নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অন্যায় অপশক্তির বিরুদ্ধ্যে সোচ্চার কন্ঠধ্বনি, মুক্তবাক, স্বাধীন চিন্তা, প্রগ্রেসিভ রাজনৈতিক চর্চার মাধ্যমে সামাজিক বৈপ্লবিক পরির্তন চাইযুক্তিহীন কথা মূল্যহীন। কিছু কিছু লোক আছে যারা অযুক্তিক অসত্য কথা বলে বেড়ায়। এদের কথার মূল্য খুবই কম। যুক্তি যু

শেখ মিজান

একটাই ফিল্টার, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ফিল্টার এটা, দেশের উন্নয়নে মানবিকতার ও মুক্ত চিন্তার আদর্শের সৈনিক।

শেখ মিজান › বিস্তারিত পোস্টঃ

বামপন্থীদের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন; অসহায় জনগণের একমাত্র মুক্তির পথ

২৬ শে অক্টোবর, ২০১৬ দুপুর ১:৪৮

মহামতি মার্কস সারা দুনিয়ার মানুষের সামনে পুঁজির চরিত্র-বৈশিষ্ট্য উন্মোচিত করে দেখিয়ে গেছেন, পুঁজির ধর্মই শোষণ আর লুণ্ঠন। এ প্রক্রিয়াতেই পুঁজির বাড়-বাড়ন্ত হয়। নির্মম শ্রম শোষণ, সম্পদ লুণ্ঠন চালিয়ে এবং ছোট ছোট পুঁজিকে গ্রাস করে বড় পুঁজির জন্ম হয়। পুঁজি ক্রমাগত একচেটিয়া চরিত্র লাভ করে। মার্কসের সুযোগ্য অনুসারী কমরেড লেনিন উন্মোচন করেছেন একচেটিয়া পুঁজির চরিত্র। এই একচেটিয়া পুঁজি নিজের দেশের গণ্ডী ছাড়িয়ে হানা দেয় পরদেশে। পরদেশ হানাদেয়া পুঁজির এই চরিত্রকে তিনি চিহ্নিত করেছেন সাম্রাজ্যবাদ হিসেবে। সাম্রাজ্যবাদ মানেই বর্বর আগ্রাসন, নগ্ন শোষণ, নির্মম লুণ্ঠন

এদেশের বামপন্থী শক্তিগুলোর এক তীব্র আত্মসমালোচনার মুখোমুখি দাঁড়াবার সময় এসেছে। বুর্জোয়াশ্রেণী এবং শাসকগোষ্ঠী কেমন করে দেশের জনগণের উপর বর্বর ফ্যাসিবাদী শাসন চাপিয়ে দিতে পারল? একি শুধুই বুর্জোয়া অর্থনৈতিক ব্যবস্থা এবং বুর্জোয়াশ্রেণীর নিজস্ব প্রয়োজন ছিল বলেই? আমরা মনে করি, শুধু তা নয়। এক্ষেত্রে বাম-গণতান্ত্রিক শক্তিগুলির বিভ্রান্তি ও দুর্বলতাও একটা বড় কারণ। এদেশের বামপন্থী ও গণতান্ত্রিক শক্তি বলে পরিচিত দল ও শক্তিগুলোর নানা ধরনের বিভ্রান্তি এবং দুর্বলতাই জনগণকে অসংগঠিত ও শক্তিহীন, উপায়হীন অবস্থায় নিক্ষেপ করেছে এবং বুর্জোয়াশ্রেণীকে সুযোগ করে দিয়েছে।


এ কথা সত্য যে এদেশের মানুষ, এবং বামপন্থী শক্তিগুলো বহু লড়াই সংগ্রাম করেছে, বিরাট আত্মত্যাগও করেছে। কিন্তু কোনো লড়াই সংগ্রামই যথার্থ পথ পেতে পারে না, যদি না তার রাজনৈতিক দিশা সঠিক থাকে।
বামপন্থী দলগুলো আদর্শিকভাবে, তাত্ত্বিকভাবে এবং সাংগঠনিকভাবে এ দিশা তুলে ধরতে আপাত হলেও ব্যর্থ হয়েছে। এক্ষেত্রে আমরা দুটি বড় ধরনের বিভ্রান্তি এবং দুর্বলতা দেখতে পাই : এক. শত্রু চিহ্নিত করার সমস্যা, দুই. শত্রুর বিরুদ্ধে যথার্থ এবং কার্যকর শক্তি গড়ে তোলার পথ অনুসরণ না করার সমস্যা।

স্বাধীনতার চেতনার সাথে বুর্জোয়াশ্রেণী বিশ্বাসঘাতকতা করেছে
আমাদের দেশের বামপন্থী শক্তির একটা বড় অংশই জনগণের মূল শত্রু হিসাবে দেশের বুর্জোয়াশ্রেণীকে চিহ্নিত করতে এবং তার বিরুদ্ধে কার্যকর গণআন্দোলন গড়ে তুলতে ব্যর্থ হয়েছে। বামপন্থী বন্ধুদের কেউ কেউ সাম্রাজ্যবাদকে জনগণের প্রধান শত্রু হিসাবে চিহ্নিত করেছেন, কেউ কেউ প্রধান শত্রু ও সমস্যা হিসাবে মৌলবাদ-সাম্প্রদায়িকতাকে চিহ্নিত করেছেন। বামপন্থী বন্ধুদের এই ভুল জনগণের একটা অংশকেও বিভ্রান্ত করেছে, ভুল পথে পরিচালিত করেছে। শুধু তাই নয়, এই ভুল থেকে বামপন্থীদের অনেকেই ঘুরে-ফিরে জাতীয় বুর্জোয়াদের মধ্যে প্রগতিশীল উপাদান খুঁজে পেয়েছেন, লড়াইয়ের মিত্র খুঁজে পেয়েছেন। অথচ গত ৪২ বছরের ইতিহাস প্রমাণ করেছে, এখানকার বুর্জোয়াদের কোনো অংশই সাম্রাজ্যবাদ বা মৌলবাদ-সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে কার্যকর ও আপসহীন লড়াই করা দূরে থাক, নানা মাত্রায় এসব শক্তির সাথে আপস-সমঝোতা করে চলেছে। এভাবে যে বুর্জোয়াশ্রেণী আজ দেশের জনগণের প্রধান শত্রু, জনগণের সকল দুর্দশার প্রধান কারণ – তাদেরকে উন্মোচিত করার পরিবর্তে বুর্জোয়াদের কোনো-না-কোনো অংশ সম্পর্কে জনগণকে মোহগ্রস্ত করতে সহযোগিতা করেছেন।

শত্রুর বিরুদ্ধে যথার্থ ও কার্যকর শক্তি গড়ে তোলার পথ কি? একমাত্র ধারাবাহিক ও দীর্ঘমেয়াদী গণআন্দোলন গণসংগ্রামের পথেই জনগণের শক্তি হিসাবে বামপন্থীরা দাঁড়াতে পারে। এবং এর ভিতর দিয়ে জনগণের অর্থাৎ সংখ্যাগরিষ্ঠ শ্রমজীবী মানুষের নিজস্ব আন্দোলনকারী সংস্থা ও প্রতিরোধের শক্তিও তৈরি হয়। জনগণের দাবি নিয়ে, বুর্জোয়া শাসনের ফলে জনজীবনের উপর চেপে বসা সমস্যাগুলো নিয়ে, বুর্জোয়া শাসনের মাধ্যমে হরণ করা গণতান্ত্রিক ও নাগরিক অধিকারগুলো (সিভিল রাইটস) পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার দাবি নিয়ে লড়তে লড়তেই বামপন্থীদের পক্ষে এবং বিশেষভাবে বিপ্লবী শক্তির পক্ষে শক্তিশালী সাংগঠনিক কাঠামো ও গণভিত্তি তৈরি করা সম্ভব। কিন্তু এদেশের বামপন্থী দলগুলো জনগণের নাগরিক অধিকার, গণতান্ত্রিক অধিকার নিয়ে কখনোই ধারাবাহিক ও দীর্ঘমেয়াদী গণআন্দোলনের ধারা গড়ে তুলতে পারেনি। এর পরিবর্তে বিভিন্ন সমস্যার তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ-প্রতিক্রিয়া জানানো, নিজেদের মধ্যে সংকীর্ণ প্রতিযোগিতা ও প্রতিদ্বন্দ্বিতা এবং প্রচার-সর্বস্ব কার্যক্রমের চক্রে বামপন্থী শক্তিগুলো ঘুরপাক খেয়েছে।


একথা সত্য যে বাংলাদেশের মানুষের লড়াই-সংগ্রামের অতীত অভিজ্ঞতার ভাণ্ডার বিরাট ও বিপুল। কিন্তু সে ভাণ্ডার যত বিশালই হোক না কেন, জনগণের সংগ্রামী মেজাজ ও চেতনা কখনোই অতীতের অর্জিত উচ্চতায় এক সুরে বাঁধা থাকতে পারে না। এদেশের সংগ্রামী মানুষের সবচেয়ে বড় পরাজয় ছিল স্বাধীনতা সংগ্রামে বুর্জোয়াশ্রেণীর নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা ও বুর্জোয়া রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা। মানুষ লড়াই করেছিল একটি শোষণ-বৈষম্যমুক্ত গণতান্ত্রিক সমাজ প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন নিয়ে। সেই আকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়নের জন্যে মানুষ অপরিসীম আত্মত্যাগ করেছে, বীরত্বপূর্ণ লড়াই করেছে। কিন্তু সেদিন কোনো বিপ্লবী শক্তি স্বাধীনতা যুদ্ধের নেতৃত্ব দিতে পারেনি। উপরন্তু স্বাধীনতা সংগ্রামে বুর্জোয়াশ্রেণীর নেতৃত্বের নানা ধরনের আপসকামীতা, দোদুল্যমানতা, চক্রান্ত ও সাম্রাজ্যবাদ-নির্ভরতা জনগণের সংগ্রামী চেতনাকে ভুলুণ্ঠিত করেছে। আর স্বাধীনতার পর পরই মানুষ আবিষ্কার করেছে, তাদের বিপুল আত্মত্যাগ, সমস্ত স্বপ্ন-সাধ ও আকাঙ্ক্ষাকে পদদলিত করে এদেশের বুকে একটি শোষণ-বৈষম্যমূলক এবং চূড়ান্ত নিপীড়নমূলক বুর্জোয়াব্যবস্থা কায়েম হয়েছে। এই ব্যর্থতা-বোধও জনগণের সংগ্রামী চেতনাকে হতাশায় নিমজ্জিত করেছে।

স্বাধীন দেশেও সংকট থেকে উত্তরণের আশায় মানুষ যাদের উপর নির্ভর করতে চেয়েছে, সেইসব বাম-গণতান্ত্রিক শক্তিগুলোর ব্যর্থতা, আপসকামীতাও জনগণকে হতাশার অন্ধকারে ঠেলে দিয়েছে। সর্বোপরি বুর্জোয়া ব্যবস্থার নানা নিকৃষ্ট উপাদান জনগণের চেতনায় প্রবেশ করতে থাকে। তাৎক্ষণিক ফল লাভের প্রত্যাশা, সাংস্কৃতিক অবক্ষয়, বামপন্থী শক্তিগুলোর বিভ্রান্তি, বুর্জোয়া শাসকদের চাপিয়ে দেয়া অন্যায়ের প্রতিকারের ব্যর্থতা এবং তার থেকে সৃষ্ট হতাশা – এসবই জনগণের রাজনৈতিক চেতনার মান ও সংগ্রামী মেজাজকে ক্রমাগত ক্ষয় করে দেয়, ভোঁতা করে দেয়, দুর্বল করে দেয়। বাংলাদেশেও তাই ঘটছে। এছাড়া সোভিয়েত ইউনিয়নসহ সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থার বিপর্যয়ের পর বাম আন্দোলনেও নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। এ অবস্থা থেকে জনগণের রাজনৈতিক চেতনা ও মেজাজকে পুনরায় তুলে আনার পথও একটাই – জনগণের মূল শত্রু শাসক বুর্জোয়াশ্রেণীর বিরুদ্ধে লাগাতার ধারাবাহিক গণআন্দোলনের ধারা গড়ে তোলা, গণসংগ্রামের পথে জনগণকে সংগঠিত করা।

বামপন্থীরাই একমাত্র ভরসা
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ বা শাসক বুর্জোয়াশ্রেণী কি দেশের মানুষের প্রকৃত সমস্যাগুলো, জনজীবনের সংকটগুলোর সমাধান করতে পারবে? হলফ করে বলা যায়, পারবে না। বরং সংকট উত্তরোত্তর বাড়তেই থাকবে। এবং দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেলে জনগণ প্রতিবাদে ফেটে পড়বেই। কখনো শ্রমিকরা রাস্তায় নামবে, কখনো কৃষকরা নামবে, কখনো ছাত্রেরা নামবে – নিপীড়িত ও বঞ্চিত জনগণের কোনো-না-কোনো অংশ রাস্তায় নামবে, লড়াই করবে, মার খাবে। এবং আমরা এও জানি, জনগণের পাশে দাঁড়িয়ে লড়াই করবে, মার খাবে বামপন্থীরাই। নিজেদের ভুল-ভ্রান্তি ও সংকীর্ণতা দূর করে বামপন্থীরা যদি ঐক্যবদ্ধভাবে কার্যকর গণআন্দোলন-গণসংগ্রামের পথে এগিয়ে আসেন – তবে তারাই পারবেন বর্তমান অসহায় দশা থেকে জনগণকে রক্ষা করতে।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৬ শে অক্টোবর, ২০১৬ বিকাল ৪:০০

চাঁদগাজী বলেছেন:


"এক. শত্রু চিহ্নিত করার সমস্যা, দুই. শত্রুর বিরুদ্ধে যথার্থ এবং কার্যকর শক্তি গড়ে তোলার পথ অনুসরণ না করার সমস্যা। "

এসব শব্দ, "শত্রু" মত্রু, বালছাল ব্যবহার করে, কমবুদ্ধির বাম বেকুবেরা বামরাজনীতি নিজেরাও বুঝতে পারেনি; তাই, তারা মানুষকে বুঝতে পারেনি, ইডিয়টের দল!

২| ২৬ শে অক্টোবর, ২০১৬ বিকাল ৪:০৩

চাঁদগাজী বলেছেন:



বালছাল বাম রাণী মতিয়া, বাম রাজা মেনন, বাম চোর কাযী জাফর দেশ চালায়েছে, চালাচ্ছে; ওরা কি বালছাল বাম রাজনীতি করেছিল এতদিন?

ওরা মার্ক্সের অর্থনীতি অনুধাবন করেনি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.