| নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
জাহিদ অনেক রেগে আছে ৷অভিমান করে সেই যে সকালবেলা বেরিয়েছে এখনও বাড়ি ফেরেনি ৷সকাল থেকে কিছু খায়নি৷ এখন প্রায় সন্ধ্যা হয়ে এসেছে৷ পাড়াসুদ্ধ হৈচৈ পড়ে গেছে ৷সবাই তাকে হন্যে হয়ে খুজছে ৷
কথা ছিল জেএসসি-তে গোল্ডেন এ-প্লাস পেলে জাহিদকে বাইসাইকেল কিনে দেওয়া হবে ৷সাইকেলের আশায় সে সারা বছর মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা করে৷ কয়েকদিন অাগে পরিক্ষার রেজাল্ট দিয়েছে ৷প্রত্যাশা অনু্যায়ী সে গোল্ডন এ-প্লাস পেয়েছে ৷আজ সকালে জাহিদ বাবাকে সাইকেল কিনে দেয়ার কথা বলে ৷ জাহিদের বাবা জামিল সাহেবের আর্থিক অবস্থা ভালো না ৷একসময় স্বচ্ছলতা থাকলেও এখন আগের অবস্থা নেই৷ বার্ধক্যজনিত নানা রোগ তার ৷এসবের চিকিৎসায় অনেক টাকা খরচ হয়ে গেছে ৷তাই তিনি জাহিদকে বলেন এখন তিনি সাইকেল কিনে দিতে পারবন না ৷
জাহিদ রাগ করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায় ৷বাড়ির সবাই মনে করেছিল রাগ কমলে সে ফিরে আসবে ৷অথচ সন্ধ্যা হয়ে গেলেও জাহিদ এখনও ফেরেনি৷ সবার ছোট হওয়ায় পরিবারের সবার তার প্রতি দরদ বেশি ৷সবাই চিন্তিত হয়ে উঠলো ৷তার বড় ভাই খালেদসহ গ্রামের আরও অনেকে তাকে খুজছে ৷মসজিদ থেকেও মাইকিং করা হয়েছে ৷জাহিদের মা নাসরিন বেগমের গাল বেয়ে টপটপ করে পানি পরছে ৷
.
সকালে জাহিদ বাড়ি থেকে বেড়িয়ে সোজা গ্রামের পাশের রাস্তা ধরে হাঁটতে থাকে ৷সে মনে মনে সংকল্প করে যে সে আর ঐ বাড়ি যাবেনা ৷ যেখানে সামান্য সাইকেল কিনে দেয়ার আবদার পূরণ হয় না সেখানে থেকে কী লাভ ৷তার সব বন্ধুরই সাইকেল আছে ৷সেদিন তারা সবাই সাইকেল নিয়ে কোটবাড়ি ঘুরতে গেলো ৷অথচ সে যেতে পারলো না৷
হাঁটতে হাঁটতে সে নদীর তীরে এসে পৌছল ৷গোমতী নদী ৷নদীতে তীব্র স্রোত ৷ত্রিপুরার পাহাড়ে বৃষ্টি হচ্ছে ৷বৃষ্টির পানি নদী বয়ে যাচ্ছে ৷জাহিদ নদীর তীরে ঘাসের উপর বসে রইল৷
বিকালে নদীর তীরে অনেকে ঘুরতে আসে ৷সেদিন ঘুরতে এসেছিলেন জাহিদদের গ্রামের ফারুক ভাই ৷গ্রামেে থাকতেই তিনি শুনেছিলেন জাহিদকে পাওয়া যাচ্ছে না ৷তিনি নদীর তীরে জাহিদকে দেখতে পেলেন ৷জাহিদের পেছনে থেকে ডাক দিলেন ৷জাহিদ পেছনে ফিরে তাকালো ৷
—তুমি এখানে কী করো! তোমার জন্য তো সবাই চিন্তিত ৷বাড়ি যাবে না? আসো আমার সাথে ৷
—আপনি যান ৷আমি আর ঐ বাড়িতে যাবো না ৷কখনোই না ৷
—হেঃহেঃহেঃ! কী যে বলো! তোমার আব্বু আামাকে বলেছে তোমাকে সাইকেল কিনে দেয়নি বলে তুমি বাড়ি থেকে বেরিয়ে গেছো ৷ ঠিক কিনা?
—হুম৷
—তুমি তো এখন বড় হয়েছো তাই তোমার বোঝা উচিত ৷ টাকা থাকলে তোমার বাবা ঠিকই সাইকেল কিনে দিতো ৷ তোমার আব্বুর সাথে আামার সম্পর্ক ভালো তাই জানি তিনি এখন কোন অবস্থায় আছেন ৷ তার চিকিৎসায় প্রচুর টাকা খরচ হয়েে গেছে৷ অনেক কষ্টে তিনি এখন পরিবার চালাচ্ছেন ৷ তাই তিনি তোমাকে সাইকেল কিনে দিতে পারেন নি ৷
—তাহলে কিনে দিবেন বলেছিলেন কেন?
—তখন তার আর্থিক অবস্থা ভালো ছিল ৷ এখন আার সে অবস্থা নেই ৷ এখনও তুমি কিছু খাওনি ৷ বাড়িতে আসো৷ তোমার মা বাড়িতে কাঁদছেন ৷তোমার বাবা হন্যে হয়ে খুঁজছে ৷আমি কল দিয়ে তাঁদেরকে বলছি তোমার কথা ৷আমার সাথে আসো৷
ফারুক ভাই মোবাইল কানে দিয়ে হাঁটা ধরলেন ৷ জাহিদ সন্ধ্যার লাল আলোয় ফারুক ভাইয়ের পিছু পিছু হাঁটতে লাগলো ৷
২ আগষ্ট ২০১৮
[কা্ঁচা হাতে প্রথম গল্প লেখার প্রচেষ্টা৷জানি এটা কোনো গল্প হয়নি৷ তবুও...৷ গল্পটি প্রথম প্রকাশিত হয় shihab3.blogspot.com-এ]
০২ রা আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৪:৩৩
শাহরিয়ান নাজিম সিহাব বলেছেন: কমেন্ট করার জন্য ধন্যবাদ ৷
©somewhere in net ltd.
১|
০২ রা আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৩:৩৭
রাজীব নুর বলেছেন: এটাই মনে হয় জাহিদের সাইকেল।

এটাই মনে হয় জাহিদের সাইকেল।