নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
নিত্যকার প্রয়োজনে নিয়ত অভিযোজনের ক্রমাগত নিষ্পেষণ থেকে পরিত্রাণের ফুরসত খুঁজে ফেরা এক পরিশ্রান্ত প্রাণ।
সকাল সাতটা তেরো।
সময় এখনো ভোরেই পড়ে আছে,আকাশ কিছুটা মেঘলা।
প্ল্যাটফর্ম থেকে ছুটে গিয়ে একটা ছাগল পরিত্যক্ত লাইনে বাঁধা আরেকটা ছাগল, যেটি কিনা প্রচন্ড শক্তিতে তার দড়ি ছিঁড়ে ছুটতে চাইছে,তাকে বাঁচাতে গেলো। শিং দিয়ে গুতিয়ে দড়ি-খুঁটি আর নয়ত রেলটাই পারলে উপড়ে ফেলে, বাঁচাতে তাকে হবেই। ট্রেন অবশ্য ও লাইনে যায়না।
দ্রুতগামী প্রকান্ড এক ট্রেন মফস্বলের স্টেশনটি থ্রু পাসে অতিক্রম করা শুরু করেছে। স্টেশনের চা দোকানী,হকার,অফিশিয়াল সবাই বেশ উদ্ভ্রান্ত। এত বিকট হর্ন আর গতির ট্রেন হঠাৎ কোথা থেকে?
রেলট্র্যাকের একদম পাশ ঘেঁষে এক বৃদ্ধা,স্বভাবতই যার বয়সের ভারে শ্রবণশক্তি হ্রাস পেয়েছে,কিন্তু তাই বলে এত বিকট আওয়াজ ও শুনতে পাচ্ছেনা;নির্বিকার লাঠি ধরে হেঁটে যাচ্ছে।
হঠাৎ সম্বিৎ ফিরে পেয়ে শেষমুহুর্তে ডানে ঝাঁপ দিয়ে বোনাস লাইফ শুরু করলেন। ধাতস্থ হয়েই মনে পড়লো,তার সাথেই এভাবে লাইন ধরে তার প্রিয় কয়েকজন বৃদ্ধা হেঁটে আসছিলেন। ফিরে তাকাতেই তিনি দেখলেন বেশ কয়েকটি খন্ডিত দেহ, ভাঙ্গা লাঠি আর টুকরো চশমা পড়ে আছে।নতুন জীবন পাবার আনন্দ আর এতগুলো প্রিয় সঙ্গী হারানোর হাহাকার এই দুইয়ের দ্বন্দ্ব বৃদ্ধার বয়স্ক নিউরনে ঝড় তুললো। মৃতদের নিয়ে ব্যাস্ততা বাড়ছে।ছবি,লাইভ খবর,নিরাপত্তা বাহিনী,উৎসুক জনতা....।
মৃতরা এত মনোযোগ পাচ্ছে! ওল্ডহোমের স্টাফরাও যত্ন নিতো,সেটি পয়সা প্রাপ্তি আর প্রফেশনের জন্যই। কিন্তু আজকের ভীড়ে তো কৃত্তিমতা নাই! বৃদ্ধার শূন্যতা তীব্র হচ্ছে। তার প্রতি তার রক্তরাই নির্মম ছিলো,আর এখানে অচেনা অজানারা সহায়তায়-সমবেদনায় ভীড় বাড়িয়েছে! বেশ কিছু সময় আকাশে মুখ তুলে বৃদ্ধা কিছু একটা ভাবলেন। এরপর রেললাইন ধরে হাঁটতে শুরু করলেন। অনেক দূর যেখানে মানুষের কোলাহল নেই,দুপাশে পাকা ধানক্ষেত,দু-একটা দোয়েল মাঝেমাঝে ডেকে নিরবতা ভাঙ্গতে চাইছে; সেখানে গিয়ে থামলেন। রেললাইন টা আঁচলে মুছে আড়াআড়ি শুয়ে পড়লেন। ঘন্টা পড়েছে অনেক আগে, কিছুক্ষণের মধ্যেই আরেকটি এক্সপ্রেস ট্রেন এই লাইন অতিক্রম করবে...
©somewhere in net ltd.
১| ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৩ দুপুর ১:১০
রাজীব নুর বলেছেন: আসলে আপনি কি বলতে চাচ্ছেন?