![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
একটাই ফিল্টার, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ফিল্টার এটা, দেশের উন্নয়নে মানবিকতার ও মুক্ত চিন্তার আদর্শের সৈনিক।
সংক্ষেপে বলি-
সম্রাট রামেসিস, যাকে আমরা ফেরাউন বলে চিনি। তার মন্ত্রী ছিল হামান। চালাক লোক। সম্রাটের নিকট সংবাদ এলো, প্রজাদের দাস বানানো, ওদের নিয়ন্ত্রণ করা সহজ নয়, ওরা ধুরন্ধর। সম্রাট চিন্তায় পড়লেন, দাস না হলে পিরামিড হবে কেমন করে? প্রধানমন্ত্রী হামান সম্রাটকে মন্ত্রণা দিলেন, ‘ইজিপ্টে চল্লিশ বছরের জন্য বিদ্যালয়গুলো বন্ধ করে দিন। এই চল্লিশ বছরে যত মূর্খ জন্মিবে ওরা দাসত্বে অনীহা প্রকাশ করবে না।’
তাই হলো, চল্লিশ বছর পর রামেসিস ঘোষণা করলো, ‘আমি ঈশ্বর, তোমাদের জন্ম, মৃত্যু, ভাগ্য সবই আমার নিয়ন্ত্রণে।’ মূর্খ ইজিপশিয়ানরা সম্রাটকেই ঈশ্বর বলে স্বীকার করলো।
বাধ সাধলো একমাত্র প্রগতিশীল চিন্তার কিছু মানুষ, যাদের ইসলাম ধর্মের পূর্বপূরুষ বলে মানা হয়, এদেশে তাহাদের ইয়াহুদী বললে সহজেরই চিনতে পারেন, ওরা গোপনে শিক্ষা গ্রহণ করেছিল, তাই রামেসিসকে ঈশ্বর মেনে নেওয়ার যুক্তি খুঁজে পেলো না।
তখন সম্রাট ঘোষণা দিলেন, ‘ইয়াহুদী পুরুষদের হত্যা করো, নারীদের হেরেমে এনে যৌনদাসী বানাও। নবজাতক ছেলে হলে তাকেও হত্যা করো, মেয়ে হলে বাঁচিয়ে রাখো ভবিষ্যৎ যৌনদাসী করার জন্য।’
সে আদেশই বাস্তবায়িত হচ্ছিল, কিন্তু মুসার পিতা-মাতা সন্তানকে না মেরে নদীতে ভাসিয়ে দিয়েছিলেন। এই মুসাই একদিন ত্রাণকর্তা হয়ে রামেসিস বা ফেরাউনের কবল থেকে, বন্দিদশা ইয়াহুদীদের উদ্ধার করলেন।
এনসিটিবির পাঠ্যবইয়ে ভুল নিয়ে হৈচৈ থামেনি এখনো, এই ফাঁকেই ঘটলো নতুন কাণ্ড। সংবাদ এলো, গাইবান্ধায় স্কুল ভস্মীভূত, পুড়েছে এসএসসির প্রবেশপত্র।
ব্রহ্মপুত্র নদের চরাঞ্চলের কামারজানি ইউনিয়নের কুন্দেরপাড়া গণউন্নয়ন একাডেমি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে বৃহস্পতিবার রাতে এ অগ্নিকাণ্ড হয়। এই “আগুনে অফিসকক্ষ, শিক্ষক মিলনায়তন ও পাঠাগারসহ ১০টি ক্লাস রুম, আসবাবপত্র, শিক্ষা সরঞ্জাম, আসন্ন এসএসসি পরীক্ষার ৭৭ জনের প্রবেশপত্র এবং ২০ হাজার এসএসসি ও জেএসসি পাস শিক্ষার্থীদের সনদপত্র পুড়ে গেছে।”
কী পুড়েছে, আর কী পোড়েনি প্রশ্ন ওটা নয়, পুড়েছে এটাই সত্য। কেন পুড়েছে? শিক্ষার্থীদের কান্না দেখে আমারও হাউমাউ করে কাঁদতে ইচ্ছে করেছে। আমরা কী রামেসিসের সেই অধঃপতিত ইজিপশিয়ানদের মতো হয়ে যাচ্ছি? বর্তমান বাঙলাদেশের শিক্ষা-ব্যবস্থার হাল-হাকীকত দেখে মনে হচ্ছে, আমাদের শিক্ষা-ব্যবস্থাকেও রামেসিসের প্রেতাত্মায় পেয়েছে। অপেক্ষায় আছি, মুসার মতো কোন ত্রাণকর্তা আসবেন হয়তো।
হ্যাঁ অপেক্ষা আছি বললে কথা ভুল হতে পারে, এ যুগেও কিছু প্রগতিশীল নতুন তরুন, গোপনে খুঁজে খুঁজে জ্ঞানের বই, প্রজ্ঞা ও চিন্তাশক্তি বৃদ্ধির বই পড়ছে, তাদের প্রতি আমি সত্যি আশাবাদি, হয়তো মুসার যুগ শেষ, এখন আর ধর্মের নামে কোন আদর্শ স্থাপন অকল্পনিয়, কিন্তু সভ্যতার চর্চার এই সুফলা দেশে, নিশ্চাই সূর্যমূখী আমাদের আলোকিত করবে।
জয় হউক মুক্ত চিন্তার।
©somewhere in net ltd.