায় তো ডাইনোসর সম্পর্কে জানতাম না। বড়োবেলায় এদের দেখে মনে হলো, আরে, এরা দেখি ডাইনোসরের ক্ষুদ্র ভার্সন
আরেকটা প্রাণী আছে, নাম তার তক্ষক। রাতের বেলা ভয়ঙ্কর ডাক দিয়ে আপনার পিলে চমকে দেবে ঐ বস্তুও নাকি বিদেশে পাচার হয়ে বিরাট টাকায়
২৫ শে জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ১১:০২
শেরজা তপন বলেছেন: খামারে উৎপাদন করে রপ্তানী করলে কোন সমস্যাই নেই।
প্রকৃতি পরিবেশের জন্য কোন প্রানী কতটুকু উপকারি এই নিয়ে বিস্তারিত গবেষণা করা সম্ভব হয়নি। এই প্রাণী বিলুপ্ত হবার পরে আমাদের প্রকৃতি ও পরিবেশের উপর কি বিরূপ প্রভাব ফেলবে সেটা জানা সম্ভব হয়নি। তবে প্রকৃতির ভারসাম্যের জন্য অবশ্যই এর গুরুত্ব অপরিসীম।
এরাও হয়তো কচ্ছপ,কচ্ছপ প্লাটিপাস, কুমিরের মত প্রাগৈতিহাসিক কোন প্রাণীর আদিরূপ!
হ্যাঁ আমি টাঙ্গাইলে আমার মামা বাড়িতে বহুরাতে তক্ষকের ডাকে ঘুমাতে পারিনি ভয়ে। এই নিরীহ গিরগিটিটাকে নিয়েও অনেক মিথ্যে মিথ ছড়িয়ে ছিল। মাঝে কিছু চক্র কোটি কোটি টাকা এসব বিক্রির কথা বলে বহু মানুষকে পথে বসিয়ে দিয়েছে।
©somewhere in net ltd.
১| ২২ শে জানুয়ারি, ২০২৪ সকাল ১০:০১
লাইলী আরজুমান খানম লায়লা বলেছেন: সকালেই তথ্য সমৃদ্ধ একটি পোস্ট পড়লাম। সেইসাথে প্রিয়তে নিয়ে নিলাম।
ছোটবেলা এই গুইসাপ দেখে ভীষণ ভয় পেতাম, ভাবতাম যদি একবার থু থু ছিটায় তো যেখানে থু থু লাগবে সেখানে ঘা হয়ে যাবে। এখন গ্রামে গেলে আর তেমন গুই সাপ দেখি না। এত সংখ্যক গুই সাপ বাইরে পাচার হতে থাকলে একসময় আর এই সাপ দেশে থাকবে না, পরিবেশের ক্ষতি হবে।
আমরা আর কবে সচেতন হবো দাদা ঠাকুর !!!!!
আন্তরিক ধন্যবাদ এই সমৃদ্ধ পোস্টটি করার জন্য ----------