নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

Ml Ali

Ml Ali › বিস্তারিত পোস্টঃ

জীবন প্রবাহ

১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২২ রাত ৯:৩৬



নিজের কথা- পর্ব ৯৬

"ধূপী যখন সেজেই গেছি, সবার কাপড় কাঁচতে হবে।" সূফী সাধক আনোয়ারুল হক।

জন্ম গ্রহনের মাধ্যমে পৃথিবী ভ্রমণে রুহানি জগতে স্রষ্টার নিকট প্রতিশ্রুতিবদ্ধ সকল মানুষ দেহ ধারণ করে এক এক সময় পৃথিবীতে আবির্ভূত হন। ভ্রমণ শেষে পৃথিবীতে দেহ ত‍্যাগ করে মৃত্যুসুধা পান করতঃ সকলেই নিজ নিজ ভুবনে তিরোধান করে থাকেন। যিনি জন্ম-মৃত‍্যুর উর্ধে স্রষ্টার গুণে গুণান্বিত হন, তিনিই চিরঞ্জীব। তিনি যখন যেথায় ইচ্ছে করেন আবির্ভূত হয়ে থাকেন। প্রসঙ্গত সূফী সাধক আনোয়ারুল হকের বাণী," মৃত্যু বলে কিছু নেই আছে রুপান্তর, অনন্ত অসীম স্রষ্টা আজড়, অমর।"

জন্মমৃত‍্যু হয় দেহের। ব‍্যক্তির দেহ পরিধেয় পোশাক সাদৃশ। তাই আত্মা দেহকোষ বিভাজনের মাধ্যমে নিয়তঃ নিত‍্য নুতন দেহ পোশাক ধারন করে আনন্দের মাঝে থাকে। এপ্রসঙ্গে সূফী সাধক আনোয়ারুল হক বলেন, "
" বার বার জন্ম, বার বার মৃত্যু, এতে আছে আনন্দ যদি বুঝা যায় এর মর্ম"।

এবার জানা যাক ধূপী কে? ধূপী হলেন পোশাক পরিচ্ছদ ময়লামূক্ত করে যিনি পরিস্কার পরিচ্ছন্ন তথা পবিত্র করেন তিনি। আর কাপড় কাচার অর্থ হলো দেহ পোশাক পবিত্র করা। স্রষ্টার প্রদত্ত এই দেহ পোশাক পবিত্র করার ক্ষেত্রে স্রষ্টার প্রদত্ত নিয়মাবলী বা বিধিবিধান অনুসরণ করাই সর্বোত্তম অনূস্মরণীয় পন্থা বা সেবা। পবিত্র জীবন ধারণের জন‍্য শিষ্টাচারের সাথে স্রষ্টার হুকুম তথা নির্দেশনা অনুস্মরণ করাই হলো ব‍্যক্তির শোধনসেবা যার অপর নাম তাবারুক। সে ততটাই সুস্থ্য জীবন যাপন করার সক্ষমতা অর্জন করতে থাকে যে যতটা আন্তরিকতার সাথে শিষ্টাচার বজায় রেখে প্রভুর হুকুম পালন করে। এখন কথা হলো কিভাবে প্রভুর হুকুম বা নির্দেশনা পাওয়া যায়?

নবীজীর হাদীস হিসেবে প্রচারিত আছে," জ্ঞানীরা নবীদের উত্তরাধিকার"। আবার এও জানা যায় যে," ওলীগণ আল্লাহর বন্ধু, যাঁদের আত্মা পবিত্র ও চৈতন‍্যশীল"। তাহলে প্রশ্ন আসে প্রকৃত জ্ঞানী কে? যাঁরা জ্ঞানার্জনের মাধ্যমে আল্লাহর বন্ধুত্ব অর্জন করেন তাঁরা না যাঁরা সৃষ্টির রহস‍্য উদ্ঘাটের উপযোগী বিদ‍্যান তাঁরা।

আলকুরানের বাণীতে পাওয়া যায়," সকল জ্ঞানের অধিপতি একমাত্র আল্লহ্। তিনি যাঁকে ইচ্ছে করেন তাঁকে জ্ঞানের ভুবনে নিয়ে থাকেন "। এছাড়াও আছে, আল্লাহর নিয়ামত প্রাপ্ত সফলকামীদের চলার পথ অনুস্মরণ কারার নির্দেশনা। আবার পাওয়া যায়," রসুলকে অনুসরণ করলেই আল্লাহ্ কে অনুসরণ করা হয়। এসবের বিবেচনাই গুণীজনদের মতে,নবী- রসুল, সালেহীন, সীদ্দিকীন ওলী-আওলিয়াগণ হলেন সফলকামী নিয়ামত প্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত ব‍্যক্তিত্ব।

সেবা গ্রহণ ব‍্যতীত কেউই বাঁচতে পারেনা। শোধনসেবা গ্রহণ ব‍্যতীত সুস্থ্য জীবন যাপন করা যায় না। শোধনসেবা গ্রহণের সক্ষমতা ব‍্যতীত সৎস্বভাব গড়া যায় না। স্রষ্টার আশিষযুক্ত সেবাই হলো শোধনসেবা।

শোধনসেবা গ্রহণ করার ফলে অবিশ্বাসী মুশরিক কিম্বা মুনাফেকরা একদা প্রভূর বিশ্বাসী অনুসারীতে রুপান্তরিত হয়ে থাকেন।

সত‍্যের স্মরণ ও নৈবেদ‍্যের সাথে শোধনসেবা গ্রহনের প্রভাবে ব‍্যক্তির দৃষ্টিশক্তি, ঘ্রাণশক্তি, শ্রবনশক্তি, চিন্তাশক্তি সহ অন‍্যান‍্য সকল শক্তির পরিবর্তন সাধন পুর্বক দুর্বল ব‍্যক্তিকে সর্বশক্তিবান স্রষ্টার গুণে গুণান্বিত করতে থাকে।

প্রাণ জীবনের সঞ্চারণা ঘটায়। সেবা হলো প্রাণের শিষ্টাচার তথা সৃঙ্খলাবদ্ধ কার্যক্রম। পবিত্র পরিশীলিত জীবন গড়ে ওঠে পরিশোধিত প্রাণসেবা থেকে। এ পরিশোধি প্রাণসেবাই হলো শোধনসেবা। যেখানে থাকে সুস্থ‍্য জীবন যাপন উপযোগী স্রষ্টার নির্দেশনা তথা আদেশ- নিষেধ - উপদেশ । তাই স্রষ্টার নির্দেশনা অনুসারী শোধনসেবা গ্রহণ কারীরা স্বীয় প্রতিপালকের পরিচর্যায় থেকে আনন্দলোকে সুস্থ্য ও আনন্দঘণ শান্তির জীবন যাপন করে থাকেন।

কৃপাধর প্রতিপালকের শোধনসেবা ও সেবা গ্রহণের প্রভাবে প্রতিনিয়ত বিশ্বজগতের প্রতিটি সৃষ্টি আজীবন ধরে প্রতিপালিত হয়ে থাকে।

দয়াময় প্রভু জীবজগতের প্রতিপালনের জন‍‍্য সুর্যতাপে সাগরের লোনাপানিকে মিঠাপানিতে বাষ্পাকারে পরিশোধোন পূর্বক উপযুক্ত বায়ু প্রবাহের মাধ্যমে নাতিশীতষ্নু জলবায়ু ও মেঘমালা রুপে প্রকৃতির বুকে ছড়িয়ে দেন। অতপর মেঘমালাকে বৃষ্টি ও ঝর্ণায় পরিণত করেন। খালবিল, নদীনালার মাধ্যমে প্রকৃতিতে পানি সরবরাহ ও নানান খাদ‍্য উৎপাদনের মাধ‍্যমে প্রয়োজনীয় সেবাদান করে জীবজগতের ক্ষুধাতৃষ্ণা মেটানোর উপযোগী পরিবেশ গড়ে তুলেন।

স্রষ্টার ভুমন্ডল, জলমন্ডল, বায়ুমন্ডল, আলোকমন্ডল ও অন‍্যান‍্য সৃষ্টি জগৎ থেকে জানা- অজানা, দেখা-নাদেখা শক্তির উপকরণ খাদ‍্য,পানেয় হিসেবে জাগরণে,শয়নে, স্বপনে দেহ, চিন্তনে- চেতনাতে আমরা জীবন ধারনের উপযোগী যাকিছু গ্রহণ করে থাকি প্রাকৃতিক ভাবে সবই প্রেমময় মহান স্রষ্টার পরম কৃপায় প্রদেয় শোধনসেবা। এছাড়া জীবনের প্রয়োজনীয় চাহিদা পুরনের ক্ষেত্রে বিনিময় যোগ‍্য সুযোগ সুবিধা আরাম আয়োস বৃদ্ধির জন‍্য শ্রম ও সমাজ থেকে যাকিছু গ্রহণ করি এগুলো সবিই হলো সেবা।

প্রভুর স্মরণ ব‍্যতীত ভৃত‍্যের কর্মের বৈধতা নেই। তাই শাস্ত্রমতে কর্মের বৈধতা প্রতিষ্ঠায় সকল কর্মের প্রারাম্ভেই প্রভুকে স্মরণ করা আবশ্যক। আর প্রভুর স্মরণ ব‍্যতীত কেহই কুচিন্তনের আবর্জনামূক্ত পবিত্র জীবন লাভ করতে করতে পারেন না। তাই বলা হয়,পবিত্র জীবন অর্জনের জন‍্য আবর্জনামূক্ত আচরণ পরিবর্তনের ক্ষেত্রে নিত‍্য প্রভুর হুকুম বা নির্দেশনা স্মরণে রেখে শিষ্টাচারের মাধ‍্যমে প্রভুর কৃপা নিবেদনের মাধ‍্যমে সকলের শোধনসেবা গ্রহণ ও ভোগ করা উচিৎ। এপ্রসংঙ্গে সূফী সাধক আনোয়ারুল হক বলেন," আদবে আওলিয়া, বেআদব বেনশীব।"

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.