নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কার্ণিশ ভাঙ্গা জানালার ফাঁক দিয়ে রাতের আকাশের যেটুকু অংশ দেখা যায়, অইটাই আমার পৃথিবী।
. . . এরপর যেদিন এক হাজার একশ পঁয়ত্রিশটি মানব সন্তানের অকাল মৃত্যু ঘটল তাঁদের চব্বিশতম জন্ম দিবস উদযাপনের আগেই, গণজমায়েত বলতে লাগলো- আরে এতো কিছুই না; মনে নেই রানা প্লাজার কথা। সেখানে তো এক হাজার একশ ছত্রিশ জনের মৃত্যু হয়েছিলো।
সেদিন থেকে কতকগুলো মানুষের অকাল মৃত্যু, যারা আমাদের জন্য আহার যোগাত, যারা আমাদের শীতবস্ত্র যোগাত, এমন কী তাঁরা শহুরে অন্ধকার তাড়িয়েছিলো নিজেদের শরীর পুড়িয়ে, রাজা রাণী, পাইক-পেয়াদার গাড়ি-বাড়িতে এয়ারকন্ডিশনের ব্যবস্থা করেছিলো সমান দুহাতে টার্বাইন ঘুরিয়ে। টাকার মেশিন সচল রেখে। কপাল থেকে ঘাম মুছবার মতন সমূলে উৎপাটিত করেছিলো আনন্দের অস্তিত্ব জীবন থেকে। সেটা নিছক একটি সংখ্যায় পরিণত হলো।
সেই একটি সংখ্যা পরবর্তীতে একটি জাতির শঙ্কা, আবেগ, মানবিক বোধ, মৃত্যুতে আফসোস করবার শক্তিকে ভোঁতা করে ফেলেছিলো। এখন তারা মৃত্যুতে কাঁদতে জানে না।
এখন তাঁদের জীবিত ভাই বোনেরা চা'র কাপে ঝড় তুলে তাদের জন্য জীবনদাত্রী মানুষের সকরুণ মৃত্যুর গল্পে।
এখন তাঁদের রাজা-রাণী, পাইক-পেয়াদা, এমন কী রাজা-রাণী, পাইক-পেয়াদার ঘরে পোষ্য কুকুরগুলো ও ঝলসানো মুরগীর জুইসি রানে কামড় দিয়ে স্মরণ করে তাদের ভবিষ্যতের জন্য যারা বর্তমানকে ঠেলে দিয়েছিল তাদের মৃত্যুর গল্পে।
এখন এখানে অনেকগুলো মানুষের মৃত্যু গল্পের তরে জমাকৃত নিছক কিছু শব্দ ছাড়া কিছুই নয়।
এখন এখানে অনেকগুলো মানুষের মৃত্যু শিল্পের জন্য নিছক একটি প্রচ্ছদপট ছাড়া কিছুই নই।
আর একজন লাস্যময়ী সংবাদ পাঠিকা জানতে চান, জসীম, আমাকে বলুন; সেখানে ধ্বংসস্তূপের নীচে আর কয়টি লাশ পড়ে আছে
থেঁতলে যাওয়া নাক মুখ চোখ পর্যবেক্ষণরত রিপোর্টারের কাছে সংবাদ পাঠিকা জানতে চাইলেন আরো আরো লাশের সংখ্যার খবর
অবোধ তথ্য প্রবাহের স্বাধীনতার কছম-
সংবাদ পাঠিকার বাজখাঁই স্বরে ছিলো না ক্রন্দনের চিহ্নটুকু, বিষাদের লেশমাত্র
আর রিপোর্টারের উদ্বেলিত উজ্জীবিত কণ্ঠস্বর ছিলো আরো বেশি সচকিত
ক্রমশঃ জমতে থাকা লাশের স্তূপ আর গুণিতক হারে বাড়তে থাকা সংখ্যার আনন্দে
নিছক সংখ্যায়ই ছিলো সেগুলো, বৈ কী!
©somewhere in net ltd.
১| ২৪ শে এপ্রিল, ২০১৫ রাত ১১:১৪
অন্ধবিন্দু বলেছেন:
শ. ম. দীদার,
পৃথিবীটা ঘুরছে অতঃপর ভুলছে ...
এভাবেই চলছে।