নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নব্য স্বৈরাচার

যেদিন আমি হারিয়ে যাবো, বুঝবে সেদিন বুঝবে অস্তপারের সন্ধ্যাতারায় আমার খবর পুছবে।

নব্য স্বৈরাচার › বিস্তারিত পোস্টঃ

অনুপ্রেরনাদায়ক+চোখের অশ্রু জড়ানো একটি মুভির রিভিউ- যারা জীবন সম্পর্কে খুব বেশী হতাশাগ্রস্ত বা জীবিকা নির্বাহে খুব বেশী কষ্ট করছেন তাদের জন্য

১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১২:০৭



মুভির নামঃ The Pursuit of Happyness

IMDB RATINGS: 7.8/10

Director

Gabriele Muccino

Writer:

Steve Conrad

Stars:

Will Smith, Thandie Newton, Jaden Smith

http://www.imdb.com/title/tt0454921/

WILL SMITH (Chris Gardner) একজন সাধারন সেলসম্যান। সে চিকিৎসা বিজ্ঞানে উদ্ভাবিত একটি নতুন পন্যের বিক্রির জন্য দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। এই ডাক্তার সেই ডাক্তার কিন্তু কেউই আসলে ওই পন্যটি নিতে আগ্রহী নয়। দিনের পরে দিন চলে যাচ্ছে কিন্তু পন্যের বিক্রি বাড়ছে না। স্ত্রী-সন্তান কারও ইচ্ছা সে পুরন করতে পারছে না তার সীমিত আয়ের জন্য। এদিকে বাড়ি ভাড়া মাসের পর মাস বাকি পরে আছে। বাড়িওয়ালা নিয়মিত তাগিদ দিচ্ছে, কিন্তু ক্রিস তাকে একের পর এক তারিখ দিচ্ছে, কিন্তু পন্যের বিক্রি করতে গিয়ে বার বার ব্যর্থ হওয়ার কারনে পাওনা পরিশোধ করতে পারছে না। তার স্ত্রী লিন্ডা; সে একটি ফ্যাক্টরিতে ডাবল সিফটে কাজ করে শুধুমাত্র তাদের ভাড়া বাসাটির পাওনা পরিশোধের জন্য। এদিকে ক্রিস তার কাজে ক্রমাগত ব্যর্থ হয়ে একটি ব্রোকারেজ হাউজে ইন্টার্নশিপ নেয় এই শর্তে যে, সে যদি তার যোগ্যতা প্রমান করতে পারে তবেই এখানে কাজ করার যোগ্যতা অর্জন করবে। এই খবর যখন লিন্ডাকে সে বলে তখন লিন্ডার ভাষ্য ছিল এরকম-‘সেলসম্যান থেকে ইন্টার্নশিপ, এটাকি অবনতির দিকে গেলনা?’ যাই হোক একপর্যায়ে সে ক্রিসকে ছেড়ে চলে যায় এবং স্বামীর জোরালো প্রতিবাদে তাদের একমাত্র সন্তান ক্রিস্টোফারকে (জ্যান্ডেন স্মিথ) রেখে যান তার কাছে।



কিন্তু এদিকে ক্রিসের সাফল্য যেন আসছেই না বরং আরও ব্যর্থ হচ্ছে এবং এই ব্যর্থতার কারনে তার হাতে আর অবশিষ্ট কোন টাকা নেই বাড়ি ভাড়া পরিশোধ করার জন্য, কর পরিশোধের জন্য। যার কারনে তাকে অ্যাপার্টমেন্ট থেকে বের করে দেয়া হয়, এক পর্যায়ে মোটেলে আশ্রয় নেয়, কিন্তু সেখান থেকেও বের করে দেয়া হয়। যার কারনে একরাত একটি স্টেশনের টয়লেটে বাপ-ছেলের রাত কাটাতে হয়। এখানকার একটা দৃশ্য দেখে আর চোখের জল ধরে রাখতে পারিনি। :((:((:-*:-*:-*



এভাবে কাহিনী এগোতে থাকে, একপর্যায়ে বাপ-বেটার পাবলিক রেস্ট রুমে থাকতে হয়। যাই হোক পরিবার বলতে শুধু দুইজন তাই ক্রিসকে এখন আরও কঠিন পরিশ্রম করতে হবে নিজের জন্য একমাত্র ছেলের জন্য। তাই স্টকব্রোকারের কাজটি সে খুবই সিরিয়াসলি নেয় এবং আগ্রহের সহিত করতে থাকে। কিন্তু সাফল্য যেন আসছেই না। তার আবিষ্কৃত যন্ত্রটি একটা দুইটা হয়তবা বিক্রি করতে পারছে কিন্তু তাতে আর চলছে না। অনেক সময় দেখা যাচ্ছে যার কাছে বিক্রি করবে তখনই যন্ত্রটায় যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিচ্ছে। তাই তাকে বাধ্য হয়ে একপর্যায়ে নিজের গায়ের রক্ত বিক্রি করে যন্ত্রগুলি মেরামতের জন্য কিছু টাকা জোগাড় করতে হয়। এই পার্টটাও বেশ হৃদয়স্পর্শী। এভাবে সে একপর্যায়ে ব্রোকারেজ হাউজের পরিচালকদের মন জয় করে তার একাগ্রতা ও নিষ্ঠার মাধ্যেমে এবং পরিশেষে সেখানকার কাজটা সে পেয়ে যায়। এই পেশার মধ্যেই সে সুখকে খুজে বেড়ায়।



পুরো মুভি জুড়ে যে ‘Pursuit of Happyness’ বলতে যা বুঝানো হয়েছে তাহল, আমেরিকার স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে জেফারসন মুলত এই শব্দটা ব্যবহার করেছেন। এখানে তিনি হ্যাপিনেসের সাথে পারসুট শব্দটা যুক্ত করেছেন। যার মানে এই দাড়ায়, “ সুখ আসলে একটি পেশা/বৃত্তির মাঝে লুকায়িত। আপনার পছন্দসই একটি পেশা আপনি চাইলেই খুব সহজে জোগাড় করতে পারবেন না বা আপনার জন্য তৈরি করা থাকবে না, তৈরি করতে হবে। যা রাতারাতি আসবে না, অনেক সময় লাগবে, কিন্তু তারপরেও ধৈর্যহারা হলে চলবে না। যা আপনাকে অনেক কষ্টে অর্জন করতে হবে। নানা বাধা-বিপত্তি, কাঠ-খড় পোহাতে হবে এবং তার ফলশ্রুতিতেই আপনি পৌঁছে যাবেন কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে, যার জন্য আপনাকে হয়তবা সবাই সাহায্য করবে না। কিন্তু তারপরেও আপনাকে এগিয়ে যেতে হবে। আর যখন আপনি আপনার সাথে মানানসই পেশাটি পেয়ে যাবেন তখনই খুজে পাবেন প্রকৃত সুখ”।

বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে ব্যাপারটা আরও সত্য। এদেশে চাকরি যেন এক সোনার হরিন। আর নিজের সাথে মানায় এমন একটা পেশা নির্বাচন করা এবং পেশায় সফল হওয়া এক বিরাট আরাধ্য বিষয়। আশা করি মুভিটা আপনার সফলতায় অনুপ্রেরনা হয়ে কাজ করবে।

মুভি দেখার পরে আমার অনুভূতি

মুভিটা যখন শেষ করি তখন রাত তিন ঘটিকা। চোখ মুছছি বার বার। আসলে অনেক আবেগ জড়িত মুভিটার সাথে। নিজের কিছু অভিজ্ঞতার কথা বার বার মনে পড়ছিল। রিভিউ ভাল না লাগলেও মুভিটা দেখে ফেলেন অনেকদিন মনে থাকবে, অনুপ্রেরনা পাবেন। উইল স্মিথের এতটা সাবলীল অভিনয় এর আগে কখনও দেখিনি। আর ক্রিস্টোফার চরিত্রে পিচ্চিটা হল স্মিথের প্রকৃত সন্তান জাদেন স্মিথ। দুই বাপ-বেটার অভিনয় দেখে পুরোপুরি মুগ্ধ। বিশেষ করে যখন স্টেশনের টয়লেটে দুই বাপ-বেটা রাত্রি জাপন করে তখনকার দৃশ্যটা দেখে আর চোখের জল ধরে রাখা কঠিন হয়ে যায়। আমার মনে হয় স্মিথ তার জীবনের সেরা অভিনয় বোধ হয় এই মুভিটাতেই করল। আর বাপ কা ব্যাটা জুনিয়র স্মিথকে আপনার এক দর্শনেই ভাল লেগে যাবে।

এক কথায় অসাধারন একটি মুভি। যারা জীবন সম্পর্কে খুব বেশী হতাশ এবং কর্মক্ষেত্রে ক্রমাগত সংগ্রাম করছেন তাদের অন্তরে গেথে যাবে লিখিত দিলাম। তাদেরকে উদ্দেশ্য করে লিখলাম এই রিভিউ।

আমি ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবহার করি, তাই মুভিটি ডাউনলোডের সিঙ্গেল লিঙ্ক দিতে পারব না, এই নিন টরেন্ট লিঙ্ক। Click This Link

এখানে ডিরেক্ট ডাউনলোডের অপশনও রয়েছে। কিন্তু আমি কখনও ডাউনলোড করিনি তাই বলতে পারব না। যদি কেউ চান তবে আইডিএম থেকেও টরেন্ট ডাউনলোড করতে পারবেন। কমেন্টে জানাবো আপনি চাইলে।

ভালো থাকবেন সবাই, ভালো মুভি দেখবেন।

মন্তব্য ৭ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (৭) মন্তব্য লিখুন

১| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১২:২৩

ভবোঘুরে বলেছেন: এই ছবির আরেকটা অসাধারন দৃশ্য হল শেষ দৃশ্যটা। নায়ক ইন্টার্নশিপ পাওয়ার পরের এক্সপ্রেশনটা মনে রাখার মত।

২| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১২:২৫

নব্য স্বৈরাচার বলেছেন: শেষ দৃশ্যটাও মনে রাখার মত। স্মিথ আসলে চরিত্রটাকে অনেক সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলেছে এই মুভিতে। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

৩| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১:২০

অদ্বিতীয়া আমি বলেছেন: অসাধারন একটি মুভি
স্মিথ আর জুনিয়র স্মিথ এই দুজনের অভিনয়ে মুগ্ধ করা একটা মুভি

৪| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১:২৫

নব্য স্বৈরাচার বলেছেন: বাপ কা বেটা

৫| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১:২৯

নতুন বলেছেন: সবার একবার দেখা উচিত এই ছবিটা...

৬| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১:৩৫

বিকারগ্রস্থ মস্তিস্ক বলেছেন:
অসাধারন একটা ছবি --


কয়েক বার দেখেছি :) অসাধরন ভাবে ফুটিয়ে তুলেছে স্মিথ ও পিচ্চি পোলাটা তো অসাধারন অভিনয় করেছে

৭| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১:৪০

নব্য স্বৈরাচার বলেছেন: অনুপ্রেরনা পাওয়া যায় মুভিটা থেকে। সকলের অনুপ্রেরনা পেলে এরকম আরও মুভির রিভিউ লেখার ইচ্ছা আছে। ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.