নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

Ml Ali

Ml Ali › বিস্তারিত পোস্টঃ

জীবন প্রবাহ

০১ লা অক্টোবর, ২০২২ সকাল ১১:২৭

নিজের কথা- ৯৪ পর্ব

সূফী সাধক আনোয়ারুল হক বলেন," যেখানে আল্লাহ্ থাকেন সেখানেই শয়তান থাকেন।" আর আল্লাহই স্রেষ্ঠ কৌশলী মহাজ্ঞানী। তাই আল্লাহর অনুসারীগণ সন্দেহমূক্ত বিশ্বাসীর দল। আর শয়তানের অনুসারীগণ সন্দেহযুক্ত অবিশ্বাসীর দল। আল্লাহর বিশ্বাসীগণ আল্লাহর সক্ষমতার উপর নির্ভরশীল থেকে সর্বদাই আত্মবলে বলীয়ান থাকেন। তাই তাঁরা সর্বদাই নিরাপদ ও শান্তিপূর্ণ জীবন যাপন করতে সক্ষম । আর শয়তানের অনুসারীরা সর্বদাই সন্দহের বেড়াজালে অরক্ষিত থাকে। তাই তারা সর্বদাই অনিশ্চয়তার আসঙ্কাযুক্ত নিরাপদহীন অশান্তির জীবন যাপন করে থাকে।

সূফী সাধক আব্দুল হানিফ বলেন," হাক্কানী পথযাত্রীগণ কখনো সন্দেহ করেন না।" তিনি আরও বলেন," নিসন্দেহ সম্পর্ক ও স্বশ্রোদ্ধ ভালোবাসা আল্লাহ্ প্রেমের প্রাথমিক উপাদান । "
আর আল্লাহই সর্বস্রেষ্ঠ কৌশলী ও মহাজ্ঞানী। তিনি অন্তর্যামী তাই দৈনন্দিন সবার চিন্তন কর্ম সংগ্রহ করেন। আর সকলের শুভ চিন্তনকর্ম ও অশুভ চিন্তনকর্মগুলো বাছাই পূর্বক ভিন্ন ভিন্ন ভাবে সংরক্ষণ করেন। অতপর প্রত‍্যেকের শুভ চিন্তনের জন‍্য প্রাপ‍্য পুরষ্কার বরাদ্দের তালিকা প্রস্তুত করেন এবং শুভকর্ম সুসম্পন্ন হবার পর পুনরায় প্রাপ‍্য কর্মফল ব‍্যক্তির নিয়ত অনুযায়ী বরাদ্দ করেন। আর ব‍্যক্তির অশুভ চিন্তন কর্মগুলোর জন‍্য প্রাপ‍্য শাস্তির তালিকা প্রসতুত ততক্ষণ করেননা যথক্ষণ না সে অশুভ কর্মগুলি করে থাকে । আল্লাহ্ সুমহান দয়াবান ও সুবিচারক। তাই সূফী সাধক শেখ আব্দুল হানিফ বলেন," তুমি প্রতিদিন অন্তত দশ মিনিট ধরে তোমার শুভকর্মের জন‍্য চিন্তন কর আর প্রতিদিন ঘূম ভাঙ্গার পর চোখ খুলার পূর্বেই তোমার আল্লাহকে স্মরণ কর। "

কথায় আছে, অল্পবিদ‍্যা ভয়ংকর। কেন? সাধারণ জনগণের বিদ‍্যা হলো চিন্তাজাত অনুমান নির্ভর বিদ‍্যা। যা উপলোব্ধিজাত নয়। যা কেবলই দেখা, শোনা, কিম্বা পড়ার মধ‍্যে সীমাবদ্ধ। তাই তারা মুখে আনেক কিছু বললেও কাজে অন‍্যের নকল করা ছাড়া অনুমান নির্ভর বিদ‍্যা দিয়ে নির্ভুলভাবে কোন কিছুই করতে পারেনা। ফলে তারা সত‍্যানুসন্ধানী হতে পারেনা। কাজেই সত‍্যনির্ভর উন্নত জীবন গড়ার ক্ষেত্রে তারা স্বনির্ভর না। তারা জীবনের উন্নতির জন‍্য কেবলই সত‍্যানুসন্ধানী জ্ঞানীদের মুখাপেক্ষী হয়ে পরাধীন জীবন যাপন করে থাকে।

জ্ঞানীরা সত‍্যানুসন্ধানী। তাই তাঁরা সত‍্যের অন্বেষণে চিন্তাজাত অনুমান নির্ভর বিদ‍্যার উপর নির্ভর না করে উপলব্ধিজাত বিদ‍্যার উপর নির্ভর করে থাকেন। এই উপলোব্ধিজাত বিদ‍্যা কর্ম করা ব‍্যতীত কেবল দেখে, শুনে কিম্বা পড়ে আয়ত্ব করা যায়না। একমাত্র কর্ম করার মাধ্যমেই ব‍্যক্তির মাঝে আত্মবল জাগ্রত হয়। এই আত্মবলই সত‍্যানুসন্ধানীদের অনুমান থেকে উপলব্ধির স্তরে উন্নীত করে। ফলে ব‍্যক্তি লক্ষ‍্যকর্ম সঠিকভাবে পরিচালনা করতে সচেতন থাকেন। সত‍্যানুসন্ধানীগণ যতক্ষণ না লক্ষ‍্যকর্ম কাঙ্ক্ষিত মানে উপনীত হয় ততক্ষণ বারবার পরিক্ষা নিরীক্ষার মাধ‍্যমে কর্ম পরিচালনা পূর্বক কাঙ্ক্ষিত মানের কর্মে উপনীত করার কাজে নিমগ্ন থাকেন।

এভাবে সত‍্যানুসন্ধানীগণ কর্মের অভিজ্ঞতার ফলে সাফল্যের উপলোব্ধিবোধ অর্জনের মাধ‍্যমে নির্ভুল কর্ম করার জ্ঞানশক্তি অর্জন করে থাকেন। সত‍্যনুসন্ধানীগন কোন কর্মের কার্যকারিতার বিভিন্ন পর্যায়, কারন, ফলাফল ও উৎসের অনুসন্ধান করে থাকেন। কিন্তু উপলব্ধিবোধের সীমাবদ্ধতা থাকার কারনে অনেক সত‍্যানুসন্ধানী জ্ঞান বিজ্ঞানের চর্চার সীমাবদ্ধ গন্ডীর মধ‍্যে থাকার ফলে সত‍্যালোকর উপলব্ধি হৃদয়গম করতে ব‍্যর্থ হন। সীমিত জ্ঞান বিজ্ঞানের চর্চায় যারা সত‍্যের জন‍্য লালায়িত থাকতে পারেনা সত‍্যের উপলব্ধি না পেয়ে এসকল সত‍্যানূসন্ধানীর অনেকেই সৃষ্টি জগতের মহান স্রষ্টার অস্তিত্ব অস্বীকার করে থাকেন। ফলে তারা নিজের সত‍্যকে উপলব্ধি করতে না পারার কারনে সত‍্য থেকে বিচ‍্যুত হয়ে নিজেকে প্রকৃতির সন্তান বলে বিবেচনা করেন। এরাই জগতে নিজেদের নাস্তিক হিসেবে পরিচয় তুলে ধরেন।

আর যে সকল সত‍্যানুসন্ধানী স্বীয় স্রষ্টা সত‍্যের জন্য লালায়িত থাকেন, একমাত্র তাঁরাই স্বীয় স্রষ্টার পরম কৃপায় স্বীয় সত‍্যকে উপলোব্ধি করার যোগ‍্যতা অর্জন করে থাকেন। আর তাঁরাই হলেন সাধনার পথের পথিক সূফী সাধকদের পদাঙ্ক অনুসারী সত‍্যানুসন্ধানী ব‍্যক্তিত্ব। সূফী সাধকগণ জগৎসমূহের স্রষ্টা আল্লাহর নির্দেশনা তথা আদেশ, নিষেধ, উপদেশ অনুসরণ করে জীবন যাপন করেন। ফলে তাঁরা সত‍্যের উপর প্রতিষ্ঠিত থেকে যেমন আনন্দঘণ জীবন যাপন করেন তেমনি দেশ যাতির কল‍্যানে নিয়োজিত থেকে স্রষ্টার সুযোগ‍্য প্রতিনীধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করে থাকেন। এ প্রসঙ্গে সূফী সাধক আনোয়ারুল হক বলেন, " তাঁরা আল্লাহকে দেখিতে পাই নাই, যাঁরা আল্লাহর জন‍্য লালায়িত না।" আর সূফী সাধক শেখ আব্দুল হানিফ বলেন," সত‍্যের উপর প্রতিষ্ঠিত হোন, দেশ ও জাতির কল‍্যাণ হবেই হবে।"

আল্লাহই সকল জ্ঞানের অধিপতি। তাঁর ইচ্ছা ব‍্যতীত কেও তাাঁর অসীম জ্ঞানের কিছুই অর্জন করতে পারেন না। আর যাঁরা কল‍্যাণের পথে এক গুণ অগ্রসর হতে থাকেন স্রষ্টা তাঁদের দশগুণ কিম্বা তদাপেক্ষা অধিক সাফল‍্য দান করে থাকেন।" আর "সকল প্রশংসা আল্লাহর। তিনিই অসীম দয়া ও পরম কৃপায় সৃষ্টি জগৎসমূহের সকল সৃষ্টির প্রতিপালন করে থাকেন ।" তাই "সৃষ্টি জগতের সকল বৃক্ষ সমূহকে কলম আর সাগর মহাসাগরের জলকে কালি হিসেবে ব‍্যবহার করেও স্রষ্টার প্রশংসা করা সম্ভব হবেনা।( আলকুরান)" কৃপা করো প্রভু।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.