![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
যুদ্ধ ও জিহাদ (War and Jihad) – আহমদ তৌফিক চৌধুরী
in Islam
যুদ্ধ ও জিহাদ : War and Jihad
by আহমদ তৌফিক চৌধুরী
হিন্দু ধর্ম গ্রন্থে যুদ্ধ
হিন্দ বা হিন্দু ধর্মের গ্রন্থগুলিতে যুদ্ধের ব্যপক বর্ণনা রয়েছে । ভারতের ধর্মভিত্তিক কাব্য গ্রন্থ মহাভারত এবং রামায়নের মূলবিষয় ইহল যুদ্ধ বিগ্রহ , হানাহানী, মারামারি । মহাভারতের উদ্যোগ পর্ব, ভীষ্ম পর্ব, দ্রোন পর্ব, কর্ণপর্ব, শল্যপর্ব, প্রভৃতিতে যুদ্ধের ধ্বংসলীলার কথা বর্ণিত হয়েছে। ভারতের বুকে অতীতে যে রক্ত গঙ্গা প্রবাহিত হয়েছিল তার বর্ণনা ঐ সব পর্বে বিস্তারিত ভাবে বিবৃত হয়েছে । রামায়নের রাম বাবনের যুদ্ধের কাহিনী কবি বাল্মিকীর বিষয় বস্তু । মহাভারতের একটি অংশের নাম গীতা । গীতা অর্থ গীত বা গান । কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধকে কেন্দ্র করে এই গান রচিত হয়েছিল । কৃষ্ণ (কাল) অর্জুন (সাদা) প্রতীকের মাধ্যমে কথোপকথন এই গানের বিষয়বস্তু । গীতার মতে যুদ্ধক্ষেত্র কুরক্ষেত্র, ধর্মক্ষেত্ররূপে স্বীকৃত । ধর্মক্ষেত্রে কুরুক্ষেত্রে সমবেত যুযুৎসব I অর্জুন শুভ্র বা কোমল অন্তরের মানুষ । তিনিযুদ্ধ, হত্যা রক্তপাত পছন্দ করতেন না । তিনি ছিলেন যুদ্ধবিরোধী শান্তি প্রিয় সাদা অন্তরের মানুষ । অপরদিকে কৃষ্ণরূপে যাকে চিত্রিত করা হয়েছে তিনি ছিলেন যুদ্ধের পক্ষে । হত্যা এবং ধ্বংস তার কাছে অতি সাধারণ বিষয় । অর্জুন যখন বললেন, আমি যুদ্ধ করব না তখন কৃষ্ণ বললেন হে পার্থ কাতর হইওনা । এই পৌরুষ হীনতা তোমাকে শোভা পায়না (২/৩)। প্রকৃত জ্ঞানী ব্যক্তিরা কি মৃত, কি জীবিত কাহারও জন্য শোক করেন না (২/১১) । গতানূগতা সূংশ্চনানু শোচন্তি পন্ডিত । অতএব তুমি যুদ্ধ কর (২/১৮) যুধ্যস্ব ভারত । ধর্ম যুদ্ধ অপেক্ষ ক্ষত্রিয়ের পক্ষে শ্রেয় আর কিছু নাই । ধর্মাদ্ধি যুদ্ধাচ্ছ্রেয়োহনাৎ ক্ষত্রিয়স্য নবিদ্যতে (২/৩১) হত বা প্রাপ্ন্যসি স্বর্গ জিত্বাবা ভোক্ষ্য সেম হীম (২/৩৭)এই যুদ্ধে হত হলে স্বর্গ লাভ আর জয়ী হলে পৃথি বীলাভ । এত সব লোভনীয় বক্তব্যের পরও অর্জুন অস্ত্র ত্যাগ করে বসে আছেন । তিনি কোন মতেই যুদ্ধ করবেন না । অপরদিকে কৃষ্ণ বার বার বলে যাচ্ছেন, নিরাশী নির্মমোভূত্বা যুধ্যস্ব বিগত জ্বর(৩/৩০) কামনা ও মমতা শূণ্য হয়ে শোক ত্যাগ করে তুমি যুদ্ধ কর ।
গীতা কোন আবতীর্ণ গ্রন্থ নয় । কুরুক্ষেত্রে দাঁড়িয়ে অবতার কৃষ্ণ এহেন দীর্ঘ বক্তৃতা প্রদান করেছিলেন বলেও গুণীজন বিশ্বাস করেন না । বঙ্কিম চন্দ্র চট্রোপাধ্যায় বলেছেন , গীতা গ্রন্থখানী ভগবত প্রণীত নহে, অন্য ব্যক্তি ইহার প্রনেতা ( রচনাবলী,৬৯৩পৃঃ ) তিনি আরো বলেছেন, যুদ্ধ ক্ষেত্রে উভয় সেবার সস্মুলে রথ স্থাপিত করিয়া কৃষ্ণার্জুনে যথার্থ এইরূপ কথোপকথন যে হইয়াছিল তাহা বিশেষ সন্দেহ (রচনাবলী ) অনেকের মতে গীতা শঙ্করাচার্য প্রণীত । রচনার পর এটিকে মহাভারতে ঢুকিয়ে দেয়া হয় (ভারতেবিবেকানন্দ, ৪২৪পৃঃ) গীতা মহাভারতের অংশ কিনা সে বিষয়েও পন্ডিতদের সন্দেহ (শ্রী রাধার ক্রম বিকাশ, দর্শনে ও সাহিত্যে ,৫৯পৃঃ) । মহাভারতএক হাতের রচনা নয় । এক সময়ের লেখাও নয় (বঙ্কিমরচনাবলী, ৯০৩পৃঃ)। ভারতে কৃষ্ণ নামে বহু লোকের জন্ম হয়েছে । উইনটারনিস বলেছেন, পান্ডব দিগের সখা ও পরামর্শ দাতা কৃষ্ণ, ভগবত গীতার তত্ত্ব।
সিদ্ধান্তের প্রাচারক কৃষ্ণ, যুবসভার বীর ও অসুর নিসুদন কৃষ্ণ । গোপী দিকের প্রিয়তম ও বল্লভকৃষ্ণ এবং পরিশেষে দেব শ্রেষ্ঠ বিষ্ণুর অবতার কৃষ্ণ যে এক ও অভিন্ন ব্যক্তিহ ইতে পারেন তাহা বিশ্বাস করা কঠিন । ইহা অধিকতর সম্ভব যে , দুই বা কতিপয় কিম্বদন্তী পরষ্পরাগত কৃষ্ণ ছিলেন, তাহারা পরবর্তী কালে একই দেবতারূপে সংমিশ্রিত হইয়াছিল (A Histroy of Indian Literature ,Vol-1 , Page -456) ৬: প্রফুল্ল ঘোষ বলেছেন , মহাভারতের কৃষ্ণ, ছান্দোগ্যো উপনিষদের কৃষ্ণ, শ্রীমত ভগবতের কৃষ্ণ, আর শ্রী রাধার মানভঞ্জনকারী কৃষ্ণ এক কিনা একথা জোর করে বলা শক্ত (প্রাচীন ভারতীয় সভ্যতার ইতিহাস , ১৩পৃঃ) ।
বৌদ্ধ জাতিকায় কৃষ্ণকে মহা অত্যাচারী উশৃঙ্খল রূপে চিত্রিত করা হয়েছে (জাতক, ঈশান চন্দ্র ঘোষ অনুদিত ৪র্থ খন্ড ) । কৃষ্ণ নামে এক অসুরেরও সন্ধান পাওয়া যায় (নীতিমঞ্জুরী, ১৩২ (শ্লাক) । এই সব বর্ণনা থেকে বুঝা যায় যে কৃষ্ণ একজন নয়বহু । অবতার কৃষ্ণ এবং অন্যান্য কৃষ্ণ ভিন্ন ভিন্ন হলেও তাদের জীবন চরিত্র একত্রে মিলিয়ে ফেলা হয়েছে । মহাভারত বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ব্যক্তি রচনা করেছেন । গীতা একটি গান যা পরবর্তী কালে মহাভারতে ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছে । গীতার কৃষ্ণ অবতার কৃষ্ণ নহেন । গীতায় সাদা (অর্জুন) এবং কৃষ্ণ (অন্ধকার, কাল) দুটি প্রতীক ব্যবহার করা হয়েছে । কৃষ্ণ প্রতীক যুদ্ধ, ধ্বংস এবং হত্যার পক্ষে, নির্মম এবং নিষ্ঠুর, ক্ষমাহীন । অপর দিকে সাদা বা সন্ধির প্রতীক (অর্জুন) কোমল হৃদয়ের অধিকারী, দয়ালু, রক্তপাতের বিরোধী । গীতার কৃষ্ণ অবতার কৃষ্ণ নহেন । অবতার পুরুষ কখনও নির্দয় নিষ্ঠুর হতে পারেন না । অবতার পুরুষেরা মানুষের জন্য কল্যাণ এবং প্রেমের বাণী নিয়ে আসেন । তাঁরা ধ্বংস চান না তাঁরা চান শান্তি, প্রেম, প্রীতি ও দয়া । তাঁরা নিজেরা অত্যাচার সহ্য করেন, দেশ ত্যাগ করেন । তাঁরা অস্ত্র নিয়ে অবতীর্ণ হননা । তাঁরা অবতীর্ণ হন প্রেমের বাণী নিয়ে । ঐশী প্রেমের বাঁশী নিয়ে । তাঁরা দুর্বল এবং দুঃখী জনের সখা । গীতার অর্জুনের চরিত্রটি অবতার পুরুষের চরিত্র । আসলে গীতার রচয়িতা দুটি প্রতীক (কাল এবং শুভ্র) ব্যবহার করে যুদ্ধের পক্ষ এবং বিপক্ষের মনোভার দুটি বিবৃত করেছেন । পরবর্তী কালে লোকেরা গীতাকারের কৃষ্ণ কে অবতার কৃষ্ণ বানিয়ে ফেলেছে । মহাভারতের অন্যত্র আছে, ধর্ম ব্যুচ্ছিতি মিচ্ছন্তো যেহ ধর্মস্য প্রবর্তকাঃ। হস্তব্যস্তে দুরাত্মানো দেবৈদৈত্যা ইতল্বনাঃ) অর্থাৎ যারা ধর্মের উচ্ছেদ কামনা করে, অধর্মের প্রবর্তন করে সেই সব দুরাত্মাকে ধ্বংস করা একান্ত কর্তব্য । যেমনভাবে দেবগণ দৈত্যগণকে বধ করেছিলেন (১২/৩৩/৩০)। হিন্দু ধর্ম গ্রন্থে দেব এবং দৈত্যদের যুদ্ধের বিশদ বর্ণনা আছে । দেব পন্থী এবং অসুর পন্থীদের রক্তা রক্তির বিবরণ দেখতে পাওয়া যায় । দেব এবং অসুর দুই ভাই, তারা নিজেদের প্রাধান্য বি¯তার করার জন্য (ধর্মের জন্যনয়) যুদ্ধ করেছিল । ভারত এবং পারশ্যের মধ্যে এই যুদ্ধ সংগঠিত হয়েছিল । ভারতের নেতা দেব এবং পারস্যের নেতা আহুর বা অসুর । কুরুপাশরের যুদ্ধও ধর্ম নিয়ে নয় । রামচন্দ্রের জন্ম ভূমি অযোদ্ধার অর্থ হল, যেখানে কোন যোদ্ধা নেই, যুদ্ধনেই । কিন্তু আজ সেখানে ও বাবরি মসজিদ আর রাম জন্মভূমি নিয়ে রক্তপাত । অহিংসার বাণী বাহক বৌদ্ধদের মূখে আজ বুদ্ধ নয়, যুদ্ধং আর যুদ্ধ । এথেকে মুক্তিলাভ হবে কল্কি বা মৈত্রয়ের দ্বারা । কল্কির অর্থ কলহনাশ কারী আর মৈত্রের অর্থ সকল জীবের মিত্র যিনি । বাহ্মণ অর্থও তাই । জন্মগত বাহ্ম ণনয় কর্মগত বাহ্মণ যারা তারাই প্রকৃত বাহ্মণ । বাহ্মণ শব্দের ব্যাখ্যা হল কুর্যাদন্যন্ন কুর্যাম্মৈত্রো বাহ্মণ উচ্চতে (মনু, ২/৮৭) সকলের মিত্র যিনি তিনিই ব্রাহ্মণ । কল্কির আগমন কালে, যুগান্তে হতভুক চাপি সর্বতঃ প্রজ্জলিষ্যতি (মহাভারত, বনপর্ব, ১৯০/৮২) অর্থাৎ তখন সমগ্র পৃথিবীতে যুদ্ধের আগুন জ্বলে উঠবে । সর্বত্র আগ্নেয়াস্ত্রের দ্বারা য্দ্ধু হবে । আরবী ভাষায়ও যুদ্ধকে নার বা আগুন বলা হয়েছে । ধর্মের প্রকৃত শিক্ষা হল, সর্বথা যত মানানামযুদ্ধমভিকাঙ্খতাম । সাত্বে প্রতিহতে যুদ্ধং প্রসিদ্ধংনা পরাক্রামঃ । অর্থাৎ যুদ্ধের আকাঙ্খা নাকরে শান্তির জন্য সর্বপ্রকার প্রচেষ্টা চালিয়েও যারা ব্যর্থ হয় তাদের জন্য যুদ্ধ করা অবশ্য কর্তব্য (মহাভা, ৫/৭২/৮৯)।শান্তি! শান্তি !শান্তি !
বাইবেলের যুদ্ধ নীতি
তৌরাত, কিতোবিম, নবীঈম এবং ইঞ্জিল পুস্তকের মিলিত নাম বাইবেল । বাইবেল ইহুদী এবং খ্রীষ্টানদের ধর্মপুস্তক । খ্রীষ্টান ধর্ম ইহুদী ধর্মেরই একটি শাখা । যীশু মূলত ইহুদী ছিলেন । তিনি কোন নূতন ধর্ম ব্যবস্থা নিয়ে আবির্ভূত হননি । যীশু বলে, Do not think that I am come to destroy the law , or the prophets, I am not come to destroy, but to fulfil (Matt.5:17). তিনি মূসার বিধান মেনে চলার নির্দেশ দিয়ে গেছেন (মথি, ৮:৪)
বাইবেলের যুদ্ধ নীতি অত্যন্ত কঠোর এবং নিষ্ঠুর । বলাহয়েছে, তোমরা যুদ্ধার্থে নিকটবর্তী হইলে যাজক আসিয়া লোকদের কাছে কথা কহিবে, তাহাদিগকে বলিবে, হে ইস্রায়েল, শুন, তোমাদের শত্রুদের সহিত যুদ্ধ করিতে নিকটে যাইতেছে, তোমাদের হৃদয় দূর্বল না হউক; ভয় করিও না, কম্পমান হইও না, বা উহাদের হইতে মহাভয়ে ভীত হইওনা । কেননা তোমাদের ঈশ্বর সদা প্রভুই (যেহোবা) তোমাদের নিস্তারার্থে তোমাদের পক্ষে তোমাদের শত্রুগনের সহিত যুদ্ধ করিতে তোমাদের সঙ্গে সঙ্গে যাইতেছেন (দ্বিতীয় বিবরণ, ২০:৩,৪) এরপর বলাহয়েছে, পরে তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু (আদুনাই) তাহা তোমার হস্তগত করিলে তুমি তাহার সমস্ত পুরুষকে খড়গ ধারে আঘাত করিবে, কিন্তু স্ত্রীলোক , বালক বালিকা ও পশুগণ প্রভৃতি নগরের সর্বস্ব , সমস্ত লুট দ্রব্য আপনার জন্য লুট স্বরূপ গ্রহন করিবে (১৩,১৪) অন্যত্র আছে, নি:শেষে বিনষ্টকর, তাহার প্রতি দয়া করিওনা(১শামুয়েল, ১৫:৩) । এই আইন এত নির্মম এবং নিষ্ঠুর যেকোন শ্বাস গ্রহণকারীকে জীবিত রাখার হুকুম নেই (দ্বি:বি: ২০:১৬) ১ রাজাবলি, ১৫:২৯ পদে ও একথা বলা হয়েছে । বলা হয়েছে, তাহাদের প্রতি দয়া করিবে না (দ্বিঃবিঃ৭:৩)। ইহুদী ধর্মে সকল বালক এবং বিবাহিতা স্ত্রী লোককে হত্যা করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে । তবে অবিবাহিতাদেরকে নিজেদের শয্যাসঙ্গী হিসাবে জীবিত রাখার অনুমতি দেয়া হয়েছে (গণনা, ৩১:১৭,১৮)
বাইবেলের এই নিষ্ঠুর নিয়ম নীতি আজো ইস্রায়েল জাতি অক্ষরে অক্ষরে পালন করে চলেছে । ইহুদীরা ক্ষমাহীন, নির্দয়, নিষ্ঠুর হয়েছে বাইবেলের এই সব নির্দেশের কারণেই । ইহুদীদের মধ্যেযে যত পাষান সে তত ধার্মিক । তারা দাঁতের পরিবর্তে দাঁত । চোখের পরিবর্তে চোখ গ্রহণ করার পক্ষে । তারা দয়া সন্ধির বিপক্ষে।
খ্রীষ্টানের যদি ও প্রেমের কথা বলে তবে কার্যত তারা ও ইহুদীদের মত । দুনিয়ার যত প্রকার মারনাস্ত্র তার সবগুলি ইইহুদী ও খ্রীষ্টানদের দ্বারা নির্মিত । আনবিক বোমার অভিশাপ ই হুদী খ্রীষ্টানরাই আমদানী করেছে । প্রথম এবং দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধ ইহুদী খ্রীষ্টানদেরই অবদান । হিটলার এবং বুশধর্মত খ্রীষ্টা নই । যীশু বলেছিলেন, Do not think that I came to send peace upon earth. I came not to send peace, but the sword (Matt.. 10:34)।লুকপুস্তকেবলাহয়েছে, Think Ye, that I am come to give peace no cesth ? I tell you , no; but separation (51 c`)। যদি একথা যীশু বলে থাকেন তাহলে খ্রীষ্টানদের মুখে শান্তির কথা শোভা পায়না । আমাদের বিশ্বাস যীশু খ্রীষ্ট এহেন কথা বলতে পারেন না । যীশু প্রেমপ্রীতি , ক্ষমা এবং ভালবাসার অমৃত বাণী নিয়ে ধরাধামে অবতীর্ণ হয়েছিলেন ।তিনি যদিও রহমতুলআলামীন ছিলেন না তবে অবশ্যই রহমতে আলম ছিলেন । প্রত্যেক নবীই তাঁর নিজ যুগের কল্যাণ স্বরূপ ছিলেন । তাঁরা অত্যাচারিত হয়েও কারো উপর অত্যাচার করেননি ।
যীশু গত হয়েছেন আজ থেকে দুই হাজার বৎসর আগে । তিনি যাবার আগে বলে গেছেন যে শেষ যুগে তাঁর আর একটি আবির্ভাব হবে । তখন, You shall hear of wars and rumours of wars …. For nation shall rise against nation and kingdom against kingdom (Matt.24:6,7) ঐ যুগে ভয়ানক যুদ্ধ হবে , জাতির বিরুদ্ধে জাতি এবং রাজ্যের বিরুদ্ধে রাজ্য যুদ্ধে লিপ্ত হবে । তখন মসিহ শান্তির বাণী নিয়ে জগতে আবির্ভূত হবেন । যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটবে । অনেকে মনে করেন, স্বয়ং যীশু আকাশ থেকে অবর্তীণ হবেন । আবার কেউ কেউ দলীল প্রমাণ দিয়ে বলে থাকেন যে, দুই হাজার বৎসর পূর্বের মসিহ নন বরং মসিহের গুনে গুনাম্বিত হয়ে অপর এক ব্যক্তি শেষ যুগের মসিহরূপে আবির্ভূত হবেন । তিনি পৃথিবীতে শান্তিস্থাপন করবেন । তিনি খড়গ দিতে নয় শান্তি দিতে আবির্ভুত হবেন । He will come with peace not with sword. Peace! Peace ! শলোম!!!
ইসলামের যুদ্ধ নীতি
ইসলামের এক অর্থশান্তি ।আল্লাহর একটি সিফত হল, সালাম । ইসলামের আহবান, উদউইলাদারিসসালাম অর্থাৎ শান্তির দিকে আহবান কর । মুসলমানদের মুখে থাকবে আস্সালাম । সবাইকে সে শান্তির আহ্বান জানাবে ।জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে পরিচিত অপরিচিত সবাইকে বলবে , আসসালামুআলাইকুম! ইসলামের কেন্দ্র কাবা গৃহ ওয়া মাসাবাতালিন নাসে আমনা । মানব জাতির জন্য শান্তি কেন্দ্র , দারুল আমান । ওখানে সবাই নিরাপদ।
ইসলাম যুদ্ধকে ঘৃণা করে । মহানবী(সাঃ) দাবী করার পর মক্কাবাসী তাঁর উপর অকথ্য নির্যাতন করেছে । তাঁকে বয়কট করেছে । চাবুক দিয়ে পিটিয়েছে, তাঁর পথে কাঁটা দিয়েছে, তাঁকে পাথর মেরে ক্ষত বিক্ষত করেছে । গলায় ফাঁস লাগিয়ে হত্যা করার চেষ্টা করেছে । তাঁর সঙ্গীদেরকে নির্মম ভাবে হত্যা করেছে । বিপরীত মুখী দুটি উটের পায়ের সঙ্গে সাহাবীর দুটি পা বেঁধে দেহটিকে দুই টুকরা করে ফেলা হয়েছে । এক একটি করে হাত পা কাটা হয়েছে । গর্ভবতী নারীর নিম্নাঙ্গেবর্শার আঘাত করে গর্ভপাত ঘটিয়েছে । কোন কোন সাহাবীকে বুকে পাথর চাপা দিয়ে উত্তপ্তমরু ভূমি তেসারা দিন সূর্যমুখী করে ফেলে রাখা হয়েছে । খাদ্যেরঅ ভাবে সাহাবীরা ঘাস খেয়ে জীবন ধারণ করেছেন । মাতৃভূমি থেকে ধর্মের জন্য সর্বহারা রূপেবহিস্কারকরাহয়েছে। তবু ও মহানবী(সাঃ) যুদ্ধ করেননি । কাউকে যুদ্ধের অনুমতি দেননি। সাহাবীরা সহ্য করতে না পেরে লড়ে মরার জন্য অনুমতি চেয়েছেন । কিন্তু দয়ার সাগর নবীজি (সাঃ) বলেছেন, ইন্নি উমিরতু বিল আফু ফালা তুকাতেলু । না আমাকে এদেরকে ক্ষমা করতে বলা হয়েছে । যুদ্ধের আদেশ দেয়া হয়নি (নেসায়ী) শেষ পর্যন্ত মক্কায় থাকতে না পেরে নবী করিম(সাঃ) সব কিছু ফেলে খালি হাতে মদিনার হিজরত করেন । কিন্তু তাতে ও যুদ্ধকে এড়াতে পারলেন না । মক্কাবাসীরা দল বল নিয়ে মদিনার দিকে অগ্রসর হল । তারা মদিনা আক্রমন করে মুসলমান নারী পুরুষকে নিশ্চিহ্ন করে দেবে । নব ধর্ম ইসলামকে পৃথিবীর বুক থেকে উচ্ছেদ করবে । তখন আল্লাতালা মোহাম্মদ (সাঃ) কে ওহী করলেন, উজিনাল্লাজিনা ইউকাতালুনা বি আন্নাহুম জুলিমু ওয়া ইন্নাল্লাহা আলা নাসরিহিম লাকাদির (সূরাআল-হাজ্ব) অর্থাৎ- এখন ঐ সব মজলু মমুসলমাদেরকে যাদের বিরুদ্ধে শত্রæ রা অহেতুক যুদ্ধ করতে এসেছে অনুমতি দেয়া গেল । তারা যেন দুশমনের মোকাবেলা করে । আল্লাতালা তাদেরকে সাহায্য করবেন । যুদ্ধকে এড়িয়ে যারা হিজরত করে চলে এসেছিলেন তাদেরকে নিশ্চিহ্ন করে ফেলার জন্য যেসব কাফের সৈন্য কয়েক শত মাইল এ গিয়ে এসে মদিনা আক্রমন করতে অগ্রসর হল । তখন আল্লার নির্দেশে মহানবী (সাঃ) তিনশত তের জন মুসলমান নিয়ে (তাদের মধ্যে বৃদ্ধ এবং নাবালক ও ছিল ) অস্ত্রহীন বস্ত্রহীন অবস্থান বদর পর্যন্ত এগিয়ে সেপ্রতিরোধকরলেন।আল্লারদরবারেমহানবী (সাঃ) দোয়াকরলেন, হে আল্লাহ এই মুষ্টিমেয় মুসলমানকে ধ্বংস হতে দিওনা তুমি রক্ষা কর । এরা ধ্বংস হয়ে গেলে তোমার নাম নেবার জন্য আর কেউ অবশিষ্ট থাকবেনা । আল্লাহ তালার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী এই দূর্বল মুসলিম বাহিনীকে রক্ষা করেছিলেন । বড় বড় কুরেশনেতা এই যুদ্ধে নিহত হয়েছিলেন । মহানবী (সাঃ) স্বয়ং শক্র সৈন্যদের লাশ দাঁড়িয়ে থেকে কবরস্থ করেছিলেন । কোন লাশের অশ্রদ্ধাবা অঙ্গচ্ছেদও করতে দেননি । বন্দিদের বাঁধন ঠিলে করার জন্য নির্দেশ দিয়েছিলেন । ইসলাম বলে কাতেলু ফি সাবি লিল্লাহিললাজিনা ইউকাতে লুনাকুম ওলা তাতাদু ইন্নাল্লাহ লাইউহেববুল মুতাদিন (সুরাবাকারা) অর্থাৎ-খোদার রাস্তায় তাদের বিরুদ্ধে লড়াই কর যারা তোমাদে রবিরুদ্ধে যুদ্ধ করে, আর কোন প্রকার বাড়া বাড়ি কর না কেন না আল্লাহ তালা সীমালংঘনকারীদের পছন্দ করেন না । শর্ত সাপেক্ষ একান্ত বাধ্য হয়ে যুদ্ধ করার তো অনুমতি আছে, তবে তা সীমালঙ্ঘনকরার অনুমতি নেই । যারা যুদ্ধে অংশ গ্রহন করেনি তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করানি ষেধ । ইসলাম যুদ্ধ শুধু আত্মরক্ষার্থে আক্রান্ত হলে জান-মাল এবং ইজ্জত রক্ষার্থে । যারা যুদ্ধ করেনা, অস্ত্র ধারণ করে না তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ নিষেধ । ওয়াইন জানাহু লিস সালমে কাজ না লাহুম ওয়া তাওক্কাল আলাল্লাহ (সুরাআরফাল) অর্থাৎ- যদি শত্রু পক্ষ সন্ধি করতে চায় তাহলে তোমরা ও সন্ধিকর এবং আল্লার উপর ভরসা কর । যুদ্ধে বিজয়ীহ ওয়া বড় কথা নয়, সন্ধিই উত্তম ।জয় নিশ্চিত জেনেও সন্ধি করবে যদি শত্রু পক্ষ সন্ধির জন্য আবেদন জানায় । ফাইম্মা মান্নান বাদু ওয়া ইম্মা ফিদায়ান হাত্তা তাজ আল হারবু আওজাহাদা (সুরা মোহাম্মদ) অর্থাৎ যুদ্ধে যারা বন্দি হবে তাদেরকে কৃপা করে ছেড়ে দাও । অথবা সাধ্য মোতাবেক ফিদিয়া বা বিনিময় গ্রহণ করে তাদের কে মুক্ত করে দাও । যাতে যুদ্ধ শেষ হয়ে যায় । যেসব যুদ্ধ বন্দি অর্থ দিতে পারেনা তারা অন্য কোন কাজের মাধ্যমে মুক্তি পণ আদায় করতে পারবে । ইসলাম সন্ধিকে পছন্দ করে আসসুলহে খায়রুন । হুদায়বিয়ার সন্ধি ক্ষমতা থাকা সত্তে মহানবী (সাঃ) অসম সর্তে শান্তির জন্য সম্পাদন করেছিলেন । তিনি নিজহাতে কুরেশদের কাছে আপত্তি কর বাক্য ”রসুলআল্লাহ”কেটে দিয়ে ছিলেন । মহানবী (সাঃ) কখনও কলম ব্যবহার করেননি । এই এক বার জীবনে কলম ধরেছিলেন শান্তির জন্য । শান্তির জন্য রসুল আল্লাহ শব্দটি পর্যন্ত কেটে দিয়েছিলেন । ফল হয়েছে এই, শত যুদ্ধেও যে বিজয় আশা করা যায়না এই সন্ধিতে বিনা যুদ্ধে সেই বিজয় লাভ সম্ভব হল । মক্কা বিজয় তরাম্বিত হল বিনা রক্তপাতে । মক্কা বিজয়ের একটি ঝলকঃদশ সহস্র সাহাবী নিয়ে মহানবী বিশ্ব নবী মক্কায় প্রবেশ করতে যাচ্ছেন । সাদ বিন ওবায়দা (রাঃ) মুসলিম বাহিনীর অধিনায়ক, আট বৎসর আগে অত্যাচার অবিচারে অতিষ্ঠ হয়ে নির্যাতন নিপীড়নে টিকতে না পেরে মুসলমানরা মক্কা ত্যাগ করেছিলেন । আজ তাঁরা বিজয়ীর বেশে জন্মভূমিতে ফিরে এসেছেন । আনন্দে আর আবেগে আজ তাঁরা আল্লাহর দরবারে শ্রদ্ধায় নত, হৃদয়ের সমস্ত আবেগ দিয়ে তাঁরা সেজদা প্রনত হচ্ছেন বিশ্ব প্রভুর দরবারে । অত্যাচারী মক্কাবাসীরা নিজেদের অপকর্ম স্মরণ করে থর থর করে কাঁপছে । তাদের সকল আশা ভরসা ভেঁঙ্গে চুর্ণ বিচুর্ণ হয়েগেছে । পলায়নের কোন স্থান নেই । পাথরের দেব দেবীগুলির মত আজ তারা নিশ্চল । সেনাপতি সাদ(রাঃ) আনন্দ গান ধরেছেন-
আল-ইয়াওমু ইয়াওমু মুলহিমাতিন ,আল ইয়াওমা তাছতাহিল্লুল কাবাতি।
অর্থাৎ- আজ প্রতিশোধ গ্রহণের দিন, আজ কাবা প্রাঙ্গনে ও যুদ্ধ বৈধ । দয়ার সাগর রহমতুল্লিল আলামিন একথা শুনা মাত্র বল্লেননা, না, বরং বল, আলইয়াওমু ইয়াওমু মার হামাতিন । আজ ক্ষমা প্রদর্শনের দিন । যারা মুসলমাদেরকে হত্যা করেছিল তাদের নেতা ইয়াকরামাবিন আবু জাহ ল ,হামজার (রাঃ)হত্যাকারী ওয়াশী, হামজার (রাঃ) কলিজা চর্বনকারী হেন্দা , মহানবীর (সাঃ) কন্যার ঘাতক হাব্বার, বিলালের (রাঃ) উপর অকথ্য অত্যাচারকারীরা রয়েছে আজ মক্কায় । নবী করিম (সাঃ) ঘোষণা করলেন, লা তাছরীব আলাইকুমুল ইয়াওমা । আজকো প্রতিশোধ নয় । শুধু ক্ষমা আর ক্ষমা । এক বৃদ্ধা থর থর করে কাঁপছে । নুর নবী (সাঃ) তাকে বল্লেন, কাঁপছ কেন মা ? আমি তো তোমারই মত এক কুরেশ রমনীর সস্তান । আমাকে ভয় করার কি আছে? কি অপূর্ব দৃশ্য! এর নজির কি আর কোথাও আছে? প্রায় দশ বৎসর পূর্বের এক ঘটনা ।এক বুড়ি তার পুটুলী নিয়ে মক্কা থেকে অন্যত্র চলে যাচ্ছে । মহানবীর (সI সঙ্গে রাস্তায় দেখা । নবীজি বল্লেন, কোথায় যাচ্ছ? বুড়ি বল্ল, বাবা মক্কায় মোহাম্মদ নামক এক ব্যক্তি মানুষের ইমান নষ্ট করে দিচ্ছে । আমি এই ভয়ে ইমান নিয়ে মক্কা থেকে পালিয়ে যাচ্ছি । বুড়ি নবীজি কে চিনতে পারেনি । নবী করীম (সাঃ) বললেন,আমি তোমার পুটুলীটি তোমার গন্তব্য স্থানে পৌঁছে দিচ্ছি । গন্তব্যস্থানে পৌঁছে নবী আকরাম (সাঃ) যখন ফিরে আসছেন তখন ঐ বৃদ্ধা বল্ল, বাবা তুমি খুব ভাল লোক, সাবধান ! মোহাম্মদের ধারে কাছে ও যাবেনা । মহানবী (সাঃ)বল্লেন, আমি সেই মোহাম্মদ ! আরো আগের কথা, এক বৃদ্ধা মহা নবীর (সাঃ) রাস্তায় কাঁটা দিত, এক বার দেখা গেল রাস্তায় কাঁটা নেই । মহানবী (সাঃ) বুড়ির কথা জিজ্ঞেস করলেন । কে এক জন বল্ল যে, বুড়ি অসুস্থ, তাই কাঁটা দিতে পারছে না । নবীজি (সাঃ) তাকে দেখতে গেলেন । বুড়ি কে সহানুভূতি জানালেন । একটি লাশ যাচ্ছিল রাস্তা দিয়ে । মহানবী (সাঃ) সম্মনার্থে উঠে দাঁড়ালেন । সাহাবীরা বল্লেন, এটি এক টি ইহুদির লাশ । মহানবী (সাঃ) বল্লেন, এর মধ্যে কি কোন কালে আত্মা ছিলনা। এক বার এক শত্রু নবী করীমকে (সাঃ) একাকী শায়িত অবস্থায় পেয়ে তরবারী উঠিয়ে তাঁকে হত্যা করতে চাইল এবং বল্ল, এখন কে তোমাকে রক্ষা করবে? নবীজি (সাঃ) বল্লেন, আল্লাহ! এই উচ্চারণের মধ্যে এত প্রভাব ছিল যে তরবারীটি তার হাত থেকে পড়ে গেল । নবী সম্রাট (সাঃ) তরবারীটি হাতে নিয়ে বল্লেন, এখন কে তোমাকে বাঁচাবে ? লোকটি বলল, তুমি, তুমিই আমাকে প্রাণ ভিক্ষা দিতে পার । নবী করীম (সাঃ) বলেলন , না তোমাকে ও সেই আল্লাহ রক্ষা করবেন যে আল্লাহ আমাকে রক্ষা করেছেন । এই ছিল মহানবীর (সাঃ) আদর্শ । জনৈক খ্রীষ্টান লেখক বলেছেন , মুসলমানরা তাদের বিজয় অভিযানে সহনশীলতার নমুনা দেখিয়ে অনেক খ্রীষ্টান জাতিকেই লজ্জিত করে দিয়েছে – (The struggle for power in Muslim Asia,p-48)
মহানবী বলেছেন ,তোমরা শক্রর মোকাবেলা করার ইচ্ছা পোষন করনা, আল্লাহর কাছে শান্তি কামনা কর । কিন্তু অনিচ্ছা সত্তেও আত্মরক্ষার জন্য যদি যুদ্ধ করতেই হয় তাহলে বীরের মত মোকাবেলা কর (বোখারী মুসলিম-আবুদাউদ) বদরের যুদ্ধের পর মহানবী (সাঃ) ঠিক করলেন যে, এই মুষ্টি ময় মুসলমানদের কে নিয়ে মদিনার বাইরে গিয়ে আর যুদ্ধ করবেন না । মদিনায় থেকে শুধু মদিনাকেই রক্ষা করবেন । কিন্তু কতিপয় উৎসাহী
সাহাবীর জন্য নবী করীম (সাঃ) কে মদিনার বাইরে ও হুদের পাদদেশে যেতে হল শত্রুর মোকাবেলা করার জন্য । খন্দকের যুদ্ধ প্রকৃত পক্ষে কোন যুদ্ধ ছিলনা । এটি ছিল প্রতিরোধ মাত্র । পরবর্তী কালে মদিনার বাইরে গিয়ে বিভিন্ন কাবিলার মোকাবেলা করতে হয়েছে বাধ্য হয়ে । ঐ সব কাবিলা মুসলমানদের বিরুদ্ধে আক্রমনের পরিকল্পনা করেছিল । তাই অঙ্কুরেই সেই সব চক্রান্তের মোকাবেলা করতে হয়েছিল । যুদ্ধে যেসব বন্দি হস্তগত হয়েছিল তাদেরকে মুক্তি দান করা অত্যান্ত পূণ্য কর্ম বলে নবীজি (সাঃ) ঘোষনা করবেন । ফলে হাজার হাজার যুদ্ধ বন্দি বিনিময় মূল্য ছাড়াই মুক্তি পেল । এখানে উল্লেখ্য যে, যেসব মুসলমান কাফেরদের হাতে বন্দি হয়েছেন তাদের মু্ক্তর জন্য এহেন কোন ব্যবস্থা ছিলনা ।
যুদ্ধ ও জেহাদ
যুদ্ধ কে আরবীতে বলে কিতাল । যুদ্ধের নাম জেহাদ নয় । জেহাদ জাহদ শব্দ থেকে । এর অর্থ পরিপূর্ণ রূপে চেষ্টা প্রচেষ্টা করা (তাজুল উরুস ) নিজের প্রবৃত্তির বিরুদ্ধে সংগ্রাম করা সব চাইতে বড় জেহাদ, জেহাদে আকবর (মেশকাত) মহানবী (সাঃ) বলেছেন নিজেদে ন নফসের বিরুদ্ধে যে জেহাদ করে সেই বড় পাহলোয়ান । শয়তান নফসে আম্মারা বা কুকর্মের বিরুদ্ধে লড়াই করা হল জেহাদে আকরব । ওয়া জাহেদ হুমবিহি জেহাদা (সুরা-ফুরকান) অর্থাৎ – কোরআন দিয়ে যুক্তি প্রমান দিয়ে জেহাদ করা কেবলে জেহাদে কবীর । খোদার নির্দেশিত পথে সর্ব প্রকার চেষ্টা প্রচেষ্টার নাম ইহল, জেহাদ ফি - সাবিলিল্লাহ। কোরআন বলে , ওয়াল্লাজিনা জাহাদু ফিনালানাহ দিয়ান্নাহুম ছুবুলানা । কোরআনে আছে, তুজাহেদুনা ফি সাবিলিল্লাহি বি আমওয়ালিকুম ওয়া আনফুসিকুম । অর্থাৎ আল্লাহর পথে সম্পদ এবং জীবন দ্বারা সংগ্রাম করা কেউ ৎকৃষ্ট জেহাদ বলা হয়েছে । প্রথমেই বলা হয়েছে মাল বা সম্পদ দিয়ে জেহাদ করা । তারপর জীবন দিয়ে জেহাদ করার কথা বলা হয়েছে । আল্লাহর রাস্তয় ধনের জেহাদ হল ইসলাম প্রচারে চাঁদা দেয়া । ধন সম্পদ ব্যয় করে জনহিতকর কাজ করাও জেহাদ । মানুষের কল্যাণে মানুষের সাহায্যে এগিয়ে আসার নামও জেহাদ । জীবন বা নফস দিয়ে জেহাদ করার অর্থ হল সমস্ত শক্তি যার যা আছে তা দিয়ে সংগ্রাম করা । মৌখক প্রচার লেখনির মাধ্যমে প্রচার গবেষণা সাধনা করাও নফসের জেহাদ, আল্লাহর জন্য জীবন দান করার নাম ও জেহাদ । ইসলাম ধর্মের জন্য বাধ্য হয়ে আত্মরক্ষা মূলক যুদ্ধকেও একটি ক্ষুদ্র জেহাদ বলেছে । তবুক যুদ্ধ থেকে ফেরার পথে নবী করীম (সাঃ) বলেছিলেন, ওয়াজায়াল নাল জেহাদীল আসগারে ইলাল জেহাদিল আকবারে (কাশশাফ) অর্থাৎ আমরা এখন ছোট জেহাদ (আসগার) থেকে বড় জেহাদের (আকবর) দিকে যাচ্ছি । ছোট জেহাদ হল ধর্ম যুদ্ধ আর বড় জেহাদ হল আত্মশুদ্ধির জেহাদ । দুঃখের বিষয় আজ কাল মুসলমানেরা মহানবীর (সাঃ) নির্দেশকে উল্টিয়ে দিয়ে যুদ্ধের জেহাদকে জেহাদে আকবর এবং নফসের জেহাদকে জেহাদে আ
©somewhere in net ltd.