![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সাধারণ মানুষ ও তারকাদের মধ্যে জনপ্রিয়তা বা অপ্রিয়তা ছাড়াও একটা বিস্তর ফারাক আছে। আমি একজন সাধারণ মানুষ আজকে যেকোনো কিছু নিয়ে লিখতে পারি, বলতে পারি বা যেকোনো ধরনের পোশাক পরিধান করতে পারি। সে বিষয়ে খুব বেশি লোক মাথা ঘামাবে না, কেউ আমাকে ধর্ম বা নৈতিকতার শিক্ষা দিতে আসবে না, কারণ আমি সাধারণ মানুষ। আমার বখে যাওয়াতে তাদের কিছুই যায় আসে না। কিন্তু একজন তারকা কি বলবে, কি লিখবে বা কি পরিধান করবে তা নির্ধারণ করে দিবে “তাদের” মত সাধারণ মানুষ।
দুটি প্রশ্ন। প্রথম প্রশ্ন- এই “তারা” বা “তাদের মত সাধারণ মানুষ” কারা? দ্বিতীয় প্রশ্ন- “তারা” কেন নির্ধারণ করে দিবে?
-প্রথমত- এই তারা হচ্ছে তারাই- যারা মনে করে তারা সবাইকে ধর্ম ও নৈতিকতার পাঠ শেখাবে। এই তারা হচ্ছে তারাই – যারা মনে করে তারাই নির্ধারণ করে দিবে কারা কি লিখবে, দেখবে, বলবে কিংবা কি পরিধান করবে।
দ্বিতীয়ত- তারা নির্ধারণ করে দিবেন কারণ “তারা” মনে করেন তারাই সঠিক ধর্ম ও নৈতিকতা জানেন। তাই এটা তাদেরই দায়িত্ব যে তারা সবাইকে ধর্ম ও নৈতিকতার শিক্ষা দিবেন।
-স্মার্টফোন ও ইন্টারনেটের সহজলভ্যতা- আমাদের জন্য অভিশাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে, যা আমাদের জন্য আশীর্বাদ হওয়ার কথা ছিল। যে জায়গায় নির্বোধ সাধারণ মানুষের অবাধ বিচরণ সে জায়গায় এখন আর ভাল কিছু আশা করা যায় না। সংস্কৃতি কি হবে, সাহিত্য কেমন হবে, চলচ্চিত্রের বিষয়বস্তু কি হবে সে বিষয়ে সবার বক্তব্য নেয়া যাবে না। যে সাধারণ মানুষের সাহিত্যের ‘স’ নিয়ে কোন ধারণা নেই, সে মানুষের বক্তব্য অনুযায়ী সাহিত্য রচনা করলে তো সাহিত্যের সর্বনাশ হয়ে যাবে। একজন ধর্মীয় বোদ্ধার পরামর্শ অনুযায়ী সাহিত্য রচনা করলে, সে সাহিত্যে যে ধর্ম ছাড়া আর কিছু থাকবে না, তা চোখ বুজেই বলে দেয়া যায়। তেমনি একজন খেলোয়াড়ের পরামর্শে চলচ্চিত্র তৈরি করলে তার পুরোটা জুড়ে শুধু খেলাই থাকবে, রাজনীতিবিদদের পরামর্শে চলচ্চিত্র তৈরি করলে সেটা তাদের বা সংশ্লিষ্ট কারো বায়োপিকই হবে।
- তারকাদের ধর্ম ও নৈতিকতার পাঠ দেয়াটা আমাদের সমাজে এখন খুব সাধারণ একটি বিষয় এবং সাধারণ মানুষের জন্য একটি ফরজ কাজ। এই পাঠ দেয়ার প্রধান পাঠশালাটি হচ্ছে অনলাইন যোগাযোগ মাধ্যম, খুব নির্দিষ্ট করে বললে ফেসবুক।
আমরা সবাই ফেসবুক ব্যবহার করতে পারি। ফেসবুক আমাদের মতামত প্রকাশের জায়গাটা অনেক সহজ করে দিয়েছে। যেহেতু কারো মুখোমুখি দাঁড়িয়ে কোন মন্তব্য করতে হচ্ছে না, তাই সরাসরি কারো রোষানলে পড়ারও সুযোগ খুব কম। আমরা অনেকেই মনের কথা বলতে পারি না, কিন্তু লিখতে পারি। ফেসবুক বা অন্যান্য যোগাযোগ মাধ্যম আমাদের মনের কথা লিখার সুযোগ করে দিয়েছে।
- তারকা বিভিন্ন রকমের হয়ে থাকেন। তিনি হতে পারেন একজন ক্রিকেটার, অভিনেতা, লেখক, রাজনীতিবিদ কিংবা পরিচালক। ফেসবুক যখন এত সহজলভ্য ছিল না তখন আমরা অভিনেতাদের অভিনয় দেখার পর আমাদের মনের কথা বলতে পারতাম না। কিন্তু এখন ফেসবুক বা অন্যান্য সামাজিক মাধ্যমের বদৌলতে আমরা আমাদের মনের কথা লিখতে পারছি, তাদের ধর্ম কিংবা নৈতিকতার শিক্ষা দেয়ার নামে আমাদের মতামত তাদের উপর চাপিয়ে দেয়ার ব্যর্থ চেষ্টা করছি।
-আমাদের প্রত্যেকের জীবন আলাদা, চিন্তা ভাবনা আলাদা, দৃষ্টিভঙ্গি আলাদা। আমাদের নিজেদের জীবনে কার কি করা উচিত এবং কি উচিত নয় সেটি আমরা নিজেরাই ঠিক করব, সেটি আর কেউ ঠিক করে দিতে পারে না।
কারণ আমি যা বিশ্বাস করি, সেটি আরেকজন বিশ্বাস নাও করতে পারেন। বিশ্বাস কোন ধ্রুব বিষয় নয়। মানুষ ভেদে তার পরিবর্তন হয়। আমি আমার আপজনকে বিশ্বাস করব, সে তার আপনজনকে বিশ্বাস করবে, এটাই স্বাভাবিক । আমি কোনভাবেই তাকে আমার আপনজনের উপর বিশ্বাস করার মতামত চাপিয়ে দিতে পারি না। সমাজ, সংস্কৃতি, বিশ্বাস ধ্রুব নয়, পরিবর্তনশীল। একই ধরনের বিশ্বাস , একই ধরনের সংস্কৃতি, একই ধরনের সাহিত্য কিংবা একই ধরনের সমাজ সবসময় চলতে পারে না।
-আমরা আমাদের ধর্ম বা নৈতিকতা অন্যের উপর চাপিয়ে দিতে চাই। একজন তারকা কি ধরনের পোশাক পড়বে সেটার সিদ্ধান্ত নেয়ার অধিকার একমাত্র সেই তারকার, আমরা কোনভাবেই সেটা নির্ধারণ করতে পারি না, সে অধিকারও আমাদের কেউ দেয় নি।
কোন চলচ্চিত্র বা স্থির চিত্রে যৌনতা থাকবে কি না সেটা নির্ধারণ করার অধিকার আমাদের নেই, অধিকার আছে শুধুমাত্র সে নির্মাতার। আমরা চাইলে সেটি বর্জন করতে পারি, এর বিরুদ্ধে যুক্তি দিতে পারি কিন্তু সেটি বন্ধ করার সুপারিশ করতে পারি না।
একজন ক্রিকেটারের ভাল খেলা বা খারাপ খেলা তার ধর্মের উপর নির্ভর করে না। তাই খারাপ খেলার জন্য আমরা তাকে মালাউন বলে গালিগালাজ করতে পারি না। একজন সাবালক ক্রিকেটার কখন বাবা হবেন তা নিয়ে কোন ধরনের কুৎসিত আলোচনা আমরা করতে পারি না।
-কারো ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে কখনো যুক্তিতর্ক হতে পারে না। কোন কিছু তখনই করা যাবে না যখন তা অপরাধ। আর কোন কিছু অপরাধ কি না তা নির্ধারণ করবে আইন। আমরা নিজেরা কোন আইন প্রণয়ন করতে পারি না। কোন আইন কতটুকু যৌক্তিক বা সে আইন বহাল থাকা উচিত কি না সে বিষয়ে আলোচনা হতে পারে, তারপর সিদ্ধান্ত হতে পারে। কিন্তু তাই বলে আমরা কাউকে স্ব-আইন লঙ্ঘনকারী অপরাধী বানাতে পারি না।
-তারকাদের ধর্ম ও নৈতিকতার শিক্ষা দেয়ার দায়িত্ব কারোর না। ধর্ম ও নৈতিকতা ধারণ করার বিষয়, প্রত্যেকের কাছে তার ভিন্ন সংজ্ঞা রয়েছে।
২| ০১ লা অক্টোবর, ২০১৮ রাত ৮:০৬
চাঁদগাজী বলেছেন:
কাজ নেই? খই ভাজার চেষ্টা করছেন?
৩| ০১ লা অক্টোবর, ২০১৮ রাত ৮:০৮
সনেট কবি বলেছেন: বেশ
৪| ০১ লা অক্টোবর, ২০১৮ রাত ৯:০৮
উদাসী স্বপ্ন বলেছেন: ধর্ম মানুষকে পশ্চাদপদ জঙ্গি করে তোলে
৫| ০১ লা অক্টোবর, ২০১৮ রাত ৯:৫৬
রাজীব নুর বলেছেন: সুন্দর লিখেছেন।
৬| ০১ লা অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১০:০৭
বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: শিরোনামের উত্তর - তারকাদের বাবা মায়ের...
©somewhere in net ltd.
১|
০১ লা অক্টোবর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:২৩
কে ত ন বলেছেন: আপনি ভুল বুঝছেন। অন্য ধর্মে কি আছে জানিনা, কিন্তু ইসলাম ধর্মে বলে কেউ যদি কোন ভুল বা অন্যায় কিছু করে, তবে মু'মিন বান্দার উচিত নম্র ভাষায় ভদ্রতার সাথে অপর মু'মিনের ভুল ধরিয়ে দেয়া। যেহেতু তারকাদের সাথে এখন সামাজিক মাধ্যমে যোগাযোগের সরাসরি উপায় হয়েছে, তাই মু'মিনদের জন্য কাজটা সহজ হয়ে গেছে। কিন্তু বিব্রত হতে হয় তখন, যখন কেউ ক্ষমতার অপব্যবহার করে।
কেউ যদি সাকিবের বউয়ের ব্যাপারে এরকম কমেন্ট করত "মাশাল্লাহ, ওনার বউ অনেক সুন্দর, আরও সুন্দর হত যদি আল্লাহর বিধান অনুযায়ী পর্দা করে চলত। আল্লাহ উনাকে এই ব্যাপার সঠিক জ্ঞান দান করুক" তাহলে আমি ব্যাপারটাকে খুব পজিটিভলি নিতাম। ইসলাম প্রচারের সঠিক নিয়ম এটাই।