নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

রহমান সংশয়

রহমান সংশয়

একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে এসেছিলাম বিরান প্রান্তরে সেখান থেকে চারাগাছ জন্মেছে; কিছু বিষন্ন চারাগাছ

রহমান সংশয় › বিস্তারিত পোস্টঃ

আনা , সুমিত, ধুম্রকাঠি এবং রাগ

০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৩ রাত ৯:৩৬

জানালা ধরে দাড়িয়ে আছে আনা। জানালায় পর পর দু বার ঢিল পরলে আনা জানালায় এসে দাড়ায়। এটা একটা সংকেত । এই সংকেতের মানে শুধু আনা জানে , আর জানে সুমিত । আনা যখন জানালা ধরে দাঁড়ায় , সুমিত তখন আনাদের বাড়ির সামনের বড় রাস্তায় দাড়িয়ে হাত নাড়ে । প্রতিদিন যে এমনটা হয় তা না । যেদিন করে আনা ফোন বন্ধ রাখে সেদিন করে সুমিত আসে । তারপর খুঁজে খুঁজে দুটো ছোট পাটকেল কুড়িয়ে আনার জানালা লক্ষ্য করে ঢিল মারে ।



আজ দুপুরে আনা আর সুমিতের ঝগড়া হয়েছে । এটাকে ঠিক ঝগড়া বলা যায় না । ক্লাস শেষ হবার পর আনা চেয়েছিল সুমিতকে নিয়ে বেইলি রোড যাবে । কিন্তু সেদিনই সুমিত একটা নতুন টিউশনি পেয়ে যায় । আর প্রথমদিন মিস করা ঠিক হবে না বলে সুমিত যেতে সামান্য একটু আপত্তি করে । আনা ক্ষেপে যায় । ছোট বেলায় আমরা পড়েছি ঈষত রক্তিম মানে আরক্তিম । সে হিসেবে আনা মানে দাঁড়ায় ঈষত না । কিন্তু আর সবার মত আনাও তার নামের বিপরীত । আনা অন্যের মোটামুটি সব কথাতে না বললেও নিজে না শুনতে অভ্যস্ত নয় । সুমিতের হালকা আপত্তিকে না হিসেবে ধরে নেয় আনা । চোখ মুখ লাল করে সোজা বাড়ীর দিকে হাঁটা দেয় । আনার রাগ ভাঙ্গিয়ে ফিরিয়ে আনাটা উচিত হলেও সুমিত চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকে । তারপর টিউশনি করাতে চলে যায় ।



সন্ধ্যা থেকে আনার ফোন বন্ধ । একশ একবার চেষ্টা করার পরও যখন আনার ফোন খোলা পেল না , তখন বাধ্য হয়ে আনার বাড়ীর দিকে হাঁটা দিল সুমিত ।



আনার বাবার ঘুম খুব পাতলা । একটু শব্দেই ঘুম ছুটে যায় তার । তাই আনার বাড়ির সামনে দাড়িয়ে জানালায় দাড়িয়ে থাকা আনার সাথে কথা বলাটা বেশ ঝুঁকিপূর্ণ । এক্ষেত্রে সুমিত ইশারায় কথা বলার চেষ্টা করে ।



সুমিতঃ একটু নিচে আসবে ? (ইশারায়)

আনাঃ পারবনা (ইশারায়)

সুমিতঃ প্লিইইইইইইইজ!!! (ইশারায় দু হাত মুষ্টিবদ্ধ করে)

আনাঃ আসছি , দাড়াও । (ইশারায়)





আনা সাবধানে নেমে আসে । কপট রাগ নিয়ে সুমিতের সামনে গিয়ে দাঁড়ায় । তারপর ? তারপর হাজার খানেক উপায়ে সুমিত ক্ষমা প্রার্থনা করে । শত শত প্রতিশ্রুতি দেয় । কিন্তু আনা ক্ষমা করে না । কপট রাগ নিয়েই ফিরে যায় রুমে । সুমিত অসহায় হয়ে কিছুক্ষন বসে থাকে রাস্তার ধারে । একাটানা দুটো ধুম্রকাঠি শেষ করে । তারপর আনার নিষ্ঠুরতার কথা ভাবতে ভাবতে হাঁটতে শুরু করে । সুমিত বুঝতেই পারেনা আনা কখন তাকে ক্ষমা করে দিয়েছে । মাঝরাতে নিচে নেমে আসাটা যে ক্ষমা করে দেয়ার বহিঃপ্রকাশ ।



ওদিকে আনা তখন জানালা দিয়ে লুকিয়ে লুকিয়ে সুমিতের ধুম্রকাঠি জ্বালানো দেখছিল আর রাগে ফুঁসছিল । সুমিত জানে না কাল ভার্সিটিতে তার জন্য কি অপেক্ষা করছে !!

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.