নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কার্ণিশ ভাঙ্গা জানালার ফাঁক দিয়ে রাতের আকাশের যেটুকু অংশ দেখা যায়, অইটাই আমার পৃথিবী।
চিলি’র কবি ও রাজনীতিবিদ পাবলো নেরুদা (১২ জুলাই, ১৯০৪ – ২৩ সেপ্টেম্বর, ১৯৭৩)। প্রকৃত নাম ছিল নেফতালি রিকার্দো রেয়েস বাসোয়ালতো। পাবলো নেরুদা তাঁর ছদ্মনাম। পরে নামটি আইনি বৈধতা পায়। কৈশোরে তিনি এই ছদ্মনামটি গ্রহণ করেন। ছদ্মনাম গ্রহণের পশ্চাতে দুটি কারণ ছিল। প্রথমত, ছদ্মনাম গ্রহণ ছিল সে যুগের জনপ্রিয় রীতি; দ্বিতীয়ত, এই নামের আড়ালে তিনি তাঁর কবিতাগুলি নিজের পিতার কাছ থেকে লুকিয়ে রাখতেন। তাঁর পিতা ছিলেন কঠোর মনোভাবাপন্ন ব্যক্তি। তিনি চাইতেন তাঁর পুত্র কোনো "ব্যবহারিক" পেশা গ্রহণ করুক। নেরুদা নামটির উৎস চেক লেখক জান নেরুদা এবং পাবলো নামটির সম্ভাব্য উৎস হলেন পল ভারলেইন। পাবলো নেরুদাকে বিংশ শতাব্দীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ ও প্রভাবশালী লেখক মনে করা হয়। তাঁর রচনা অনূদিত হয়েছে একাধিক ভাষায়।
আমিও সাহস করে তাঁর খুব পরিচিত ‘টুনাইট আই ক্যান রাইট দ্যা স্যাডেস্ট লাইন্স’ কবিতাটি অনুবাদ করে ফেললাম। কতোটা ভালো করলাম সেটা বিচারের দায়ভার পাঠকের হাতে। অনুবাদে সাহায্য ও রিভিউ করে দিয়েছেন আমার বড় ভাই প্রণয়। ধন্যবাদ দিতেই হবে প্রণয় ভাইকে। মূলত কবিতাটার ইংরেজি সংস্করণ থেকে অনূদিত।
আজ রাতে, আমি লিখতে পারি বিষাদের সব পঙক্তিমালা।
এই যেমন, লিখতে পারি, ‘ক্লান্ত এই রাত
আর দূর আকাশে শিওরে উঠা নীল নক্ষত্রেরা।’
আর আকাশে সুর তুলে বহে, ঝড়ো বাতাশ।
আজ রাতে আমি লিখতে পারি বিষণ্ণ সব পঙক্তিমালা।
আমি তাকে ভালোবেসেছিলাম, আর মাঝে মাঝে সেও আমাকে।
অবিকল এই রাতের মতই, রাত অবধি বাহুমূলে আঁকড়ে ছিলাম তাকে
অবারিত আকাশের ছায়াতলে আমি তাকে ভরে তুলেছিলাম অন্তঃসত্ত্বা চুম্বনে।
কখনো সে আমাকে ভালোবেসেছিল, আর আমিও তাকে
ভাবি, কেউ কী এমন গভীর শান্ত চোখ ভালো না বেসে পারে?
ভেবে ভেবে, আজ রাতে আমি লিখতে পারি বিষাদের সমস্ত পঙক্তিগুলো
শুধু এই ভেবে যে ও আমার নেই। পারেনি ভালোবেসে তাকে আপন করতে।
নির্ঘুম রাত্রি, দীর্ঘ থেকে আরো দীর্ঘতর তাকে ছাড়া
আর বিদীর্ণ হৃদয়ে নিঃশব্দ ক্ষরণ যেমন সবুজ প্রান্তর ক্ষরিত বেদনায় শিশিরের ক্রন্দনে।
কী এসে যায় তাতে, যদি আমার ভালবাসা তাকে বাঁধতে নাই পারে।
তারে হারায়ে আজ আমার হৃদয় অতৃপ্ত
নিঃসাড় এই রাতে, সে আর আমার নেই
এই তো। খুব দূরে একলা ডাহুক কেঁদে কেঁদে যায়। বহু দূরে।
ব্যাকুলিত দৃষ্টি তাকেই খুঁজে ফেরে নিঃসীম চরাচরে
হু হু করে উঠে হৃদয়, হাতড়ে বেড়ায় নীরেট আঁধারে
সে একই রাত শুধু রাত হয়ে যায় আবেশ ছড়ায়ে
যেন বা আমরা আর নেই সেই পুরনো।
সত্যি এখন অনাকাঙ্খিত প্রেম, অথচ কতোটা প্রণয়াসক্ত ছিলাম একদিন
নিশুতি রাতে একলা ডাহুক, খুঁজে ফেরে বেহাগের সুরে
অন্য কোন ছবি আঁকে পুরনো ক্যানভাসে। পুরনো বিছানায় নতুন উষ্ণতা
শুধুই নতুন প্রলেপ সে একই প্রশান্ত চোখে। নরোম কোমল পেলব শরীরে।
ভালোবাসা এখন অনাকাঙ্খিত বটে তবু তার প্রেমে আমি আজও আচ্ছন্ন
অনন্ত অনাদি বিচ্ছেদ, স্বল্পায়ু প্রেম
অবিকল এই রাতের মতই, রাত অবধি বাহুমূলে আঁকড়ে ছিলাম তাকে
আজও ব্যাকুল হৃদয় তারে হারিয়ে।
হতে পারে এটাই তার প্রেমে আমার অন্তিম মর্মবেদনা
এটাই হতে পারে তারে নিয়ে আমার শেষ শোকগাঁথা।
২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ৮:৪৬
শ. ম. দীদার বলেছেন: ধন্যবাদ অনেক।
২| ২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ১০:৫৮
সাঈদ০০৭ বলেছেন: শ. ম. দীদার ভাই আরও অনুবাদ করুন। ঘোর তো লাগিয়ে দিলেন!
৩| ০২ রা মার্চ, ২০১৪ রাত ১২:৩২
সানড্যান্স বলেছেন: এটা আমার সব চাইতে প্রিয় কবিতা, আমার প্রিয় পোষ্টের তালিকায় দেখেন আছে, নোমান নমিরে দিয়ে এটার অনুবাদ করানো হয়েছিল।
শক্তি থেকে বেশী ভাল অনুবাদ করেছিল সে। অথবা ফেসবুকে আমাকে নক করলে আমি আপনাকে দিব!
০৭ ই মার্চ, ২০১৪ বিকাল ৪:১৪
শ. ম. দীদার বলেছেন: লিঙ্কটা দেন। ফেবু লিঙ্ক। খুব বেশি খুশি হব। আমার খুব পছন্দের একটি কবিতা এটি। নেট ঘ্যাঁটে যে বাঙলা অনুবাদ পেয়ে তাতে যে অনুবাদ পেলাম তার প্রতি তৃপ্ত হতে না পেরে এই অনুবাদ।
ধন্যবাদ আগে ভাগেই দিলাম।
৪| ০৭ ই মার্চ, ২০১৪ বিকাল ৪:৫৮
আশফাক সফল বলেছেন: বারবার পড়া এক কবিতা এটা
প্রতিটা অনুবাদ যেন, নতুন একটা স্বাদ আনে
৫| ০৩ রা এপ্রিল, ২০১৪ রাত ২:২১
ভাঙ্গা কলমের আঁচড় বলেছেন: ম্যাচিউরড অনুবাদ, আগে এই কবিতার যে সব অনুবাদ পড়েছি তার চেয়ে সুন্দর,এই কবিতাটা পড়ে নেরুদার ছায়ায় এলোমেলো আকিবুকি করেছিলাম,আমার ওখানে আছে চাইলে পড়ে দেখতে পারেন,সমালোচনা কাম্য
৬| ১৩ ই এপ্রিল, ২০১৪ রাত ২:২৫
সানড্যান্স বলেছেন: Click This Link
©somewhere in net ltd.
১| ২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ বিকাল ৫:৫৮
সুমন কর বলেছেন: চমৎকার পোস্ট !!
শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।