নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

Whatever you do in life, make sure it makes you happy

স্বপ্নময়

এখনো আমার মধ্যে বেঁচে আছে কিছু রং কিছু ঝরণা-নদী-বনাণী প্রান্তর। এখনো ছোট্ট শিশুর মত কিছু জিজ্ঞাসা আছে। আছে কিছু কৌতুহল কিছু বেহিসাবী ব্যবহার জর্জরিত সমস্যা, তমসায় ভরা অমাবস্যা...

স্বপ্নময় › বিস্তারিত পোস্টঃ

এই বৃষ্টি ভেজা রাতে তুমি নেই বলে...

০৪ ঠা আগস্ট, ২০০৭ সকাল ১১:৩৭

এই বৃষ্টি ভেজা রাতে তুমি নেই বলে, সময় আমার কাটেনা...



কে গাইছে গানটা? সম্ভবত আর্টসেল। গানের প্রতিটি লাইনে শ্রাবণ... এবং শ্রাবণ। এই শ্রাবণের সাথে শ্রাবনীর কোনো সম্পর্ক নাই, ছিলোনা। শ্রাবণী... আমার ছোট্ট খালাতো বোন, খুব মিষ্টি এবং আলবত কিপ্টে। কিপ্টা এই বিচ্চু মেয়েটা আমার কাছে ২০০ টাকা পায়। এখনো শোধ করতে পারিনি, তবে শিঘ্রির শোধ করতে হবে। শোধ করতে না পারার জন্য অনেক কিছু মিসিং হচ্ছে এবং কিছু জ্বালা যন্ত্রণাও সহ্য করতে হচ্ছে। ইদানিং ও খুব অদ্ভুত স্বাধের নুডুস রান্না করতে শিখেছে... অষ্টধাতুর ঐ খিচুড়ি খেতে যখন কেউ ইচ্ছা প্রকাশ করেনা... তখন আমাকে জোড় করেই ঠেলে ঠেলে খাওয়ানো হচ্ছে...! পাওনাদার... তাই 'সুন্দর হইছে' বলাটা আমার জন্য অতিব কর্তব্যের কম্ম হইলেও ভোঁতা মুখ থেকে প্রতিদিনই যা বের হয়-



: জঘন্য হইছে, তোর জামাইকে কখনো খাওয়াইস না। দুই দিনের মাথায পটল তু... কথা শেষ করার আগেই... আ... আম্মা.... আম্মা........ বলে কান্না...। এই কান্না হচ্ছে টর্নেডোর রাষ্ট্রদূত, আমি জানি, তাই জান নিয়ে পালিয়ে বাঁচি।



কখনো আবিদ শেষ বিকেলের ক্লান্তিময় ঘুমটা ভাঙ্গিয়ে বলে- : ভাইয়্যা গপ্প বলো। টুনটুনি পাখিটা খুব গল্প শুনছে ইদানিং। অনেক দুষ্টু হয়েছে। টসটস কথা বলে, পাকনু প্রশ্ন করে। মেয়েদের দেখলে চোখের পাতায় অদ্ভুত সুন্দর দৃষ্টি এনে কথার ফাঁদ পাতে। এলাকার মেয়েগুলোর জন্য দু:শ্চিন্তার কথা।



চিন্তায়-চেতনায় নাদুস নুদুস আমার রাজিব বন্ধুটা ইদানিং রাতে হুটহাট ঘুম ভাঙ্গিয়ে দিচ্ছে, খুব ব্যস্ত হয়ে হয়তো বলছে- জানিস নির্ঝর কালকে আমার বারোটা বাজায় দিছে!

: কেন, কি করছে?

: বেটায় হাই স্পিড ব্রড ব্যান্ড কানেকশন হয়ে গেছে। আমার আর রীমার সব খবর শাট শাট করে সবাইকে সেন্ড করতাছে!

: বলিস কিরে? তুই ওর কাছ থেকে ১০০ মাইল দূরে থাক। আমাকেও থাকতে দে। খোঁজ খবর নিয়ে দেখ কোন পাগলা কুত্তায় কামড় দিছে, ডাক্তারকে জলদি ইনজেকশন দিতে বল।

: কার পশ্চাতে দিতে বলবো দোস্ত্?

: কুত্তার!



রতন আবার জেলে গেছে! এবার দেখা করতে যাবো ভাবছি। কাছে কিনারে কোনো ঘুষখোর লুইচ্ছা মোল্লাকে পাচ্ছি না, পেলে নাক ভেঙ্গে জেলে যাবার চান্স নেয়া যেত। এক ঢিলে দুই পাখি!



বৃষ্টি এলো সন্ধ্যার একটু পরে। 'পান্থশালায়' খেতে খেতে মারপিটের কথা ভাবছি... ভেতরে ঝড় তুলেছে রাজ্যের সব গল্প... ঘন শ্রাবণের গল্প... ক্লান্তিময় ধূলোর গল্প... দিন বদলের গল্প... প্রতিশ্রুতির গল্প... প্রতারণার গল্প... ঘাস ফড়িংয়ের গল্প... মামা এলো রঙের গল্প নিয়ে।

: রঙ চা?

আমি মুচকি হাসি

: উনারা আসবে না?

: দেখা যাক

অবশ্য এই বৃষ্টিতে আসবে না কেউ-ই। সামনের বাম পাশের টেবিলে জড়োসড়ো হয়ে বসে আছে পিচ্চি একটা মেয়ে। কুটুস চেহারা। বয়স বড়জোড় ১২। সাথে সম্ভবত তার বাবা অথবা ঐ বয়সী কেউ। আমার চোখাচোখি হতেই লজ্জায় লাল হচ্ছে, মাথা নিচু করে হালিম খাচ্ছে... কিছুক্ষন পর আবার তাকাচ্ছে... আবার লাল হচ্ছে! চোখেমুখে আমার প্রশ্নাতীত কৌতুক। এই বাচ্চা মেয়েটা আমার চোখের তারায় কি পেয়েছে? প্রেম... হা হা হা হা।



মামা টিস্যু দিয়ে গেলো। কিছুক্ষন ওতে আঁকিআঁকি করলাম... হাবিজাবি লিখলাম। প্রথম শব্দ লিখলাম- দাঁত। কারণ গতকাল দাঁত নিয়ে স্বপ্ন দেখেছি। প্রথম সারির ভয়ঙ্কর স্বপ্ন। দেখলাম- আমার সব দাঁত পড়ে গেছে... তারপর আবার গজাচ্ছে...। এটাকে কাটলাম। অবাস্তব স্বপ্ন... আমার দাঁত মাশাল্লাহ মূলো দাঁত। কঠিন শক্ত। এরপর যে শব্দটা লিখলাম সেটা- বৃষ্টি। কারণ বাইরে প্রচুর বৃষ্টি হচ্ছে। এই শব্দটা বড় হতে হতে দুই লাইন হয়ে গেলো এবং মনে করিয়ে দিলো এক সন্ধ্যার কথা... এমনই কোনো বৃষ্টিমুখর দিনে শ্রীকান্ত দা আমাদের বিভোর করে রেখেছিলেন... লাইন দুটোকে কাটতে কাটতে টিস্যুর খানিকটা ছিঁড়েও ফেললাম। চোখ-মুখ শক্ত আর ভ্রু কুঁচকে লেখা-লেখি বন্ধ করলাম।



একটা কালো চোখ আঁকার চেষ্টা করলাম...অনেকক্ষন ধরে, বেহুদা। চোখের তারায় নীল ছবি... মগজের অন্ধকার কোনে বৃষ্টি ভেজা অশ্রু সিক্ত প্রিয়ার মুখ! যে কিনা কারনে-অকারণে বহুবার কান্নার অভিনয় করেছে! কান্নার রঙতো নেই, স্বাদটা নিশ্চয়ই ছিলো। বৃষ্টিতে ছাদে বসে যখন চা খেতে খেতে ডুবে যাই মেঘের সাথে... শুকনো শূণ্যতা ইচ্ছে করে যখন টুপ করে বুকের ভেতর কালো রঙ ঢেলে হাহাকার আঁকে ঠিক সেসময় কান্নার স্বাদটা টের পাওয়া যায়। অভিনয় হলেই কি, কান্নাতো কান্না-ই। টুপটুপটাপ টুপটুপটাপ টুপটুপটাপ শব্দের পর ভর করে সময়টা এভাবে উড়ে চলে। এদিকে কলমের অপব্যবহার করছি... সমানে; ৪ নাম্বার চা প্রায়ই শেষ... এমন সময় আড়চোখে বাচ্চাটার দিকে তাকাই... কি সমস্যা... কিউট বাচ্চাটা এতো লাল হচ্ছে কেনো? আমার চোখের তারায় কি আছে? প্রেম? ভালোবাসা? মৌহ? একে-অপরকে বুঝে নেয়া? ওহে ছোট্ট বোকা মহিলা আমার চোখের তারায়... ভাষায়... এখন আর তোদের উল্টিয়ে পাল্টিয়ে চেটেপুটে খাবার স্বপ্ন উড়ে না।



: ৩ আগষ্ট, ২০০৭ইং।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা আগস্ট, ২০০৭ দুপুর ১২:৫৮

ফ্রুলিংক্স বলেছেন: সুন্দর হইছে।

২| ০৪ ঠা আগস্ট, ২০০৭ দুপুর ১:১৩

আশফাকুর রহমান বলেছেন: সংশোধনঃ এই বৃষ্টি ভেজা রাতে গানটা আর্টসেলের নয় বরং লিঙ্কন ভাইয়ের গাওয়া। তিনি গানটি তার এক বন্ধুর জন্য গেয়েছিলেন

৩| ০৪ ঠা আগস্ট, ২০০৭ দুপুর ১:৩৫

এই আমি মীরা বলেছেন: অনেক কিছুই মিলে গেলো।

৪| ০৪ ঠা আগস্ট, ২০০৭ দুপুর ১:৩৬

এই আমি মীরা বলেছেন: আচ্ছা, পিচ্চি মেয়েটার দিকে তাকাচ্ছিলেন কেন?? লাল হবেই তো!

৫| ০৫ ই আগস্ট, ২০০৭ দুপুর ২:৫৫

শাওন বলেছেন: শ্রাবন্তী । বড় হয়ে গেলো পিচ্চিটা । নুডুস খাব । শ্রাবন্তীর হাতের নুডুস ।

৬| ০৭ ই এপ্রিল, ২০০৯ রাত ১:১৩

ফারহান দাউদ বলেছেন: বাহ!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.