নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কাজী অনন্য শেখর

সপ্নচোরা

বিশ্বকে জানি এবং বিশ্বকে জানাই

সপ্নচোরা › বিস্তারিত পোস্টঃ

এ‌টিএ‌মে স্কি‌মিং ডিভাইস!!! (আসুন সচেতন হই)

১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:২৭

আমার এক বন্ধু মাস দুই আগে সিএন‌জি‌তে ক‌রে ফার্মগেট থেকে উত্তরা যাওয়ার পথে ছিনতাইকারীর কবলে পড়েছিল। ছিনতাইকারীরা প্রথ‌মেই সাথে থাকা নগদ টাকা নি‌য়ে‌ নেয়। তারপর পকেট থেকে ডে‌বিট কার্ড ও ক্রেডিট কার্ড নি‌য়ে পিন নাম্বার বল‌তে ব‌লে‌। পিন নাম্বার পাওয়ার পর ‌ছিনতাইকারী দ‌লের একজন গি‌য়ে এটিএম বুথ থে‌কে টাকা তু‌লে নি‌য়ে আ‌সে। অব‌শে‌ষে বন্ধু‌টিকে রাস্তায় পা‌শে ফেলে রে‌খে চ‌লে যায়।
সেই থেকে বন্ধুটি বেশ সচেতন। সন্ধার পর সিএন‌জি‌তে উ‌ঠেনা, খুব প্রয়োজন না হলে কোন কার্ডও সাথে রাখে না, টাকার প্রয়োজন হলে টাকা বুথ থেকে উঠিয়ে আবার কার্ড বাসায় রেখে আসে।
কিন্তু গতদু-‌তিন দিন ধরে পেপার-পত্রিকা দেখে তার ঘুম বন্ধ!! কার্ড তার কাছে,পিন কেউ জানেনা অথচ একাউন্টের টাকা নি‌য়ে যা‌চ্ছে !! এটা কীভা‌বে হয়? এও কি সম্ভব??!!

না, এটা সম্ভব না, ত‌বে কার্ড‌-পিন পে‌য়ে গে‌লে খুব সম্ভব। আর সেটাই তারা কর‌ছে। আমা‌দের দে‌শে নতুন হ‌লেও অন্যান্য দে‌শে এটা বেশ পুরাতন কৌশল। একাজটা কর‌তে ছিনতাইকারীরা ছু‌রি-চাপা‌তি ব্যাবহার ক‌রেনা। আধু‌নিক প্রযু‌ক্তি ব্যবহার ক‌রে অ‌তি কৌশ‌লে কাজ‌টি ক‌রে থা‌কে।

প্রথমত তারা যে কাজ‌টি ক‌রে তা হ‌লো কা‌র্ডের তথ্য চু‌রি। তথ্য চু‌রি করার জন্য এ‌টিএম বু‌থের যে‌ ছিদ্র‌টিতে আমরা কার্ড পাঞ্চ ক‌রি অর্থাৎ যেটার ভিত‌রে কার্ড রিড‌ার থা‌কে ঠিক সেখা‌নে তারা একটা ফলস কার্ড রিডার (এক ধর‌নের ই‌লেক‌ট্রিক ডিভাইস যেটা‌কে স্কি‌মিং ডিভাইস ব‌লে) সেট ক‌রে। এটা এমন যে এ‌টি এ‌টিএম মে‌শি‌নের অর‌জিনাল ছিদ্র‌টি‌কে ঢে‌কে দি‌য়ে নি‌জের ফলস ছিদ্রটা‌কে ক্রে‌ডিট/‌ডে‌বিট কার্ডের জন্য উন্মুক্ত ক‌রে। আর এই নকল ছিদ্রের ভিতর কেউ যখন কার্ড ঢুকায় তখন ছি‌দ্রের সা‌থে সংযুক্ত ডিভাইস‌টি কা‌র্ডের ম্যাগ‌নে‌টিক অং‌শের সব তথ্য প‌ড়ে ফে‌লে এবং সেটা তার ভিত‌রে স্টোর ক‌রে । এভা‌বে গ্রাহ‌কের হিসা‌বের সকল তথ্য সে নি‌য়ে কার্ড প্রস্তুত কারক চ‌ক্রের কা‌ছে পাচার ক‌রে। তারপর কার্ড প্রস্তুতকারক চক্র তা দি‌য়ে হুবুহু এরকম একটা কার্ড তৈ‌রি ক‌রে, যা পরবর্তী‌তে পস করে কেনাকাটা করা কিংবা পাঞ্চ করে টাকা উঠা‌নোর তৈ‌রি হ‌য়ে যায়!!

এ‌টিএম বুথ থে‌কে টাকা উঠা‌তে হ‌লে কা‌র্ডের পাশাপাশি আ‌রেকটা গুরুত্ত্বপূর্ণ জি‌নিস লা‌গে। সেটা হ‌লো পিন নাম্বার। এই পিন নাম্বার এরা দুভা‌বে চু‌রি ক‌রেঃ এক: ক্যা‌মেরা ব্যবহার ক‌রে। অ‌তি ছোট্ট এক‌টি ক্যা‌মেরা‌ তারা বু‌থের ভিত‌রে সু‌বিধা জনক স্থা‌নে কিংবা এ‌টিএম মে‌শি‌নের কোন একজায়গায় সেট ক‌রে যা‌তে ব্যবহৃত পিনটা এই হি‌ডেন ক্যা‌মেরায় ধরা প‌ড়ে। দুইঃ ফলস পিন প্যাড ব্যবহার ক‌রে। আমরা যে পিন প্যা‌ডে প্রেস ক‌রে পিন চা‌পি সেটার উপর তারা আ‌রেকটা ফলস পিনপ্যাড বসায় গ্লাভসের ম‌তো ক‌রে যেটার ভিত‌রেও থা‌কে একটা ডিভাইস(‌মি‌নি ল্যাপটপ!), যা এই পিন চাপার সা‌থে সা‌থে তার ভিতর স্টোর ক‌রে ফে‌লে!!!
কার্ড হ‌য়ে গে‌লো, পিন হ‌য়ে গে‌লো, এখন আর টাকা তুল‌তে বাধা কোথায়!! তারা আরাম‌ছে টাকা তু‌লে অথবা সুপারশ‌পে কেনাকাটা ক‌রে ফে‌লে!
প্র‌তিরোধঃ
কথায় বলে মানুষ চলে যদি ডালে ডালে চোর চলে পাতায় পাতায়। সাধারনের চেয়ে চো‌রের চোরামী বু‌দ্ধি একটু বেশীই থা‌কে নই‌লে সাধারন‌কে সে বোকা বানা‌তে পার‌তোনা। তারপরও চোখ কান খোলা রাখ‌লে স্কি‌মিং ডিভাইসের মাধ্য‌মে টাকা ছিনতাই অ‌নেকাং‌শেই রোধ করা যায়।‌ যেমনঃ (ব্যাংক কি কর‌তে পা‌রে সেটা এখা‌নে ব‌লে লাভ নেই তাই আমরা কার্ড হোল্ডারটা কি কর‌তে পা‌রি তাই বলা হ‌লোঃ-)
-এটিএম বুথ থেকে টাকা উঠানোর সময় চোখ-কান খোলা রাখা। বুথের এ‌টিএম মে‌শি‌নে অস্বাভাকি কোন দাগ,ঘসামাজা ট্যাম্পারিং আ‌ছে কিনা দেখ‌া। কিংবা মেশি‌নের উপর আঠা,টেপ লাগা‌নো আ‌ছে কিনা সেটা লক্ষ্য করা। টেম্পারিং থাকা মানে এখানে কিছু একটা লাগানোর চেষ্টা করা হয়েছে। আঠা কিংবা টেপ থাকা মানে এগুলো দিয়ে কিছু লাগানো হয়েছে। এরকম কিছু দেখলে কিংবা সন্দেহ হ‌লে কার্ড রিডারের স্লটটা ধরে একটু টানাটানি করুন। অরজিনাল হলে আপনি টেনে কিছুই করতে পারবেন না কারণ ওটা মুল মে‌শি‌নের সা‌থে সংযুক্ত থা‌কে কিন্তু নকল হলে নড়াচড়া করবে কিংবা হাতে উঠে চলে আসবে।
অথবা কার্ড পাঞ্চ করার আগে কার্ড স্লটের দিকে তাকিয়ে দেখুন ইনডিকেটর লাইট ব্লিংক করে কি না। স্কিমিং ডিভাইস লাগানো থাকলে ইনডিকেটর লাইট দেখা যাবে না।
-‌রে‌স্টু‌রে‌ন্টে যথাসম্ভব ও‌য়েটার‌কে কার্ড দেয়া থে‌কে বিরত থাকুন। কারণ ও‌য়েটার কার্ড‌টি নি‌য়ে আপনার আড়া‌লে গি‌য়ে কার্ড অন্য কোথাও পাঞ্চ করে তথ্য নি‌য়ে নি‌চ্ছে কিনা আপ‌নি জা‌নেন না। তাই যথাসম্ভব নি‌জে কার্ড নি‌য়ে কাউন্টা‌রে যান এবং পস মে‌শি‌নের দি‌কে নজর রাখুন। পস শেষে কার্ডটা নিরাপ‌দে রে‌খে অন্য কাজ করুন।
ম‌নে রাখা উ‌চিত, কার্ডটাও কিন্তু টাকা, আপনার টাকা অ‌ন্যের হা‌তে দি‌য়ে বেশী রিলাক্স থাকা কি ভা‌লো?!
-আর পাসওয়ার্ড সুরক্ষিত রাখতে যথাসম্ভব পিন প্যাড হাত দি‌য়ে এবং শরীর দিয়ে ঢেকে নিন যাতে আপনার পিন নাম্বারটা আশেপাশে গোপনে রাখা কোন ক্যামেরায় ধরা না পড়ে। এটিএম মেশিনের পিন প্যাডের উপরে যদি কোন ফলস পিন প্যাড লাগানো হয় তবে একটু খেয়াল করলেই ধরা পড়বে। প্রয়োজনে দু-একটা ঘষা-টসা দিন কিংবা একটু টানা-টানি করুন। ফলস হলে উঠে চলে আসবে। তবে বেশী জো‌রে টে‌নে আবার আসলটা ছি‌ড়ে ফেল‌বেন না যেন!!

- এতটুক‌ু সতর্ক থাকার পরও যদি চুরি হয়েই যায় তখন আর কি করবেন। সাথে সাথে ব্যাংক কে জানান। এখন পর্যন্ত যতটুকু জানি উপযুক্ত প্রমাণ দিতে পারলে এবং আপনার অভিযোগ সত্য হলে ব্যাংক আপনার টাকা দিয়ে দিতে বাধ্য।

মন্তব্য ১৭ টি রেটিং +১০/-০

মন্তব্য (১৭) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৪:০৭

বিজন রয় বলেছেন: যা ঘটেছে তা আমাকে অবাক করেছে।

২| ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৫:০৬

হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:
আমেরিকা ও ইয়োরপে এধরনের চুরি প্রায়ই হচ্ছে, কিন্তু মেশিন উন্নত করছে না। আমাদের ব্যাঙ্কগুলো ওদের (VISA, Amex, Master) কার্ডসেবাই প্রভাইড করছে।
দিন দিন নগদ টাকার ব্যাবহার কমে যাওয়াতে ওরা ATM বাদ দিয়ে অনলাইন পেমেন্টে নিরাপত্তা বাড়ানোতে মনযোগ দিচ্ছে।

৩| ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:২৩

ইমরাজ কবির মুন বলেছেন:
গুড পোস্ট।
ইনফর্ম করার জন্য ধন্যবাদ ||

৪| ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৫১

সুমন কর বলেছেন: চমৎকার পোস্ট !! শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।

আমি কিন্তু ব্যবহার করি না..... !:#P

৫| ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৫৯

ভোরের সূর্য বলেছেন: উন্নত দেশে চুরি হচ্ছে এবং চোরেরা আরো উন্নত প্রযুক্তি দিয়ে চুরি করছে কিন্তু ওখানে যেটা হচ্ছে সেটা হলো ওরা চোর কে ধরতে পারছে এবং শাস্তিও হচ্ছে।কিন্তু আমাদের দেশে সেটা হচ্ছেনা এবং কেন হচ্ছেনা জানিনা।সব এটিএম মেশিনেই ক্যামেরা আছে এবং যে যখন টাকা তুলছে তার ছবি এবং ভিডিও হচ্ছে তাহলে সেই ব্যাক্তিকে কেন ধরা সম্ভব না? বাংলাদেশে ছবি সহ প্রায় ১০কোটি ভোটারের আঙ্গুলের ছাপ সহ ভোটার তালিকা হয়েছে এবং অন্তত যারা ১৮ বছরের উপরে তারা তো অবশ্যই। তাহলে সেই ভিডিও এবং ছবি দেখে কেন তাদের ধরা যাচ্ছেনা? শুধু তাই না। হাতের ছাপও রয়েছে। এছাড়াও কয়েকদিন আগে যে ঘটনা ঘটেছে সেখানে একজন বিদেশীও ছিলেন। বাংলাদেশ ইমিগ্রেশনে তার ছবি সহ সব ডাটাও রয়েছে তাহলে কেন ধরা যাবে না? শুধু ডিভাইস উন্নত করলেই হবে না সাথে সাথে চোরকে ধরে উচিৎ শাস্তির ব্যবস্থাও করতে হবে। এছাড়াও আমার মনে হয় বুথগুলো খুপরির ভেতর না করে উন্নত দেশগুলোর মতন উম্মুক্ত করে দেয়া উচিৎ।

যে যখন অন্যের কার্ড কিংবা ছিনতাইকৃত কার্ড দিয়ে টাকা তুলছে তখন তার ছবি ভিডিও হচ্ছে তার মানে সেই অপরাধীও সনাক্ত হয়ে যাচ্ছে কিন্তু বাংলাদেশ এমন একটি দেশ যেখানে অপরাধী চোখের সামনে ঘুরে বেড়ালেও পুলিশ ধরে না। আপনার বন্ধু ছিনতাইকারিকে পিন নাম্বার দেয়ার পর সে এটিএম থেকে টাকা তুলেছে তার মানে সেই ব্যাংক সেই চোরের ছবি তুলে রেখেছে কিন্তু পুলিশ ধরতে পারে নাই।

৬| ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৩০

দেবজ্যোতিকাজল বলেছেন: Click This Link
লিংকটা দেখ

৭| ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:০২

মুসাফির নামা বলেছেন: very important informatin.thanks

৮| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১২:০৮

মৃদুল শ্রাবন বলেছেন: এটিএম মেশিনে কার্ডপাঞ্চ করার আলাদা জায়গা দূস্কৃতিকারীর পক্ষে কিভাবে লাগানো সম্ভব? মাথায় আসছে না।

১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৪:১৭

সপ্নচোরা বলেছেন: লাগাচ্ছে তো!!

৯| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১২:২২

গেম চেঞ্জার বলেছেন: আমার এখনো কোন টাকা খোয়া যায়নাই। তবে টেনশনে ফেলে দিলেন :| টেনশনবাজ হইতে আর কি কি লাগে বলেন তো?

১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৪:১৮

সপ্নচোরা বলেছেন: :)

১০| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ২:৪৬

আহসানের ব্লগ বলেছেন: আমার তো কার্ড ই নাই । কে জানে আমার হবু কার্ড টার কি হইসে 8-|

১১| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ৮:৪২

রুদ্র সৌরভ বলেছেন: অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পোষ্ট

১২| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ৯:৩৩

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: দারুন সচেতনতা মূলক পোষ্ট।

অনেক অনেক ধন্যবাদ।

সব দেখে শুনে একটা কথাই মনে হয়- ডিজিটাল কি এনালগ.. কোত্থাও শান্তি নাইরে পাগল :P =p~ =p~ =p~

১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৪:১৯

সপ্নচোরা বলেছেন: কোত্থাও শান্তি নাইরে পাগল! :)

১৩| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১০:৫৪

অগ্নি সারথি বলেছেন: এ টি এম বুথের ভেতরে এত্ত কারসাজি করবে কিভাবে দুস্কৃতিকারীরা এইটাই মাথায় ঢুকছে না।

১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৪:১৯

সপ্নচোরা বলেছেন: করছে তো!!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.