![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সত্যিকারের সুখীমানুষের সাথে আমার একটাই পার্থক্য, সুখীমানুষের গায়ের জামা ছিলো না, আমার আছে।
পহেলা বৈশাখের মেলায় জ্বীন আসে। আর জ্বীনের কোন ছায়া থাকে না। এই দুইটা বিষয় ছোটবেলায় সবচাইতে বেশী উত্তেজনার ছিলো। আমার এক বন্ধু ছিলো তার যুক্তি হইলো
- বুচ্ছস জ্বীনতো লোহা আর আগুন দুই জিনিসরে ভয় পায়। হাতে কইরা তারকাটা লইয়া যামু। ছায়া যার নাই, ডাইরেক্ট তার পা_য় তারকাটা বিন্দাইয়া দিমু।
মেলায় সেই বন্ধুর পিছ পিছ উত্তেজনা নিয়া ঘুরতাম। আর কার কার ছায়া নাই তা দেখতাম। মাঝেমাঝে মেঘের কারনে যদি একটু ছায়া পড়তো, তখন টেনশন পৌছাইতো চরমে। কারন তখন নিজের ছায়াও ভালোমত দেখা যাইতো না। কেবল মনে হইতো, যদি ভুল কইরা মানুষের পা_য় তারকাটা বিন্দাইয়া দেয়! একবার হৈছে কি বলি। উমম না থাক। আমার লেখা আবার আমার গ্রামের লোকজনও পড় আজকাল। ঘটনা ফাঁস করে ঐ বন্ধুরে বিপদে ফেলতে চাই না
শৈশবের সবচাইতে বড় অনুষ্ঠানও ছিলো এই মেলা। সারা বছর অপেক্ষায় থাকতাম। কী কী কিনবো মনেমনে লিষ্ট করতাম। লিষ্টে থাকতো টিনের পিস্তল, ভিতরে কাগজে চাপ্টা লাগানো বারুদের ফিতা ঢুকানো যায়। ঘুড়ি, ঘুড়ি উড়ানোর কট সূতা। ডেবের ডোল, রশি ধরে হাটলেই দুইটা কাঠি ঘুরে ঘুরে ডেবডেব শব্দ করতো। বাঁশি, আড় এবং সরল দুইটাই।
অথচ বেশীরভাগ মেলা থেকেই দুই টাকা দামের রঙ্গীন প্লাষ্টিকের চশমা কিনেই ফেরত আসতে হইতো। যখন কেনাকাটার মত যথেষ্ট টাকা হাতে আসলো, অপরিচিত বাচ্চাদেরকে টুকটাক কিনে দিয়ে বড়াইতাম। এই আনন্দ ছোটবেলার কেনার আনন্দের চাইতে বেশী। আর এখন মেলায় যাবারই সময় পাই না । পুত্র প্রিয়রে নিয়ে মেলায় যাবো, এই সুযোগও নাই। কারন চাকরীর ধরণটাই এমন। যখন সবাই বিনোদন করে, তখন সেই বিনোদন দেখাইতে আমরা ব্যস্ত।
সময়ের সাথে মেলার রং ফিকে হয়ে গেছে। কিন্তু আরো রঙ্গীন হয়েছে উৎসবে মেতে উঠা মানুষগুলা। এই রং ছেয়ে যাক সবখানে...। শুভ বাংলা নববর্ষ।
©somewhere in net ltd.