![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মুসলমানেরা বর্তমান সময়ের সবচেয়ে নির্যাতিত জাতি- এই কথাটির সঙ্গে আমি কোন দ্বিমত পোষণ করি না। বরং দ্বি-মত পোষণ করি যখন এই প্রশ্নের উত্তরে পালটা প্রশ্ন হয় কেন তারা নির্যাতিত এবং কীভাবে তারা নির্যাতিত সেখানে, এবং সেখানে এদের দায় কি? আমি আগেও বিচ্ছিন্নভাবে লিখেছি। আগেই বলে নিচ্ছি, এটা আমার সামগ্রিক রাষ্ট্র বা বিশ্ব রাজনীতির চিন্তা না। তবে একটি বিচ্ছিন্ন হলেও সুনির্দিষ্ট চিন্তা।
এক। মুসলমানদের প্রাকৃতিক সম্পদ আছে
দুই। পৃথিবীর বৃহৎ জনশক্তি মুসলমান এবং বিশাল মার্কেট তারা
আর সব কারণ বাদ দিলেও এই দুটো কারণের জন্যেই পৃথিবীর সকল শক্তি মুসলমানদের টার্গেট করবে নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্যে। বিশ্ব শক্তিতে আমেরিকা এখন একচ্ছত্র সামরিক শক্তির অধিকারী। অর্থনৈতিক শক্তি হিসাবেও। যদিও চীন এগিয়ে আসছে কিন্তু মনে রাখতে হবে চীন এখন আমেরিকার এক তৃতীয়াংশ অর্থনীতির মাপে। আমেরিকার রাজনীতি এবং পররাষ্ট্র নীতিতে প্রভাব রাখতে পারাটা রাজনীতির মাঠে বুদ্ধিমানের কাজ। এই কাজ টি কিন্তু করে আসছে ইহুদী এবং খ্রিশ্চিয়ান শক্তিগুলো (আমি এখানে ধর্মীয় পরিচয় কেই বেশি আনছি কারণ আমার আলোচ্য বিষয় মুসলমান)। লক্ষে করে দেখুন ইজরাইল একটি ছোট্ট দেশ হয়েও আমেরিকার অর্থনীতি, মিডিয়া, রাজনীতিতে কী রকমের প্রভাব তাদের। অন্যদিকে খ্রিশ্চিয়ান ইন্সটিটিউশন গুলো ইউরোপ থেকে মুখ সরিয়ে আমেরিকার ওপরে নির্ভরশীল বেশি। একারণেই আমেরিকার মধ্যে মুসলিম বিরোধী শক্তিগুলো এতোটা প্রকট। অন্যদিকে মাত্র একটি বা দুটি মুসলিম ধনী দেশ আমেরিকার ওপরে প্রভাব রাখতে পারছে, যেমন সৌদি আরব, মিশর, কাতার, যাদের আবার বিশ্ব রাজনীতি তে তেমন ভূমিকা নাই।
এবার আসি অন্য দুটো বড় শক্তির ভূমিকায়। রাশিয়া এবং চীন পুঁজিবাদের বিরুদ্ধে কথা বললেও তার বিপরীতে সেন্ট্রাল কন্ট্রোলড ইকোনমির সফলতা দেখাতে ব্যর্থ হয়েছে। চীন তো বহু আগেই তাদের সেনঝাও প্রদেশ খুলে দিয়েছিল বিশ্ব পুঁজির খোলা বাজারের জন্যে। এখন চীন এবং রাশিয়ার উদ্দেশ্য মুসলমানদের আমেরিকা বিরোধী করে তোলা, তাতে আখেরে তাদের বিশাল লাভ। মুসলমানেরা আমেরিকার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে, এই ফাকে চীন নিয়ে নিচ্ছে ছোটখাটো ঠিকাদারি কাজ থেকে শুরু করে বড় বড় সাপ্লাইয়ের কাজ। রাশিয়া, চীন মিলে আমেরিকার অর্থনীতির বিরুদ্ধে প্রতিনিয়ত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে এবং যাবে। এখানে শ্রেনী আর পুঁজির কেউ তোয়াক্কা করছে না। শ্রেনীর স্বার্থ দেখা এবং কল্যানকর শ্রেনী স্বার্থের কথা চিন্তা করলে আমেরিকা অনেক আগেই একনিষ্ঠ পুঁজিবাদ ছেড়ে কল্যান রাষ্ট্রের দিকে ঝুঁকেছে, যা চীন বা রাশিয়াও এখনও পারে নি। একারনেই চীন বা রাশিয়ায় দারিদ্র এতো বেশি (আমার এই কথাগুলো গবেষণালব্ধ প্রমানের ভিত্তিতে বলা)। এইসব ফেনোমেনার অনেক তাত্ত্বিক ব্যাখ্যা করা যায়। কিন্তু দিন শেষে মুসলমানেরা নিজেদের আধুনিক সময়ের উপযোগী, প্রতিযোগিতামূলক শক্তি বানাতে ব্যর্থ হচ্ছে। ব্যর্থ হচ্ছে এমন কি সামান্য মানবিক জীবন যাপন করার মূল রাষ্ট্রনীতি প্রণয়নে। একারনেই একদিকে আমেরিকার মুসলমান বিরোধী শক্তির শত্রুতা আর চীন রাশিয়ার ঘুঁটি হয়ে মাঝখানে চিড়ে চ্যাপ্টা হচ্ছে মুসলমানেরা। কিন্তু তাদের কে বোধোদয়ের কথা বলো, লাভ নেই। মন কে অন্ধ করে রেখে কোন আলো ঠুকতে না দিয়ে কখনও কোন কল্যান আসে নি। আগামীতেও আসবে না। এজন্যে একথা বলা অন্যায় হবে না যে মুসলমানেরা নিজেদের অবস্থানের জন্যে নিজেরাও বহুলাংশে দায়ী।
©somewhere in net ltd.