নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সুখী হতে অনেক কিছুর দরকার নেই,\nদরকার এমন কিছু মানুষের যারা\nসত্যিই আপনাকে বোঝে তুমি একটা উপহার কিনতে পারবে কিন্তু ভালোবাসাকে নয় ৷ তুমি হাসতে পারবে তাই বলে সুখি পারোনা ৷ তুমি সবার সাথে মিথ্যা বলতে পারবে কিন্ত নিজের সাথে নয় ৷ ভালো থে

আবুু তােহর সোহাগ

আবুু তােহর সোহাগ › বিস্তারিত পোস্টঃ

সচেতন সমাজের কাছে আহ্‌মদীয়া মুসলিম জামাতের সবিনয় নিবেদন AHMADIYYA BANGLA·SUNDAY, MAY 29, 2016

২৯ শে মে, ২০১৬ বিকাল ৫:৪৪


গত বেশ কয়েক বছর ধরে এক শ্রেনীর আলেম-উলামা আমাদেরকে অর্থাৎ আহ্‌মদীয়া জামা'তভূক্ত মুসলমানকে সরকারীভাবে অমুসলমান ঘোষণার দাবী করে যাচ্ছেন। এরা এ দাবী আদায়ের লক্ষ্যে আমাদের মসজিদ আক্রমন করতে, দিনের পর দিন আমাদের সদস্যদের অবরুদ্ধ করে রাখতে এমনকি আমাদের সদস্যদের হত্যা করতেও দ্বিধান্বিত নন। এ প্রেক্ষিতে আমাদের ধর্ম বিশ্বাস উপস্থাপন করার আগে আমরা সচেতন নাগরিকদের কাছে বিশেষভাবে শান্তি প্রিয় মুসলমানদের কাছে কয়েকটি বিষয় ভেবে দেখার জন্য অনুরোধ করছি।
১) কোন দেশের সরকার নাগরিকদের ধর্ম নিরূপন করার অধিকার রাখে কি?
২) ধর্ম গ্রহণ ও বর্জন মানুষের মৌলিক অধিকার। এ মৌলিক অধিকার কুরআন-স্বীকৃত। কুরআনের ভাষায় লাকুম দ্বীনুকুম ওয়ালিয়া দ্বীন। এ দেশের সরকার এ মৌলিক অধিকারে হস্তক্ষেপ করলে অন্যান্য দেশের সরকারও মানুষের ধর্মীয় ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করতে পারবে। আমাদের সরকারের পক্ষে এ ধরণের অন্যায় হস্তক্ষেপের দ্বার উম্মুক্ত করা উচিত হবে কি?
৩) কোন সরকার যদি মুসলমানদের অমুসলমান ঘোষণা দেয়ার অধিকার রাখে তাহলে সেই সরকার নিশ্চিতভাবে অমুসলমানদের মুসলমান ঘোষণা দেয়ারও অধিকার রাখে। বাংলাদেশ সরকার যদি জাতীয় সংসদের এক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এ দেশের হিন্দুদেরকে মুসলমান বলে ঘোষণা দেয় তবে কি তারা সত্যি সত্যিই মুসলমান হয়ে যাবে? এ সরকারী সিদ্ধান্ত কি ধর্ম জগতের একচ্ছত্র মালিক আল্লাহ্‌ পাকের কাছেও গৃহিত হবে? উপরোক্ত নীতিতে ভারতের জাতীয় সংসদ যদি ভারতীয় মুসলমানদের হিন্দু বলে গণ্য করার সিদ্ধান্ত নেয় তাহলে তারা কি সত্যি সত্যিই হিন্দু হয়ে যাবে?
৪) মুসলিম উম্মাহ্‌ কোন ফিরকা বা সম্প্রদায়কে সরকারী ঘোষণার মাধ্যমে অমুসলিম বানানোর অর্থই হলো উক্ত ঘোষণার পূর্ব মূহুর্ত পর্যন্ত তারা মুসলমান ছিলো, তা-না হলে এ ধরণের ঘোষণার কোন অর্থই হয় না। আমাদের প্রশ্ন, বিশ্বাস পরিবর্তন না করেও কেবল একটি 'সরকারী ঘোষণা' কি কারও ধর্ম পরিবর্তন করে দিতে পারে? কুরআন-হাদীস বা অন্যান্য ধর্মের ঐশী গ্রন্থাদিতে এমন কোন নির্দেশ বা নজির আছে কি?
৫) মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) বলেছেন,আমার উম্মত ৭৩ ভাগে বিভক্ত হবে, এদের একটি ছাড়া অবশিষ্ট সবগুলো আগুনের পথের পথিক হবে (তিরমিযী শরিফ, কিতাবুল ঈমান)।
এ হাদীসদ্বারা এ কথাও প্রমানীত হয় নাজাতপ্রাপ্ত ফিরকাটি সংখ্যাগরিষ্ঠ হবে না। ধর্ম নিরূপন সরকারী ক্ষমতার আওতাভূক্ত হয়ে থাকলে সরকারের উচিত হবে একটি নির্দিষ্ট ফিরকাকে 'একমাত্র খাঁটি মুসলিম ফিরকা' হিসাবে ঘোষণা প্রদান করা। তাহলে বাদবাকি ৭২ ফিরকা আপনা-আপনি অ-ইসলামী সাব্যস্ত হয়ে যাবে। কোন দেশের শুভবুদ্ধিসম্পন্ন সরকার একাজ করতে পারে কি?
৬) ৭২ ফিরকার আলেম-উলামা সম্মিলিতভাবে যখন আহ্‌মদীদেরকে 'কাফের' ঘোষণা করেই দিয়েছেন তখন আবার সরকারী ঘোষণার প্রয়োজন কি?
৭) মৌলভী মওলানা সাহেবদের মাঝ থেকে যারা 'আহ্‌মদীয়া ফিরকা'কে অমুসলিম ঘোষণা করার দাবী তুলেছেন তারা নিজেদের 'মুসলমানিত্বের' সার্টিফিকেট কোন সরকারী ঘোষণার মাধ্যমে লাভ করেছেন কি?
৮) আহ্‌মদীগণ পবিত্র কলেমা 'লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মদুর রাসূলুল্লাহ্‌'-তে পূর্ণমাত্রায় বিশ্বাসী। এ ছাড়া নামায, রোযা, হজ্‌ ও যাকাত তারা যথারীতি পালন করে। তা সত্বেও যদি তাদেরকে অমুসলিম ঘোষণা করা হয় তাহলে কুরআন হাদীস প্রদত্ত মুসলমানের সংজ্ঞাকে বদলাতে হবে।সহীহ্‌ হাদীসে লেখা আছেঃ
১. হযরত আনাস বিন মালিক (রা:) বর্ণিত মহানবী (সাঃ) বলেছেন, 'যে ব্যক্তি আমাদের মত নামায পড়ে, আমাদের ক্বিবলামূখী হয়ে নামায পড়ে এবং আমাদের জবাই করা মাংস খায় সে-ই মুসলমান। সে এমন মুসলমান যার দ্বায়িত্ব স্বয়ং আল্লাহ্‌ এবং তাঁর রসূল গ্রহণ করেছেন। সুতরাং তোমরা আল্লাহ্‌র দায়িত্বে হস্তক্ষেপ করো না' ( বোখারী শরিফ, কিতাবুস সালাত)।
২. হযরত হোযয়ফা (রা:) কতৃক বর্ণিত মহানবী (সাঃ) বলেছেনঃ 'আমার জন্য এমন প্রত্যেক ব্যক্তিকে মুসলমানের তালিকাভূক্ত কর যে নিজের মুখে মুসলমান হবার ঘোষণা দেয়....' (বোখারী শরিফ, কিতাবুল জিহাদ) ।
আমাদের প্রশ্ন, কোন মানুষ কি মহানবী (সাঃ) প্রদত্ত মুসলমানের এ সংজ্ঞাকে পরিবর্তন করার ক্ষমতা রাখে?
৯) আল্লাহ্‌ তা'আলা প্রত্যেক ব্যক্তিকে যে কোন ধর্ম গ্রহণ বা বর্জনের স্বাধীনতা দান করেছেন। তাই ধর্ম বিষয়ে বিচার করার অধিকার একমাত্র তিনিই রাখেন। মানুষ যদি এ অধিকার নিজ হাতে তুলে নেয়, আল্লাহ্‌ তা'আলা কি একাজে সন্তষ্ট হবেন?
এসব প্রশ্ন আমরা আপনাদের বিবেকের কাছে রেখে অতি সংক্ষেপে আমাদের ধর্ম বিশ্বাস তুলে ধরছি। আহ্‌মদীয়া মুসলিম জামাতের পবিত্র প্রতিষ্ঠাতা হযরত মির্যা গোলাম আহ্‌মদ কাদিয়ানী (আঃ) বলেন,
'আমরা ঈমান রাখি, খোদা তা'আলা ছাড়া কোন মা'বুদ নাই এবং সৈয়্যদনা হযরত মুহাম্মদ মোস্তফা সাল্লাল্লাহু আলায়হে ওয়া সাল্লাম আল্লাহ্‌র রসূল এবং খাতামুল আম্বিয়া। আমরা ঈমান রাখি ফিরিশতা, হাশর, জান্নাত এবং জাহান্নাম সত্য এবং আমরা আরও ঈমান রাখি, কুরআন শরীফে আল্লাহ্‌ তা'আলা যা বলেছেন এবং আমাদের নবী (সাঃ) থেকে যা বর্ণিত হয়েছে উল্লেখিত বর্ণনানুসারে তা সবই সত্য। আমরা আরও ঈমান রাখি, যে ব্যক্তি এই ইসলামী শরিয়ত থেকে বিন্দুমাত্র বিচ্যুত হয় অথবা যে বিষয়গুলো অবশ্য করণীয় বলে নির্ধারিত তা পরিত্যাগ করে এবং অবৈধ বস্তুকে বৈধ করণের ভিত্তি স্থাপন করে সে ব্যক্তি বেঈমান এবং ইসলাম বিরোধী। আমি আমার জামা'তকে উপদেশ দিচ্ছি তারা যেন বিশুদ্ধ অন্তরে পবিত্র কলেমা 'লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রসূলুল্লাহ্‌' এর প্রতি ঈমান রাখে এবং এবং এই ঈমান নিয়ে মৃত্যূ বরণ করে। (আইয়ামুস সুলেহ্‌, পৃষ্ঠাঃ ৮৬-৮৭)

আমাদের বিরুদ্ধে 'খতমে নবুয়ত' না মানার মিথ্যা অভিযোগ তোলা হচ্ছে। খতমে নবুয়ত সম্বন্ধে আমাদের বক্তব্য খুবই স্পষ্ট। মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) হলেন, 'খাতামান নবীঈন' আরবী ভাষায় 'খাতাম' শব্দের যত অর্থ আছে সব অর্থেই আমরা মহানবী (সাঃ)-কে 'খাতামান নবীঈন' বলে মান্য করি। সর্বশেষ শরীয়ত-বাহক নবী হিসেবেও তিনি 'শেষ নবী' আর নবুয়তের উৎকর্ষের শেষ মার্গ অর্জনকারী হিসেবেও তিনিই 'শেষ নবী'। আমরা 'খাতামান নবীঈন' উপাধীর সেই একই ব্যাখ্যা মান্য করি যা উম্মুল মু'মেনীন হযরত আয়শা সিদ্দিকা (রা:) বর্ণনা করে গেছেন। দেওবন্দি মাদ্রাসা ও মতবাদের প্রতিষ্ঠাতা, উপমহাদেশের প্রখ্যাত আলেম মওলানা মুহাম্মদ আবুল কাসেম নানুতবি সাহেব 'খতমে নবুয়তের' যে বিশ্লেষণ প্রদান করেছেন তার সাথে আমরা সম্পূর্ণ একমত।সূধী পাঠক, উপরোক্ত বক্তব্য থেকে আমাদের ধর্ম বিশ্বাস অত্যন্ত স্পষ্ট হয়ে যায়। আমরা কলেমা, নামায, রোযা, হজ্‌ ও যাকাত তথা ইসলামের সব মৌলিক শিক্ষা মানি এবং পালন করার চেষ্টা করি। কেবল তাই নয়, সারা পৃথিবীতে শুধুমাত্র আমরাই এক খলীফার নেতৃত্বে ইসলাম প্রচারে রত আছি এবং বিপুল সংখ্যায় অমুসলমানকে ইসলামের আলো দেখাচ্ছি। আমাদের সাথে অন্যান্য মুসলমানদের পার্থক্য একটি ভবিষ্যদ্বাণীর পূর্ণতাকে কেন্দ্র করে। মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) বলে গেছেন, শেষ যুগে মুসলমানদেরকে ঐক্যবদ্ধ করার জন্য, সারা পৃথিবীতে ইসলামের চুড়ান্ত বিজয়ের লক্ষ্যে রসূলুল্লাহ্‌র উম্মতে এক মহান নেতা 'ইমাম মাহ্‌দী (আঃ)'-এর আবির্ভাব ঘটবে। আহ্‌মদী মুসলমানেরা বিশ্বাস করে, মহানবী (সাঃ)-এর ভবিষ্যদ্বাণী অনুযায়ী সেই প্রতিশ্রুত ইমাম মাহ্‌দী ইতোমধ্যে আবির্ভূত হয়ে পরলোক বরণ করেছেন। তাঁর পবিত্র নাম হযরত মির্যা গোলাম আহ্‌মদ কাদিয়ানী (আঃ)। আর অন্যান্য মুসলমানরা বিশ্বাস করেন ইমাম মাহ্‌দী (আঃ) আসবেন ঠিকই কিন্তু এখনও আসেন নাই। একদল বলছে হযরত ইমাম মাহ্‌দী (আঃ)-এসে গেছেন আর অন্য দল বলছে এখনও আসেন নাই। বিষয়টি এতটুকুই। তিনি এসেছেন কি আসেন নাই এ প্রশ্নের সমাধান দোয়া, গবেষনা, পড়াশুনা ও নিদর্শন প্রত্যক্ষের মাধ্যমে করা সম্ভব। মিছিল, আন্দোলন, ভাংচুর বা কোন সরকারী ঘোষণা এ প্রশ্নের সমাধান দিতে পারে কি-না তা প্রত্যেক শান্তিপ্রিয় ও ধর্মভীরু মানুষকে ভেবে দেখতে হবে। সংশ্লিষ্ট সবার কাছে বিনীত নিবেদন, বিরুদ্ধবাদীদের উদ্দেশ্যমূলক অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না হয়ে, আমরা কি বিশ্বাস করি আর কেন করি দয়া করে তা আমাদের কাছ থেকে জেনে নিন। মহান আল্লাহ্‌ আমাদের সবাইকে সুমতি দান করুন।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.