![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সত্যিকারের সুখীমানুষের সাথে আমার একটাই পার্থক্য, সুখীমানুষের গায়ের জামা ছিলো না, আমার আছে।
অভিযোগ না, বিষয়টা আমি এনজয় করি।
ব্র্যাক ইউনিভার্সিটিতে আমার মাষ্টার্স এখনো শেষ হয় নাই। থিসিজ পেপার জমা দেওয়ায় আটকায়ে আছি। ছয় মাসের কাজ আমি কাজের চাপে দুই বছরেও শেষ করতে পারতেছি না। তাই মাঝেমাঝে ভার্সিটিতে যাইতে হয়। মজাটা ঠিক এইখানেই ঘটে।
ভার্সিটির গেটে স্পষ্ট করে লেখা আছে আইড কার্ড দেখাইতে হবে। ষ্টুডেন্টরা কেউই আইডিকার্ড পড়ে না। সবাই আসছে, যাচ্ছে, সিকিউরিটি ফিরাও দেখে না। প্রথম প্রথম আমিও আইডি ছাড়া ঢুকার ট্রাই করছিলাম। আমাকে একেবারে ঘেক করে ধরে ফেলে। তারপর শুরু করলাম আইডিকার্ড ঝুলায়ে যাওয়া। এরপরেও ঘেক করে ধরতে আসে। কিন্তু আইডি কার্ড দেখে কিছু বলে না। সামনে দিয়া আইসা সন্দেহের দৃষ্টিতে ঘুরঘুর করে ঘুরতে থাকে। আড় চোখে তাকায়, আইডিকার্ড ঠিক আছে কি না। সমস্যা হইলো, ইউনিভার্সিটি কার কাছ থেকে আইডিকার্ড ছাপায় জানি না। কার্ডের উপরের লেখা মাসখানেকের মধ্যেই লেপ্টায়ে একাকার। আইডিকার্ড বলতে এখন যা আছে তা নিতান্তই কালিমাখা একটা প্লেট। তবে রিবনটা যেহেতু নষ্ট হয় নাই, তাই গলায় ঝুলানো যায়। তাই আমার বুকও দুরু দুরু করতে থাকে। হয়ত সিকিউরিই এক্ষুণি বলবো
- এ্যাই থামেন, থামেন আপনে ঢুকতে পারবেন না।
অবশ্য এটিটিউড যেমন দেখি, সম্বোধনটা আপনি হবে নাকি তুমি, তুইএ নামবে ঠিক স্পষ্ট করে বলা মুসকিল।
মজা এইখানেই শেষ না। টিচারদের সামনে যে পিয়নটা বসে, তার ক্ষমতা টিচারদের চাইতে বেশী। অবশ্য সুর্যের চেয়ে বালির গরম সবসময়ই বেশী হয়। ইলিয়াস ভাই নামের একজন আছেন, তিনি পুরানো মানুষ। অনার্সের সময়ও ছিলেন। তাই উনি যখন থাকেন তখন শান্তি লাগে। খোঁজ খবর নেন। কথাবার্তা বলেন। আজকে একটা মজার ঘটনা ঘটছে। আমাদের এক বেচমেট একজন এখন টিচার। তার রুম খোঁজে বের করলাম। রুমের সামনে দেখি পিয়নটা নিরশ মুখে বসে আছে। রুমের সামনে গিয়ে নেমপ্লেট পড়তেছিলাম। ছেলেটা বিরক্ত হয়ে বললো
- কী চান?
মিনমিন করে বললাম
- স্যার আছেন?
পাত্তা না দিয়া বললো, নাহ স্যার আসেন নাই এখনো। বলেই অন্যদিকে তাকায়ে রইলো।
আসলে প্রতিদিন এতএত ষ্টুডেন্ট ডিল করতে হয়, ওদেরও দোষ নাই। বিষয়টা আমি এনজয় করি, কারনটা হইলো -
অফিসের সবাই সবার জন্য খুব আন্তরিক। আমার জন্য মনে হয় একটু বেশীই আন্তরিক। উদাহরণ দেই - সকাল বেলা যখন আসি, গাড়ি গেটের কাছে আসলেই সিকিউরিটি দৌড়াইয়া গিয়া গাড়ির দড়জা খুইলা দেয়। ভাবটা এমন যে, গেইটটা খুলতেও আমার কষ্ট যেন না হয়। লিফ্টের ছেলেগুলাও বড় আন্তরিক। সম্মানের পাশাপাশি বাড়তি হিসাবে ভালোবাসাও তারা অনেক দেখায়। মোদ্দা কথা, অফিসে এত এত স্পেশাল আন্তরিকতা, সম্মান পেয়ে পেয়ে অভ্যস্থ হয়ে গেছি। বিষয়টা মাঝেমাঝে খুব অসহনীয় মনে হয়। কেবল মনে হয়, এতটার দরকার কী! এই মনিহার আমায় নাহি সাজে'র মত একটা বিনম্র, বিব্রতবোধ কাজ করে। পাশাপাশি যেদিন ভার্সিটিতে যাই, আমি ধরেই নেই আজকে আমি একজন ষ্টুডেন্ট। ষ্টুডেন্টরা একটু আধটু ধাক্কা খাবেই। তবেই এরা বড় হয়ে ধীরে ধীরে স্পেশাল প্রায়োরিটিগুলা পাওয়া শুরু করবে।
(ব্র্যাকের টিচার যে বন্ধুরা আছো, তোমাদের নজরে যদি এই পোষ্ট পড়ে, তবে সিরিয়াসলি নেওয়ার কিছু নাই প্লিজ।)
১৮ ই এপ্রিল, ২০১৬ দুপুর ১২:১৫
সুখী মানুষ বলেছেন: চাকরী চলে গেলে খাবো কী! এই ভয় থেকেই আরেকটা ডিগ্রী নিয়ে রাখা রে ভাই... যেন অন্তত মাষ্টারীটা করে সংসার চালাইতে পারি...
©somewhere in net ltd.
১|
১৭ ই এপ্রিল, ২০১৬ দুপুর ২:৪০
ডি মুন বলেছেন: বাহ, একই সাথে দুইটা জীবন উপভোগ করতেছেন।
ভালোই তো