নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ভাবছি অনেকেই তো অনেক কিছু লিখছেন, এমন কি আমি নিজেও।। শুধু শুধু তা নিয়ে হ্য় বিতর্ক। এমনকি ব্যক্তগত ব্যাপারেও লিখতে যেয়ে লম্পট,অবৈধ মানুয আখ্যা পেতে হয়েছে। তাতেও আমার আপত্তি ছিল না। কিন্তু যখন কেউ শালীনতার সীমা ছাড়িয়ে যায়,তখন আর ভাল লাগে না।। তাই ভাবলাম কুয়েতের অভিজ্ঞতার কথাই লিখি না কেন। বসে পড়লাম।
দেশে খেয়ে না খেয়ে ভালই দিন কেটে যাচ্ছিলো। স্বপ্নেও প্রবাসে আসার কথা ভাবি নি। তবে পাসপোর্টটা সেই ’৭৯ থেকেই করা ছিল।। ঐসময় ভারত,ব্যাংকক গিয়েছি। ভারতে যে কতবার তা বলতে পারবো না। যাই হোক তখন কুয়েত প্রবাসী একবন্ধু দেশে যেয়ে বললো তোর পাসপোর্টের একটা কপি আমাকে দে,দেখি চেষ্টা করে। কি খেয়ালে দিলাম। তারপর ৩/৪মাস পর হঠাৎ দেখি (আমার নির্দিষ্ট ঠিকানা না থাকায়) এক আত্মীয়ের ঠিকানায় আমার নামে রেজিষ্ট্রি করা একটা পত্রের ভিতর আকাংখিত ভিসা। সুপারভাইজারের জব। সাথে কি ভাবে কি করতে হবে তার নির্দেশনা। পেয়ে খুশীর সাথে সাথে আরেকটা ভাবনা পেয়ে বসলো টিকেট তথা আনুসঙ্গিক টাকা পাবো কোথায়? বন্ধুরা বললো সব হবে,চিন্তা করিস না। সবাই মিলে এক ট্রাভেলসের মালিকের কাছে গেলাম। উনি বললেন সব আমি করে দেব,আপনাকে শুধু মেডিক্যাল টেষ্টের জন্য দুতাবাস হয়ে নির্ধারিত একটা ক্লিনিকে যেতে হবে। প্রথম টেষ্টে ফেল মারলাম। ভদ্রলোক বললেন পরের টেষ্টে পাশ হয়ে যাবেন। গেলামও তাই। জনসংখা নামক কি এক দফতরের কয়েকটা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে বললেন এবার যাবার জন্য প্রস্তুত হয়ে যান। ১৫দিনের মাথায় একভোর রাতে এসে কুয়েতের মাটিতে পদার্পন করলাম। ইমিগ্রেসনের বাধা পার হতেই পড়লাম আসল বিপদে,এখন কোথায় যাবো?? বেকুবের মত যে ভিসা পাঠিয়েছে,তার সাথে যোগাযোগ না করেই যে চলে এলাম। এখন কোথায় যাই। টেলিফোনও তখন এভিলেবল না। তার উপর মাঝরাত। কি আর করা,লাউঞ্জে বসেই ঝিমাতে ঝিমাতে ভোর হলো। কিন্তু হলে কি হবে,যাবো কোথায়-তাই তো জানি না আবার ক্ষুধায় পেট চো চো করছে। লাউঞ্জ প্রায় খালি,একা আমি। এক সহৃদয় কুয়েতী এসে জানতে চাইলো ঘটনা কি।। আমি তো আরবীতে অশিক্ষিত তায় আবার ভাষা!সেও ইংরেজীতে আমার মতই শিক্ষিত!! বোবার মত চেয়ে থাকতে দেখে সে হাত পেতে ভিসা ভিসা বলতে লাগলো। এটা বুঝে ভিসার কপিটা তার হাতে দিতেই চকচকে হাসি বেড়িয়ে এলো তার মুখে। কারন কপিটাতে কোমপানীর নাম-ঠিকানা এবং ফোন নাম্বার সবই রয়েছে। আমাকে সাথে নিয়ে পাবলিক বুথ থেকে ফোন করে কিছু আলাপ সেরে আমাকে নিয়ে ট্যাক্সীষ্ট্যান্ডে এসে ড্রাইভার কিসব বলে ভিসার কপিটা তার হাতে দিয়ে আমাকে চড়তে ইশারা করলো। আমি শুধু কৃতজ্ঞমুখে তাকে থ্যাংকস্ বলা ছাড়া আর কিছু বলতে পারলাম না। জবাবে সে পিঠ চাপড়ে দিল। তখন গরমের শুরুর দিক। তারপরও মরুর লু হাওয়া ঝাপটা মারছে মুখে। মশৃনগতিতে গাড়ী চলছে। আমি ভাবছি আগত দিনের কথা। একসময় দেখি একটা বিরাট বিল্ডিংএর পাশে গাড়ি পার্ক করে আমার লাগেজটা হাতে নিয়ে চালক নামতে ইশারা করলো। বোবার মত ওর পিছন পিছন হাটছি আর নুতন পৃথিবীটার এদিক-সেদিক দেখতে দেখতে একসময় কোম্পানীর অফিসে পৌছালাম। অফিসে তখন মাত্র টাইপিষ্ট একটা মেয়ে। চালক তার হাতে ভিসার কপিটা ধরিয়ে দিয়ে কি যেন বললো। মেয়েটা ব্যাগ থেকে তিনটা দিনার তাকে দিল। অথচ আমার কাছে তখন প্রায় ১০দিনারের মত আছে।কিন্তু চালক টাকা নিল ওর কাছ থেকে। বুঝলাম এয়ারপোর্টের সেই ভদ্রলোক বলে দিয়েছিলো। সেটা ছিল ৭ই এপ্রিল ‘৯২। এতদিন পরও তার কথা মাঝে মাঝেই মনে পড়ে। যাই হোক দুপুর বেলা মেয়েটার ভাই না বর জানি না,ওকে নিতে এলো। ওরা কি যেন বলাবলি করলো নিজের ভাষায়। তারপর ভাইটি ভাঙ্গা ভাঙ্গা ইংরেজীতে আমাকে সাথে যেতে বললো। আমার অবস্থা তখন করুন। ক্ষুধা, ঘুম,অনাগত ভবিষ্যত সব মিলিয়ে স্বকীয়তা বলতে কছুই আর অবশিষ্ঠ নেই। ওদের বাসায় পৌছামাত্র ভাইটি ড্রয়িং রুমে(দিওয়ানিয়া) বসিয়ে হাতমুখ ধুতে বললো। বেড়োতে না বেড়োতে একজন খাদ্দামা মানে কাজের লোক বড় একটা প্ল্রেটে মাছ,মাংস ভাত দিয়ে গেলো। এতকি আর খাওয়া যায়। যা খাওয়ার তা খেলাম,বাকীটুকু প্লেটটেই ফেলে কাত হয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম। বিকালে ভাইটির ডাকে ঘুম ভাঙ্গলো। আবার অফিসে এলাম। বেশ কয়েকজন ছিলো। এর মাঝে আবু মোহাম্মদ নামের একজনের হাওলা করে দেওয়া হলো আমাকে। সে আমাকে নিয়ে ম্যাট্রেস,কম্বল,বালিস কিনে নিয়ে ব্যারাকে। ফোরম্যানের উপর বুঝিয়ে দিল দায়িত্ব। এরই মাঝে বেশ কয়েকটি চেহারাকে দেখলাম উকি-ঝুকি মারতে। ফোরম্যান একতলায় এসে একটা রুমে আমার থাকার বন্দোবস্ত করে চলে গেল। এখানে সবাই বাঙ্গালী। হাফ ছাড়লাম। কেউ নাম,কেউ দেশের বাড়ী,কেউ কিভাবে এসেছি,কেউ বা আবার দেশের খবর জানতে চায়। সুস্থির হয়ে একে একে সার উত্তরই দিলাম। রুমমেটদের মাঝে ছিল মিরপুরের সাদেক ও মোতালেব,ফরিদপুরের একজন,নোয়াখালির একজন,কুমিল্লার একজন সহ মোট ৬ জন। আমাকে নিয়ে হলো সাত। মাটিতে ঢালাও বিছানা। খাওয়ার ব্যাবস্থাও একসাথে। অনেকরাত পর্যন্ত গল্প মানে আমি বক্তা ওরা শুধু প্রশ্ন করছে। বেশীর ভাগই দেশ সম্পর্কিত। আমি যে নুতন তার প্রমানই নেই। এরমাঝেই তাদের আপনজন হয়ে গেছি।। তারপর একজন ডিউটির কথা মনে করিয়ে দিতেই সবার ঘোর ভাঙ্গলো। শুতে গেলাম। -----চলবে...............।।
২৯ শে এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১:০২
সচেতনহ্যাপী বলেছেন: প্রথম মন্তব্যটির জন্য অনেক ধন্যবাদ।পুরো জীবন না হলেও অন্ততঃ চেষ্টা করবো এই ২২বছরের অভিজ্ঞতাকে সবার সামনে মেল ধরার।কি ভাবে আজকের এই অবস্থানে এসেছি সব এক এক করে,সময় সুযোগমত ।।
কারো কারো কাছে কিন্তু নিরস লাগতে পারে।
২| ২৯ শে এপ্রিল, ২০১৪ সকাল ১১:৫৬
আহমদ মোতেয়দ বলেছেন: ভাল লাগল আপনার লেখা, চালিয়ে যান, আমিও কুয়েতে আছি, আশাকরি আপনার ফেইজবুক আইডি আছে, অ্যাড করবেন দয়া করে। Ahmad Motayed.
আশাকরি দেখা হবে একদিন ।
২৯ শে এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১০:৪৪
সচেতনহ্যাপী বলেছেন: জেনে খুশী হলাম যে,আপনার মত একজন পুরানো ব্লগার পাশে আছে। চেষ্টা করছি এখানের কথা তথা নিজের অভিজ্ঞতা জানানোর। ভুল হলে আশা করি শুধরিয়ে দেবেন।
ফেসবুক আই ডি আছে কিন্তু সেখানে শুধু আমার পরিবারের লোকজন। আশা করি ভুল বুঝবেন না। তবে মেইল করতে পারেন।। ধন্যবাদ।
৩| ২৯ শে এপ্রিল, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:০৫
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
চলুক
২৯ শে এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১০:২৮
সচেতনহ্যাপী বলেছেন: চলবে। যতটুকু পারি।অনুপ্রেরনার জন্য ধন্যবাদ।
৪| ০২ রা মে, ২০১৪ দুপুর ১:৪৮
উড়োজাহাজ বলেছেন: চমতকার লাগলো। পরের পর্বের আশায় আছি।
০৫ ই মে, ২০১৪ রাত ১০:২৭
সচেতনহ্যাপী বলেছেন: আমি দুঃখিত ভাই।। আপনার মন্তব্যটি কিভাবে যে আমার দৃষ্টি এড়িয়ে গেল,ভেবে পাচ্ছি না।। আমি লগইন করেই নোটিফিকেশন দেখে প্রথমেই উত্তর দেই। তরপর সাম্প্রতিক মন্তব্য শেষে যারা আমার বাড়ী ঘুড়ে গেছেন তাদের বাড়ীতে যাই।
উৎসাহের জন্য ধন্যবাদ। কারন লেখাগুলিতে বিশেষত্ব কিছু নেই,শুধু সাদা-মাটা ভাবে লিখে যাই। তারপরও আপনারা পড়েন।।
৫| ০২ রা মে, ২০১৪ রাত ৯:৫৮
সিফাত সারা বলেছেন: ভাল লেগেছে
০৩ রা মে, ২০১৪ রাত ১২:৩৯
সচেতনহ্যাপী বলেছেন: জাষ্ট কথার মালায় অভিজ্ঞতাকে সাঁজিয়ে লেখার চেষ্টা করছি। স্বাগতম আমার ব্লগ বাড়িতে।।
৬| ১৭ ই মে, ২০১৪ বিকাল ৩:৩৪
আমি ইহতিব বলেছেন: ৯২ সালে কুয়েত গিয়েছেন আর আমি তখন স্কুলে পড়ি। অনেক অভিজ্ঞতা জমে আছে আপনার ঝুলিতে শেয়ার করুন, সাথে আছি।
১৮ ই মে, ২০১৪ রাত ১২:৫৬
সচেতনহ্যাপী বলেছেন: বোনটি আমি এখন শেষ খেয়ার যাত্রী। ওপেন হার্ট অপারেশন করে তিনটি আর্টারী বদলে নিয়েছি। সুতরাং আপনার ভাষায় ভালই অভিজ্ঞতা আছে। কিন্তু সব কি আর শোনার মানষিকতা সবার আছে? আর সত্যি বলতে কি এখানে আসি মনের কথাগুলো লিখে আর অন্যেরটা পড়ে সময় কাটানোর উদ্দেশ্যে। ধন্যবাদ।
৭| ১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ২:০৮
মনিরা সুলতানা বলেছেন: আপনার প্রবাস জীবন পড়া শুরু করলাম।
সত্যি বলতে প্রবাসে দেশী নামটাই অনেক আপন
১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ২:২৭
সচেতনহ্যাপী বলেছেন: আসলেও তাই।। তা না হলে এজিবি কলোনী শুনেই কেন এত আবেগ তাড়িত হবো?? যৌবনের উদ্দাম,উচ্ছলতার দিনগুলিতো কেটেছে শাহজাহানপুর রেলওয়ে কলোনী আর এজিবিতেই।।
ধন্যবাদ আমার পুরানো লেখা পড়ার জন্য।। যদও আমি এখনো "সঠিক"ব্লগার হয়ে উঠতে পারি নি।।
©somewhere in net ltd.
১| ২৯ শে এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১২:৪৯
অন্ধবিন্দু বলেছেন:
লিখুন। ব্লগের পাতায় জীবনের গল্প রেখে যান। আমরা পড়ি-আমরা জানি জীবনের কত রঙ কত ভাষা ... শুভ কামনা, সচেতনহ্যাপী।