নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

রহমান সংশয়

রহমান সংশয়

একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে এসেছিলাম বিরান প্রান্তরে সেখান থেকে চারাগাছ জন্মেছে; কিছু বিষন্ন চারাগাছ

রহমান সংশয় › বিস্তারিত পোস্টঃ

একটি উহ্য ঘটনা

২৩ শে আগস্ট, ২০১৩ বিকাল ৪:০৯

১।



ফুটপাত ধরে হাঁটছে মাহিন । মেজাজটা একদম তিরিক্ষি হয়ে আছে । গায়ের নীল পাঞ্জাবীটা ঘামে ভিজে চপচপে । গাড়ী নিয়ে এলেই ভালো হতো । কিন্তু সমস্যা হচ্ছে আশা গাড়ী পছন্দ করেনা । তাই যতবার আশার সাথে দেখা করতে আসে ততবার গাড়ী রেখে রিক্সা করে আসে মাহিন । আশার ধারণা রিক্সা নাকি কারের চে বেশী রোমান্টিক । গরমের সাথে সাথে মাহিনের মেজাজের মাত্রাও বাড়ছে । ৪ বছর হয়ে গেলো ওদের সম্পর্কের । ২ বছর আগেই ওদের বিয়ে করার সঠিক সময়টা পার হয়ে গেছে । কিন্তু এখনও আশা বিয়ে করতে রাজী হচ্ছে না । যতবার বিয়ের কথা বলে মাহিন ততবারই এড়িয়ে যায় আশা । বলে এখনই বিয়ে করে নাকি বন্দী হতে চায় না । যেমন আছে তেমনই নাকি ভালো । এদিকে মাহিনের বাবা মা পুত্রবধুর আশায় বারবার মাহিনকে চাপ দিচ্ছে । মাহিনও কোনমতে এসব এড়িয়ে দিন পার করছে আর প্রতিনিয়ত আশাকে বিয়ের কথা বলে যাচ্ছে । কবে যে রাজী হবে মেয়েটা । একটা চা সিগ্রেটের দোকানের সামনে দাড়ালো মাহিন । একটা বেনসন নিয়ে ঠোঁটে দিলো । পকেট হাতড়ে লাইটার খোঁজার চেষ্টা করলো কিন্তু পেল না । কোথায় ফেলে এসেছে কে জানে ! আবার মেজাজ খারাপের পরিমাণ বাড়তে শুরু করলো ।মাহিনের লাইটারের শখ । প্রতিমাসে নিয়ম করে ৪-৫ টা লাইটার কেনে এবং নিয়ম করে হারায় । পকেটে লাইটার না থাকায় দোকানদারের কাছ থেকে লাইটার চেয়ে নিয়ে বেনসন জ্বালালো । ফেরত দিতে গিয়ে দেখে দোকানি চোখ বড় বড় করে ডান তাকিয়ে আছে । দৃষ্টি অনুসরণ করে ঐদিকে তাকাতেই মাহিনের শরীর অবশ হয়ে এলো । ভয়ের শীতল স্রোত মেরুদন্ড বেয়ে নিচে নামার আগেই একটা নিয়ন্ত্রন হীন কালো ভক্সওয়াগন হঠাত্‍ ফুটপাতে উঠে পড়ে তাকে চাপা দিয়ে চলে গেল । মাহিনের হাতে তখনো ফেরত না দেয়া লাইটার । দোকানদারের বিস্ফোরিত দৃষ্টি অনুসরণ করলে মাহিনের রক্তেভেসে যাওয়া নিথর শরীরটা দেখতে পাওয়া যায় । একটু দূরে বাতাসের দোলায় দুলতে থাকে সদ্য জ্বালানো বেনসন ।



২।



আমি থানায় বসে আছি । আমার সামনে অফিসার বসে আছেন । নেমপ্লেটে নাম দেখা যাচ্ছে সাদাত জামান । অফিসার ঠোঁটে একটা সিগারেট নিয়ে টেবিল হাতাচ্ছেন লাইটারের খোঁজে । আমার কাছে একটা লাইটার আছে । প্যান্টের ডান পকেটে । বের করে দিতে ইচ্ছে করছে কিন্তু সেটা সম্ভব না , কারণ আমার হাত দুটো হ্যান্ডকাফে আবদ্ধ

-"তো মি. সংশয় ! আপনি যাকে গাড়ী চাপা দিয়ে খুন করেছেন তিনি আপনার ব্যবসার পার্টনার । তাই না ?"

তিন তিনবার একই প্রশ্নের মুখোমুখি হলে মেজাজটা খিঁচড়ে যাবার কথা । কিন্তু পুলিশ হলে আলাদা ব্যাপার । তাই যথাসম্ভব মেজাজটা কন্ট্রোলে রেখে বললাম

-"অফিসার আমি আপনাকে আগেও বলেছি যে দ্যাট ওয়াজ এন একসিডেন্ট , নট এ মার্ডার । আমার গাড়ী ব্রেকফেইল ছিলো ।"

-"আপনার গাড়ী আমরা চেক করেছি । আমরা দেখেছি আপনার গাড়ীর ব্রেক এর তার কাটা । আচ্ছা , আপনার তো ড্রাইভার আছে তাই না ? তো ড্রাইভার না নিয়ে একা বেরুলেন কেন ?"

-"সকাল থেকে ড্রাইভারকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না । ওর ফোনটাও সুইচড অফ ।"

-"ওহ ! আই সি ..."



চিন্তিত হয়ে পড়লেন অফিসার । কপালে ভাঁজ ফুটে উঠল আর আমার কপালের ঘাম শুকোতে শুরু করলো । এমন সময় আমার আইনজীবি ঢুকলেন । অফিসারকে আমার জামিনের কাগজ দেখালেন । যেহেতু এটা একটা একসিডেন্ট সেহেতু আইনত জামিন পাওয়াটা খুব একটা কঠিন কিছু না । আমি থানা থেকে বের হয়ে বাসায় ফিরে এলাম । একটা হট শাওয়ার নিতে হবে এবং তারপর একটা ফ্রেশ ঘুম ।



৩।



ধীর পায়ে তৃতীয় বারের মতো ঘরে ঢুকলো আজিজ । বুকটা ধড়ফড় করছে এখনো । এর আগের দুইবার যখন ঘরে ঢুকছিলো তখন এত বেশী বুক কাঁপছিল যে শেষে ট্রাংকটা না খুলেই বের হয়ে গিয়েছিলো । একটু ঘোরাঘুরি করে আবার ফিরে এসেছে । ট্রাংকের সামনে বসে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে আজিজ । কাঁপা কাঁপা হাতে ট্রাংক থেকে কাগজে মোড়ানো একটা প্যাকেট বের করে নিয়ে আসে । প্যাকেটের ভেতর থেকে পাঁচশ টাকার নোট উঁকি মারছে । আজিজের বুকের ঢিবঢিব শব্দ আবার বেড়ে যায় । উঠে গিয়ে দরজাটা ভালো করে আটকিয়ে দিয়ে বিছানায় এসে বসে । বের করে আনে পাঁচশ টাকার বান্ডিল । গুণতে শুরু করে । একটানা না গুনে একটু একটু করে গুনতে থাকে । উত্তেজনায় নিঃশ্বাস আটকে আটকে যাচ্ছিল বারবার । গোনা শেষ করে আজিজ । পুরা এক লাখ । অবিশ্বাসের দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে আজিজ । এ টাকাগুলো তার । শুধুমাত্র তার । হাতের উল্টো পিঠ দিয়ে কপালের ঘাম মুছে আজিজ । এমন সময় দরজায় শব্দ হয় । তাড়াহুড়ো করে টাকাগুলো ট্রাংকে ভরে ফেলে । তারপর ভয়ে ভয়ে দরজা খুলে দেয় । দরজার বাইরে কাশেমকে হাসিমাখা মুখে দাড়িয়ে থাকতে দেখে আজিজ । হাঁফ ছেড়ে দরজা ছেড়ে সরে দাড়ায় । কাশেম ঘরে ঢুকলে আবার দরজা আটকিয়ে দেয় ।কাশেম আজিজের বাল্যকালের বন্ধু । খুবই আপন বন্ধু , একদম আপন ভাইয়ের মতোই । হিন্দীতে যাকে বলে জিগরী দোস্ত । গত রাত থেকে আজিজ তার জিগরী দোস্ত কাশেমের বাসায় । এরে চেয়ে ভালো লুকোনোর জায়গা আর হয় না ।



৪।



ছোটখাট একটা দুঃস্বপ্ন দেখে ঘুম ভাঙল আমার । দেখলাম আমি হাজতের শিক ধরে দাড়িয়ে আছি আর অফিসার সাদাত জামান বত্রিশ পাটি দাঁত বের করে হাসছে । এরকমটা প্রায়ই হয় । পাত্তা দেয়ার মতো কিছু না বলে কখনোই পাত্তা দেই না । বিছানা ছেড়ে উঠে একটা সিগারেট জ্বালালাম । তারপর সাইড টেবিলে রাখা গ্লাসে আইস ভরলাম । পাশের বুকশেলফের ফাঁক থেকে ভদকার একটা বোতল বের করলাম । পিওর রাশিয়ান ভদকা । আমি নরমালি ভদকাই খাই । সেলিব্রেশনের কোন ব্যাপার থাকলেই শুধু শ্যাম্পেইন । একটা বোতল এখনো বুকশেলফে আছে । সামনেই হয়তো এর দরকার পড়বে । গ্লাসে একটু ভদকা ঢাললাম । ঠিক এ সময়ই আমার ফোন টা বেজে উঠল । সিগারেট ধরা হাত দিয়ে গ্লাসটা নিলাম আর অপর হাতে ফোন । অফিসার সাদাত জামান ফোন করেছেন ।



-"হ্যালো অফিসার ! বলুন"

-"মি. সংশয় আপনি কি একটু থানায় আসতে পারবেন ?"

-"কোন সমস্যা অফিসার ?"

-" প্রশ্ন করবেন না । আপনি চলে আসুন ।"



ভদকার গ্লাসটা খালি করে থানার দিকে রওনা দিলাম । একটু টেনশন হচ্ছে । আবার কোন ঝামেলায় পড়লাম কে জানে ! অফিসার সাদাত জামানকে খুব একটা সুবিধের মনে হয়নি ।



থানায় পৌঁছতেই লক আপে আজিজকে দেখতে পেলাম । দেয়ালে পিঠ ঠেকে বসে আছে । ঠোঁটের কোণা দিয়ে রক্ত গড়িয়ে গড়িয়ে পড়ছে । পা দুটো এলোমেলো ছড়ানো । আমাকে দেখতে পেয়ে একটু নড়ার চেষ্টা করলো আজিজ । ঠোঁটটা একটু নড়ে উঠলো । তারপর আবার আগের অবস্থায় ফিরে গেলো । মারের চোটে নড়াচড়া করার শক্তি , কোন কিছু বলার মতো শক্তি দুটোই হারিয়ে ফেলেছে মনে হলো । আমি অফিসার সাদাত জামানের রুমের দিকে পা বাড়ালাম ।



-"আসুন সংশয় সাহেব । বসুন ।"



এগিয়ে গিয়ে মুখোমুখি বসলাম । অফিসার আমার জিজ্ঞাসু দৃষ্টি খেয়াল করলেন । হাতে ধরে রাখা খোলা ফাইলটা বন্ধ করে টেবিলের একদিকে সরিয়ে রাখলেন ।



-"আজ সকালে আমরা আজিজকে গ্রেফতার করি । ওর এক বন্ধুর মেসে পালিয়ে ছিলো । গ্রেফতারের সময় আজিজের কাছে নগদ এক লাখ টাকা পাওয়া যায় । জিজ্ঞাসাবাদ করার পর আজিজ জানায় টাকাটা আপনার গাড়ীর ব্যাকসিটে পেয়েছে সে । এক্ষেত্রে ওর ধারণা টাকাটা আপনি ভুল করে ফেলে গিয়েছেন ।"



এটুকু বলে অফিসার সিগ্রেটের প্যাকেট থেকে একটা সিগ্রেট বের করে ঠোঁটে দেয় । লাইটারের খোঁজে এদিক ওদিক তাকাতে থাকে । আমার পকেটে লাইটার আছে । হাতদুটোতেও আজ কোন হ্যান্ডকাফ নেই । ইচ্ছে করলেই সিগ্রেটটা জ্বালিয়ে দেয়া যায় । কিন্তু ইচ্ছে করছে না । চোখে জিজ্ঞাসু দৃষ্টি নিয়েই তাকিয়ে থাকলাম অফিসারের দিকে । লাইটার খুঁজে না পেয়ে ঠোঁট থেকে সিগ্রেট নামিয়ে রাখে অফিসার । তারপর আমার দিকে তাকিয়ে আবার বলতে শুরু করে

-"আজিজের কথা কতটুকু সত্যি মি. সংশয় ? আপনি কি আপনার গাড়ীর ব্যাকসিটে টাকা ফেলে রেখেছিলেন ?"

-"দেখুন অফিসার , এটা আজিজের বানানো একটা গল্প । আপনি একটু কঠোর হলেই আজিজ সত্যটা বলে দেবে । তাছাড়া একলাখ টাকা পরিমাণ হিসেবে খুব একটা ছোট নয় । আমি এতগুলো টাকা কখনোই সঙ্গে রাখিনা । দিনকালের যা অবস্থা সেটা আপনার চেয়ে আর কে ভালো জানে ।"



অফিসারের চেহারার তেমন একটা পরিবর্তন হলো না । তিনি আবার লাইটার খোঁজা শুরু করলেন । এবারো আমি আমার লাইটার বের করলাম না । লাইটার খুঁজতে খুঁজতেই অফিসার বললেন ,



-"আমি জানতাম মি. সংশয় । এটা আজিজের বানানো গল্প । সত্যিটা জানতে আমার খুব একটা সময় লাগেনি । দু তিনটা বাড়ি খেয়েই হড়হড় করে বলে দিয়েছে ।"

-"কি বলেছে অফিসার ?"



আমার কৌতুহলটুকু লক্ষ্য করলো অফিসার সাদাত জামান ।

-"আজিজ যেটা বলেছে সেটা সহ্য করা আপনার জন্য একটু কঠিন হবে মি. সংশয় ।"

-"আমি কোন নাটকীয়তা চাচ্ছি না অফিসার । আপনি সরাসরি বলুন"

-"আজিজকে ঐ একলাখ টাকা পায় একটা চুক্তিতে । একজন আগন্তুক আজিজকে টাকাটা দেয় আপনার গাড়ির ব্রেক এর তার কেঁটে দেয়ার জন্য । তারা আপনাকে খুন করতে চেয়েছিল । আপনি একটা নিষ্ঠুর প্ল্যানের শিকার হয়েছিলেন মি. সংশয় । কিন্তু আপনার ভাগ্য ভালো বলতে হবে । মৃত্যুর হাত থেকে একদম সুস্থ হয়ে ফিরে এসেছেন ।"



আমি হতবাক হয়ে গেলাম । নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারছি না । আমারই ড্রাইভারকে হাত করে আমাকেই খুন করার প্ল্যান করা হয়েছিল !



-"কারা এর সাথে সম্পৃক্ত অফিসার ? আজিজ কারো নাম বলেছে ? আপনারা কি তাকে এরেস্ট করেছেন ?"

-"উত্তেজিত হবেন না মি. সংশয় । আজিজের বিরুদ্ধে চার্জশীট করা হয়েছে । খুব শীঘ্রই আমরা ওকে কোর্টে বিচারের জন্য পাঠাবো । "

-"আমি বুঝতে পারছি না আপনি এড়াচ্ছেন কেন অফিসার ? আমি তাদের নাম জানতে চাইছি যারা আজিজের সাথে জড়িত । যারা আজিজকে দিয়ে আমাকে খুন করতে চেয়েছিল !"



চূড়ান্ত অধৈর্য হয়ে পড়লাম । গলার স্বর অনেক উঁচুতে উঠে গেছে । যে কোন মুহুর্তে নিয়ন্ত্রণ হারাতে পারি । অফিসার সাদাত জামান বুঝতে পারলেন । কিছুক্ষন তাকিয়ে থাকলেন আমার দিকে । তারপর আমার দিকে ঝুকে এসে যে নামটা উচ্চারণ করলেন সেটা শোনার জন্য আমি প্রস্তুত ছিলাম না । বিশ্বাস করতে পারলাম না কোনভাবেই ।এ কি করে সম্ভব ? অফিসার কে পুনরায় বলতে অনুরোধ করলাম । এবার স্পষ্ট ভাবে "মাহিন" নামটা কান বেয়ে মস্তিষ্কে প্রবেশ করলো । বিস্ময়ে আমি নির্বাক হয়ে গেলাম । মুখ দিয়ে একটা শব্দও বের করতে পারলাম না । মাথা নিচু করে হিসাব মেলানোর চেষ্টা করতে থাকলাম । কিছুতেই কিছু হলো না । কোনভাবেই হিসাব মেলাতে পারলাম না । অফিসার চেয়ারে হেলান দিয়ে আবার ঠোঁটে সিগ্রেট নিলেন । আমি হ্যান্ডশেক করে বিদায় নিয়ে প্রায় দরজার কাছে পৌঁছে গেছি , কি মনে করে ফিরে এসে পকেট থেকে লাইটার বের অফিসারের সিগ্রেটটা জ্বালিয়ে দিলাম । অফিসার দৃষ্টিতে ধন্যবাদের পরিবর্তে বিস্ময় দেখে বেরিয়ে এলাম থানা থেকে ।



৫।



রায় শুনে আদালত থেকে বাসায় ফিরে শাওয়ার নিতে ঢুকলাম । ঠান্ডা গরম এডজাস্ট করে নিয়ে চোখ বন্ধ করে শরীর ছেড়ে দিলাম শাওয়ারের নিচে । আজিজের যাবজ্জীবন হয়েছে । আর আমার মুক্তি । প্রায় বের হয়ে আসা অট্টহাসিটা থামালাম কষ্ট করে । মাহিনের চেহারাটা মনে করার চেষ্টা করলাম । আহারে বেচারা ! সারাজীবন বলদই থেকে গেল ছেলেটা । শাওয়ার শেষ করে টাওয়েল জড়িয়ে বেডরুমে ঢুকলাম । বুকশেলফের পেছন থেকে ভদকা নিতে গিয়ে শ্যাম্পেনের বোতলটা তুলে নিলাম । আজ তো সেলিব্রেশনের দিন । আজ শ্যাম্পেনের দিন । একা একা সেলিব্রেশন করা যায় না । কাউকে সঙ্গী হিসেবে পাশে থাকতে হয় । আমারও আছে । আমার পরিকল্পনার সঙ্গী , আমার সেলিব্রেশনের সঙ্গী , আমার জীবনসঙ্গী । টাওয়েল জড়ানো অবস্থাতেই ড্রয়িংরুমের সোফায় এসে বসলাম । টেবিলের উপর শ্যাম্পেনের বোতল আর দুটো গ্লাস রাখলাম । তখনই কলিংবেল বেজে উঠলো । আমি খুশী হয়ে উঠলাম । চলে এসেছে আমার সঙ্গী । দরজা খুলতেই সে আমার বুকে লাফিয়ে পড়লো । ঠোঁটে একটা হালকা চুমু দিয়ে ভেতরে ঢুকে পড়লো । টেবিলের কাছে গিয়ে একনজর বুলানোর পর আমার দিকে ফিরে বললো ,



-"একদম রেডী হয়ে আছো দেখছি !"

-"হ্যাঁ । একদম রেডী । দেরী করতে চাচ্ছিলাম না । কিন্তু তুমি দেরী করেছো ।"



বলতে বলতে গ্লাসে শ্যাম্পেন ঢেলে একটা গ্লাস ওর হাতে তুলে দিলাম আরেকটা আমি নিলাম । তারপর গ্লাস উঁচু করে টোস্ট করলাম "আমাদের সফলতার জন্য" এক চুমুক দিয়েই সে গ্লাসটা নামিয়ে রাখলো । আমার দিকে তাকিয়ে একটা বিষাদভাব ফুঁটিয়ে তুলে বললো



-"তুমি কিন্তু একটা কাজ ঠিক করোনি । তুমি গাড়ীচাপা দিলে মাহিনকে কিন্তু দোষী মাহিন হয়ে গেলো ? মাহিন নাকি তোমাকে খুন করতে চেয়েছিলো ?"



মুখ দিয়ে আফসোস করার মতো করে চুকচুক করে শব্দ করলো সে ।হাসি আটকিয়ে রেখে বললাম,

-"আমি কিচ্ছু করিনি ! ও ব্যাটা আজিজ পুলিশের মারের ভয়েই গল্প ফেঁদেছে । তা শালা গল্প ফাঁদলি তো এমন গল্প ??"



হা হা করে হেসে উঠলাম দুজনেই ।



ড্রিংকস শেষ করে আধ মাতাল হয়ে আমার গায়ের উপর ঢলে পরলো আশা । আমার পরিকল্পনার সঙ্গী , আমার সেলিব্রেশনের সঙ্গী , আমার জীবনসঙ্গী আশা ।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.