নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি \'\'মুক্তি\'\' কামী.....

আমি মুক্তি কামী

আমি একজন ছাত্র এবং সাধারণ মানুষ....।

আমি মুক্তি কামী › বিস্তারিত পোস্টঃ

প্রধানমন্ত্রী ও তার সরকারের প্রতি ঈমানদারদের প্রত্যাশা : মুসলমানদের ধর্মীয় অধিকার যেন আর ক্ষুণ্ন না হয়

০৯ ই মে, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:২০

মুসলমানদের যখন নিজস্ব রাষ্ট্র থাকে, যখন তারা আত্মনিয়ন্ত্রণ লাভ করেন, তখন তাদের উপর শরীয়ত কায়েম করা ওয়াজিব হয়ে যায়। মুসলমানদের স্বাধীনতা অর্জনের অর্থ হচ্ছে, নির্বিঘেœ ইসলাম পালনের স্বাধীনতা। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন, মুসলমানদের যখন আমি পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠা দান করি তখন তারা সর্বাংশে নামায কায়েম করে, যাকাতের বিধান পুরোপুরি কার্যকর করে, অন্যায় অশ্লীলতা রোধ করে, সৎকাজের আদেশ দেয় আর অসৎকর্ম প্রতিহত করে। এ হিসেবে স্বাধীন বাংলাদেশে মুসলমানদের স্বাধীনতা, ক্ষমতা ও কর্তৃত্ব কতটুকু আছে তা যথেষ্ট ভাববার বিষয়।
শতকরা প্রায় ৯৫% মুসলমানের দেশে যেকোনো বাহানায় সংবিধান থেকে আল্লাহর উপর আস্থা ও বিশ্বাস তুলে দিতে পেরে আনন্দিত হয়েছেন, শাসকদের মধ্যে এমন লোকও আছেন। তারা জনগণের মতামত না নিয়েই সংবিধানে সমাজতন্ত্র স্থাপন করেছেন যার মূল সংজ্ঞায় নাস্তিকতা রয়েছে। তারা সংবিধানে স্যাকুলারিজম বা ধর্মহীনতা স্থাপন করেছেন। যার সংজ্ঞায় বলা হয়েছে, যার চেতনার সাথে ধর্ম ও আধ্যাত্মিকতার বিন্দুমাত্রও সম্পর্ক নেই। এ ছাড়াও সংবিধানে বহু বিষয় এমন রয়েছে যার সাথে ইসলামী ভাবধারার মোটেও মিল নেই। কিছু বিচ্ছিন্ন চিন্তার মানুষ সুকৌশলে সংবিধান রচনা, সংশোধন ও পুনর্মূল্যায়নের কাজ নিজেদের জিম্মায় নিয়ে শতকরা ৯৫% মানুষের বিশ্বাস ও চেতনার সাথে মারাত্মক অবিচার করেছেন। সংবিধানের শুরু থেকে তারা বিসমিল্লাহ তুলে দিতে চেয়েছিলেন, কিন্তু শেষ পর্যন্ত কী ভেবে আবার রেখে দিয়েছেন। কিন্তু এর বাংলা তরজমা বিকৃত ও ভুলভাবে করে বিসমিল্লাহর সাথে জুড়ে দেওয়া হয়েছে। শত সমালোচনা ও বিরূপ মন্তব্যের লক্ষ্যবস্তু রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম তারা বাদ দিতে সচেষ্ট ছিলেন। কিন্তু কী ভেবে যেন রেখে দিয়েছেন। যদিও ভাষার মারপ্যাঁচে রাষ্ট্রধর্ম আর এককভাবে ইসলাম নেই। অন্যান্য সকল ধর্মও সমান গুরুত্ব ও মর্যাদা নিয়ে এখন রাষ্ট্রধর্ম। অবশ্য ধর্মনিরপেক্ষ মূলনীতি যে সংবিধানে থাকে তা-তে রাষ্ট্রধর্ম থাকা আর না-থাকা সমান কথা। যে সংবিধানে আল্লাহর উপর আস্থা ও বিশ্বাস রাখা হয়নি, সেখানে বিকৃত ও ভুল তরজমার বিসমিল্লাহ রেখে দেওয়ারও কোনো অর্থ হয় না। বর্তমানে এসব বিষয় আলোচনায় আনা খুবই সংবেদনপূর্ণ। যে কেউ ইচ্ছা করলে সংবিধানের মূলনীতি নিয়ে মন্তব্য করার অপরাধে যেকোনো বিশ্লেষক ও আলোচককে আইনের মাধ্যমে হেনস্তা করতে পারেন।
তবে বাংলাদেশের শতকরা একশ জন মানুষের কাছেই নাস্তিকতা, খোদাদ্রোহিতা, ধর্মবিরোধিতা ও অগ্রহণযোগ্য ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ সমর্থনযোগ্য নয়। ধর্মপ্রাণ হিন্দু, খ্রিস্টান, বৌদ্ধরাও চান না ধর্মীয় জীবনবোধ ব্যক্তিগত পর্যায়ে সীমাবদ্ধ রেখে রাষ্ট্র, সরকার, প্রশাসন ও বিচারব্যবস্থা ধর্মহীন হয়ে যাক। শিক্ষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি ও আর্থসামাজিক মূল্যবোধ ধার্মিকতামুক্ত হয়ে স্যাকুলার হয়ে যাক। আর মুসলমানরা তো এসব চাইতেই পারে না। তাদের জীবনের সকল অঙ্গনে ধর্মের উপস্থিতি ও সংশ্লিষ্টতা অপরিহার্য। কিন্তু দুঃখজনক হলেও বাংলাদেশে ধর্মকে টার্গেট করে সব ধরনের কাজ-কর্ম, নীতি ও উদ্যোগ পূর্ণমাত্রায় বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
সর্বশেষ সংবিধান মূল্যায়ন কমিটির আহ্বায়ক বলেছিলেন, বংলাদেশের সংবিধান থেকে ধর্ম ও সাম্প্রদায়িকতার বড় বড় অংশগুলো উপড়ে ফেলেছি। আবার সুযোগ পেলে রয়ে যাওয়া ছোট ছোট বিষয়গুলোও শেকড় থেকে উপড়ে ফেলে দেব। সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের একজন দায়িত্বশীল মন্তব্য করেছেন, আরেকবার সুযোগ পেলে সংবিধান থেকে ইসলাম ও মুসলমানদের বিষয়গুলো ধোয়া-মোছা করে বিদায় করব। যাতে এসবের নাম-গন্ধও না থাকে। এমতাবস্থায় তারা পুনরায় ক্ষমতায় এসেছেন। জানা নেই এখন তারা কী করবেন।
সংবিধান মূল্যায়ন কমিটির কো-চেয়ারম্যান ছিলেন এমন এক ব্যক্তি যিনি বাহাত্তরের সংবিধানকে সমর্থন করতেন না। তিনি তখন পার্লামেন্টেও ব্যক্তিগতভাবে দ্বিমত পোষণ করে বাহাত্তরের সংবিধানকে নৈতিকভাবে অসমর্থন করেছিলেন। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে জঘন্য মন্তব্য ও কটূক্তি করা চিহ্নিত কিছু ‘অ-আওয়ামীলীগ’ বাম নেতার অন্যতম এই ব্যক্তি সংবিধান মূল্যায়ন কমিটির কার্যকরি সভাপতির দায়িত্বপ্রাপ্ত হন। তদুপরি তিনি ব্যক্তিগত জীবনে একজন সংখ্যালঘু অমুসলিম সম্প্রদায়ের লোক। আওয়ামীলীগ ও মহাজোটে লক্ষ লক্ষ খাঁটি আওয়ামীলীগ ও মুসলিম সুযোগ্য লোক থাকা সত্ত্বেও উপরোক্ত পরিচয়ের একজন নেতাকে দিয়েই সংবিধান কাটাছেঁড়া করে এর বর্তমান রূপ দেওয়া হয়েছে। আইনগতভাবে এসব বিষয় আলোচনা করা বর্তমানে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ; তথাপি নীতিগত দায় থেকে মুক্ত হতে এবং গণতান্ত্রিক পরিবেশের সুযোগ নিয়ে এসব কথা চিন্তাশীল নাগরিকদের বলতে হবে। বিশেষ করে সংবিধান থেকে ধর্ম ও ধর্মীয় মূল্যবোধের নামগন্ধ মুছে দেওয়ার যে ‘আশা’ কিছু মানুষ অন্তরে লালন করছেন এবং উচ্চ আদালতেও এসব বিষয় ইদানীং ইস্যু হিসেবে উঠে গেছে, অতএব শতকরা একশ ভাগ ধার্মিক মানুষ ও ৯৫% মুসলমানের আশা-আকাক্সক্ষাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন ও দেশের সংবিধানে ইসলাম ও মুসলমানদের নিজস্ব ভাবধারা চেতনা বিশ্বাস শরীয়া সংস্কৃতি স্বকীয়তা ও সুন্নাহকে আরও আচ্ছারকম পদদলিত করার মহড়া দেখার অপেক্ষায় থাকা ছাড়া মুসলমানদের গত্যন্তর নেই। এরপর কী কী সামনে আসে, বাংলাদেশের শতকরা প্রায় ৯৫% মুসলমানের ভবিষ্যতে আর কী কী দেখতে হয়, সেসব কেবল সর্বশক্তিমান আল্লাহই জানেন। আমরা মুসলিমপ্রধান আওয়ামীলীগ সরকার ও বিশেষ করে ধর্মপ্রিয় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে কেবল সুবিবেচনাই আশা করতে পারি। যে আশঙ্কা প্রকাশ করছি পাশাপাশি আবার যে আশা-ভরসা তুলে ধরছি এ সব ব্যাপারেই একমাত্র আল্লাহ নেগাহবান।
ধরে নেওয়া যাক, উচ্চ আদালত সংবিধানের মূলনীতিতে ‘স্যাকুলারিজম’ থাকায় ‘রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম’ তুলে দিল। এরপর কেউ রিট করলে ‘বিসমিল্লাহ’ তুলে দিতে হবে এই যুক্তিতে। আবার কেউ রিট করল ‘গণতন্ত্র’ তুলে দিতে হবে। কেননা, সমাজতন্ত্র আর গণতন্ত্র একসাথে কোনোদিন চলতে পারে না। বিজ্ঞ লোকেরা দুনিয়ার এত বিপরীত বিষয় কেন, কী উদ্দেশ্যে ৯৫% মুসলমানের অধিবাস বাংলাদেশের সংবিধানে ঢুকালেন, আবার খুঁজে খুঁজে একটু একটু করে ধাপে ধাপে ইসলাম, ঈমান, আল্লাহর নাম ও মুসলমানী চিহ্নগুলো বের করে তারা ফেলে দিচ্ছেন, এ বিষয়টি বোঝা খুবই দুষ্কর। তাদের মনের গোপন অভিসন্ধি আল্লাহই ভালো জানেন। ঈমানদার মুসলমানরা বড়ই শঙ্কা ও হতাশায় ভুগছেন। তারা বঙ্গবন্ধু কন্যার দিকে তাকিয়ে আছেন, অন্তর থেকে দুআ করছেন, যেন মুসলমানের স্বাধীন দেশের সংবিধান থেকে ইসলামের নামটুকুও মুছে না যায়। যেন এ দেশটি সাংবিধানিকভাবে ইসলামবৈরি না হয়ে যায়। যেন বিপুলতর সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানের ধর্মীয় অধিকার আরও খর্ব ও ক্ষুণ্ন না হতে পারে। রাষ্ট্র, সরকার, প্রশাসন ও বিচারবিভাগে সুমতিশীল সুবিবেচক যারা আছেন তাদের প্রত্যেকের প্রতি অসহায় মুসলমানদের এই আকুতি যেন সময়মতো পৌঁছে যায়।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.