![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
একটাই ফিল্টার, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ফিল্টার এটা, দেশের উন্নয়নে মানবিকতার ও মুক্ত চিন্তার আদর্শের সৈনিক।
-- ইসলাম (শান্তি)র ধর্ম, এখানে কাফের, নাস্তিক, অন্যধর্মের বা ভিন্নমত প্রদারকারীকেও হত্যার সুযোগ নেই, তবুও অভিজিত, রাজিব, দীপক, বাবু হত্যার করা হয়েছে নাস্তিকতার অযুহাতে।
জেনেনেই আসুন ইসলামের দৃষ্টিতে নরহত্যাকারীরা কতটা ভ্রান্ত পথে আছে।
পবিত্র কোরআনে নরহত্যাকে চিরতরে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে বলা হয়েছে, ‘আল্লাহ যার হত্যা নিষিদ্ধ করেছেন, যথার্থ কারণ ব্যতিরেকে তোমরা তাকে হত্যা করো না।’ (সূরা বনি ইসরাইল, আয়াত-৩৩) বিশ্বের সকল ধর্ম নরহত্যার মতো জঘন্য অপরাধ থেকে বিরত থাকার জন্য নির্দেশ দিয়েছে।
مِنْ أَجْلِ ذَلِكَ كَتَبْنَا عَلَى بَنِي إِسْرَائِيلَ أَنَّهُ مَن قَتَلَ نَفْسًا بِغَيْرِ نَفْسٍ أَوْ فَسَادٍ فِي الأَرْضِ فَكَأَنَّمَا قَتَلَ النَّاسَ جَمِيعًا وَمَنْ أَحْيَاهَا فَكَأَنَّمَا أَحْيَا النَّاسَ جَمِيعًا وَلَقَدْ جَاء تْهُمْ رُسُلُنَا بِالبَيِّنَاتِ ثُمَّ إِنَّ كَثِيرًا مِّنْهُم بَعْدَ ذَلِكَ فِي الأَرْضِ لَمُسْرِفُونَ
এ কারণেই আমি বনী-ইসলাঈলের প্রতি লিখে দিয়েছি যে, যে কেউ প্রাণের বিনিময়ে প্রাণ অথবাপৃথিবীতে অনর্থ সৃষ্টি করা ছাড়া কাউকে হত্যা করে সে যেন সব মানুষকেই হত্যা করে। এবং যে কারও জীবন রক্ষা করে, সে যেন সবার জীবন রক্ষা করে। তাদের কাছে আমার পয়গম্বরগণ প্রকাশ্য নিদর্শনাবলী নিয়ে এসেছেন। বস্তুতঃ এরপরও তাদের অনেক লোক পৃথিবীতে সীমাতিক্রম করে।
সম্প্রতি ড: জাকির নায়েব এর লেখচারটি সত্যি মাইলফলক।
বি:দ্র: ( ) এ অবস্থিত লিখাটি ইউটিবে সার্চ দিলেও পেয়ে যাবেন সহজে অথবা লিংটিতে ক্লিক করেও শুনতে পারবেন।
( ইসলামে মানুষ হত্যা নিষেধ এরপরেও কেন ইসলামের নামে মানুষ হত্যা করা হচ্ছে ?? Dr. Zakir Naik Bangla )
https://youtu.be/UwecbfwvfsE
:::::::: আত্মহত্যা ও আত্মঘাত ইসলামের দৃষ্টিতে হারাম::::::::
-------------নিরীহ মানুষকে নির্বিচারে হত্যা করে বেহেশত নয়, জাহান্নামেই যেতে হবে--------------- মাও: ফরীদ উদ্দীন মাসউদ
নিজেকে মানব বোমা বানিয়ে উড়িয়ে দেয়া বৈধ নয়। মসজিদ তো নয়ই, গির্জা, মন্দির ও পেগোডাসহ অমুসলিমদের উপাসনালয়ে হামলা এবং জনমনে সন্ত্রাস ও আতঙ্ক সৃষ্টি করা হারাম এবং নিষিদ্ধ। আত্মঘাতীদের জানাজা পড়তেও ইসলামে নিষেধ রয়েছে। এসব কর্মকাণ্ড কঠোর শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবেই ইসলাম গণ্য করে।
ইসলামের নামে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদীদের বিরুদ্ধে দেয়া ফতোয়ায় কী থাকছে জানতে চাইলে মাওলানা ফরীদ উদ্দীন মাসউদ মানবকণ্ঠকে বলেন, দেশের প্রখ্যাত ও বিজ্ঞ মুফতি, মুহাদ্দিস ও মুফাসিরদের কাছে ১১টি প্রশ্ন রাখা হয়েছে। সেসব প্রশ্নের ভিত্তিতে তারা এর জবাব ও ফতোয়ায় স্বাক্ষর দেবেন। এরপরই আগামী ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে ফতোয়াটি ঘোষণা করা হবে।
তিনি বলেন, দেশের আলেমদের কাছে প্রশ্ন রাখা হয়েছে, বর্তমানে ক্ষুদ্র একটি গোষ্ঠী গোটা পৃথিবীতে ইসলামের নামে আতঙ্ক ও সন্ত্রাস সৃষ্টি করে চলেছে। তারা নির্বিচারে মুসলিম-অমুসলিম নির্বিশেষে নিরপরাধ ও অসহায় নারী-পুরুষ, বৃদ্ধ ও শিশুদের হত্যা করছে। এমনকি মসজিদসহ ধর্মীয় উপাসনালয়গুলোতে নামাজ ও প্রার্থনারত মানুষদের হত্যা করছে। আত্মঘাতী বোমা মেরে নিজেকে উড়িয়ে দিচ্ছে। পরে তার মৃত্যুকে শহীদি মৃত্যু বলে ঘোষণা দেয়া হচ্ছে। এসব হিংস পন্থাকে তারা জান্নাত লাভের পথ বলে বিবেচনা করছে। এটা তারা কিভাবে দেখছেন।
এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রশ্নগুলো হচ্ছে শান্তির ধর্ম ইসলাম এ ধরনের সন্ত্রাস ও জঙ্গি কর্মকাণ্ডকে সমর্থন করে কিনা? নবী-রাসুল বিশেষ করে আমাদের নবী মুহম্মদ (সা.) কি হিংস ও বর্বরতার পথ অবলম্বন করে ইসলাম কায়েম করেছেন? ইসলামের জিহাদ আর এ ধরনের সন্ত্রাস একই জিনিস কিনা? সন্ত্রাস সৃষ্টির পথ কি বেহেস্ত লাভের পথ নাকি জাহান্নামের পথ? আত্মঘাতী সন্ত্রাসীর মৃত্যু কি শহীদি বলে গণ্য হবে? ইসলামের দৃষ্টিতে গণহারে হত্যা কি বৈধ? নারী-শিশু-বৃদ্ধ নির্বিশেষে নির্বিচার হত্যাকাণ্ড ইসলাম কি সমর্থন করে? যেখানে শত্রু হলেও ঘুমন্তও নিরস্ত্র কোনো মানুষকে হত্যা করা যাবে না, সেখানে এবাদতরত মানুষকে হত্যা করা কী ধরনের অপরাধ? মন্দির ও গির্জাসহ অমুসলিমদের উপাসনালয়গুলোতে হামলা করা কি বৈধ? সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদীদের বিরুদ্ধে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলা ইসলামের দৃষ্টিতে সব মানুষের কর্তব্য কিনা?
মাওলানা মাসউদ বলেন, অভিজ্ঞ আলেমদের পরামর্শ নিয়েই এসব প্রশ্ন তৈরি করা হয়েছে। ইতিমধ্যে জেলায় জেলায় কমিটি গঠন করে সারাদেশের আলেমদের কাছে এসব প্রশ্ন পাঠানো হয়েছে। তিনি বলেন, ইসলাম কখনো সন্ত্রাস সমর্থন করে না। হিংসা, হানাহানি, সন্ত্রাস ও উগ্রবাদ নির্মূল করার জন্যই এ মহান ধর্মের আবির্ভাব। ইসলাম কেবল মানুষ নয়, সব প্রাণী ও জীব-জন্তুর নিরাপত্তাও নিশ্চিত করেছে। একটি গাছের পাতাও অনর্থক কাটা ও ছেঁড়া ইসলাম সমর্থন করে না। একটি হাদিসে আছে, আল্লাহর রাসুল (সা.) প্রেম ও ভালোবাসাপরায়ণতাকে সর্বোত্তম গুণ বলে ব্যক্ত করেছেন। কোরানে রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে দুনিয়ার জন্য রহমত ও করুণা বলে অভিহিত করা হয়। তাকে সব মানুষের কল্যাণের জন্য আবির্ভূত বলে আখ্যা দেয়া হয়েছে। ওহুদের ময়দানে রাসুলুল্লাহ (সা.) নির্মমভাবে ক্ষত-বিক্ষত হওয়ার পর কেউ কেউ অমুসলিমদের বিরুদ্ধে অভিশাপ ও বদদোয়া দেয়ার জন্য তাকে অনুরোধ করেছিলেন বলে জানা যায়। এ অবস্থায়ও তিনি বলেছিলেন, আমাকে লা’নতকারী এবং অভিশাপদাতা রূপে পাঠানো হয়নি। আমি তো রহমত ও করুণারূপেই প্রেরিত হয়েছি। তায়েফে নির্যাতনের সময়েও তিনি তাদের হেদায়েত ও কল্যাণ কামনা করেছেন।
আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসউদ বলেন, দেহের যদি কোনো অংশে পচন ধরে সেজন্য গোটা দেহকে নিরাপদ রাখার জন্য যেমন অপারেশনের প্রয়োজন হয়, তেমনি গোটা মানবজাতিকে রক্ষার জন্য সন্ত্রাস ও আতঙ্ক থেকে বাঁচানোর জন্য প্রয়োজনে সশস্ত্র সংগ্রাম বা কিতালের অনুমোদন রয়েছে। তবে তার সঙ্গে অনেকগুলো শর্ত যুক্ত রয়েছে। এক্ষেত্রে কোনো বাড়াবাড়ি বা সীমা লঙ্ঘন পবিত্র কোরানে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, জনমনে সন্ত্রাস ও আতঙ্ক সৃষ্টি করা হারাম ও নিষিদ্ধ। এটি কখনই বেহেস্ত যাওয়ার পথ হতে পারে না। এটা জাহান্নামের পথ। যারা ইসলামের নামে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়ছেন, তাদের যদি বেহেস্ত লাভ করতে হয়, তাহলে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের নামে জাহান্নামের পথ থেকে অবিলম্বে তওবা করে শান্তি ও হেদায়েতের পথে ফিরে আসতে হবে। আত্মহত্যা ও আত্মঘাত ইসলামের দৃষ্টিতে হারাম। নিজেকে মানব বোমা বানিয়ে উড়িয়ে দেয়া কখনোই বৈধ নয়। নবীজি (সা.)-এর সঙ্গে এক ব্যক্তি যুদ্ধে আহত হয়ে আত্মহত্যা করলে নবীজি (সা.) তাকে জাহান্নামী বলে ঘোষণা দেন। অন্য কোনো অপরাধ করে যদি কেউ মারা যান, তাহলে তার জানাজা পড়ার বিধান রয়েছে। কিন্তু আত্মহত্যাকারীর জানাজা পড়তেও নিষেধ করা হয়েছে। সুতরাং এ ধরনের তাণ্ডব কখনো সমর্থনযোগ্য নয়। আত্মহত্যা করে যে মৃত্যুবরণ করবে সে কখনো মহান শহীদের অন্তর্ভুক্ত হতে পারবে না। তার মৃত্যু শহীদি মৃত্যু বলে গণ্য হবে না।
ফতোয়ায় আরো বলা হচ্ছে, ইসলামে নিরপরাধ মানুষকে গণহারে হত্যা করাও বৈধ নয়। এমনকি সন্দেহের বশবর্তী হয়েও কাউকে হত্যা করা নিষেধ। আপনাকে সন্ত্রাসী সন্দেহ করে গুলি করলাম এটাও হারাম। যারা সশস্ত্র যুদ্ধে শরিক নন, যেমন শিশু, নারী, বৃদ্ধ, দুর্বল ও নিরীহ মানুষকে হত্যা করা ইসলামে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। এমনকি যুদ্ধ চলাকালীনও তাদের হত্যা করা বৈধ নয়। কিতাল বা সশস্ত্র যুদ্ধের উদ্দেশ্যে যখন মুসলিম দল বের হতেন, তখনো নবী (সা.) এ ব্যাপারে তাদের সতর্ক থাকতে কঠোরভাবে নির্দেশ দিতেন। আর যে কোনো অবস্থায় খুন করা অপরাধ। এবাদত বা প্রার্থনারত অবস্থায় কাউকে হত্যা করা এর চেয়েও জঘন্য ও মারাত্মক অপরাধ। আর এসব ক্ষেত্রে যারা অপরাধী বলে সাব্যস্ত হবে, রাষ্ট্রের প্রচলিত আইনে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।
প্রত্যেকেরই নিজ নিজ শক্তি অনুযায়ী সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদকে প্রতিরোধ করা অবশ্যই কর্তব্য। হাদিসে আছে তোমরা খারাপ কাজ দেখলে শক্তি থাকলে হাতে প্রতিরোধ করো (এটা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাজ)। তা যদি না থাকে তাহলে কথা দিয়ে তাদের বুঝাও (এটা হলো আলেম ও শিক্ষিত জনগোষ্ঠীর কাজ)। আর সেটাও যদি না পার তাহলে তাকে মনে মনে ঘৃণা কর (এটা সবার জন্য)।
নবী ও রাসুল (সা.) ইসলাম প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে কস্মিনকালেও সন্ত্রাস ও বর্বরতার পথ অবলম্বন করেননি বলে ফতোয়ায় উল্লেখ করে বলা হচ্ছে ইসলাম প্রতিষ্ঠার পথ হলো দাওয়াত, মহব্বত ও প্রেমের পথ। আল্লাহর রাসুল (সা.) ও তার অনুসারী সাহাবিরা প্রেম ও খেদমতের মাধ্যমে মানুষকে কল্যাণ ও হেদায়েতের প্রতি দাওয়াত দিয়েছিলেন। রাসুল (সা.)-এর গোটা জীবন এর সাক্ষী। আল্লাহর রাসুল (সা.)-এর কাছে একবার সাহাবিরা জানতে চেয়েছিলেন, মন্দ পন্থা অবলম্বন করে কখনো কি কল্যাণ প্রতিষ্ঠা করা যায়? তিনি সুস্পষ্ট জবাব দিয়েছিলেন, না। মন্দ ও অন্যায় পন্থা অবলম্বন করে কল্যাণ প্রতিষ্ঠা করা যায় না।
ফরীদ উদ্দীন আরো বলেন, ফতোয়ায় বলা হবে জিহাদ ও সন্ত্রাস এক জিনিস নয়। জিহাদ হলো আল্লাহর একটি অন্যতম নির্দেশ। পক্ষান্তরে সন্ত্রাস হলো হারাম এবং অবৈধ। জিহাদ হলো নিজের, পরিবার ও সমাজের শান্তি নিরাপত্তা ও কল্যাণ প্রতিষ্ঠার জন্য নিরন্তর প্রয়াস চালিয়ে যাওয়া। জিহাদ অর্থ পরিশ্রম করা। খারাপ প্রবৃত্তিগুলো সংশোধন করে সৎগুণাবলি সম্পন্ন মানুষরূপে গড়ে তোলা সবচেয়ে বড় জিহাদ বলে হাদিসে ব্যক্ত করা হয়েছে। আল্লাহর সন্তুষ্টি, হেদায়েত ও কল্যাণের শুদ্ধ নিয়ত যদি না থাকে সেটা কখনোই জিহাদ বলে গণ্য হয় না।
ফতোয়ায় বলা হচ্ছে, কোরান মজিদে সুস্পষ্ট ভাষায় পৃথিবীতে বিশৃঙ্খলা ও সন্ত্রাস সৃষ্টি করতে নিষেধ করা হয়েছে। কোরানের একটি আয়াতে বলা হয়েছে, সন্ত্রাস ও আতঙ্ক সৃষ্টি করো না। সন্ত্রাস ও আতঙ্ক সৃষ্টি করা মুনাফিকদের কাজ। কোরানের ভাষায়, একটি মানুষের প্রাণ রক্ষা করার অর্থ হচ্ছে গোটা মানবজাতির প্রাণ রক্ষা করা। পক্ষান্তরে একজন মানুষকে অন্যায়ভাবে হত্যা করা আর গোটা মানবজাতিকে হত্যা করার নামান্তর। অপর একটি হাদিসে বলা হয়েছে, মুসলিম হলো সে, যার ক্ষতি থেকে সব মানুষ নিরাপদ থাকবে। সুতরাং ইসলাম ও মুসলিম উম্মাহর সঙ্গে সন্ত্রাসকে যুক্ত করা চরম মুনাফেকি ও মিথ্যাচার বলে গণ্য হবে। সন্ত্রাসীরা কখনো ইসলাম ও মুসলিম উম্মাহর বন্ধু নয়। এরা সুস্পষ্ট শত্রু। এদের বিষয়ে সতর্ক থাকা সবার কর্তব্য।
আল হাদিস:
وعن أَبي معبد المقداد بن الأسْود رضي الله عنه ، قَالَ : قُلْتُ لرسول الله صلى الله عليه وسلم : أرَأيْتَ إنْ لَقِيتُ رَجُلاً مِنَ الكُفَّارِ ، فَاقْتتَلْنَا ، فَضَرَبَ إحْدَى يَدَيَّ بِالسَّيْفِ ، فَقَطَعَها ، ثُمَّ لاذَ مِنِّي بِشَجَرَةٍ ، فَقَالَ : أسْلَمْتُ لِلهِ ، أأقْتُلُهُ يَا رَسُول الله بَعْدَ أنْ قَالَهَا ؟ فَقَالَ : (( لا تَقْتُلهُ )) فَقُلْتُ : يَا رَسُول الله ، قَطَعَ إحْدَى يَدَيَّ ، ثُمَّ قَالَ ذلِكَ بَعْدَ مَا قَطَعَهَا ؟! فَقَالَ : (( لا تَقتُلْهُ ، فإنْ قَتَلْتَهُ فَإنَّهُ بِمَنْزِلَتِكَ قَبْلَ أنْ تَقْتُلَهُ ، وَإنَّكَ بِمَنْزِلَتِهِ قَبْلَ أنْ يَقُولَ كَلِمَتَهُ التي قَالَ )) مُتَّفَقٌ عَلَيهِ . ومعنى (( أنه بمنـزلتك )) أي : معصوم الدم محكوم بإسلامه . ومعنى (( أنك بمنـزلته )) أي : مباح الدمِ بالقصاص لورثتهِ لا أنه بمنـزلته في الكفر ، والله أعلم .
আবূ মাবাদ মিকদাদ ইবনুল আসওয়াদ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞেস করলামঃ আপনি কি বলেন যদি কোন কাফেরের সাথে আমার মোকাবেলা হয় এবং পারস্পরিক যুদ্ধে সে আক্রমণ থেকে বাঁচার জন্য একটি গাছের আড়ালে আশ্রয় নিয়ে বলে, আমি আল্লাহর জন্য ইসলাম গ্রহণ করলাম, ইয়া রাসূলুল্লাহ! তার ঐ কথা বলার পর আমি কি তাকে হত্যা করব? তিনি বলেনঃ তাকে হত্যা করো না। আমি বললাম, ইয়া রাসূলুল্লাহ! সে তো আমার দুই হাতের একটি কেটেছে, অতঃপর একথা বলেছে। তিনি বলেনঃ তাকে হত্যা করো না। কেননা তুমি যদি তাকে হত্যা করো, তাহলে তুমি তাকে হত্যা করার পূর্বে যে মর্যাদায় ছিলে, সে সেই মর্যাদায় পৌঁছে যাবে; আর যে কলেমা সে পাঠ করেছে, সেই কলেমা পাঠের পূর্বে সে যে স্তরে ছিল; তুমি(তাকে হত্যা করলে) সেই স্তরে নেমে যাবে। ইমাম বুখারী ও ইমাম মুসলিম হাদীসটি রিওয়ায়াত করেছেন। أنه بمنزلتك কথার অর্থ হলো: ইসলাম গ্রহণ করার কারণে সে ব্যক্তির রক্তপাত হারাম হয়ে গেছে। আর أنه بمنزلته কথার অর্থ হলো: তুমি তাকে হত্যা করার দরুন তার ওয়ারিসদের পক্ষ থেকে কিসাস স্বরূপ তোমার রক্ত প্রবাহিত করা তাদের জন্য বৈধ হয়ে যাবে। কিন্তু তুমি তার মত কাফের হয়ে যাবে না। আল্লাহই ভালো জানেন।
:::::ইসলামের দৃষ্টিতে দেশপ্রেম ও স্বদেশ চেতনা:::::
ইসলাম মানুষের স্বভাবজাত ধর্ম। মা, মাতৃভূমি ও মায়ের ভাষার প্রতি মানুষের সহজাত আকুতিকেও ইসলাম শ্রদ্ধা করে। 'দেশপ্রেম ইমানের অঙ্গ'- বাক্যটি হাদিসের অন্তর্ভুক্ত কি না, তা নিয়ে বিতর্ক থাকতে পারে; কিন্তু দেশের প্রতি আত্মিক প্রেরণা ও ভালোবাসাকে ইসলাম কখনো অস্বীকার করে না। দেশপ্রেমের ইংরেজি প্রতিশব্দ Patriotism. গ্রিক patria শব্দ থেকে Patriotism শব্দের উৎপত্তি। Patria অর্থ হচ্ছে The land of one’s Fathers (কোনো ব্যক্তির পিতৃপুরুষদের জন্মভূমি)। Mike Wasdin নামক প্রখ্যাত রাজনীতিবিজ্ঞানীর দৃষ্টিতে Patriotism বা দেশপ্রেম হচ্ছে 'a Feeling of love and devotion to one’s own homeland.'
দেশপ্রেম এবং আত্মমর্যাদাবোধ স্বাধীন-সার্বভৌম যেকোনো দেশের জন্য মহামূল্যবান সম্পদ। দেশের প্রতি যার অন্তরে ভালোবাসা বিদ্যমান, উত্তরোত্তর দেশের মঙ্গল, শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা তার সহজাত বিষয়। দেশীয় সংস্কৃতি লালন, দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে সচেতন থাকা, দেশ ও গণমানুষের শত্রুদের প্রতি সজাগ দৃষ্টি রাখা, প্রয়োজনে সর্বোচ্চ ত্যাগের মাধ্যমে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা দেশপ্রেমের অনুপম দৃষ্টান্ত।
::::ইসলামে দেশপ্রেমের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা:::
প্রেম-ভালোবাসার শক্তি অসীম ও পরাক্রম। ভালোবাসা যেভাবে মানুষকে বেঁচে থাকতে সাহস জোগায়, তেমনি ভালোবাসা মানুষকে প্রাণ বিসর্জন দিতে 'ভয়ংকর' সাহসী করে তোলে। আবার স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে প্রেমহীন সম্পর্ক বিলীন করে দেয় পরিবারের সব শান্তি। পরিবারে পারস্পরিক হৃদ্যতা, স্নেহ-প্রীতি ও ভালোবাসা না থাকলে পৃথিবী একখণ্ড নরকে পরিণত হয়। রাজা-প্রজায় ভালোবাসাবিবর্জিত সম্পর্কে ধ্বংস হয়ে যায় দেশের স্থিতিশীলতা। হুমকির মুখে পড়ে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব। ঠিক তেমনি দেশপ্রেম না থাকলে ব্যাহত হয় দেশের অগ্রযাত্রা। অচল হয়ে পড়ে দেশের সাফল্য ও সমৃদ্ধির চাকা। আর যেহেতু হজরত আদম (আ.)-কে পৃথিবীতে আল্লাহর 'খলিফা' বা 'প্রতিনিধি'রূপে প্রেরণ, অতঃপর একের পর এক নবী-রাসুলগণের আগমন এবং শতাধিক ঐশীগ্রন্থ অবতরণ করার অন্যতম উদ্দেশ্য ছিল দুনিয়ার বুকে শান্তিশৃঙ্খলা ও ইনসাফভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা। যেমন আল্লাহ তায়ালা বলেন, 'আমি আমার রাসুলগণকে সুস্পষ্ট নিদর্শনসহ প্রেরণ করেছি এবং তাঁদের সঙ্গে অবতীর্ণ করেছি কিতাব ও ন্যায়নীতি, যাতে মানুষ ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে পারে।' (সুরা হাদিদ, আয়াত ২৫) তাই সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় জীবনে ন্যায়ের শাসন প্রতিষ্ঠা, পারস্পরিক সহযোগিতা, ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপন, জনগণের সংশোধন, ইসলামী আইন ও দণ্ডের বিধান কার্যকর করার জন্য একটি ভূখণ্ডের অবশ্যই প্রয়োজন রয়েছে। এই ভূখণ্ডের প্রতি ভালোবাসা, তার বিরুদ্ধে পরিচালিত সব ধরনের সামরিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক আগ্রাসন ও আধিপত্যের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ সংগ্রাম গড়ে তোলা প্রত্যেক মুসলমানের ইমানি দায়িত্ব। ১৯৭১ সালে বর্বর পাকিস্তানি হানাদারদের বিরুদ্ধে সশস্ত্র সংগ্রাম করে অগণিত মানুষের জীবন, সম্পদ ও সম্ভ্রমের বিনিময়ে যে স্বাধীন-সার্বভৌম দেশ আমরা পেয়েছি, তার মূলেও রয়েছে মুক্তিকামী জনতার নিখাদ দেশপ্রেম ও দেশাত্মবোধ। যার কাঙ্ক্ষিত পরিণতিতে বাংলাদেশ আজ বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ মুসলিম রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছে।
:::আল কোরআনে স্বদেশ চেতনা::::
আল্লাহ তায়ালা প্রত্যেক নবীকেই একেকটি অঞ্চলে দীনের দাওয়াতের দায়িত্ব দিয়ে প্রেরণ করেছেন। হজরত মুসা (আ.)-এর জাতি ও দেশ সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা বলেন, "স্মরণ করো, যখন মুসা তার সম্প্রদায়কে বলেছিল 'হে আমার সম্প্রদায়! তোমরা তোমাদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ স্মরণ করো, যখন তিনি তোমাদের মধ্য থেকে নবী পাঠিয়েছিলেন এবং তোমাদের রাজত্বের অধিকারী করেছিলেন। আর বিশ্বজগতে কাউকেও যা তিনি প্রদান করেননি, তা তোমাদের দিয়েছেন।" (সুরা মায়িদা, আয়াত ২০)
অনুরূপভাবে নুহ (আ.) সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা বলেন, "আমি তো নুহকে পাঠিয়েছিলাম তার সম্প্রদায়ের কাছে। সে বলল, 'হে আমার সম্প্রদায় আল্লাহর ইবাদত করো, তিনি ছাড়া তোমাদের অন্য কোনো ইলাহ নেই। তবুও কি তোমরা সাবধান হবে না'।" (সুরা মুমিন, আয়াত ২৩)।
অন্য আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেন, 'আমি প্রত্যেক রাসুলকেই স্বজাতির ভাষাভাষী করে পাঠিয়েছি।' (সুরা ইব্রাহিম, আয়াত ৪) উদ্ধৃত আয়াতগুলোতে 'কাওমিহি' বা 'স্বজাতি' শব্দটি ব্যবহার দ্বারা দেশ, দেশের মানুষ, দেশের ভাষা ও নিজ সম্প্রদায়ের প্রতি সবিশেষ গুরুত্বের প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে। অন্যায়ভাবে কাউকে নিজ দেশ ও মাতৃভূমি ত্যাগে বাধ্য করা ইসলামের চোখে খুবই গর্হিত অপরাধ। তাই মক্কার কাফির কর্তৃক স্বদেশভূমি মক্কা থেকে রাসুল (সা.)-কে বিতাড়নের চেষ্টাকে কোরআনে ষড়যন্ত্র ও অন্যায় হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে। আল্লাহ তায়ালা বলেন, 'স্মরণ করো, কাফিররা তোমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে তোমাকে বন্দি করার জন্য, হত্যা অথবা নির্বাসিত করার জন্য। তারা ষড়যন্ত্র করে এবং আল্লাহও কৌশল অবলম্বন করেন; আর আল্লাহই সর্বশ্রেষ্ঠ কৌশলী।' (সুরা আনফাল, আয়াত ৩০)
মাতৃভূমির প্রতি রাসুল (সা.)-এর ভালোবাসা
পবিত্র মক্কা শরিফ থেকে বিদায়ের প্রাক্কালে রাসুল (সা.) বলেছিলেন, 'ভূখণ্ড হিসেবে তুমি কতই না উত্তম, আমার কাছে তুমি কতই না প্রিয়। যদি আমার স্বজাতি আমাকে বের করে না দিত, তবে কিছুতেই আমি অন্যত্র বসবাস করতাম না।' (তিরমিজি, ৩৯২৬)
অন্য হাদিসে এসেছে, হজরত আবদুল্লাহ বিন আদি বিন হারাম (রা.) বলেন, "আমি রাসুল (সা.)-কে 'খাজওয়ারা' নামক স্থানে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেছি। সেখানে তিনি বলেছেন, 'আল্লাহর শপথ! (হে মক্কা) আল্লাহর জমিনে তুমিই সর্বশ্রেষ্ঠ... যদি তোমার কাছ থেকে আমাকে বের করে দেওয়া না হতো, তবে আমি তোমায় ছেড়ে অন্য কোথাও যেতাম না'।" (তিরমিজি, ৩৯২৫) এ আবেগময় বেদনাকাতর অভিব্যক্তি রাসুল (সা.)-এর দেশপ্রেমের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। অন্য হাদিসে হজরত আনাস (রা.) বলেন, "আমি খায়বর অভিযানে খাদেম হিসেবে রাসুল (সা.)-এর সঙ্গে গেলাম। অভিযান শেষে রাসুল (সা.) যখন ফিরে এলেন, উহুদ পাহাড় তাঁর দৃষ্টিগোচর হলো। তিনি বললেন, 'এই পাহাড় আমাদের ভালোবাসে, আমরাও একে ভালোবাসি'।" (বুখারি, ২৮৮৯) হিজরত করে মদিনায় গমন করার পর রাসুল (সা.) প্রায়ই মক্কায় ফিরে যেতে ব্যাকুল হয়ে পড়তেন। আল্লাহ তাঁকে সান্ত্বনা দিয়ে বলেন, 'যিনি তোমার জন্য কোরআনকে (জীবন) বিধান বানিয়েছেন, তিনি তোমাকে অবশ্যই তোমার জন্মভূমিতে ফিরিয়ে আনবেন।' (সুরা কাসাস, আয়াত ৮৫) রাসুল (সা.)-এর সাহাবিগণও নিজ দেশকে খুবই ভালোবাসতেন। হিজরতের পর মদিনায় হজরত আবু বকর (রা.) ও হজরত বেলাল (রা.) জ্বরাক্রান্ত হলেন, অসুস্থ অবস্থায় তাঁদের মনে স্বদেশভূমি মক্কার স্মৃতিচিহ্ন জেগে উঠল। তাঁরা জন্মভূমি মক্কার দৃশ্যাবলি স্মরণ করে কবিতা আবৃত্তি করতে লাগলেন। তাঁদের এ অবস্থা দেখে রাসুল (সা.) দোয়া করলেন, 'হে আল্লাহ! আমরা মক্কাকে যেমন ভালোবাসি, তেমনি তার চেয়েও বেশি ভালোবাসা মদিনার প্রতি আমাদের অন্তরে দান করুন।' (বুখারি, ৬৩৭২) ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর ধর্ম-বর্ণ ও দল-মত নির্বিশেষে ইস্পাতকঠিন ঐক্য ও অনন্য আত্মত্যাগের বিনিময়ে পাকিস্তানি হানাদারদের কবল থেকে যাঁরা স্বাধীনতা ছিনিয়ে এনেছিলেন, বুকের তাজা রক্ত ঢেলে যাঁরা আমাদের স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ উপহার দিয়েছিলেন, হৃদয়ের গহিন থেকে তাঁদের জানাই বিনম্র শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা।
-হাফেজ মাওলানা আরিফুর রহমান
খতিব, রেলওয়ে জামে মসজিদ,
ঝাউতলা, চট্টগ্রাম।
১৯ শে অক্টোবর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৩৮
শেখ মিজান বলেছেন: তার যদি মানতো, তাহলেতো শান্তিময় পৃথিবী তৈরী হত.. ধর্ম শান্তির জন্য আবির্ভাব হইলেও বর্তমানে ধর্মকে পুজি করে নিজস্বার্থ উদ্ধার করা চেষ্টায় পণ করেছেন কিছু ধর্মব্যবসায়ী, তারা সব বুঝেন কিন্তু সার্থের কাছে তারা অন্ধ ও জিম্মি হয়ে গেছেন।
©somewhere in net ltd.
১|
০৯ ই মার্চ, ২০১৬ সকাল ৮:০৯
বিজন রয় বলেছেন: ভাল লিখেছেন। কিন্তু তারা মানেনা।