![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে এসেছিলাম বিরান প্রান্তরে সেখান থেকে চারাগাছ জন্মেছে; কিছু বিষন্ন চারাগাছ
ইন্টারভিউ শেষ করে সোজা রাস্তায়
নেমে আসে রাশেদ । এসি থেকে বের
হওয়ায় একটা গরম বাতাসের
ঝাপটা ছুঁয়ে যায় চোখমুখ জুড়ে । এই
চাকরিটাও হবে না বোঝা যাচ্ছে ।
কোন প্রশ্নই করা হয় নি ইন্টারভিউ
বোর্ডে । নাম , ধাম জিজ্ঞেস করার পর
"আপনি আসুন" বলে বের করে দিয়েছে ।
রাশেদের মন্ত্রণালয়ে কোন যোগাযোগ
নেই । কোন শক্তিশালী মামা চাচাও
নেই যে এই দুর্মূল্যের
বাজারে একটা চাকরী পেতে সাহায্য
করবে । ওদিকে গ্রামের
বাড়িতে মাকে টাকা পাঠাতে হয় ।
দুটা টিউশনি করে যা পাওয়া যায়
তা দিয়ে ঢাকা শহরে নিজের চলাটাই
কষ্টকর হয়ে দাড়িয়েছে । অথচ ওর
বাল্যবন্ধু কাম রুমমেট জুয়েল
দিব্যি চলছে । একই সাথে জাতীয়
বিশ্ববিদ্যালয়
থেকে মার্কেটিংয়ে অনার্স
করেছিলো দুজন । তারপর চাকরীর
বাজারে এসে দুজনেই ব্যর্থ । কিছুদিন
ছোটাছুটির পর জুয়েল হাল ছেড়ে দেয় ।
বলে "আমার কপালে চাকরী নাই !
এরচেয়ে ব্যবসা করাই ভালো !" অল্প
কিছু পুঁজি নিয়ে ব্যবসায়
নেমে পড়ে জুয়েল । বেশ ভালোই
চলছে ব্যবসা । মেসের রুমভাড়া সবার
আগে পরিশোধ করে জুয়েল ।
মাঝে মাঝে এদিকে ওদিকে ধারও দেয়
।
হাঁটতে হাঁটতে সাতরাস্তার
মোড়ে পৌঁছে যায় রাশেদ । পাশের পান
বিড়ির দোকান
থেকে পকেটে থেকে যাওয়া গত রাতের
কমদামী সিগ্রেটটা জ্বালাতে জ্বালাত
পাশের একটা জটলা খেয়াল করে ।
এগিয়ে যায় কৌতুহল বশতঃ ।
একটা হকারকে ঘিরে তৈরী জটলা ।
১০ টাকার বিনিময়ে ভাগ্য
পরিবর্তনকারী আংটি বিক্রী হচ্ছে ।
হকারের দিকে তাকিয়ে খুব একচোট
হেসে নেয় রাশেদ । তারপর
কি মনে করে আধছেঁড়া একটা দশ টাকার
নোট দিয়ে একটা ভাগ্য
পরিবর্তনকারী আংটি কিনে নেয় ।
রাশেদের দেখাদেখি আরো কয়েকজন
উত্সাহিত হয় । বেশ কয়েকজনের পকেট
থেকে দশ টাকার নোট বেরুতে থাকে ।
জটলা থেকে সরে এসে আবার রাস্তায়
নেমে পড়ে রাশেদ । যত্ন
করে আঙ্গুলে পড়ে নেয় ভাগ্য
পরিবর্তনকারী আংটি । তারপর আংটির
দিকে একনজর তাকিয়ে আবার
হেসে ওঠে ।
**
এদিকে ওদিকে অযথা ঘোরাঘুরি করে মা
। বাইরের কাপড় ছেড়ে লুঙ্গি পড়ে নেয়
। তারপর টেবিলের উপর
ঢেকে রাখা বাটিতে রাতের খাবারের
উপর চোখ বুলিয়ে আবার ঢেকে রাখে ।
"প্রতিরাতে একই খাবার"
নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ
করতে করতে বিছানার দিকে এগোয় ।
মশারী টাঙিয়ে শুতে যাবে এমন সময়
পাশের বিছানায় শুয়ে থাকা ওর
বাল্যবন্ধু কাম রুমমেট জুয়েল ঘুমের
মাঝেই চিত্কার করে ওঠে
"আংটি নেন , আংটি ! ভাগ্য
পরিবর্তনকারী আংটি । এই আংটির
বদৌলতেই বারেক মিয়া আজ আম্রিকার
প্রেসিডেন্ট । এই আংটির বদৌলতেই
বিল গেটস আজ এত ট্যাকার মালিক ।
অন্য সময় এই আংটির মুল্য হাজার
হাজার ট্যাকা । কিন্তু আজকে এই
দরবারে , এই আংটি আমি দিচ্ছি মাত্র
দশ টাকায় । দশ টাকা ! দশ টাকা ! দশ
টাকা ! আছেন কোন ভাই ?"
©somewhere in net ltd.