![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
শোয়াইব জিবরান
শ্যামদেশে গিয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি একচেঞ্জ প্রোগ্রামে। আমরা ৮ জনের গ্রুপ। আমাদের থাকার জায়গা হলো ব্যাংকক শহরতলীর নোনতাবুড়ি নামক স্থানে সুকতাই ওপেন ইউনিভার্সিটির গেস্ট হাউজে। আমাদের দেখভালের দায়িত্ব পড়েছে সে বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের কর্মকর্তা অন্তিপ নামক এক অসামান্য সুন্দরী তরুণীর ঘাড়ে। অন্তিপ যেমন সুন্দরী তেমনি মিষ্টি তার ব্যবহার। সবাই মুগ্ধ। তাঁর সমস্যা একটিই সে গোলমেলে ইংরেজি বলে। যেমন সে একদিন বলল, অল্ডসিটি দেখতে যাবো কিনা? আমারা অযোধ্যা নামক সে শহরে গিয়ে দেখি সে শহরের বয়স কমসে কম তিন হাজার বৎসর হবে। ওটা আসলে অল্ড নয় এনসিয়েন্ট সিটি। তাঁর ইংরেজি নিয়ে দলে সমস্যা হচ্ছে। এক সময় সে বুঝতে পারল তার ইংরেজি আমাদের দলের একমাত্র আমিই ভাল বুঝতে পারি। এর কারণ হতে পারে আমার নিজেরও গোলমেলে ইংরেজি। ফলে সে সকল কর্মকাণ্ড আমার সাথে যোগাযোগ করতে লাগলো। আমরা দুজনে মিলে গোলমেলে ইংরেজি চালিয়ে যেতে থাকলাম।
একরাতে সে আমায় তাঁর বাসায় দাওয়াত দিলো। একাকী সন্ধ্যায় দুরু দুরু বক্ষে তার বাসায় পা দিলাম। গিয়ে দেখি রূপকথার গল্পের ছবির মতো ছোট্ট ডুপ্লেক্স একটি বাড়ি। কবুতরের গায়ের রঙ নিয়ে বুক ফুলিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
বাসায় শুধু সে আর তার বাবা থাকেন। মা নেই। বাবা থ্রি কোয়াটার প্যান্ট আর স্যান্ডো গেঞ্জি পরে আমাকে আমাকে অভ্যর্থনা জানালেন। সপ্রতিভ মানুষ। মুগ্ধ হলাম। বাবা বললেন, সাধারণত তিনি রান্না করেন কিন্তু আজ অন্তিপ নিজেই রান্না করেছে আমাদের জন্য। অনেক পদের মধ্যে পিঠার মধ্যে সস দেয়া সামুদ্রিক চিংড়ি মাছের পদটি বিশেষভাবে ভাল লাগল। রাতে সে আমাকে নিজেই ড্রাইভ করে ডর্মে পৌঁছে দিল। যে কতদিন ছিলাম সে আমার পাশে পাশেই থাকল।
একদিন বিদায়ের মুহূর্ত এলো। এয়ারপোর্টে সে এসেছে। আমাকে আস্তে করে একটি কাচের যুগল মুর্তি আমাকে উপহার দিল। আমি বললাম, বিদায় অন্তিপ। অন্তিপ বলল, বিদায় বলো না শোয়াইব। আমাদের নিশ্চয় আবার দেখা হবে।
আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন একজন সহকর্মী। তিনি ইয়ার্কি মেরে বললেন, শোয়াইব ভাই কিন্তু বিবাহিত। অন্তিপ প্রথমে যেন কিছু বুঝতে পারল না। তারপর হঠাৎ আমার উপর হামলে পড়ল। হাতে যুগর মুর্তিটি নিয়ে ছুড়ে মারল ফ্লোরে। আর বিলাপের সুরে বলতে বিড় বিড় করে বলতে লাগলো আগে কেন বলনি আগে কেন বলনি।
ঘটনার আকস্কিকতার হতবিহবল হয়ে পড়লাম। শুধু বললাম, এটা নিয়ে তো আমাদের মধ্যে কখনও কথা হয়নি। কথা হয়নি। কথা হওয়ার দরকার হয়নি। অন্তিপ ততই বিড় বিড় করতে লাগল।
দেশে ফিরে অন্তিপকে তার দেশে আতিথিয়েতার জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে মেইল দিলাম। না সে কোন উত্তরই দিল না। এক সময় আমরা যোগাযোগ বিছিন্ন হয়ে গেলাম।
আজ অনেকগুলো দিন পরে ফেসবুকে যখন বসি দেখি লেখা ফাইন্ড ইয়োর ফ্রেন্ডস। আমি সেখানে অন্তিপ নামটি লিখে সার্চ দিই। না এ নামে অন্তিপ ফেসবুকে নেই। তবু বার বার দিই। কেন দিই নিজেই জানি না।
২| ০৬ ই আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ২:১০
ডাসট ইন দা উইনড বলেছেন: মোঃ সাইফুল ইসলাম সজীব বলেছেন: অদ্ভুদ লাগলো। সত্যি খুব ভালো লাগলো। মনকে ছুঁয়ে গেল।
লেখাটা খুবই ছোট কিন্তু এর স্পর্শ যেন অতলের।
স হ ম ত...........................
৩| ০৬ ই আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ২:৫০
রেজওয়ান তানিম বলেছেন: ভাল লাগল জিবরান ভাই
প্রত্যেকেরই বোধহয় কিছু কিছু অন্তিপ থাকে...
স্মৃতিবেদনার সন্ধ্যা আসে, নিঝুম মৌনতায়
৪| ০৬ ই আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ২:৫৬
ইরফান আহমেদ বর্ষণ বলেছেন: চমৎকার বর্ণনা করেছেন!!!!
©somewhere in net ltd.
১|
০৬ ই আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ১:২৭
মোঃ সাইফুল ইসলাম সজীব বলেছেন: অদ্ভুদ লাগলো। সত্যি খুব ভালো লাগলো। মনকে ছুঁয়ে গেল।
লেখাটা খুবই ছোট কিন্তু এর স্পর্শ যেন অতলের।
অনেক অনেক ভালো লাগা জানবেন। ভালো থাকবেন।