![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ফুটবল ফুটো কইরা দৌড়ানোর যে অভ্যাসটা আমার বাপ দাদাগো আছিলো তার সঙ্গে মিল খায় তোমাগো ছটফটানি। এই ধরো 'পয়লা বৈশাখে ইলিশ খাইয়েন না' এমন বক্তব্য দিয়া তোমরা তোমাগো খাওন দাওনের ম্যানু রাস্তায় রাস্তায় ঝুলাইয়া দিছো নাকি শুনলাম। যাক এক উছিলায় তোমাগো খাওনের ম্যানু ফলো করার সুযোগ খুইজেঁ পাইলাম। সমস্যা হইয়া দাঁড়াইলো আমার বউ আর ইলিশ। বউ নাকি কিছুদিন আগে বহু কষ্টে টাকা জমায়ে একখান ইলিশ কিন্না বরফে রাখছিলো। চেতার লগে বউ ইলিশ আইনা সামনে রাখে। অনেকক্ষণ পরীক্ষা নিরীক্ষা কইরা বুঝতে পারি' ইহা জাটকা না, আবার পেটে ডিমও নাই। এহন কথা হইলো বাঁচামু কারে? বউয়ের অনুরোধ? ইলিশ? খাওনের ম্যানু? নাকি আমনেগরে? বুঝবার পারতেছি না।
তয় কথা হইলো একদিন গেছিলাম কাঁঠালতলার সার্কাসে। চেনাজানা একজন ভাঁড়, সাহিত্যিক সম্বোধন কইরা খবর জানতে চাইলো আমার। একটু মুচকি হাইসা তারে বুঝাইতে চাইছি কপালে চাপিলা পান্তা জুটে নাই। সম্ভবত এটাও বুঝাইতে চাইছি নির্দিষ্ট তাঁবুখানা হয়তো রাইতের আন্ধারে অপহরণের সুযোগ করে নিছে কেউ। উনিও হয়তো আমারে নিয়া ভাইবা নিছেন, অমন সুন্দরীর লগে চিলিক চিলিক খেললে কেউ সাইধা আইসা খাওয়াইবো না। অবশেষে ভাঁড়ের ভাবনাটারে সফল কইরা কাঁঠালতলা ত্যাগ করি। এটা সবসময়ই করি, অন্যের চিন্তাটারে সফল করার সুযোগ থাকে ভালো।
একবার মধুর লগে তুলসীপাতা কচলাইয়া রস মিশাইয়া খাইতে দিছিলো মায়। ঘুম থেইকা উইঠা চোখ কচলানোর আগেই সাদা রঙের ডাট ভাঙা কাপে দিতো। এক ঢোকে না গিললে স্বাদের একখান ধমক খাইতাম। আর দাদু গলায় ঝুলাইয়া দিছিলো শিশার চান। যখন তখন চুইষে খাওনের জন্যে। এইসবে নাকি তোতলানি কমে। আদৌ কমেছে কিনা, জানিনা। কমলে জিহ্বাটা পাতলা হইতো মনে হয়। তাও হয় নাই। এ কারণেই বোধহয় কোনো কথার রিয়েক্ট হুট কইরা কইতে পারি না। আর এ না কওনের কারণেই অনেকেই আমারে দুর্বল ভাইবা বাঁশ দেওনের চেষ্টা লাগায়। ইদানিং আমারো বাঁশ নিতে ভাল্লাগে। বাঁশের তৈরি মানে বায়োলোজিক্যাল একখান দালান বানাইয়া বিশ্বরেকর্ড গড়মু যেমনি হোক।
এমনিতে কানা হইবার কারণে ঘটনা দেখার চাইতে শুনতে কম্পোর্ট ফিল করতাম। একবার কথা শুনতে গিয়া, হু বলার কারণে কানে এহেন জোরে টাস্কি মারেন আমার জেঠামশাই। তৎফল আমাকে দীর্ঘ ঊনিশ দিন সরকারি টেলিভিশন চ্যানেল দেখতে হইছিল। পরে জানতে পারলাম সরকারি টেলিভিশন চ্যানেল দেখা আমার বাড়তি শাস্তির মধ্যে পড়েছে। তাতে কোনো কষ্ট পাইছি বলে মনে হয়না। কারণ এ ঊনিশ দিনে দেশের কোনো অঘটনের নিউজ কানে আসে নাই। যার জন্য আমার হৃদরোগের উন্নতিতে ভাটা পড়ছিলো। আরেকটা ব্যাপার জেঠামশাই হয়তো জানতেন না 'কানারা মাঝে মাঝে দেন্ধাও হয়'। জেঠামশাইর এ অঙ্গতাকেই নিজের ক্রেডিট ভাইবা চুমু খাইছিলাম নরম জাগা দেইখা। ঐ নরম জাগা ক্যামনে শক্ত হইলো তার গল্প আরেকদিন। আরেক বয়ানে।
হাসপাতালের সুইপার হুমায়ুন একবার কইছিলো 'দাদা, হাসপাতালে এতো ঘন ঘন আসেন ক্যান? ঐদিন আমি তারে কিছুই বুঝাইতে পারি নাই। ঠোঁটের লগে ঠোঁট ঘসাইয়া জিহ্বা দিয়া ঠেস মাইরা ঢুইকা গেছিলাম ডাক্তারের সেবা পাওনের লাইগা। প্রতিদিনই এমোন করি। হুমায়ুন কিছু কইতে চায়। অয় আমার ঠোঁটের ঘষাঘষি দেইখা চোখ নামায়া আনে। আর আমি রোগী সাইজা ঢুইকা পড়ি। এরপর আর বাইর হইতে পারি নাই।
এহন তোমরা যেহানে ফকফক কইরা উইড়া বেড়াও, ঐহানে আগে ময়নার ঠোঁট দিয়া গান গাইতো শংকর। শংকর মাঝে মাঝে তোমগো লগে মারবেল খেইল্লা মাথা ঝাকাইতো। তার লগে লগে তোমরা হাততালি দিতা। শংকর হারাইয়া যাওনের পর তোমাগরে উইড়া বেড়াইতে দেখছি। শংকরের বুঝনের দরকার আছিলো, তোমাগো এক একটা হাততালি ছিলো শংকরের জন্য মরণ কামনা। তয় শংকর না বুইঝা নিলেও আমি ঠিকই বুইঝা নিছি। আমি হারায়া যাওনের আগে তোমাগরে একটা কোল বালিশ দিয়া যামু।
©somewhere in net ltd.