![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সত্যিকারের সুখীমানুষের সাথে আমার একটাই পার্থক্য, সুখীমানুষের গায়ের জামা ছিলো না, আমার আছে।
আইনষ্টাইনের সংসারে সুখ ছিলো না। পদার্থ বিজ্ঞান এবং অংকে ডিগ্রীধারী জ্ঞানী মিলেভাকে তিনি প্রেম করেই বিয়ে করেছিলেন। শুধু তাই না, বিয়ের আগে তাদের একটা মেয়েও ছিলো। মেয়েটার নাম, লাইসার্ল। পরে মেয়েটা সম্ভবত মারা যায়। অথবা তাকে দত্তক দিয়ে দেওয়া হয়। বিয়ের পরে দুইটা ছেলে হয়। হ্যন্স আর এডওয়ার্ড। কিন্তু অতদিনে দুইজনের বনিবনা আর হচ্ছিলো না। অথচ থিওরি অব স্পেশাল রিলেটিভিটি তখনো ম্যাথমেটিক্যালি প্রোভ করতে পারেন নি আইনষ্টাইন। শুধু তাই না, থিওরিটা প্রমান করার জন্য তার পূর্ণ সূর্যগ্রগণের ছবি তোলা দরকার। অনেক কাজ, অনেক অনেক কাজ। কিন্তু সংসারের যন্ত্রনায় কিছুই হচ্ছে না।
বিয়ের বছর দশেক পর আইনষ্টাইন তার বউকে একটা অফার দিলেন। বললেন
- চলো একটা চুক্তিতে আসি। যদি আমি নোবেল পুরস্কার পাই, সবটা টাকা আমি তোমাকে দিয়ে দিবো। কিন্তু তার জন্য এখনই তুমি আমাকে মুক্তি দিবে হবে।
মিলেভা এই চুক্তিতে রাজি হলেন। এবং বার্লিনে আইনষ্টাইনকে ফেলে তিনি তার দুই ছেলেকে নিয়ে জুরিখে চলে গেলেন। আইনষ্টাইন রেলষ্টেশন পর্যন্ত এগিয়েও দিলেন। আর পরবর্তী রেলেই রাশিয়ার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলেন। কারন রাশিয়ায় এবার পূর্ণ সূর্যগ্রহণ দেখা যাবে। তার ছবি তুলে প্রমান করতে হবে যে থিওরি অব স্পেশাল রিলেটিভিটি সঠিক।
এর সাত বছর পর ঠিকই আইনষ্টাইন নোবেল পুরস্কার পেলেন। এবং টাকাটা পাঠিয়ে দিলেন মিলেভাকে। যা দিয়ে তিনটা ফ্ল্যাট কেনা হয়। তার লাভ দিয়েই চলতো মিলেভ এবং তাদের দুই সন্তান।
সুখতো ছিলোই না। যা পাওয়া গেলো তা হলো আর্থিক নিরাপত্তা। কিন্তু তাও মিলেভা'র কপালে বেশীদিন টিকলো না। ছোটছেলে আলবার্ডের স্কিজোফ্রেনিয়া রোগ ধরা পড়লো। তার চিকিৎসা করাতে গিয়ে বেচতে হলো দুইটা ফ্ল্যাট। যা'র ভাড়ার টাকায় এদ্দিন চলতো সংসার। আইনষ্টাইন অবশ্য আমৃত্যু নিয়ম করে টাকা দিয়ে গেছেন সংসারের জন্য।
আইনষ্টাইন অসুস্থ হয়ে পড়লেন। মৃত্যু থেকে কেবল সেবা দিয়ে ফিরিয়ে আনলেন তার খালাতো বোন, তার নাম এলসা। এলসা দুই মেয়ে সন্তান সহ তালাকপ্রাপ্তা ছিলেন। এবং আইনষ্টাইনের চাইতে তিন বছরের বড়। পরে এলসা যখন আইনষ্টাইনকে বিয়ে করার কথা জানালেন তখন আইনষ্টাইন আর মানা করতে পারেননি। আইনষ্টাইন তার দুই অনেকটা সংসারী হলেন। পরবর্তী সংসারে তার ছেলে মেয়ে না থাকলেও। এলসা'র দুই মেয়ে সহ সংসার সুখেরই ছিলো।
আর মিলেভা ছিলেন একা। এক ছেলেকে হাসপাতালে ভর্তী করে আরেক ছেলেকে নিয়ে তার ছিলো সংগ্রামময় জীবন। আইনষ্টাইনের শুরুর দিকের কাজে যার যথেষ্ঠ অবদান ছিলো। সেই জ্ঞানী, গুনী মিলেভা আর বিয়ে করেন নি। সংসারে সন্তান সব সময়ই মায়ের সাথে সূতায় বাঁধা থাকে। বাবা খুব সহজেই সন্তানদেরকে ফেলে চলে যেতে পারেন। সন্তান যখন কাজের, সুখের পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায় তখন মুক্তি'র পথও খোঁজে বের করতে পারেন। কিন্তু মায়েরা পারেন না। জন্মের পরপর দৃশ্যত হয়ত নাড়ি কেটে সন্তানকে আলাদা করা হয় ঠিকই। কিন্তু অদৃশ্য ভাবে এই নাড়ির বাঁধন ঠিকই আমৃত্যু থেকে যায়। কে জানে হয়ত মৃত্যুর পরেও মায়ের সাথে এই নাড়ির বন্ধন থেকেই যায়...।
০১ লা জুলাই, ২০১৬ রাত ১২:৩০
সুখী মানুষ বলেছেন: হুম, আমিও একই কথা বলার চেষ্টা করেছি। তবু মা কিন্তু তা পারে না। মা যত বড় বিজ্ঞানী আর যাই হোক না কেন, সন্তানকে অবহেলা করে কিছু তারা করতে পারেন না।
©somewhere in net ltd.
১|
৩০ শে জুন, ২০১৬ রাত ১১:৫১
মহা সমন্বয় বলেছেন: গবেষণা একটা নেশার মত দিন দুনিয়ার কোন খবরই থাকে না। বিজ্ঞানীর তাদের গবেষণার কাছে এতটাই মগ্ন থাকে যে স্ত্রী সংসাদের প্রতি খেয়ালই থাকে না।