নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এবার দেশে যেয়ে নূতন এবং অভাবিত এক সমস্যার সামনে পড়লাম।। ভাগ্নী,ভাতিজী,নাতনী এমন কি মেয়েদের মাঝে দ্বন্ধ চলছে কে কালো আর কে ফর্সা।। মাঝে মাঝে মজা করেই আবার মাঝে সত্যিকারই।। বিপদে পড়তাম আমাকে বিচারক বানালেই।। সবাই স্নেহধন্যা।। কার কথা বলবো আর কাকে ব্যাজার করবো?? তবুও কোনভাবে ম্যানেজ করেছি কাউকে কিছু না কিছু বলে খুশী করে।। অবাক লাগলেও ব্যাপারটার ভয়াবহতা দেখে আমি তো হতবাক।। অবশ্য আমাদের সময়ও ছিলো ব্যাপারটা, কিন্তু সেটা হাসিঠাট্টার মাঝেই।। তবে বাস্তবতা কালো মেয়ের বিয়ে হতে দেরী হতো আর বাপের টাকাপয়সা থাকলে ছিল ভিন্ন কথা।। এখন হয়েছে আরো প্রকট।।
ঘর ছাড়িয়ে আজ এটা সমাজ তারপর রাষ্ট্রেও ছড়িয়ে পড়েছে বিষের মত।। আর তাতে জর্জরিত হচ্ছি আমরা।। সাধারন মানুষ।। বিশেষ করে মধ্যবিত্তরা।। কারন আমরা এক চাকুরীতেই খুশী এবং সুখীও।। বেতন দিয়েই সংসারতরী পার করার চেষ্টা করি।। খাওয়া,অফিসে যাতায়াত,সন্তানদের পড়াশুনা থেকে বিভিন্ন দাওয়াতে এটা-সেটা গিফট দেওয়ার পর মাসের শেষের দিকে বিপীনবাবুর অবস্থা।।
তার উপর দিনকে দিন বাড়ছে নিত্য-নৈমিত্তিক খরচ।। লিষ্ট দিলাম না।। পাঠক মাত্রেই জানা বলে।। বিয়েতে পার্লারে যেয়ে কালো মেয়েকে যেমন সুন্দর করে উপস্থাপন করি, তেমনি বেতনের নির্দিষ্ট টাকায়ই সংসারটাকে সুন্দর করার চেষ্টা করি।। তার উপর প্রতিবেশী থেকে আত্মীয়দের মাঝে আছে অঘোষিত যুদ্ধ।। ওর বাড়িতে ওটা আছে, আমারও চাই তবে ওর চেয়ে সুন্দর আর দামী হতে হবে।। কখনও সফল আর ব্যর্থ হলে দেনার দায়ে ডুবে যাওয়া।। এই দেনা আর শোধ হতে চায় না।। শুরু হয় এর টুপি ওর মাথায় পড়ানো আবার ওর থেকে তার মাথায় পড়ানো।। যেন জোক!!
দেশে যেন বৃষ্টির মানে উল্টো হয়ে গেছে।। এখন বোধহয় টাকা পড়ে পানির বদলে।। একসময় যাদেরকে দেখেছি স্কুল-কলেজের বেতন নিয়মিত দিতে পারতো না।। ঘরে ছিল অপ্রতুল খাবার (আমিও কিন্তু এর বাইরে নই) ১০টা অংক,একপাতা বাংলা আর একপাতা ইংরেজী লিখলে আব্বার হাত থেকে ১ টাকা পেয়ে খরচ করে শেষ করতে পাতাম না।। সেখানে আমরা জন্মদিন করি চায়নীজে।। বিল যাই হোক না কেন!!
শুধু জন্মদিন বা অন্য যেভাবেই হোক না কেন ফার্ষ্টফুডের দোকান না হলে চলেই না।। বান্ধবীকে নিয়ে ভাতিজা-ভাগ্নেদেরও একই অবস্থা।। ষ্টাটাসের মতই !! অথচ বেকার,পড়ছে।। জোর বাপ-মাকে পটানো।। আর এর জের টানতে যেয়ে চাকুরীজীবি পিতা-মাতাকে খেতে হচ্ছে ঘুষ।। স্যরি নিতে হচ্ছে উপঢৌকন।। কি সুন্দর ভাবেই না আমরা পাল্টে ফেলছি আমাদের সেই চিরচেনা আদর্শিক সমাজ ব্যাবস্থাকে!! কয়েক বছরে যেসব মার্কেট হয়েছে,সেখানে কারা যচ্ছে??
সবাই যখন বদলে যাচ্ছে তখন দেশটা আর প্রাগৈতিহাসক যুগে পড়ে থাকবে কেন?? তাল মেলালো দেশটাও।। নেতারা তো আগে থেকেই করাপ্ট।। এবার শুরু করলো বহিঃবিশ্বে দেশকে উন্নত দেখানোর অভিনয়।। ঠিক বিয়ের কন্যার মতই।। এটা হচ্ছে,সেটা হচ্ছে।। হচ্ছে মস্ত বড় বড় ইমারত, জমকালো মার্কেট, বিনোদনও বাদ যাবে কেন?? শুরু হয়ে গেল এই কালচারও।। কিন্তু ফাকা থাকছে না একটাও।। কোথা থেকে এত টাকা আসছে?? মনে হচ্ছে কেউ যেন গৌরীসেনের মত উদার হাতে অর্থ বিলিয়ে যাচ্ছে জনগনের হাতে।।
আসলে যা্চ্ছে বা খরচ হচ্ছে আমার-আপনারই টাকা।। কিছু ব্যাক্তি,প্রতিষ্ঠান অবলীলায় মেরে খাচ্ছে জনগনের টাকা।। পত্রিকার সুত্রমতে শেয়ার বাজার থেকে জনগনের লুট হয়ছে ১৫,০০০ কোটি টাকা।।হলমার্ক ৪,৫০০ কোটি টাকা,বেসিক ব্যাংক থেকেও ৪,৫০০ কোটি টাকা, বিসমিল্লাহ নামক ভুয়া প্রতিষ্ঠানটি বিভিন্ন ব্যাংক থেকে নিয়েছে ১,১০০ কোটি টাকা আর ডেসটিকনি ঠকিয়েছে ৪,১১৯ কোটি টাকা।। ছোটখাটো হিসাব এানে নেই।। থাকলেও তাও কয়েক হাজার াড়িয়ে যাবে বলে আমার ধারনা।। সম্প্রতি রিজার্ভ থেকে গেছে মাত্র ৮০০ কোটি টাকা।। যা কি না যে কোন দেশের মোষ্ট সিকিউর্ড অবস্থায় থাকার কথা।। এখানে অবাক হওয়ার কথা রিজার্ভের এই চুরি ধরা পরে প্রথমে ছোট্ট দেশ শ্রীলংকায় ।।সেখানে মানিলন্ডারিং আইন কঠোর বলে।। তারপর ফিলিপাইনে।। এবং সেখানকার পত্রিকায় প্রকাশ হবার পরও প্রায় দেড়মাস পর মরা জানতে পারি আমাদের কষ্টার্জিত রিজার্ভ হ্যাকিং হয়ে অলরেডী চলে গেছে হংকংয়ের বিভিন্ন ক্যসিনোর জুয়ার আড্ডায়।।ফলশ্রুতি গভর্নরের পদত্যাগ, কিছু বদলী কিন্তু সর্বাধীনায়ক অর্থমন্ত্রী বহাল।। ব্যাংকের আইটির প্রধান কি বলছে?? আসলেই তো আমরা এগিয়ে চলেছি।। এসব ছোট-খাটো ব্যাপারে পদত্যাগ করা তো অপমানের কথা।। বিয়ের পর কন্যার পিতার মতই হবে আমাদের অবস্থা।।
পদ্মসেতুর জন্য আমরা বিশ্বের দরবারে ঘুরে ঘুরে যখন বিফল আর অপমানিত হয়ে ফিরে আসি (দুর্মুখেরা এখানেও লুটের গন্ধ পেয়েছিলো) এখন নিজের ঘর থেকেই বন্যার মত বেড়িয়ে যাচ্ছে অর্থ।। এসব বাদেও আমরা এগিয়ে যাচ্ছি উন্নয়নশীল দেশের কাতারে।। ফ্লাইওভারের পর ভাবনা চলছে মেট্রোরেলেরও।। ক'দিন পর হয়তো শুনবো পাতাল রেলের কথাও।।কিনতে হবে গ্যাসের সিলিন্ডারও।। বিদ্যুৎ বাড়ে কিন্তু বিল কমে না।। বরং চালের মত এটাও রফতানিযোগ্য।।
জ্যাম থাকবে না, গ্যাস-বিদ্যুতের সংকট হবে না,ঘুরে বেড়াবো মেট্রোরেলে কিন্তু এইসব হারানো টাকা না পেলে কি দিয়ে হবে?? অর্থমন্ত্রীর কাছে ৪/৫ হাজার কিছু না হলেও আমাদের তো.......।
একটার পর একটা দূর্ঘটনা,হত্যা,ধর্ষন,খুন হচ্ছে কিন্তু সাজা পাচ্ছে বেগুনচোরা।।
থাক বাবা আর লিখে কাজ নেই।। মন চাচ্ছে তবু বিরতি নিচ্ছি।। এমনিতেই দুই ভাগে বিভক্ত আমরা।। গালি,ট্যাগতো আগেই খেয়েছি তা আর রিনিউ করতে চাই না।।
©somewhere in net ltd.