নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সুখীমানুষ

সুখী মানুষ

সত্যিকারের সুখীমানুষের সাথে আমার একটাই পার্থক্য, সুখীমানুষের গায়ের জামা ছিলো না, আমার আছে।

সুখী মানুষ › বিস্তারিত পোস্টঃ

নিরাপদে থাকুক সবাই, লেখকরা একটু বেশীই নিরাপদে থাকুক।

০৫ ই জুলাই, ২০১৭ সকাল ১১:২৪

খোদ রবীন্দ্রনাথ কট্টর হিন্দো আন্দোলনকে সাপোর্ট দিতেন। সমস্ত ভারতে একটাই ধর্ম হবে লেখছিলেন। অবশ্য বুদ্ধি করে বলেন নাই, সে ধর্ম হিন্দুধর্ম। প‌্যাঁচ দিয়ে ধরলে হয়ত বলতেন, মানব ধর্মের কথা বলছি।

লেখকের ভিন্নমত থাকতেই পারে। একই লেখকের সব লেখা যে ভালো লাগবে তাতো না। বয়সের সাথে, অভিজ্ঞতার সাথে লেখকের লেখনির পথও বেঁকে যায়।

ফরহাদ মজহার অপহৃত হোক আর স্বেচ্ছায়ই যাক। সুস্থ দেহে যে পাওয়া গেছে, এইটাই বড় কথা। দেশের প্রতিটা নাগরিক নিরাপদে থাকুক। লেখকরা একটু বেশী নিরাপদে থাকুক। কারন গত বহু বছর ধরে লেখকরা খুন হচ্ছেন, এর বিচার প্রকৃয়াও প্রশ্নবিদ্ধ।

ফরহাদ মজহারের সব লেখা আমি পড়ি নাই। সামান্য যা পড়ছি, তার মধ্যে এই কবিতাটা আমার খুব পছন্দের।

কর্তৃত্ব গ্রহণ কর, নারী
ফরহাদ মজহার
-০-

আমি তোমার সামনে আবার নতজানু হয়েছি, নারী
না, প্রেমে নয়, আশ্লেষে নয়,
ক্ষমা চেয়ে
তোমার দয়া দিয়ে আমার হৃদয় ধুয়ে দেবার প্রার্থনায়
আমার ভেতরে যে পুরুষ তাকে আমি চাবুক মেরে শাসন করেছি
তাকে হাঁটু মুড়ে বসতে বলেছি তোমার সামনে
আমি ক্ষমা চাই, ক্ষমা করে দাও
শুধু আমাকে নয়
সমস্ত পুরুষকে তুমি ক্ষমা কর
আমি আজ সমস্ত পুরুষের হয়ে তোমার ক্ষমাপ্রার্থী

পুরুষ তোমার সামনে আবার
নতজানু হয়েছে নারী,
তাকে ক্ষমা করে দাও।

গৃহপালিত পশুর মতো তোমাকে ব্যবহার করেছে পুরুষ
আখমাড়াইয়ের কারখানার মতো তোমার জানু চেপে
তারা উৎপাদন করেছে সন্তান
টেলিভিশন বাক্সের মতো তোমার ভেতর তারা ঠেসে দিয়েছে
তাদের জগত
নীলাভ শিখার মতো জ্বলতে জ্বলতে তুমি তা প্রতিদিন
প্রচার করে যাচ্ছ-
ইলেকট্রনিক সরঞ্জামের মতো অপ্রাণীবাচক তোমার অস্তিত্ব
প্লাস্টিকের পুতুলের মতো প্রাণহীন
তোমার নাম হতে পারত কাঠকয়লা
তোমার নাম হতে পারত হাতুড়ি
তোমার নাম হতে পারত শেলাইকল
তোমার নাম হতে পারত মাদীকুকুর
নরবানরেরা ঠাট্টা করে তোমার নাম রেখেছে নারী
এইসব জেনে তোমার সামনে আমি
নতমুখে এসে দাঁড়িয়েছি, নারী
আমি পুরুষ
আমাকে ক্ষমা কর।

প্রতিদিন কেউ-না-কেউ স্বামী তার স্ত্রীকে পিটিয়ে হত্যা করে
প্রতিদিন কেউ-না-কেউ পশুস্বভাবী কামুক
তোমার মুখে এসিড ছুঁড়ে মারে
প্রতিদিন ১১ বছর বয়সী বালিকাকে
ধর্ষণ করে ১১জন পুরুষ
কেনাবেচা চলছে তোমাকে নিয়ে
যেন তুমি শাকশব্জি
আলুপটল
খাসীর মাংস
তোমার স্তন তারা মাপছে ফিতে দিয়ে
তোমার কোমর তারা মাপছে ফিতে দিয়ে
তোমার উরু তারা মাপছে ফিতে দিয়ে
দাঁড়িপাল্লা ঝুলিয়ে ওজন করছে তোমাকে
তোমার দাঁত চুল নখ পরখ করে সাব্যস্ত করছে
তোমার মূল্য

তোমার নাম হতে পারত মোগলাই পরোটা
তোমার নাম হতে পারত জাপানি হোন্ডা
তোমার নাম হতে পারত ডানহিল সিগারেট
তোমার নাম হতে পারত পুষিবিড়াল
অর্ধসভ্য মানুষ তোমার নাম রেখেছে অর্ধাঙ্গিনী

এইসব জেনে তোমার সামনে আমি
নতমুখে এসে দাঁড়িয়েছি, নারী

আমি পুরুষ
আমাকে ক্ষমা কর।
তুমি প্রজননযন্ত্র তাই তোমার নাম জননী
তুমি রমণযোগ্য তাই তোমার নাম রমণী
ঘোড়াশালে ঘোড়া হাতিশালে হাতির মতো মহলে মহলে থাকো
তাই তোমার নাম মহিলা
গৃহে গৃহে আসবাবপত্রের মত শোভা পাও
তাই তোমার নাম গৃহিণী
আমি পুরুষ শব্দের সমান অর্থবহ উচ্চারণে,
তোমার নামকরণ করতে চাই, নারী
কিন্তু পারি না
অক্ষম লজ্জায় আমি তোমার সামনে
অপরাধীর মত দাঁড়িয়ে আছি
আমি পুরুষ
আমাকে ক্ষমা কর।

আজ আমি তোমাকে বলতে এসেছি
পুরুষ শব্দের অর্থ হচ্ছে কর্তৃত্ব
এবং তোমার কর্তৃত্ব গ্রহণ করার সময় হয়েছে, নারী

পুরুষকে গ্রহণ কর।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই জুলাই, ২০১৭ সকাল ১১:৪০

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: হুম
এটি সুন্দর কবিতা। অনেকবার পড়েছি

২| ০৫ ই জুলাই, ২০১৭ সকাল ১১:৫৫

অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য বলেছেন: কবিতাটা আগে পড়ি নি! ভালো লেগেছে!

৩| ০৫ ই জুলাই, ২০১৭ দুপুর ১২:৩৭

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হিন্দু ছিলেন না। তিনি ব্রাম্ম ধর্মাবলম্বী ছিলেন। ব্রাম্মরা একেশ্বরবাদে বিশ্বাসী। তারা দেব দেবীর পুজা করেন না।

০৫ ই জুলাই, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৩১

সুখী মানুষ বলেছেন: স্যার, রাতু০১ এর মন্তব্যের উত্তরে একটা রেফারেন্স দিয়েছি। যদি কষ্ট করে পড়ে নিতেন।
পথ ভাবে আমি দেব, রথ ভাবে আমি / মূর্তি ভাবে আমি দেব, হাসে অন্তর্যামী পড়ার পর, আমি ধরেই নিয়েছিলাম কবিগুরু ধর্ম নিয়ে মাথা ঘামাতেন না। কিন্তু শিবাজী ঘটনায় উনার অংশগ্রহণ আমাকে ভাবনায় ফেলে দিয়েছে।

৪| ০৫ ই জুলাই, ২০১৭ বিকাল ৫:০৮

রাতু০১ বলেছেন: রবীন্দ্রনাথ কট্টর হিন্দো আন্দোলনকে সাপোর্ট দিতেন।

ভাইজান দুই একটা রেফারেন্স বলেন না।

০৫ ই জুলাই, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:২৮

সুখী মানুষ বলেছেন: কংগ্রেস নেতা বাল গঙ্গাধর তিলক ১৮৯৩ সালে ভারতের পুনায় প্রতিষ্ঠা করেন “গো-রক্ষিণী সভা” আর এই সব আয়োজনের মাধ্যমে হিন্দু মুসলিমের মধ্যে তৈরি করেন সাম্প্রদায়িক হানাহানি। ব্রিটিশ সরকার ১৮৯৭ সালে এর জন্য তিলককে গ্রেফতার করেন। তখন অসাম্প্রদায়িক চেতনার কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ভারতের সাম্প্রদায়িকতার জনক তিলককে মুক্ত করতে রাস্তায় নেমে পড়েন। তিনি তাকে মুক্ত করার জন্য টাকা সংগ্রহের জন্য দ্বারে দ্বারে ঘুড়েছেন। তিনি তিলকের আবিষ্কৃত শিবাজীর প্রদর্শিত পথে ভারতের হিন্দুদের মুক্তি দেখতে পেয়েছিলেন বলে তিনিও শিবাজী বন্দনায় মেতে উঠেছিলেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ‘শিবাজী উৎসব' কবিতা লিখে এ আন্দোলনে শরীক হয়েছিলেন। তিনি লিখলেন:
সেদিন শুনিনি কথা
আজি মোরা তোমার আদেশ
শির পাতি লব,
কণ্ঠে কণ্ঠে বক্ষে বক্ষে
ভারতে মিলিবে সর্বশেষ ধ্যান-মন্ত্র তব।
ধ্বজা ধরি উড়াইব বৈরাগীর উত্তরী বসন
দরিদ্রের বল,
এক ধর্ম রাজ্য হবে এ ভারতে
এ মহাবচন করব সম্বল।
মারাঠির সাথে আজি হে বাঙ্গালী
এক কণ্ঠে বল ‘জয়তু শিবাজী।
মারাঠির সাথে আজি হে বাঙ্গালী,
এক কণ্ঠে বল ‘জয়তু শিবাজী’
মারাঠির সাথে আজি হে বাঙ্গালি,
এক সঙ্গে চলো মহোৎসবে সাজি।
আজি এক সভা তলে
ভারতের পশ্চিম পুরব দক্ষিণ ও বামে
একত্রে করুক ভোগ এক সাথে একটি গৌরব
এক পুণ্য নামে।
-০-

কবিতাটা কবিগুরুর। আর উপরের মন্তব্য এখান থেকে নেওয়া: https://www.facebook.com/pilotnur

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.