নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অন্যায় অপশক্তির বিরুদ্ধ্যে সোচ্চার কন্ঠধ্বনি, মুক্তবাক, স্বাধীন চিন্তা, প্রগ্রেসিভ রাজনৈতিক চর্চার মাধ্যমে সামাজিক বৈপ্লবিক পরির্তন চাইযুক্তিহীন কথা মূল্যহীন। কিছু কিছু লোক আছে যারা অযুক্তিক অসত্য কথা বলে বেড়ায়। এদের কথার মূল্য খুবই কম। যুক্তি যু

শেখ মিজান

একটাই ফিল্টার, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ফিল্টার এটা, দেশের উন্নয়নে মানবিকতার ও মুক্ত চিন্তার আদর্শের সৈনিক।

শেখ মিজান › বিস্তারিত পোস্টঃ

সাঁওতাল-বাঙগালি; তফাতটা কেবল শিরদাঁড়ায়

১৭ ই নভেম্বর, ২০১৬ রাত ২:৪৫

সাওতাল বাঙ্গালি

যুগযুগ ইতিহাস সাক্ষ্য দিচ্ছে যে, সাঁওতালদের সংগ্রামে পরাজয় ছিল, কিন্তু আপোষ ছিল না। বিদ্রোহীরা নির্ভয়ে মৃত্যুকে আলিঙ্গন করেছে, কিন্তু আত্মসমর্পন করেনি।

বর্তমান আওমীলীগ সরকার, বাস্তবিটাহীন সাঁওতালদের ঘর করে দেয়ার প্রতিশ্রুত তাদের তুষ্ট করতে পারে নাই, সরকারের প্রস্তাবের যে জবা তারা দিয়েছেন, তাতে স্পষ্ট হয়ে উঠে ইতিহাসের পুরাতন পৃষ্ঠাগুলি- দাবি সংযুক্ত ভিডিও-

সাঁওতালদের দাবী - ঘর চাই না জমি ফেরত চাই

সত্যি ওরা সাঁওতাল নৃগোষ্টি নয়, শক্ত মেরুদন্ডযুক্ত প্রকৃত মানুষ বটে।

ফাঁসির মঞ্চে সাঁওতাল বিদ্রোহী যোদ্ধা, কানুর দৃপ্ত উচ্চারণ ছিল “আমি আবার ফিরে আসব,সারা দেশে বিদ্রোহের আগুন জ্বালিয়ে তুলব”

লড়াইটা সাঁতাল ও ক্ষুদ্র সম্প্রদায়গুলির শেষ হচ্ছেই না কোনমতে। অস্তিত্বের সংকটে ওরা লড়েছে শতবর্ষ ধরে। একে একে ব্রিটিশ গেছে, পাকিস্তানিরা গেছে, বর্তমান স্বাধিন বাংলাদেশ, একটি অসাম্প্রদায়ীক রাষ্ট্র, গণতান্ত্রিক সরকার! গরীব ও মেহনতি মানুষের দু:খ বুঝেন? আর, প্রতিটা অস্তিত্ব রক্ষার লড়াইয়ে জড়ে পরেছে তাজা প্রাণ, লাল টকটকে রক্তে বাঙলার মাটি সিঁদুর পড়েছে। এখন যা চলছে, তা আপনারাই বিশ্লেষণ করুন।
সাঁওতালদের উপর লোমহর্ষক হামলার ভিডিও, সত্যি কি আমরা বাঙ্গালি?

যে প্রকার শাসন,শোষণ ও উৎপীড়ন থেকে পরাধীন জাতির স্বাধীনতা সংগ্রামের সৃষ্টি হয় ১৮৫৫ সালের সাঁওতাল বিদ্রোহ সে ধরনের শোষণ অত্যাচারেরই অবশ্যম্ভাবী পরিণতি, বর্তমান তার ব্যতিক্রম দেখছেন না সাঁতাল জাতিগোষ্ঠি।


১৮৫৫ সালের এই “সাঁওতাল বিদ্রোহ”ই ছিল ভারতবর্ষের স্বাধিকার আন্দোলনের প্রথম পদক্ষেপ। সিধু, কানু, চাঁদ, ভৈরব মাঝি, ফুলমনি, জানমনিরা একদা লড়েছিলেন সাদা চামড়ার ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে। সশস্ত্র গণসংগ্রামে কাঁপিয়ে দিয়েছিলেন ইংরেজ শাসনের ভিত। সিধু, কানু, সাঁওতাল বিদ্রোহ আজ ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ১৮৫৫-৫৭ সাল পর্যন্ত এ বিদ্রোহ ভারতীয় উপমহাদেশের বিহার, উড়িষ্যা এবং বাংলাদেশ পর্যন্ত প্রসার লাভ করেছিল। সাঁওতাল বিদ্রোহের তীব্রতা ও ভয়াবহতায় ইংরেজ শাসনের ভিত কেঁপে উঠেছিল। লর্ড ডালহৌসী কতৃক মার্শাল ল’ জারি করেও এ বিদ্রোহ দমানো সম্ভব হয় নি।

সম্প্রতি সাঁওতালদের উপর হামলা
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে ১২ জুলাই ও ৬ নভেম্বরে সাঁওতাল পল্লীতে হামলা, লুটপাটের কারিগর চিনিকল কর্তৃপক্ষ, স্থানীয় প্রশাসন ও সরকারি পেটোয়া বাহিনী। জানা গেছে, এই যৌথ বাহিনীর নেতৃত্বে ছিলেন গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার সাপমারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শাকিল আলম বুলবুল। যিনি কিনা আবার ‘ইক্ষু খামার ভূমি উদ্ধার সংহতি কমিটি’র সভাপতি!

তবে বর্তমান প্রসাশন কিভাবে তাদের উচ্ছেদের চিন্তা করতে পারে?

সাঁতালদের দাবি সমুহ- সংযুক্ত ভিডিও -


গবেষক লেখক অধ্যাপক আতাউল হক সিদ্দিকির গবেষনা পর্যালোচনা করে দেখা যায় ১৮৫৫-৫৬ সালের সাঁওতাল বিদ্রোহের পর এরা নওগাঁ ছেড়ে নওগাঁর পার্শ্ববর্তি মালদহ, বামনগোলা ও হিলি অঞ্চলে বসবাস শুরু করে। পরে কোন এক সময়ে (সম্ভবত ১৮৭০ সালে) জোতদারদের প্রয়োজনে তাদেরই আমন্ত্রনে ধীরে ধীরে এরা নওগাঁর শালবন অধ্যুষিত এলাকা ধামুরহাটের বিভিন্ন বনাঞ্চলে এসে বসবাস শুরু করে। এ সময় এই বনাঞ্চলে সামান্য চাষাবাস ও বিভিন্ন পশুপাখি শিকার করে এরা জীবন ও জীবিকা নির্বাহের পাশাপাশি জোতদারদের জমাজমি চাষ করতো। কোন কোন লেখকের বর্ণনা মতে এই সাঁওতাল জন গোষ্ঠিই নওগাঁর বরেন্দ্র অঞ্চলের আদি জন গোষ্ঠি। কিন'ু কি ভাবে এরা এই বিশাল বরেন্দ্র অঞ্চলের জমির মালিক না হয়ে ভূমিহীন শোষিত শ্রেনীতে পরিণত হলো তা আজ ও রহস্যাবৃত্য রয়ে গেছে।

৩০ হাজার সাঁওতাল বিদ্রোহীকে বর্বরোচিতভাবে হত্যা করে ইংরেজ মিলিত বাহিনী।

গোবিন্দগঞ্জে ভূমির মালিকানা দাবিদার আদিবাসীদের ঘরবাড়ি পোড়ানো হচ্ছে পুলিশের প্রহরায়





গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে ১২ জুলাই ও ৬ নভেম্বরে সাঁওতাল পল্লীতে হামলা, লুটপাটের কারিগর চিনিকল কর্তৃপক্ষ, স্থানীয় প্রশাসন ও সরকারি পেটোয়া বাহিনী। জানা গেছে, এই যৌথ বাহিনীর নেতৃত্বে ছিলেন গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার সাপমারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শাকিল আলম বুলবুল। যিনি কিনা আবার ‘ইক্ষু খামার ভূমি উদ্ধার সংহতি কমিটি’র সভাপতি!


হত্যা করা হচ্ছে পিটিয়ে,পুড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে ঘর-বাড়ি, সাঁওতাল'দের কান্না কি শুনতে পাও


সাঁওতাল বিদ্রোহে যে সকল কারণগুলো মূখ্য ভুমিকা হিসেবে গণ্য করা হয:-

১। ভুমির চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের কারণে সাঁওতালরা বন-জঙ্গল পরিষ্কার করে যে জমি ফসল উৎপাদনের উপযোগী করে তোলে, সে জমি সমতল ভূমিতে বসবাসকারী জমিদার-জোতদার-তালুকদাররা জোরপূর্বক দখল করে এবং সাওতালদেরকে ঐ জমিতে ক্রীতদাস হিসেবে কাজ করতে বাধ্য করে;

২। বৃটিশরাজ কর্তৃক মুদ্রা ব্যবস্থা প্রচলনের সুযোগ ব্যাপারী-মহাজনরা নিরক্ষর-অজ্ঞ ও সহজ-সরল সাঁওতালদের ছল-চাতুরির মাধ্যমে প্রতারিত করে।

৩। সাঁওতালদের অঞ্চলে ব্যবসা করতে গিয়ে ব্যাপারী ও সুদখোর মহাজনদের অতি লোভ ও লুন্ঠনের প্রবৃত্তির ফলে জোরজবর দখল করে সাঁওতালদের সম্পদ ও উৎপাদিত আত্মসাৎ করা।

৪। ঋণদাযগ্রস্ত সাঁওতালদের ব্যক্তিগত বংশগত ক্রীতদাসত্বের মতো বর্বর প্রথা প্রচলনের মাধ্যমে তাদের আজীবন পরাধীনতার শৃঙ্খলে আবদ্ধ করা।

৫। আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী, বিশেষ করে পুলিশের সীমাহীন অত্যাচার, দূর্নীতি, উৎপীডন এবং জমিদার-জোতদার-ব্যাপারী-মহাজনদের দুষ্কর্ম ও অত্যাচারে সহাযতা দান।

৬। সরকারি বিচার-ব্যবস্থা কিংবা আদালতে সুবিধা না পাওয়া। এরকম বিভিন্ন কারণে সাঁওতালিদের মনে ক্ষোভ জমতে থাকে, তারা প্রতিবাদী হতে থাকে।


ইতিহাস থেকে শিক্ষা না নিলে বাঙ্গালি সভ্যতার আলো খুজে পেতে যুগযুগ পেরিয়ে যাবে, সভ্য হতে পারবো না।
ফাঁসির মঞ্চে কানুর দৃপ্ত উচ্চারণ ছিল “আমি আবার ফিরে আসব,সারা দেশে বিদ্রোহের আগুন জ্বালিয়ে তুলব”,বাস্তব হয়ে দেখা দিয়েছে ক্ষুদিরাম,মাস্টারদা সূর্যসেনদের আত্মত্যাগে।

জুতা মেরে গরু দান, আমাদের আত্নসম্মানের চেয়ে খাদ্য বড় নয়: সাঁওতাল আদিবাসী

সাঁওতাল বিদ্রোহ নিপিড়ীত মুক্তিকামী মানুষের চিরদিনের প্রেরণার উৎস।
সাঁওতালদের সংগ্রামে পরাজয় ছিল,কিন্তু আপোষ ছিল না।
বিদ্রোহীরা নির্ভয়ে মৃত্যুকে আলিঙ্গন করেছে,কিন্তু আত্মসমর্পন করেনি।
সাঁওতাল বিদ্রোহ আমাদের প্রমাণ দিয়ে দেখিয়েছে,
শোষণ মুক্তির সংগ্রাম কোনদিন ফুরায় না,শেষ হয়ে যায় না।
মানুষ পৃথিবীতে যতদিন থাকবে শোষণ মুক্তির সংগ্রাম চলবে -

শেখ মিজান
১৭ নভেম্বর; ২০১৬
ঢাকা, বাংলাদেশ।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১৭ ই নভেম্বর, ২০১৬ ভোর ৫:০৮

ডঃ এম এ আলী বলেছেন: সময়োপযোগী পরিশ্রমী গবেষনামুলক প্রবন্ধটি পাঠে অনেক ঐতিহাসিক বিষয়াদি সুন্দরভাবে জানা হল ।
লিখাটি প্রিয়তে গেল ।
ধন্যবাদ সাথে শুভেচ্ছা রইল ।

১৭ ই নভেম্বর, ২০১৬ সকাল ৭:৫৮

শেখ মিজান বলেছেন: ধন্যবাদ ডা সাহেব, মতামতের জন্য কৃতজ্ঞ।

২| ১৭ ই নভেম্বর, ২০১৬ সকাল ৮:৪১

শেখ মিজান বলেছেন: বিস্তারিত সাওতাল বিদ্রোহ

৩| ১৭ ই নভেম্বর, ২০১৬ সকাল ৯:৪৭

আশ্রাফ বাংলা বলেছেন: টিয়ার গ্যাস আর বুলেটের মুখে তীর ধনুক কি কোন কাজে আসবে? আপনার লেখা পড়ে আমার দুটো সিনেমার কথা মনে পড়ে যাচ্ছেঃ

দ্যা লাস্ট সামুরাই
এ্যাভাটার

২৩ শে নভেম্বর, ২০১৬ রাত ৯:২০

শেখ মিজান বলেছেন: ধন্যবাদ আশ্রাফ বাংলা ভাইয়া, সুন্দর মতামত আমাকে প্রচন্ড তুষ্ট করেছে। ছবি দ্যা লাষ্ট সামুরাই দেখা হয় নাই, লিংক দিলে দেখার ইচ্ছে আছে।

৪| ০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৬ দুপুর ২:২১

আশ্রাফ বাংলা বলেছেন: টম ক্রুজের দ্যা লাস্ট সামুরাই ২০০৩
https://www.youtube.com/watch?v=xa21dwyY5Q8

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.