নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি শিহাব আহমেদ। লেখাপড়া করেছি, কম্পিউটার সাইন্স এ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং এ। টেকনিক্যাল বিষয়গুলো নিয়ে পড়াশোনা করতে ভাল লাগে। সে ভাল লাগার আলোকে যা জানি তা অন্যকে জানিয়ে দিয়ে অভিভূত করতে ভালবাসি। ভাল লাগা আর ভালবাসার সংমিশ্রণ ঘটাতে সামুতে আগমন।

শিহাবআহমেদ

টেকনিক্যাল ব্লগ লেখক

শিহাবআহমেদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

সিসিএনএ (আর/এস) ১ম পর্ব (ল্যান কাড/নিক কার্ড ও ম্যাক এ্যাড্রেস) | CCNA (R/S) 1st Part ( LAN Card or NIC Card & MAC Address )

১৭ ই নভেম্বর, ২০১৮ রাত ৮:৪০



ইন্টারনেট কে আমরা চিনি বিশ্বব্যাপি যোগাযোগ এর সবচেয়ে বড় মাধ্যম হিসেবে। আমরা জানি এটা কিভাবে ব্যবহার করে কি কি সুবিধা নেওয়া যায়। কিন্তু কিভাবে এই সুবিধাটা আমাদের হাতের নাগালে এসে পৌছাচ্ছে তা আমরা খুব কমই জেনে থাকি। আমাদের জানার প্রয়োজন অনুভবও হয় না। তবে বর্তমান এই প্রতিযোগীতামূলক বিশ্বে আপনার নিরাপত্তার জন্যই আপনার জেনে রাখা উচিৎ কোনটা কিভাবে আপনার হাতের নাগালে পৌছাচ্ছে, কি কি মাধ্যম হয়ে, কোন কোন নিয়মের ভেতর দিয়ে আপনার তথ্য হাত-বদল হচ্ছে, কিভাবে আপনার বাসার ওয়াইফাই রাউটার টা আপনাকে সার্ভিস দিচ্ছে, আপনার আইএসপি আপনাকে ইন্টারনেট কানেকশন দেওয়ার পর আপনার ও তাদের ডিভাইসগুলোর মধ্যে কি কি ডাটা আদান-প্রদান হচ্ছে এসব আপনার অবশ্যই জেনে থাকা উচিৎ। আপনি কোথায় কতোটা নিরাপদ তা আপনাকে জানতে হলে আপনাকে নেটওয়ার্কিং নাড়ি-নক্ষত্র না হোক অন্তত টুকটাক কিছু তথ্য তো জানারই দরকার। এজন্য আপনাকে খুব বেশি পড়াশোনা করবার দরকার নেই, আমার সিসিএনএ সিরিজের বেছে কয়েকটা পর্ব পড়ে নিলেই আপনি নিত্য প্রয়োজনীয় কিছু ব্যাপার স্যাপার জেনে ফেলতে পারবেন ইনশাআল্লাহ।

নেটওয়ার্কিং কি এবং কেনো করব তা আমরা বিগত দুটো পোস্ট এ জেনে ফেলেছি। আরো জেনেছি নেটওয়ার্কিং প্রফেশনের বিভিন্ন স্তরগুলো সম্পর্কেও। আজকের পর্ব থেকে আমরা নেটওয়ার্কিং এর প্রথম স্তর সিসিএনএ শুরু করব, কেনো আমরা প্রথমেই সিসিএনএ দিয়ে শুরু করতে যাচ্ছি সেটাও বিগত পোস্ট দুটো থেকে আমরা ইতমধ্যে জেনে ফেলেছি। সিসিএনএ এর সিলেবাস মূলত ইন্টারনেটওয়ার্কিং নির্ভর। যদিও সিসিএনএ করার আগে সিসিইএনটি করা রিকমেন্ডেড যেটাতে একটা ছোটখাট নেটওয়ার্ক কিভাবে তৈরি করতে হয়, মেইনটেইন করতে হয় এবং ছোটখাট সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে কিভাবে সমাধান করতে সেসব শেখানো হয়। কিন্তু দূর্ভাগ্যবশত সিসকো ভেন্ডোর এর এই সিসিইএনটি কোর্স আমাদের দেশে কোথাও চালু নেই বরং সৌভাগ্যবশত সিসিএনএ কোর্সের মধ্যেই আমাদের দেশের প্রায় সব ইন্সিটিটিউটগুলোতে সিসিইএনটি সিলেবাসের আবশ্যিক অংশগুলো অন্তর্ভূক্ত করা আছে। তাই আমিও সেই ধারাবাহিকতা রক্ষা করে সিসিইএনটি সিরিজটি আলাদা করে চালু না করে সরাসরি সিসিএনএ সিরিজটি শুরু করছি। এই সিরিজেই আমরা শিখে যাব কিভাবে নেটওয়ার্ক তৈরি হয়, কি কি জিনিস প্রয়োজন হয় এবং কতো খরচ হয়। এখন এই সিরিজের শুরুতেই আমরা নেটওয়ার্ক সম্পর্কিত বেসিক কিছু থিওরিক্যাল শব্দ সম্পর্কে জানার ও বোঝার চেষ্টা করব। তারপরও যদি কোনো অংশে কারো কিছু বুঝতে অসুবিধা হয়ে যায় তবে পোস্টের শেষে আমার ইমেইল ঠিকানা জুড়ে দেওয়া থাকবে, প্রয়োজনে মেইল করবেন কিংবা মতামত বাক্সে প্রশ্ন জুড়ে দেবেন, ইনশাআল্লাহ অবশ্যই উত্তর লিখে জানাবার চেষ্টা করব।

LAN Card/NIC Card:





উপরের ছবিতে আপনারা যে দুটো ছবি দেখতে পাচ্ছেন, এটার বানিজ্যিক নাম হচ্ছে LAN (Local Area Network) Card আর থিওরিক্যাল নাম হচ্ছে NIC (Network Interface Card) Card। সব কম্পিউটার এর মাদারবোর্ডেই এই কার্ডটি তৈরি থেকেই সংযুক্ত থাকে, যাকে আমরা বলে থাকি বিল্ট ইন থাকা। উপরের ছবির কার্ডটা বহুলভাবে ডেস্কটপ কম্পিউটার গুলোতে দেখা যায় এবং কিছু ল্যাপটপেও দেখা গিয়ে থাকে। যেসব ডেস্কটপ কম্পিউটার তারের পাশাপাশি ল্যাপটপের মতো ওয়াইফাই সুবিধা পেতে চায় তারা ব্যক্তিগত ভাবে নিচের ছবির মতো ল্যান কার্ডও যুক্ত করে নিতে পারে। উপরের ল্যান কার্ড টা Wired LAN Card এবং নিচের টা Wireless LAN Card। LAN Card বা NIC Card ছাড়া কোনো কম্পিউটারই ইন্টারনেট কিংবা কোনো ধরণের নেটওয়ার্কিং সুবিধা পেতে পারবেনা। আপনার মোবাইল ফোনটিতেও একটি LAN Card/NIC Card সংযুক্ত আছে যার মাধ্যমে আপনি ইন্টারনেটের সাথে যুক্ত হচ্ছেন। প্রতিটি LAN Card/NIC Card এরই একটা করে ইউনিক নং বা এড্রেস থাকে। যাকে বলা হয় "MAC (Media Access Control) Address বা Physical Address। এটাকে নং বলা হতে পারে এই অর্থে যে, এই এ্যাড্রেসটা হেক্সাডেসিমেল নং পদ্ধতি ব্যবহার করে তৈরি করা। এই ম্যাক এ্যাড্রেস ৪৮ বিটের। আমরা যারা সাইন্স ব্যাকগ্রাউন্ডের স্টুডেন্ট তারা জেনে থাকবো নং পদ্ধতি মোট ৪ ধরণের: ডেসিমেল, বাইনাররি, অক্টাল এবং হেক্সাডেসিমেল। হেক্সাডেসিমেল এর এক বিট সমান বাইনারির চার বিট এটাও আমাদের জেনে থাকার কথা। ম্যাক এ্যাড্রেস ছয়টা ভাগে বিভক্ত হয়ে থাকে এক এক ভাগে ২ টা হেক্সাডেসিমেল নং থাকায় এক এক ভাগ এর বিট সাইজ ৮ বিট, এই এক এক ভাগকে নেটওয়ার্কিং এর ভাষায় অক্টেট বলে সম্বধিত করা হয়ে থাকে। আমরা যখন কোনো নেটওয়ার্ক কমিউনিকেশনে যায় অর্থাৎ আমার ডিভাইস যখন অন্য আরেকটা ডিভাইস এর সাথে যোগাযোগে সামিল হয় তখন দুইটা এ্যাড্রেসের প্রয়োজন হয়, একটা হলো এই ম্যাক এ্যাড্রেস বা ফিজিক্যাল এ্যাড্রেস আর আরেকটা হলো আইপি এ্যাড্রেস বা লজিক্যাল এ্যাড্রেস। নেটওয়ার্কে যুক্ত হতে ইচ্ছুক প্রতিটি কম্পিউটারকেই এই দু প্রকারের এ্যাড্রেস থাকতে হয় নচেৎ নেটওয়ার্কে যুক্ত হতে পারবেনা। এই ম্যাক এ্যাড্রেসের আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এইটা সম্পূর্ণ ইউনিক একটা এ্যাড্রেস, পৃথিবীর যতো LAN Card/NIC Card আছে তাদের কারো ম্যাক এ্যাড্রেস কারো সাথে মিলবে না। সবারটা সবার থেকে আলাদা। আচ্ছা একই ফোন নং কি একই সাথে কখনো দুজন মানুষের একই হতে পারে? যদি হতো, তাহলে কি ঐ দুই ব্যক্তির সাথে মানুষ ঠিকঠাক ভাবে যোগাযোগ করতে পারতো? পারতো না নিশ্চয়? আবার কারো যদি কোনো ফোন নং ই না থাকতো, তার সাথে কি আদৌ যোগাযোগ করা যেত? যেত না, তাইনা? তাহলে নেটওয়ার্কে যুক্ত হতে কেনো এসব এ্যাড্রেস প্রয়োজন সেটাও নিশ্চয় অনুভব করতে পারছেন? একই ভাবে পৃথিবীর প্রত্যেকটা ডিভাইস কে যেন আলাদা আলাদা ভাবে আইডেন্টিফাই করা যেতে পারে, পরস্পর পরস্পরের সাথে যেন যথাযথভাবে যোগাযোগ করতে পারে সেজন্য এই ইউনিকনেস সেটাও আশা করি অনুভব করতে পারছেন। এই ইউনিকনেস এর জন্যই নেটওয়ার্ক এ যুক্ত অসাধু ব্যক্তিটিকে ট্রেস করে তার দরজায় পৌছে যাওয়া যাচ্ছে। নচেৎ নেটওয়ার্কে যুক্ত ছিচকে চোর-ডাকাতদেরও নাগালে পাওয়া মুশকিল হতো।

আচ্ছা এতোক্ষণে তো জানলাম ল্যান কার্ডে একটা ইউনিক এ্যাড্রেস থাকে। কিন্তু সে এ্যাড্রেসটা দেখতে কেমন আর সেটা যে ইউনিক তা ইউনিকনেস পাচ্ছে টা কি পদ্ধতিতে সেটা কি আমাদের জানা উচিৎ না? উচিৎ, ম্যাক এ্যাডেস দেখতে "00:09:3D:12:33:33" এরকম হয় আর এটা নির্ধারণের পদ্ধতিটি হলো, প্রতিটি ল্যান মেনুফ্যাকচার কম্পানিকে IEEE অধীনে রেজিস্ট্রেশন করতে হয়, রেজিস্ট্রেশন করা হলে IETF (Internet Engineering Task Force) সংস্থার মাধ্যমে ঐ ভেন্ডোর বা ল্যান মেনুফ্যাকচারার কম্পানি একটা আইডি পেয়ে থাকে যা ঐ নির্দিষ্ট ভেন্ডোর এর পরিচয় বহন করে আর এই আইপিটি হলো প্রতিটি ম্যাক এ্যাড্রেস এর প্রথম ২৪ বিট যা ছয় অক্টেট এর প্রথম ৩ অক্টেট এ থাকে আর বাকি তিন অক্টেট এর আইপি কে প্রতিটি ভেন্ডোর তার নিজ ইচ্ছানুসারে Randomly modify করে সর্বোচ্চ সংখ্যক ম্যাক এ্যাড্রেস তৈরি করে। এর ফলে প্রথম ৩ অক্টট এর আইডি দেখে ল্যানটির মেনুফ্যাচারার কে তা সহজেই সনাক্ত করা যেতে পারে। আপনার কম্পিউটার এর ম্যাক এ্যাড্রেস দেখতে হলে আাপনাকে Windows Command Prompt এ টাইপ করতে হবে ipconfig /all এবং এটা টাইপ করে enter key প্রেস করলে যে ইনফরমেশন গুলো শো করবে তার মধ্যে থেকে নিচের ছবির মতো ফিজিক্যাল এ্যাড্রেসটাই হলো আপনার ল্যান কার্ড এর ম্যাক এ্যাড্রেস।



প্রতিটি ল্যান কার্ডে একটি করে বাফার মেমোরি নামের এক ধরণের ছোট চিপ থেকে থাকে, যেখানে ডাটা বিট আকারে প্রাথমিকভাবে এসে জমা হতে থাকে পরবর্তীতে বাফার মেমোরি থেকে ডাটা প্রসেসরের নিকট প্রসেসিং এর জন্য প্রেরীত হয়ে থাকে।

বাফার মেমোরি ল্যান কার্ডে ছাড়াও প্রিন্টারেও ব্যবহৃত হয়ে থাকে, ফলে আপনি যদি প্রেনড্রাইভে থাকা কোনো ডকুমেন্ট এর ৫ টা পেজ প্রিন্ট করার কমান্ড একসাথে দিয়েই পেনড্রাইভটি খুলে নেন তাও অন্তত ১ টা পেজ প্রিন্ট হয়ে বের হয়ে আসবে কেননা প্রিন্টার তার বাফার মেরোরিতে আপনার প্রিন্ট কমান্ড দেওয়ার সাথে সাথেই কিছু ডাটা পাঠিয়ে দিয়ে থাকবে।

আজকের পর্ব এ পর্যন্তই রইল। আগামীতে আমরা নেটওয়ার্কিং আরো সব গুরুত্বপূর্ণ টপিক্সগুলো নিয়ে বিস্তারিত জানার ও বোঝার চেষ্টা করব ইনশাআল্লাহ্।

Contact: [email protected]



মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.