নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ভোরের শরীরে এখনও লেগে আছে রাত্রির দগদগে ক্ষত

শ. ম. দীদার

কার্ণিশ ভাঙ্গা জানালার ফাঁক দিয়ে রাতের আকাশের যেটুকু অংশ দেখা যায়, অইটাই আমার পৃথিবী।

শ. ম. দীদার › বিস্তারিত পোস্টঃ

হে পেচ্ছাব, তুমি বোমাবাজদের মুখে গিয়ে পড়

০৫ ই নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৫:১৭

প্রিয় ডাহুক, . . . বাইরে গাঢ় কুয়াশা দ্যাখেই জানালার শার্শিটা খুলে দিলাম। এক ঝটকা ঠাণ্ডা হীম হাওয়া আমাকে ঝাপটে দিলো। পায়ের কাছে গত শীতে বানানো লেপটা অলসভাবে পড়ে আছে। ঠাণ্ডা লাগালে শ্বাস কষ্টের সমস্যা হবে জেনেও অবহেলায় লেপটা টেনে নিতে ইচ্ছে করলো না। বড়লোক হলে শোবার ঘরে ফায়ারপ্লেস থাকতো। সাথে একটু হুইস্কি অথবা ব্রাণ্ডির ব্যবস্থাও। অন্তত এক মগ বিয়ার তো থাকতই। যার ঘরে ফায়ারপ্লেস, তার ঘরে পেট গরম করার দারু নাই এটা বড্ড বেমানান। এটা অনেকটা কম্পিউটার আছে ইন্টারনেটসহ, আর এ্যন্টিভাইরাস নাই এমন অবস্থার মত। অথবা বলা যায়, গান শোনার সমস্ত ব্যবস্থা আছে কিন্তু সাউন্ড সিস্টেম হঠাৎ বিকল এমন অবস্থার মতনই। সুতরাং পানীয় যখন নাই, তখন সিগারেটই সই। শুনে নিশ্চয় আপনার খুব রাগ লাগছে। রাগের চোটে এমনও হতে পারে, চিঠিটা খুলেই আপনি শব্দের ভাঁজে ভাঁজে বেনসন এ্যন্ড হেজেসে’র বোটকা গন্ধ পেয়ে গেছেন। গা গোলাচ্ছে আপনার। বমি করে দিলেন চিঠির শরীরে। যেহেতু বলে দিয়েছি সিগারেট জ্বালানোর কথা।

হঠাৎ মনে হোল; ওপরে যে লিখলাম ‘শোবার ঘরে ফায়ারপ্লেস’ এখানে ‘শোবার ঘরে’ শব্দটা বড্ড বেমানান ‘ফায়ারপ্লেস’ শব্দের সাথে। এতোটা বেমানান যে, বর্ষীয়ান রাজনীতিক জনাব তোফায়েল আহমেদ সাহেব যেভাবে বিরোধী দলীয় নেত্রীর প্রস্তাবিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দশজন ব্যক্তির বিষয়ে যুক্তি খণ্ডন করে নেত্রীর প্রস্তাবটি বেমানান বলে প্রমাণ করে দিলেন। এরপরও যদি নেত্রী সেই একই ঘ্যানর ঘ্যানর করেন, সেটা যতোটা বেমানান। তবুও যদি ভালোবাসার অতিশয্যে বলেন, না, ‘শোবার ঘরে’ শব্দটা খুব করে চলবে ‘ফায়ারপ্লেস’ শব্দের সাথে, তাহলে বলবো; দুই নেত্রীর ফোনালাপের ঢং দ্যাখার পরও উভয় দল আমাদের মতন এমন নাদান আমজনতাকে যেভাবে বলছে, এখনো সংলাপ হতে পারে, কীভাবে হবে জানে না, ঠিক সেভাবে শব্দটা চলবে ঠিকই। উভয়েই বলছে, তাদের প্রত্যেকের দরোজা না কী খোলা। তাহলে কারো ঘরে কেউ ঢুকছে না, কেন? এই প্রশ্নের উত্তর জেনেও প্রশ্নটা করা যেমন বেমানান তেমনি ‘শোবার ঘরে’ শব্দটির সাথে বেমানান ‘ফায়ারপ্লেস’ শব্দটি। বরং শব্দটি হওয়া উচিৎ ছিল, ‘বেডরুমে ফায়ারপ্লেস’। ‘ফায়ারপ্লেস’ শব্দের সাথে ‘বেডরুম’ শব্দটা মানাই ভালো। আর ‘শোবার ঘরে’ শব্দের সাথে বেশ মানাই ‘আইল্যা’। আইল্যা হচ্ছে একটা মাঝারি সাইজের লোহার পাত্র, যেটাতে শীতকালে তোষ আর আগুন রাখা হয়। ঘর গরম রাখার জন্য। গ্রামে এর প্রচলন আছে। আমার ভাই (দাদী) ব্যবহার করতেন। এতোদিনে বোধ’য় ভাই আইল্যায় আগুনের এন্তেজাম শুরু করে দিয়েছেন। এই আইল্যায় অনেক এক্সিডেন্টও হয়। সেই এক্সিডেন্টগুলো বেশ মজার। এই যেমন মাঝ রাতে কঠিন পেচ্ছাবের তাড়া পেয়েছে। , পেচ্ছাবের তাড়া খেয়ে ঘুম থেকে উঠে, আধ বোজা চোখে উঠোনের দিকে দৌড় মারতে গিয়ে এক পা আইল্যাতেই দিয়ে দিয়েছি। ততক্ষণে ভায়ের মুখে, শরীরে, আইল্যাতে পেচ্ছাব করে দিয়েছি। আর চীৎকার করে উঠছি; অ বাল্লে, বাল্লে, বাল্লে, অ বাল্লে, মর ঠ্যাং পুরি গিঅইদে। অ বাল্লে, বাল্লে। হয়ত পড়েও গিয়েছি ভায়ের গায়ের উপর। ততক্ষণে ভাই হাতড়ায়ে দেশলায় খুঁজে, চেরাগ জ্বালিয়ে পেচ্ছাব মুছতে মুছতে গালি দিয়ে আমাকে মারতে শুরু করে দিয়েছে। আমার ঠ্যাং পুড়ে গেছে; তা কিছু না।

আমাদের ঠ্যাং এদিকে পুড়ে যাচ্ছে, আর নেত্রী আপা ককটেল বোমা দিয়ে আমাদের থাপড়াচ্ছে। এখন আমার পেচ্ছাব পেয়েছে। কিন্তু আমি পেচ্ছাব করবো না। জমা করে রাখব। আমার এই পেচ্ছাব জামাত-শিবির আর তার দোসরদের মুখে ঢেলে দেবার জন্য জমা করছি।

হে পেচ্ছাব, তুমি বোমাবাজদের মুখে গিয়ে পড়। হ্যাপী পেচ্ছাবিং।



নাটাইপাড়ার দিনরাত্রি; ২০১৩।১১।০২ রাত তিনটা তেপ্পান্ন মিনিট।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.