নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

Ml Ali

Ml Ali › বিস্তারিত পোস্টঃ

অজ্ঞতা

৩০ শে আগস্ট, ২০২৩ দুপুর ২:১৮

নিজের কথা - পর্ব ১০১

অজ্ঞতা এবং জ্ঞান, চেতনা জগতের দুই প্রান্তের চেতনাশক্তি। কোন কর্ম ছাড়াই সবার পক্ষেই অজ্ঞতার স্তরে অবস্থান করা সম্ভব হলেও নির্ভুল কর্ম ছাড়া কারো পক্ষেই জ্ঞানের স্তরে অবস্থান করা সম্ভব না। তাই নির্ভুল কর্মের সোপান বেয়েই প্রত্যেককে চেতনা জগতের জ্ঞানের অবস্থানে যেতে হয়। ফলে যারা কোন বিষয়ে কর্ম করতে জানেনা, এই অজানা স্তর‌ হতেই শুরু হয় সেই বিষয়ে তাদের চেতনা জগতের অজ্ঞতার স্তর। কাজেই অজ্ঞদের নিকট যে বিষয়ের জ্ঞান নেই, সেই বিষয়ে তাদের নির্ভুল কর্ম করা একেবারেই অসম্ভব বিষয়। তাই কারো পক্ষে নির্ভুল কর্ম করা সম্ভব একমাত্র চেতনা জগতের জ্ঞানের স্তরেই । ফলে অজ্ঞতার স্তরে অবস্থান করে কেউই নির্ভুল কর্ম করতে পারেনা। এপ্রসঙ্গে সূফী সাধক আনোয়ারুল হক তাঁর মহান বাণীতে বলেন," অজ্ঞতাই সকল ভুলের মূল।"

কর্মের মাত্রাগত অবস্থা বিবেচনা করে সত্যান্বেষী গবেষকরা সমগ্র চেতনা জগতকে প্রধানতঃ দুভাগে ভাগ করেন। চেতনার সচেতন স্তর। আর চেতনার অসচেতন স্তর। চেতনার অসচেতন স্তরের জগতের একটি স্তর হলো অচেতন স্তর। চেতনা জগতের অচেতন স্তর‌ই থেকেই দেখা যায় ব্যক্তির চেতনার অজ্ঞতার স্তর। এ স্তরের কর্ম সম্পর্কে ব্যক্তির পক্ষে কোন অনুমান কিম্বা ধারনা করার সক্ষমতাও থাকে না। তাই চেতনার এই স্তরে কোন ব্যক্তির পক্ষে নির্ভুল কর্ম করার উপযোগী আত্মবল জাগ্রত হয়না। চেতনার অজ্ঞতার স্তরে ব্যক্তিরা শুণ্যমাত্রার নির্ভুল কর্ম করে থাকে।

অনুমান ও পূর্ব ধারনার উপর নির্ভর করে চেতনা জগতের অসচেতন স্তরের আরও দুটো স্তরে ব্যক্তির অজ্ঞতার প্রভাব প্রতিফলিত হতে দেখা যায়। এই দুটি স্তরের একটি হলো চেতনার প্রাকচেতন স্তর, আর অন্যটি হলো চেতনার অবচেতন স্তর। চেতনার প্রাকচেতন স্তরে ব্যক্তি পূর্ব ধারনার উপর নির্ভর করে কর্ম করে থাকে । আর চেতনার অবচেতন স্তরে ব্যক্তি অভ্যাস‌ নির্ভর কর্ম করে থাকে। চেতনার অসচেতন স্তরে অনুমান কিম্বা ধারনা নির্ভর পূর্বাভিজ্ঞতার কর্ম নির্ভুলভাবে করা গেলেও ভবিষ্যত কিম্বা বর্তমান কেন্দ্রিক জ্ঞাননির্ভর নির্ভুল কর্ম করা যায় কিনা আমার জানা নেই। একমাত্র জ্ঞাননির্ভর কর্মের মাধ্যমেই বর্তমানে নির্ভুলকর্ম‌ করা সম্ভব। তাই জ্ঞানশক্তিই হলো ব্যক্তির নিত্য জাগ্রত আত্মবল এবং অমূল্য সম্পদ। হাক্কানী চিন্তনপীঠে এ জ্ঞানশক্তির অপর নাম হলো কর্ম করার হাতিয়ার। এজন্যই কর্মের জগতে জ্ঞানীর মর্যাদা সবার উপরে।

আমরা বাঁচার জন‍্য প্রত‍্যাহ খাবারে সঞ্চিত বিভিন্ন প্রকার খাদ‍্যপ্রাণ গ্রহণ করে থাকি। অথচ সুস্থ্য জীবন ধারনের জন্য দেহের কি কি খাদ‍্যপ্রাণ আবশ‍্যক তা জানা যেমন জরুরী, তেমনি কোন ধরনের খাবারে কোন কোন প্রকার খাদ‍্যপ্রাণ কতটা থাকে, তা নিরুপণ পূর্বক সেই খাবার পরিমিত পরিমানে গ্রহণ করাও অত‍্যাবশ‍্যক। দেখা যায় অনেক সময় বিভিন্ন কাঁচা ফলমূলে পছন্দমত মিষ্টতা কিম্বা স্বাদ না থাকাই অনেকেই তা খেতে চান না। আবার দেখা যায়, ঐ সকল ফলমূল সময়ের ব‍্যবধানেই যখন সুমিষ্ট ও সুস্বাদু হয় তখন অনেকেই সেগুলো খেতে পছন্দ করেন। পুষ্টিজ্ঞানহীণ অজ্ঞতার কারনে যথাসময়ে পরিমিত পরিমাণ খাদ‍্যপ্রাণ গ্রহণ না করার কারনে অনেকেই সুস্থ্য জীবন যাপন করতে পারেনা। প্রশ্ন আসে তবে কে জীবনের এই অসুস্থতার জন্য দায়ী ?

ধর্মীয় শাস্ত্রীয় নির্দেশনায় জানা যায়, "শান্তিপূর্ণ জীবন যাপনের ক্ষেত্রে জ্ঞান অন্বেষণ করা প্রত‍্যেক নর-নারীর জন্য অত‍্যাবশ‍্যক।" কিন্তু অজ্ঞতার প্রভাবে কেউই সঠিক সময়ে সঠিকভাবে কোন কর্মই সফলভাবে করতে পারেনা। তাই তারা উপযুক্ত জ্ঞানের অভাবে জীবনের অসুস্থতা ও অশান্তির পরিবেশ গড়ে থাকে। ধর্মীয় শাস্ত্রে বলা হয়," জ্ঞানীর নিদ্রা, জাহেলের তথা অজ্ঞের এবাদতের চেয়েও উত্তম।" অর্থাৎ জ্ঞানী ব‍্যতীত জীবনের জন্য কোনই উত্তম কর্ম অজ্ঞরা করতে পারেনা। জীবনের এই অজ্ঞতার প্রভাব থেকে মুক্তিলাভ ও সুস্থ্য জীবন যাপনের জন্য উত্তম কর্ম করতে চাইলে প্রত‍্যেকের কেবলই জ্ঞানীদের নির্দেশনা অনুসরণ পূর্বক জীবন যাপনে সচেষ্ট থাকা অত‍্যাবশ‍্যক। অন‍্যথায় কারো পক্ষেই নিজের আনন্দঘণ সুস্থ্য জীবনের গন্ডিতে প্রবেশ করা সম্ভব না। এ প্রসঙ্গে সাধকের মহান বণী," মানুষ নিজের সাথে নিজেই বেশী প্রতারণা করে।"

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.