নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শেখ সাজ্জাদুর রহমান

জয় বাংলা

শেখ সাজ্জাদুর রহমান › বিস্তারিত পোস্টঃ

http://www.amardeshonline.com/pages/details/2013/02/09/187027

০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১:০৯

রাজধানীর শাহবাগের মহাসমাবেশে গতকাল ফ্যাসিবাদের পদধ্বনি শোনা গেছে। জামায়াত নেতা কাদের মোল্লার ফাঁসির দাবিতে ব্লগারদের ব্যানারে চার দিন ধরে চলা কর্মসূচি গতকাল আওয়ামী লীগ ও বাম রাজনৈতিক দল, তাদের সাংস্কৃতিক ফ্রন্ট এবং একই ঘরানার চিহ্নিত বুদ্ধিজীবী ও নেতাদের দখলে ছিল। মুহুর্মুহু ‘জয় বাংলা-জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগানের মধ্যে বক্তারা আওয়ামী-বাকশালি কায়দায় ভিন্নমত দলন-দমনের হুঙ্কার দিয়েছেন। তারা সরকারের অপকর্মের সমালোচনাকারী গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে বিষোদ্গার করে তা বর্জনের ডাক দিয়েছেন; সরকার সমর্থক বুদ্ধিজীবীরা রণহুঙ্কার দিয়ে প্রতিপক্ষ নির্মূলের শপথ নিয়েছেন। বিরোধী মতাদর্শের মালিকানাধীন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে লাঠি নিয়ে আক্রমণ ও দখল করারও ঘোষণা দিয়েছেন তারা। কথিত ‘চেতনা স্কয়ার’-এর মুখোশ খুলে ফেলে প্রচ্ছন্নভাবে গৃহযুদ্ধের উসকানি দিয়েছেন সুশীল সমাজের প্রতিনিধি দাবিদার আওয়ামী বুদ্ধিজীবীরা।

জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল কাদের মোল্লাসহ সব যুদ্ধাপরাধীর ফাঁসির দাবিতে আহূত মহাসমাবেশে আওয়ামী লীগ ও ১৪ দলের শরিক বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও অঙ্গসংগঠনের ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে যোগ দেন নেতাকর্মীরা। বক্তারা জামায়াত-শিবির, তাদের নিয়ন্ত্রণাধীন প্রতিষ্ঠান ও গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে উসকানি দিয়েই থামেননি, বিএনপি ও দলটির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক রাষ্ট্রপতি শহীদ জিয়াউর রহমানেরও কঠোর সমালোচনা করেন। সমাবেশ থেকে যে কোনো একদিন গিয়ে রাজধানীর মগবাজারের জামায়াতে ইসলামীর কার্যালয় গুঁড়িয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত জানানো হয়। বলা হয় জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতি করার অধিকার হরণ করার কথাও।

ইসলামী ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক হাসপাতাল, ইবনে সিনা হাসপাতাল, ইবনেসিনা ডায়াগনস্টিক সেন্টার, দিগন্ত মিডিয়া লিমিটেড, রোটিনা কোচিং সেন্টার ও ফার্মাসিউটিক্যালসহ জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের মালিকানাধীন অন্যান্য প্রতিষ্ঠান দখল বা সেগুলো বাজেয়াপ্ত করে জাতীয়করণের ডাক দেয়া হয় মহসমাবেশে। এদিকে সরকারের সর্বাত্মক সহযোগিতা, চারপাশের ব্যস্ত সড়কে ট্রাফিক পুলিশের ব্যারিকেড দিয়ে চলা কর্মসূচির কারণে গতকাল চতুর্থ দিনের মতো রাজধানীর কেন্দ্রস্থলে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয় চলাচলকারীদের।

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামী লীগ সমর্থক শিক্ষক অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ জাফর ইকবাল, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ডা. আনোয়ার হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, বঙ্গবন্ধু শেখ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ডা. প্রাণ গোপাল দত্তসহ কয়েকজন উসকানিমূলক বক্তব্যের মাধ্যমে কার্যত গৃহযুদ্ধের উসকানি দেন।

গতকাল শুক্রবার বেলা তিনটায় শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চে আনুষ্ঠানিকভাবে মহাসমাবেশ শুরু হয়। শাহবাগ গোলচত্বরের বাইরে বিক্ষিপ্তভাবে লোকজনের সমাবেশ ঘটে। তবে সমাবেশ নির্বিঘ্ন করতে ট্রাফিক বিভাগ আগের তিন দিনের মতোই চারপাশের ব্যস্ত সড়কগুলোতে ব্যারিকেড দিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়। নগরীর বিভিন্ন এলাকা থেকে মিছিল নিয়ে আসে ক্ষমতাসীন ১৪ দল সমর্থক বিভিন্ন সংগঠন।

সমাবেশস্থলে সংহতি জানিয়েছেন তেল-গ্যাস, বিদ্যুত্-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক শেখ মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি নাসির উদ্দীন ইউসুফ বাচ্চু, অভিনেত্রী বিপাশা হায়াত, কর্মজীবী নারীর নির্বাহী পরিচালক রোকেয়া রফিক বেবীসহ সমমতাদর্শের অনেকে।

গতকাল সকাল ১০টা থেকে সরকার সমর্থক বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠন ও প্রতিষ্ঠান ব্যানার নিয়ে সমাবেশস্থলে আসে। কর্মজীবী নারী, বাংলাদেশ ব্যাংক অ্যাসোসিয়েশনসহ কয়েকটি অরাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানও যোগ দেয়। অনেকের গায়ে ছিল লাল-সবুজের পতাকা রঙের পোশাক, কপালে লেখা বাংলাদেশ। ছিল যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবি। বেলা একটায় জুমার নামাজের বিরতি দিয়ে বেলা দুইটা থেকে সমাবেশ আবার শুরু হয়।

উসকানিমূলক বক্তব্য : সমাবেশে আওয়ামীপন্থী লেখক ড. মুহাম্মদ জাফর ইকবাল ও ড. আনোয়ার হোসেন সবচেয়ে বেশি উসকানিমূলক বক্তব্য দেন। জয় বাংলা বলে বক্তব্য শুরু করে মুহাম্মদ জাফর ইকবাল বলেন, ‘আমার জীবনে এত আনন্দের দিন আর কখনও আসেনি। যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবিতে আজকের ২০১৩ সাল একাত্তর সালে রূপান্তরিত হয়েছে। শিবিরকে প্রতিহত করতে আমাদের রাস্তায় লাঠিসোটা নিয়ে নামতে হবে। তোমরা আজ জেগে উঠেছো, বিজয় হবেই হবে। যারা আমাদের অস্তিত্ব নিয়ে খেলেছে, বিশ্বের কাছে আমাদের কলঙ্কিত করেছে, তাদের কোনো ক্ষমা নেই।’ জামায়াত-শিবিরের সদস্যদের সমাজ, রাষ্ট্র ও সংবাদ মাধ্যমের সব ক্ষেত্র থেকে বর্জনের মাধ্যমে নতুন আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান তিনি।

ড. আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘জামায়াতের বিভিন্ন ষড়যন্ত্রের সঙ্গে যারা ইন্ধন জুগিয়েছে, তাদেরও বিচারের সময় এসে গেছে। জামায়াত-শিবিরকে ক্ষমা করার আর সময় নেই। জামায়াত-শিবির নিয়ন্ত্রিত সব প্রতিষ্ঠানকে বন্ধ করে দিতে হবে। জামায়াতের রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে।’ এ সময় মঞ্চ ও এর বাইরে থেকে স্লোগান দেয়া হয়, ‘জামায়াত-শিবিরের আস্তানা, বাংলাদেশে রাখব না’, ‘একটা করে শিবির ধর, সকাল-বিকাল জবাই কর’, ‘জামায়াত-শিবিরের আস্তানা, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’। সমাবেশে জামায়াতের সঙ্গে সব ধরনের আত্মীয়তা বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামীপন্থী সাংবাদিক কামাল লোহানী।

বামলেখক সৈয়দ হাসান ইমাম বলেন, ‘রাজাকারদের ফাঁসি হলে তাদের কবর বাংলাদেশে নয়, পাকিস্তানে হবে। তাদের কবর কোনোভাবেই এদেশে দেয়া যাবে না।’ জামায়াত-শিবিরকে চিরতরে নির্মূল না করে ঘরে না ফিরতে তিনি বক্তব্যে আন্দোলনকারীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘জামায়াত-শিবিবের রাজনীতি নিষিদ্ধ ও তাদের নাগরিকত্ব বাতিল না হওয়া পর্যন্ত আমরা রাজপথে থাকব।’

ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত বলেন, ‘এদেশের মাটিতে জামায়াত-শিবির ক্যানসার। একে প্রতিহত করতে না পারলে কেউ নিরাপদে থাকবে না। তাই এদের প্রতিহত করতে হবে। বাংলার মাটি থেকে জামায়াত-শিবিরকে চিরতরে উত্খাত করতে হবে।’

সমাবেশ শেষে আওয়ামী লীগ-বামপন্থী এসব লেখক, বুদ্ধিজীবীদের নেতৃত্বে গণশপথ পাঠ করানো হয়। শপথে বলা হয়, ‘জামায়াত-শিবির নিয়ন্ত্রিত সব প্রতিষ্ঠানকে বয়কট করব। মুক্তিযোদ্ধাদের লাখো শহীদের রক্তের ঋণ শোধ করতে হবে। জামায়াতের ষড়যন্ত্রের সঙ্গে যারা ইন্ধন জুগিয়েছে, তাদের বিশেষ ট্রাইব্যুনালে নিয়ে বিচার করতে হবে। যারা এদেশে গৃহযুদ্ধের হুমকি দিয়েছেন, তাদের টিভি ফুটেজ দেখে চিহ্নিত করে কঠোর বিচারের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। জামায়াত নিয়ন্ত্রিত প্রতিষ্ঠান বর্জন করব।’ এ সময় কাদের মোল্লার ফাঁসির রায় না হওয়া পর্যন্ত শাহবাগ চত্বরে ওই আন্দোলন অব্যাহত রাখার শপথ নয়া হয়।

বাম-আওয়ামী লীগের সমাবেশ : জামায়াতে ইসলামীর নেতা কাদের মোল্লার ফাঁসির দাবিতে আয়োজিত শাহবাগের মহাসমাবেশ রূপ নেয় বাম ও আওয়ামী লীগের মহাসমাবেশে। সমাবেশের শুরুতে মঞ্চ দখল করে রেখেছিলেন আওয়ামী লীগ ও বাম ঘরানার বুদ্ধিজীবীরা। সমাবেশের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ছিল আওয়ামী লীগের দলীয় স্লোগান ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’। এসব রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের নেতাকর্মীদেরই দখলে ছিল মঞ্চ থেকে শুরু করে পুরো সমাবেশস্থল। সমাবেশে আওয়ামী লীগের মন্ত্রী, সংসদ সদস্যদের বক্তব্য দেয়া নিষেধ থাকলেও বামদলের নেতাদের বক্তব্য দিতে কোনো বাধা দেয়া হয়নি। গতকাল বিকালে শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চে সমাবেশের শুরু থেকেই বামদলের নেতাদের প্রাধান্য ছিল। বিকাল তিনটায় সমাবেশের শুরুতেই বক্তৃতা করেন ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক।

আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা কমিটির সদস্য কেএম শফিউল্লাহ, খুনের মামলায় বহুল আলোচিত আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য নুরন্নবী চৌধুরী শাওন, সংসদ সদস্য তারানা হালিম ছাড়া আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনের অনেক নেতা মঞ্চে ছিলেন। আওয়ামী লীগ ছাত্র, যুব ও অন্যান্য সহযোগী সংগঠনগুলোর শীর্ষ নেতারা বড় বড় মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে আসেন। অনেকে মঞ্চে উঠে নেতৃত্ব দেন। সমাবেশের শুরু থেকে মঞ্চে ছিলেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি এইচএম বদিউজ্জামান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকী নাজমুল আলম। এছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ সভাপতি মেহেদী হাসান মোল্লা, সাধারণ সম্পাদক ওমর শরিফসহ আরও অনেকে। একপর্যায়ে সমাবেশ পরিচালনা করেন আওয়ামী লীগ সমর্থিত সংগঠন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি নাসিরউদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু। মহাজোটের শরিক দল জাসদ ছাত্রলীগের সভাপতি হোসাইন আহমেদ তফছিরও মঞ্চে ছিলেন। ছাত্র, যুব ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণসহ বিভিন্ন ইউনিটগুলো সর্বোচ্চ লোক সমাগম ঘটায়। স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক সংহতি জানান। যুবলীগের মহানগর দক্ষিণের সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট, সাবেক ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুল হায়দার চৌধুরী রোটন। এছাড়া ঢাকা মহানগরের আওয়ামী লীগ ও মহাজোটভুক্ত বিভিন্ন বাম সংগঠনের প্রায় সব ইউনিটের নেতারা মিছিল নিয়ে অংশগ্রহণ করেন। এছাড়া বামদল সমর্থিত সংগঠন উদীচীর নেতারাও মঞ্চে ছিলেন। সমাবেশে মিছিল নিয়ে গতকাল বিকালে সংহতি জানায় বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি ও বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল। বিকালে সিপিবি রাজধানীর পুরানা পল্টন অফিস থেকে মিছিল নিয়ে এসে ওই দুই সংগঠন সমাবেশে সংহতি প্রকাশ করে। এ সময় মিছিলে ‘আপস নয়, রাজাকারদের ফাঁসি চাই’, ‘সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলুন’, ‘বাম বিকল্প ঐক্য চাই’সহ বিভিন্ন স্লোগানসংবলিত প্ল্যাকার্ড বহন করা হয়। মিছিলে অংশ নেন সিপিবি সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, বাসদের সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান, সিপিবি নেতা রুহিন হোসেন প্রিন্স, বাসদ নেতা বজলুর রশিদ ফিরোজ প্রমুখ।

এছাড়া শাহবাগের সমাবেশে ব্যাপক শোডাউন দেয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার ছাত্রলীগসহ নগরের অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্রলীগ শাখার নেতাকর্মী ও ক্যাডাররা। মূল মঞ্চের চারপাশ গতকাল দুপুর থেকে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের দখলে ছিল। জুমার নামাজের পরপর ছাত্রলীগ মহানগর উত্তর, দক্ষিণ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নেতাকর্মী, ক্যাডাররা বিশাল বিশাল মিছিল নিয়ে সমাবেশে যোগদান করেন।

এসব মিছিলের মধ্যে অনেকটা আতঙ্কের ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার ছাত্রলীগের মিছিল। ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী হলগুলো থেকে ছাত্রলীগ নেত্রীদের নেতৃত্বে দুপুর ২টা ৪৫ মিনিটে একটি বর্ণাঢ্য মিছিল মহাসমাবেশস্থলে যোগ দেয়। এ সময় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের হাতে বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড, ঝাড়ু, ব্যানার ইত্যাদি প্রদর্শন করে প্রতিবাদ করতে দেখা যায়।

গতকালের সমাবেশ শেষ পর্যায়ে উপস্থাপনা করেন ব্লগার অঞ্জন রায়। এতে সভাপতিত্ব করেন ইমরান এ সরকার। সমাবেশে ব্লগার অ্যান্ড অনলাইনের নেতারাও বক্তৃতা করেন।

গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে বিষোদগার : গতকালের সমাবেশে গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে চরম বিষোদগার করেন আওয়ামী লীগ সমর্থক ও বাম লেখকরা। এ সময় সংগ্রাম, নয়া দিগন্ত, আমার দেশ ও দিগন্ত টিভি, সোনার বাংলা ব্লগের বিরুদ্ধে চরম বিষোদগার করা হয়। এসব গণমাধ্যম বর্জনের জন্য সভায় শপথবাক্য পড়ানো হয়। সমাবেশের শুরুতে দিগন্ত টিভি, আমার দেশ, নয়া দিগন্ত, সংগ্রামের সংবাদকর্মীদের সমাবেশস্থল থেকে চলে যেতে বলা হয়। এছাড়া জামায়াত নেতা আবদুল কাদের মোল্লা ও মো. কামারুজ্জামানের জাতীয় প্রেস ক্লাবের সদস্যপদ বাতিলের আহ্বান জানিয়েছেন বাম ছাত্র সংগঠনের নেতারা।

এছাড়া দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরে :

রাজশাহী : যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবিতে রাজশাহীতে আন্দোলন অব্যাহত রয়েছে। গান গেয়ে, কবিতা পাঠ ও পথনাটকের মাধ্যমে নগরীর আলুপট্টি মোড়ে গতকাল সকাল থেকে আন্দোলনকারীরা প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেছে। গতকাল সন্ধ্যায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কর্মসূচি অব্যাহত ছিল।

এতে আওয়ামী লীগসহ মহাজোটের শরিক কয়েকটি দলের নেতাকর্মীরা এবং সরকার সমর্থক বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানের লোক এতে অংশ নিয়েছেন।

শ্রীনগর : জামায়াত নেতা কাদের মোল্লার ফাঁসির দাবিতে গতকাল সকালে ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কের শ্রীনগর উপজেলার ছনবাড়িতে উপজেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ সময় মহাসড়কের উভয় দিকে প্রায় ৮ কিমি এলাকায় ২ ঘণ্টা তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। ফলে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ থাকে। সমাবেশে মুন্সীগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য সুকুমার রঞ্জন ঘোষের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন ভারপ্রাপ্ত উপজেলা চেয়ারম্যান সেলিম আহমেদ ভূঁইয়া, সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেন, অরুন চৌধুরী, সোহরাব হোসেন, নেছারুল্লাহ সুজন, আলমগীর হোসেন প্রমুখ।

সিরাজগঞ্জ : কাদের মোল্লাসহ সব যুদ্ধাপরাধীর ফাঁসির দাবিতে সিরাজগঞ্জে বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম সংযোগ মহাসড়কের মুলিবাড়িতে মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে সয়দাবাদ ইউনিয়নের সাধারণ মানুষ। গতকাল বিকাল সাড়ে ৩টা থেকে ৪টা পর্যন্ত এ অবরোধ চলে। এদিকে একই দাবিতে প্রগতিশীল নাগরিক মঞ্চের আয়োজনে মুক্তির সোপান কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে চলছে বিক্ষোভ সমাবেশ ও গণসংগীত।

চুয়াডাঙ্গা : চুয়াডাঙ্গায় গতকাল বিকাল ৪টায় শহীদ হাসান চত্বরে কাদের মোল্লার ফাঁসির দাবিতে বিভিন্ন সংগঠন অবস্থান কর্মসূচি শুরু করে। এ সময় বিভিন্ন স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে শহীদ হাসান চত্বর। জেলার ৪টি উপজেলা শহরেও একই দাবিতে কর্মসূচি চলছে।

শ্রীমঙ্গল : মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলেও আন্দোলন ছড়িয়ে পড়েছে। গত দু’দিন ধরে শহরের চৌমুহনা চত্বরে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করে কাদের মোল্লার ফাঁসির দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠন।

মঠবাড়িয়া : পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় গতকাল বিকালে তরুণ প্রজন্ম ও সুশীল সমাজের উদ্যোগে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার সম্মুখ সড়কে এক মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়। মানববন্ধন শেষে শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে এক সমাবেশে বক্তব্য রাখেন মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার বাচ্চু মিয়া আকন, মুক্তিযোদ্ধা মোস্তফা শাহ আলম দুলাল প্রমুখ।

কেশবপুর : যশোরের কেশবপুরে সচেতন নাগরিক ও শিল্পী সমাজের উদ্যোগে গতকাল বিকালে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা দৌলত বিশ্বাস চত্বরে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে কবিতা আবৃত্তি ও গণসংগীত পরিবেশন করা হয়। এ সময় বক্তব্য রাখেন অ্যাডভোকেট আবুবকর সিদ্দিকী, প্রেস ক্লাবের সভাপতি আজিজুর রহমান প্রমুখ।

শেরপুর (বগুড়া) : বগুড়ার শেরপুরে আওয়ামী লীগের উদ্যোগে যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করা হয়েছে। গতকাল বিকালে উপজেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে স্থানীয় বাসস্ট্যান্ডে দলীয় কার্যালয় থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে।

কাপাসিয়া : গাজীপুরের কাপাসিয়ায় সচেতন নাগরিক সমাজের ব্যানারে গতকাল সন্ধ্যায় শহরে এক বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে।

কাপাসিয়া উপজেলা কৃষক সমিতির নেতা আলতাফ হোসেনের সভাপতিত্বে শহরের প্রধান সড়কে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সিপিবি গাজীপুর জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আসাদুল্লাহ বাদল, উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক নুরুল আমিন সিকদার, সিপিবি কাপাসিয়া উপজেলা কমিটির সভাপতি মাস্টার আতাউর রহমান, সাধারণ সম্পাদক মাস্টার মতিউর রহমান, কমরেড সিদ্দিকুর রহমান ফকির প্রমুখ। নেতারা সব যুদ্ধাপরাধীর ফাঁসির রায় কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত ঘরে ফিরে না যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।

নারায়ণগঞ্জ : নারায়ণগঞ্জে প্রতিবাদ কর্মসূচি অব্যাহত রয়েছে। গতকাল টানা তৃতীয় দিনের মতো শহরের চাষাঢ়ায় প্রতিবাদ কর্মসূচি অব্যাহত রয়েছে।

এদিন বিকাল থেকে চাষাঢ়ায় প্রতিবাদ শুরু করে সর্বস্তরের জনতা। নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের ব্যানারে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদে বিভিন্ন সংগঠন ও ব্যক্তিরা উপস্থিত হয়ে ধিক্কার জানায় আবদুল কাদের ভূইয়ার কুশপুত্তলিকাকে। এতে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি প্রদীপ ঘোষ বাবু, নারায়ণগঞ্জ নাগরিক কমিটির সভাপতি এবি সিদ্দিক, সহসভাপতি রফিউর রাব্বি, সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান, সিপিবি নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি হাফিজুল ইসলাম, ভবানি শংকর রায়, রথীন চক্রবর্তী, জাহিদুল হক দিপু, শিবনাথ চক্রবর্তী, আবদুল হাই বারী, কবি আরিফ বুলবুল, শোয়েব মনির, মনি সুপান্ত, ফাহমিদা আজাদসহ তরুণ প্রজন্মের শত শত তরুণ-তরুণী।

কর্মসূচিতে সংহতি প্রকাশ করেন নারায়ণগঞ্জ আইডিয়াল স্কুলের প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেন, জেলা কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক রোকনউদ্দিন আহম্মেদ প্রমুখ। সাংস্কৃতিক জোটের ব্যানারে রাজাকারদের ফাঁসির দাবিতে আয়োজিত এই আন্দোলন সংগ্রামে বক্তব্যের পাশাপাশি চলে একাত্তরের সেই অগ্নিঝরা গান এবং রাজাকারদের বিরুদ্ধে কৌতুকময় কবিতাপাঠ।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১:১৩

মোঃ নাঈম হোসেন বলেছেন: মাহমুদ-উর রহমান এর পাছা দিয়ে, বাশ মার ঠেলে ঠেলে। শালা শুয়রের বাচচা।

২| ০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১:১৯

সামির হোসাইন বলেছেন: ছাগু পত্রিকা

৩| ০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১:৩৩

মহানাম বলেছেন: এই ব্লগের লেখককে খুঁজে বের করে শাহবাগ চত্বরে কুত্তার মত টেনে হেঁচড়ে নিয়ে এসে গাছে ঝুলিয়ে দেওয়া এখনি দরকার। আর মাহমুদ-উর-রহমানের মত বেশ্যার পোলাটারও একই পরিণতি অতি আবশ্যক হয়ে দাঁড়িয়েছে।

৪| ০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ২:০০

সবাক িনর্বাক বলেছেন: আওয়ামীলীগ নিপাত যাক, ধর্মদ্রোহী সকল জানোয়ার নিপাত যাক.....

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.