নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
নুতন পরিবেশে,ঘুম কি আর সহজে আসতে চায়। চোখ বুজে এলেও একটু পর পরই বিচিত্র সব নাকডাকার শব্দে ঘুম ভেঙ্গে যাচ্ছে। হঠাৎ করে প্রচুর নড়াচড়ার আওয়াজে চোখ মেলেই দেখি সবাই খুব ব্যস্ত। অফিসে মানে ডিউটিতে যেতে হবে। বাথরুম ৩/৪টা থাকা সত্বেও দেখি লাইনের মত কয়েকজন অপেক্ষায়। আমার পালা আসতেই ভিতরে ঢুকতেই বিচিত্র এক গন্ধে রাতে যা খেয়েছিলাম,তা প্রায় গলায় এসে গেল। ঠিক যেন কমলাপুর রেলষ্টেশনের টয়লেট। যাই হোক কোনভাবে কাজ সেরে বাহিরে এসে হাফ ছেড়ে লম্বা করে একটা দম নিলাম। যাইহোক হুড়োহুড়িতে সবার সাথে তাল মিলিয়ে রাতেই দেয়া কোম্পানীর ইউনিফর্ম পড়তে যেয়ে পড়লাম আরেক ফ্যাসাদে। প্যান্ট-সার্ট দুটোই ঢোলা। সার্ট ইন করবো বলে সমস্যা নেই,কিন্তু প্যান্ট নিয়েই ফ্যাকরা। বেল্ট দিয়ে টাইট করতে যেয়ে প্যান্টের কোমড়ে ভাজ পরে গেলো কিম্ভুত-কিমাকার ধরনের। সার্টটা লম্বা আর ঢোলা হওয়ার কারনে টেনেটুনে সেই ভাজ ঢাকার পর একটু দেখার মত হলো। এবার বাসে চড়ার পালা। কাউকে রেখে যাবে না তারপরও ঠিক গুলিস্তানের অবস্থা। ঠেলাঠেলি,ঢাক্কাঢাক্কি করে কে আগে উঠবে তার প্রতিযোগীতা চলছে। যাইহোক সবার শেষে উঠে এককোনে ঠাই নিয়ে দু’চোখ বুলালাম পুরো বাসটিতে। ইতিমধ্যেই জানালার পাশে আর মাঝে বসা অনেকে ঝিমাতে শুরু করেছে। বিপদে আছে শুধু সিটের তৃতীয়জনরা। কারন একেতো জায়গা কম,তারউপর প্রথম দু’জন সিটের হ্যান্ডেলে হাত দিয়ে কাত হয়ে পড়েছে। বোধগম্য হলো এতো হুড়োহুড়ির। যাই হোক ২৫/৩০ মিনিট পর একটা মন্ত্রনালয়ের সামনে নামিয়ে দিল। ফোরম্যান গরু-ছাগলের মত গুনে গুনে মানে নাম ডেকে ভিতরে ঢোকালো। যন্ত্রনার শেষ হলো না। আমরা লাইন দিয়ে দাড়িয়ে আছি আর মন্ত্রনালয়ের ২/৩জন কর্মকর্তা প্রতিটি বিভাগের জন্য লোক বাছাই করতে লাগলো। আমার ভাগ্য ভাল যে আমি খোদ উজিরের (মন্ত্রীর) অফিসে ডিউটি পেলাম। কাজ ম্যাসেঞ্জারের। দীর্ঘশ্বাস ফেলে ভাবলাম কোথায় সুপারভাইজার আর কোথায় ম্যাসেঞ্জার!!(এখনও মানুষ এভাবেই ঠকছে আর ঠকবেও)। কেউ কেউ পেলো ফরাস মানে চা-কফি বানানোর কাজ। কারোরই দ্বিমত করার উপায় নেই। শুরু করলাম জীবনের প্রথম চাকুরী। মনে হচ্ছে একজন লোকই বারবার সামনে দিয়ে যাওয়া-আসা করছে। আসলে তা না। প্রায় সবাই আরবী ড্রেস মানে দিসদাসা(আমাদের দেশের পায়ের গোড়ালী পর্যন্ত পাঞ্জাবীর মত)মাথায় গোতরা আর বিড়া (স্কার্ফের মত সাদা বা লালসাদা মিলানো কাপড়ের উপর কাইথনের মত একধরনের সুতো,আঙ্গুল সমান মোটা গোলাকার আকৃতির) পড়া বলে একই রকম লাগছে। কেউ কেউ বসের নাম ধরে আছে কি না জানতে চাইলে বোবার মত হতবাক হয়ে চেয়ে থাকতাম মুখের পানে। আরবীতে আমার দৌড় আমপাড়া পর্যন্ত আর স্কুলে আরবী ক্লাস ফাকি দিয়ে যে বকা আর মার খেয়েছি মোল্লাস্যারের কাছে তা ঝট করে সেলুলয়েডের ফিতার মত চোখের সামনে নাচতে লাগলো। কোনভাবে প্রথমদিনের ডিউটি শেষ হলো।
ব্যারাকে ফিরে শুরু হলো আরেক সংগ্রাম। কে কার আগে রান্না বা রাতের তরকারী গরম করে খেয়ে ঘুমাবে বা আড্ডা মারবে। চারিদিকে শুধু পাতিল-প্লেট আর চামচের শব্দ!! যাক একসময় এই পর্বও শেষ। বেশীর ভাগই ঘুমের রাজ্যে চলে গেল সাথে আমিও। সন্ধ্যের একটু পর মিসরী ফোরম্যান ডেকে পাঠালো। গেলাম। সে হরবর করে কি যেন বললো আর তার সাথে থাকা কুমিল্লার একজন পুরানো লোক (নামটা বোধহয় জসিম)তরজমা করে আমাকে বোঝালো রাতের মধ্যেই চুল কেটে তর্জনী সমান করতে হবে(আমার চুলটা একটু বড়ই রাখতাম তখন)। জানালাম প্যান্ট এবং সার্টের দুরবস্থার কথা। জবাব পেলাম পরে আমার সাইজমত এনে দেওয়া হবে। চুলে তেল দেওয়া চলবে না(আমি দিতামও না) ড্রেস পরিস্কার থাকতে হবে ইত্যাদি ইত্যাদি। তারপর আমার হাতে বেতন থেকে ১০ দিনার অগ্রিম দেওয়া হলো খাওয়ার খরচ বাবদ। বেতন জানানো হলো ৪৫ দিনার।অর্থাৎ তখনকার হিসাবে ৫০০০হাজার টাকার একটু বেশী। বিষন্ন মনে রুমে ফিরে এলাম।ভাবছি এই টাকায় কি হবে। তখন সাদেকের কথায় সাহস পেলাম। ও সব জেনে বললো এই ১০টাকারই ভাংতি সামনে বাকালা মানে মুদী দোকানের মত গ্রোসারীসপে পাবেন না।………..চলবে।।
৩০ শে এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১১:৫৭
সচেতনহ্যাপী বলেছেন: ভাই এমনিতেই ভয়ে আছি। প্রথমত বেশীবড় করলে অনেকের ধৈর্যচ্যুতি ঘটতে পারে(বিশেষত যেখানে শুধই নিজের কথা।)দ্বিতীয়ত কাজ থেকে ফিরেই বসি ব্লগে।এখান থেকে উঠে খেয়ে ঘুমাতে যাবো
তার আগে আপনাদের বাড়ীতে যেয়ে টুকটাক আলাপ মানে মন্তব্য করা,আবার আপনাদের জবাব দেয়া-তাই.....।
ধন্যবাদ অনুপ্ররনার জন্য।।
২| ৩০ শে এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১১:৪৪
এহসান সাবির বলেছেন: চলুক।
৩| ০১ লা মে, ২০১৪ রাত ১২:০২
সচেতনহ্যাপী বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই। যে পর্যন্ত আপনারা উৎসাহ,উদ্দী পনা জানাবেন।ততদিন চলবে।
৪| ০১ লা মে, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:২২
নিশাত তাসনিম বলেছেন: পরের পর্বের অপেক্ষায়
০১ লা মে, ২০১৪ রাত ১১:০২
সচেতনহ্যাপী বলেছেন: ধন্যবাদ আমার বাড়ীতে নিয়মিত ভ্রমনের জন্য। ভাল-মন্দ যাই হোক না কেন আপনাদের কয়েকজনের উৎসাহ আমাকে প্রেরনা জোগায়।।
ভাল থাকুন সারাদিনন,সারাবেলা।।
৫| ০২ রা মে, ২০১৪ রাত ১:৩৮
উপপাদ্য বলেছেন: ভালো লাগছে, কিন্তু একটু প্যারাগ্রাফ করে লিখবেন প্লিজ। তাহলে পড়তে সুবিধা হয়। পরের পর্ব শীঘ্রই পাবো আশা করছি।
০২ রা মে, ২০১৪ রাত ১:৪৬
সচেতনহ্যাপী বলেছেন: এটা আমিও বুঝতে পারছি।।ধন্যবাদ উপদেশের জন্য।। সময় পেলেই সেটা লিখবো। বুঝেনই তো চাকুরীর ফাকে ফাকে লেখা।। এরমাঝে রান্না-বান্না,বাজার সদাই সব করতে হয়।।
৬| ০৫ ই মে, ২০১৪ রাত ১১:০৭
উড়োজাহাজ বলেছেন: পড়ছি। লিখতে থাকুন।
০৬ ই মে, ২০১৪ রাত ১২:৪৪
সচেতনহ্যাপী বলেছেন: আমার পরের মন্তব্যটি উড়োজাহাজকে উদ্দেশ্য করে লেখা।। তাড়াহুড়োয় বা নেটের ভেজালের কারনে সেটা আসে নি।। দুঃখিত এজন্য।।
৭| ০৬ ই মে, ২০১৪ রাত ১২:৪১
সচেতনহ্যাপী বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ।। যদিও জানি মানের দিক থেকে এটা কিছুই না তবুও প্রবাস জীবনের সাধারন কথাই, সাধারন ভাবে লিখে যাচ্ছি।।
৮| ০৬ ই মে, ২০১৪ রাত ১:২৩
উড়োজাহাজ বলেছেন: বাস্তব ঘটনায় মানের প্রশ্নটাই অবান্তর। সত্য ঘটনাকে আপনি রং লাগাবেন কি করে? সুন্দর হচ্ছে। কিন্তু আপনার শুরুটা এভাবে হয়েছিল তা ধারণা করিনি।
৯| ০৬ ই মে, ২০১৪ রাত ১:৩০
সচেতনহ্যাপী বলেছেন: আসলেই এভাবেই শুরু।। পরবর্তিতে ধাপে ধাপে বদলে গেছে সবকিছু। এসেছি আজকের পজিশনে। সবই পাবেন লেখাতে,এক এক করে।।
১০| ১৭ ই মে, ২০১৪ বিকাল ৩:৪১
আমি ইহতিব বলেছেন: বাস্তব জীবনের গল্পতে আগ্রহ সব সময়ই বেশী পাই। পাশে আছি আপনার সংগ্রামী জীবনের গল্প শুনতে। লিখে যান ভাইয়া।
১৮ ই মে, ২০১৪ রাত ১২:৪৯
সচেতনহ্যাপী বলেছেন: অনুপ্রেরনার জন্য ধন্যবাদ বোনটি। তবে এটা ঠিক যে,অনেক ত্যাগ-তিতিক্ষার বিনিময়ে জিরো থেকে হিরো হয়েছি। এই বয়সে অনেক দেখেছি,শিখেছি কিন্তু হার মানা নয়। পড়েছি আবার উঠে দাড়িয়েছি।
১১| ০৮ ই মার্চ, ২০১৫ দুপুর ১২:২২
মোজাহিদুর রহমান ব বলেছেন: পড়া শুরু করেছি ভাল লাগছে সাথে আছি
০৯ ই মার্চ, ২০১৫ রাত ১১:৫০
সচেতনহ্যাপী বলেছেন: আমার এইসব আবোল-তাবোল পড়ছেন বলে ধন্যবাদ।। আসলে মনের খেয়ালেই লিখে গেছি।।
©somewhere in net ltd.
১| ৩০ শে এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১১:৪০
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
ভাই জীবন থেকে নেয়া গল্প তাই আগ্রহটা আরও বাড়ছে জানার। আরেকটু পর্ব গুলো আরেকটু বড় হলে কিন্তু আরও চমৎকার হতো।