নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

Do Limitless!

পথিক সাকিব

পথিক সাকিব › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমার পছন্দের দুইটা ছোট গল্প

১৪ ই জুলাই, ২০১৬ রাত ৯:৫৯

আজ আমি আপনাদের দুইটা সুন্দর গল্প শুনাবো। প্রথমটা তাদের জন্য, যারা মনে করে তাদের দিয়ে কিছু হবে না। দ্বিতিয়টা তাদের জন্য, যারা শুধু ভাগ্যের দোষ দেয়। দুইটা গল্পই মনযোগ দিয়ে পড়ার অনুরোধ করছি। হতে পারে এই গল্পগুলোই আপনার দৃষ্টিভঙ্গী বদলে দিবে।

গল্প ১ঃ দুইটা বাচ্চা ছেলে, একজনের বয়স ১০, একজনের বয়স ৬। গ্রাম থেকে দূরে খেলছিল। হটাৎ বড় ছেলেটা কুয়ায় পড়ে গেল। ছোট ছেলেটা সাহায্যের জন্য আসে পাশে তাকাচ্ছিল, চিৎকার করছিল। কিন্তু অনেক দূর দূর পর্যন্ত কেও ছিল না। ছেলেটা বুঝলো কেও তাকে সাহায্য করতে আসবে না। ও আশে পাশে খুজলো, কিছু পাওয়া যায় কি না যেটা তার বন্ধুর জীবন বাঁচাতে পারে। পেয়েও গেল। একটা দড়ী বাধা বালতি। সেটাই সে কূয়ায় ফেলে দিল, আর বন্ধুকে বলল বালতি ধরতে। সেই ছোট্ট ছেলেটা কোন একভাবে একাই টেনে তুলতে সক্ষম হয় বড় ছেলেটাকে।
তারপর যখন তারা গ্রামে ফিরে ঘটনার বর্ননা করে, কেও কিন্তু বিশ্বাস করে না তাদের কথা। ৬ বছরের একটা ছেলে, যে একটা পানি ভর্তি বালতিই তুলতে পারে না, সে কিভাবে ১০ বছরের একটা ছেলেকে কূয়া থেকে তুলবে? খুবই যুক্তিযুক্ত কথা।
শুধু গ্রামের এক বৃদ্ধ জ্ঞানী মোড়ল বিশ্বাস করে তাদের কথা। গ্রামের বাকি লোক যখন তার কাছে এসে জানতে চাইলো, এটা কিভাবে সম্ভব হয়েছে, তখন জ্ঞানী বৃদ্ধটা কথা বলা শুরু করলো।
" আমরা সাধারন ভাবে জানি, ওই ছেলেটার ক্ষমতা নাই তার চেয়ে বড় একটা ছেলেকে কূয়া থেকে টেনে তুলার। কিন্তু ওই ছেলেটা নিজে সেটা জানে না। যখন ও কাজটা করছিল, তখন তার আশে পাশে কেও ছিলোও না তাকে বলার যে সেটা তার জন্য অসম্ভব, সে পারবে না। সে যেটা জানতো, তা হল, তাকে এটা করতেই হবে। শুধু মাত্র এই জন্যই তার পক্ষে সম্ভব হয়েছে এমন অসম্ভব একটা কাজ।"

মোরাল অব স্টোরীঃ ভাই, মোরাল সিম্পল। আমরা আসলে জানিই না আমাদের ক্ষমতা কতখানি। ছোট বেলা থেকে, এটা মানা, ওটা মানা, এটা পারবে না, ওটা অসম্ভব এগুলা শুনতে শুনতে আমাদের ধারনা হয়ে গেছে যে সত্যিই আমাদের ক্ষমতা সীমিত। আমাদের পক্ষে সবই সম্ভব, শুধু যদি আমরা দৃড় প্রত্যয় নিয়ে এগুই। সার্কাসে হাতির বাচ্চাকে দড়ী দিয়ে বেধে রাখা হয়, যেটা সে অনেক চেষ্টা করেও ছিঁড়তে পাড়ে না। কথা হল, হাতীটা যখন বড় হয়ে উঠে তখনও সেই একই দড়ী দিয়ে বেধে রাখা হয়, এবার তার ক্ষমতা আছে দড়ী ছিঁড়ার। কিন্তু সে চেষ্টা করে না। হ্যা ভাই, সেই দড়ীটাই ছিড়তে বলছি। এই দড়িটা আমাদের ছোটবেলা থেকে পায়ে বেধে দেওয়া হয়েছে, নানা বিঁধি নিষেদের।

গল্প ২ঃ বীরবল আর রাজার একবার শিকারে যাওয়ার কথা ছিল। সেদিন সকালেই রাজার একটা আঙ্গুল কোনভাবে কেটে যায়। এজন্য রাজার মন খুব খারাপ হয়।
যথা সময়ে বীরবল আসে, রাজা তখন তার কাটা আঙ্গুলের কথা জানায়। বীরবল বলে, হুজুর, যা হয় ভালোর জন্যই হয়।
রাজা তো বীরবলের এমন কথা শুনে ভয়াবহ ক্ষেপে যায়। তাৎক্ষনিক হুকুম দেয় বীরবলকে গ্রেপ্তার করার এবং পরের দিন সকালে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার। রাগে, দুঃখে রাজা একাই চলে যায় শিকারে।
ঘটনাক্রমে রাজা জঙ্গলে জংলি একটা দলের কাছে বন্দী হয়। এবং জংলী দল নরবলী দেওয়ার জন্য রাজাকে ধরে নিয়ে যায়। নরবলির উৎসব শুরু হলে, হটাৎ একজনের নজরে পড়ে রাজার কাটা আঙুলের দিকে। সে তখন বাকি সবাইকে দেখায়। সেখানে নিয়ম ছিলো, কারো শরীরের কোন অংশ কাটা থাকার মানে হল, সে অশুভ। তারা তাই অশুভ রাজাকে বিতারিত করে দেয়।
এদিকে রাজা মুক্ত হয়ে তো দৌড় দেয় রাজপ্রাসাদে, বীরবলকে বাঁচাতে হবে। বীরবল সত্যেই বলেছিল। রাজা একদম পারফেক্ট টাইমে রাজপ্রাসাদে এসে উপস্থিত হয়ে বীরবলকে বাঁচাতে সক্ষম হয়। তারপর সে বীরবলের কাছে পুড়ো ঘটনা বলে ক্ষমা চায়। লজ্জিত হয়, সত্য কথা বলার জন্য বীরবলের জীবন টাই নিতে চলেছিল। বীরবল এবারো বলে উঠে, যা হয় ভালোর জন্য। রাজা এবার অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করে, এখানে কি ভালো দেখলা? আমি আর ১ মিনিট দেরি করলে তোমার জান চলে যেত।
বীরবল তখন গম্ভীর হয়ে বলে উঠল, হুজুর, আঙ্গুল কিন্তু শুধু আপনারই কাটছে। ওরা আপনাকে ছেড়ে দিত অশুভ বলে, আপনার সাথে আমি গেলে তো আমাকে আর ছাড়তো না। নিশ্চিত ভাবেই এতক্ষনে আমার বলি হয়ে যেত।

মোরাল অব দি ষ্টোরীঃ এইটার মোরাল নিশ্চয় ধরেই ফেলছেন। ধরেই নিন না, এতোদিন যা হয়েছে আপনার সাথে, সব আপনার ভালোর জন্যই হয়েছে। এটাই সত্য। পুরোন সব ব্যার্থতা ভুলে গিয়ে চলেন নতুন করে শুরু করি।

এই দুইটা গল্প দিয়ে এটাই বলতে চাই। পুরোন সৃতি/ভুল আমাদের অনেক সময় নষ্ট করে। আমরা নিজের মনের শান্তি নষ্ট করে ফেলি। আর মানুষের কথায়/ টিটকারির ভয়ে আমরা নতুন করে শুরু করতেও ভয় পাই। শেষমেশ আমাদের মনে ধারনা জন্মে উঠে, "আমাকে দিয়ে কিচ্ছু হবে না"। চলুন নিজেকে বদলাই, সবকিছুই বদলে যাবে। আমাদের ক্ষমতা অসীম, আর খারাপ ভাগ্য বলতে কিছুই নাই, এটা আমার বিশ্বাস। হয়তো তাৎক্ষণিক ভাবে মনে হয় খারাপ হলো আমার সাথে, পরে বোঝা যায়, যা হয়েছিলো তা ভালোই হয়েছে।

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই জুলাই, ২০১৬ রাত ১১:৫৩

SwornoLota বলেছেন: কোন সন্দেহ নেই।

২| ১৫ ই জুলাই, ২০১৬ রাত ১২:০৩

আব্দুল্লাহ ইথার খান বলেছেন: খুব ইন্সপায়ার্ড লাগলো আমার কাছে। এ রকম আরো কিছু থাকলে প্লিজ দেবার অনুরোধ করছি।
বিনা অনুমতিতে এখানে শেয়ার দিলাম Facebook
আর এরকম আবারো কিছু লিখলে, আমাকে প্লিজ ফেসবুকে মেসেজ দিয়ে জানাবেন

৩| ১৫ ই জুলাই, ২০১৬ রাত ১:০৬

জহিরুল ইসলাম কক্স বলেছেন: খুব ভালো হয়েছে।অনুপ্রেরণা আসে

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.