![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
জি ভদ্র মহোদয় ও মহোদয়াগণ আমার আজিকার গেজানোর বিষয় রান্না।নিশ্চয়ই ভাবিতেছেন আমার মত রাজনৈতিক ও সাহিত্যের এত বড় মাপের বোদ্ধা(??) কেনু হঠাৎ রান্নাঘরে ঢুকিলেন??কি করিব বলুন?? লেখার তো বিষয় থাকিতে হইবে নাকি???সব তো কবিগুরু আর বিদ্রোহী কবি ভাগাভাগি করিয়া লিখিয়া ফেলিয়াছে।লেখা-লিখির ব্যাপারে এ দুজনের যে সিন্ডিকেট ছিল তাহা বোধ করি বৃটিশ সরকার ধরিতে পারে নাই।পারিলে আমার কি আজ রান্নার রেসিপি লইয়া চিরকূট লিখিতে হয়???
সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্এী সাহারা বিবি ঈদে বাড়ি গমনের পূর্বে গৃহে তালা মারিয়া যাইতে আদেশ দিয়াছেন।আর এদিকে আমার মাতা স্বান্ধ্যকালীন ছাদ ভ্রমনে যাবার পূর্বেই ঘরে তালা মারিয়া দিয়া চাবিখানা আঁচলে বাঁধিয়াছেন।তাহার একবারও মনে পড়িল না যে তাহার কনিষ্ঠ পুএটি সিগেরেটের অভাবে হা-পিত্যেশ করিয়া মরিতে পারে।মাতা-পিতারা সন্তানের মন বুঝিবে না এমন যেন নিয়ম হইয়াছে।মাতৃদেবও আমার মন বুঝিলেন না…. বুঝিলেন সাহারা বিবির মন!!!!
অগত্যা উপায় না দেখিয়া,দূরদর্শনখানা খুলিয়া বসিলাম। দেখিলাম দুজন সুন্দরী রমনী মুখে মেকাপের স্তূপ আঁটিয়া,চোখে সুরমা দিয়া,পরিপাটী কেশ আঁচড়াইয়া রান্না ঘরের উনুনে আগুন দিতাছে।অবাক হলুম।রান্নাঘরে মানুষ এত সাজ লইয়া কিভাবে ঢুকিতে পারে তাহা বোধগম্য হইল না।৫০০ টাকা মূল্যের রান্না করিবার নিমিত্তে উনারা যে ২০০০ টাকা রূপ আর কেশ চর্চায় শ্রাদ্ধ করিয়াছে তাহা বলিবার জন্য গবেষনার প্রয়োজন নাই।যাহা হোক,টানা ২০ টি মিনিট তাদের রন্ধন শিল্প দেখিয়া বুঝিলাম ….এ আর এমন কি হে বাছা??? ওমন রান্নার রেসিপি আমিও এক তুড়িতেই দিতে পারি(!!!!)
কিন্তু পাঠক/পাঠিকাগণ, আমার আজিকার রেসিপিখানা শুধুমাএ আমি রান্নাঘরেই সীমাবদ্ধ রাখিব না।বরং সামগ্রিকভাবেই আলুচনা করিব।গতকালের লিখাটুকু পুরুষদের উৎসর্গ করিয়াছিলাম।ভাবিলাম আজিকে রান্নার রেসিপি দিয়া নারীদের একটা গতি করিব এবং এ জাতির কাছে আমার দায়বদ্ধতাখানা স্বীকার করিব।
সকালে নিদ্রা ভাঙিতেই দন্ত,মুখ পরিস্কার না করিয়াই স্টারপ্লাসখানা খুলিয়া বসুন।সিরিয়াল সমূহের কূটনামি এবং কোন কুশলী কি পরিধান করিয়াছে তাহা প্রত্যক্ষ করুন।অতঃপর “ ওরে মিনসে !!!তুই এখনো ঘুমোচ্ছিস??? বলিয়া হূংকার দিয়া আপনার পতিদেবের পশ্চাৎদেশে বেলুনী দিয়া গুঁতো দিন।তারপরও তাহার ঘুম না ভাঙিলে উনি যে আপনার জীবন নিয়া মিনিছিনি খেলিয়াছেন তাহা জোর দিয়া বলিতে থাকুন।এ ৫ বছরের সংসারে যে তিনি আপনাকে শুধুমাএ ২ টি সন্তান আর কষ্ট ছাড়া কিছুই দেন নাই তাহা শাড়ির আঁচলখানা কোমড়ে গুঁজিয়া বলিয়া যান। আপনি আমেরিকা প্রবাসী লম্পট পাটোয়ারীকে বিবাহ করিলে যে আজ অনামিকার মত সুখে থাকিতে পারিতেন তাহা বিস্তারিত বলুন।এসব কথা শুনিলে জগতের কোন পুরুষ মানবকে বেহুশের ইনজেকশন দিলেও তিনি বিছানায় থাকিতে পারিবেন না ইহার আমি গ্যারান্টি দিলুম।অতঃপর চাল,ডাল,বোয়াল মাছ,মশলা,ভিনিগার,ইন্দুর নিধনের বিষ,টমেটো সস ইত্যাদি জিনিসের পর্দ নির্মাণ করিয়া আপনার মিনসের হস্তে ধরাইয়া দিন।
মিনসে এত বড় পর্দ দেখিয়া উনার যে অর্থ-সংকট চলিতেছে তাহা আপনাকে বুঝাইতে উদ্যোগ লইতে চাহিলে সঙ্গে সঙ্গে পাশের বাড়ির বিলকিস আপার পতি উনার স্ত্রীকে প্রতিমাসে ৩০০০ টাকা মূল্যের জামদানী কিনিয়া দেন তাহা জ্ঞাত করুন এবং ক্রন্দন করিতে বসুন।আপনার পতিদেব তাহার উপরি আয় নাই বলিয়া আপনাকে বুঝাইতে লাগিলে বাড়ি ছাড়িয়া চলিয়া যাইবেন বলিয়া হুমকি দিন।এমতাবস্হায় আপনার মিনসে নিশ্চিতরূপে বছর তিনেক আগের ক্রয়ক্রীত বসুন্ধরা লুঙ্গিখানা শরীরের নিম্নাংশে জড়াইয়া বাজারের থলে হাতে বাহির হইবেন এ বিষয়ে কুনু সন্দেহ নাই।
এই অবসরে আপনি পাশের বাড়ির বিলকিস আপার বাড়িতে গিয়া উপস্হিত হোন।উপরতলার ইয়াসমিন ভাবীর পতি যে আপনার দিকে ড্যাব ড্যাব করিয়া তাকায় এবং গাঁয়ে পড়িয়া উপকার করিতে চায় এ নিয়া সমালোচনা জুড়িয়া দিন।অতঃপর সকালের নাস্তাখানা ঐখানেই সারিয়া উপরতলার ইয়াসমিন ভাবীর গৃহে চলিয়া আসুন।বিলকিস আপার কনিষ্ঠ কন্যা যে এক অকাল কুষ্মান্ড ছোকরার সহিত প্রেম করিয়া বেড়াইতেছে এ নিয়া আপনার মাথা ব্যাথার কথা বলুন।এভাবে ঘন্টা তিনেক কাটিয়া গেলে অনুগ্রহ পূর্বক আপণ নিবাসে ফিরুন।
আপনার মিনসে এ সময়ের মধ্যে নিশ্চিতরূপে নরকে ফিরিয়া আসিয়াছেন যদি না তাহার হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া-কলাপ বন্ধ না হইয়া থাকে।খালিপেটে বাজারে গিয়াছেন বলিয়া উনি নাস্তা চাইতে পারেন।উনাকে আনয়নকৃত ইন্দুরের বিষখানা ভক্ষণ করিবার পরামর্শ দিন।এমন অবস্হায় মিনসে অফিসপানে পা বাড়াইবে কুনো সন্দেহ নাই।
এবার আসল কার্য রান্নার পালা।আপনার চুইট মিনসের বাজারের থলে হতে জিনিসপএ বাহির করুন এবং বোয়াল মাছের বদলে কেঁচকি মাছ দেখিয়া মূর্ছা যান।কিছুক্ষণ পর জাগি্য়া উঠুন এবং মুঠো ফোনটি হাতে নিয়া মিনসের নম্বরটি ডায়াল করুন।হে হে হে…এমন দূরহ পরিস্হিতিতে কুনো বুদ্ধিমান পুরুষ ফোন রিসিভ করিবে বলে মনে হয় না।অতঃপর রাগে ঠোঁট কামড়াইয়া যাহা আছে তাহা দিয়া রান্নার প্রস্তুতি নিন এবং মিনসে রাত্রিতে বাড়ি ফিরিলে তাহাকে আপনার পাশে শয়ন করিতে দিবেন না বলিয়া প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হোন।
প্রথমেই কাঁচকি মাছগুলোর মাথা ও লেজ শরীর হইতে আলাদা করুন।এ কাজ করিতে বটি বা এ.কে-৪৭ উভয়ই ব্যবহার করা যাইবে।তারপর এগুলো গঙ্গার জলে ধুয়ে পরিষ্কার করুন।এরপর সসপেনে কেরোসিন তেল ঢালিয়া উহা গরম করুন এবং তাতে মাছগুলো দিয়া ভাজিয়া ফেলুন।একটি বাটিতে টমেটো,শসা ও ধনিয়া পাতা কাটিয়া সাজান।তারপর ভাজা মাছগুলো বাটিতে রাখুন এবং গরম গরম পরিবেশন করুন।মনে রাখিবেন আপনি যদি বিষও রাঁধেন তাহা খাইতে সুস্বাদু হইবে যদি তাহা সুন্দররূপে পরিবেশন করেন।
শুভকামনা রইল আপনার মিনসের জন্য…:p
©somewhere in net ltd.