![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সোলায়মান ডালিম >>
পহেলা সেপ্টেম্বর ২০১৪। তিন মাস শিক্ষা নবীশ হিসেবে কাজ করার পর বাংলানিউজে আমার নিয়োগ হয় ফেনী জেলা প্রতিনিধি হিসেবে। সেই থেকে নিরন্তর ছুটে চলা। গেল দুই বছরে অনেক অর্জন রয়েছে। শিখেছি অনেক, অন্য কোন গণমাধ্যমে কাজ করলে যা হয়তো সম্ভব হতোনা। এ স্বল্প সময়ের কাজে সবচাইতে বড় অর্জনটি হলো স্টাফ করেসপন্ডেন্ট হিসেবে পদোন্নতি। ১ বছর পেরিয়ে যাওয়ার আগেই এডিটর ইন চীফ, বাংলাদেশের অনলাইন সাংবাদিকতার স্বপ্নদ্রষ্টা আলামগীর হোসেনের কাছে আমি কৃতজ্ঞ। তাঁর উপহারটি কাজের প্রেরণা বাড়িয়ে দিয়েছে শতগুন।
মফস্বলে সাংবাদিকতা শুরু ২০১০ সালে। স্থানীয় একটি সাপ্তাহিক কাগজে উপজেলা শহর ছাগলনাইয়া থেকে লিখতাম। জেলা শহরে আসতাম মাসে ১ বার আবার কোন মাসে দ’বার জেলার জেষ্ঠ সাংবাদিকদের দেখতাম জেলার কত গুরুত্বপূর্ণ সংবাদগুলো কাভার করছেন। কে কার চেয়ে আগে সংবাদ লিখে ঢাকায় পাঠাবেন তার প্রতিযোগিতা চলতো। মাধ্যম ছিল টিঅ্যান্ডটির ইন্টারনেট আর ফ্যাক্স। ভাবতাম তাদের মত আমিও কবে ঢাকার পত্রিকায় সংবাদ পাঠাবো। হঠাৎ করে সে সুযোগটি পেয়ে গেলাম। ২০১২ সাল থেকে স্থানীয় একটি সাপ্তাহিক পত্রিকায় নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে জেলা শহরের সাংবাদিকতার কাতে খড়ি। এরপর কাজ করেছি দৈনিক আমাদের অর্থনীতি, দৈনিক ভোরের ডাকসহ বেশ কয়েকটি জাতীয় পত্রিকায়। ২০১৪ সালের মে মাসের ২২ তারিখ ঢাকায় কর্মরত এলাকার বড় ভাই শামীম মজুমদারের মাধ্যমে বাংলানিউজের সাথে যোগাযোগ। তিন মাস শিক্ষা নবীশ হিসেবে কাজ করার পর কান্ট্রি এডিটর শিমুল সুলতানা আপুর মেইলের মাধ্যমে জানতে পারলাম আমাকে জেলা প্রতিনিধি হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
সেদিনকার আনন্দের অনুভুতি ব্যক্ত করবার মত নয়। যখন অনলাইন সর্ম্পকে ধারণা পাই। তখন থেকেই শুনে আসছিলাম বাংলানিউজের কথা। এ প্রতিষ্ঠানে কাজ করার প্রবল স্পৃহা সেই শুরু থেকেই ছিল। গত দুই বছরে অনলাইন সাংবাদিকতা করে বুঝেছি। এটাই বর্তমান তথ্য প্রযুক্তির যুগে সাংবাদিকতার মূলধারা। সামনের দুনিয়া অনলাইনের। তবে এখেনো মফস্বলে অনলাইন সাংবাদিকতা অনেক বেগ পেতে হয়।
তবে আনন্দেরও বিষয় আছে- অনলাইন নিউজ পোর্টালগুলোর জন্য টিভি সাংবাদিকরা দৌড়ের ওপর থাকেন। পোর্টালের মফস্বলের কোনো ব্রেকিং নিউজ দেখলেই টেলিভিশন চ্যানেলের নিউজরুম থেকে ফোন যাওয় শুরু করে প্রতিনিধিদের কাছে। ‘কেন দেরি হচ্ছে? বাংলানিউজে নিউজ আপ হয়েছে-আপনি এখনো পাঠাননি কেন?’ প্রতিযোগিতা বাড়ছেই। ছবি বা ভিডিও চিত্রের আগে তথ্যটাই এখন গুরুত্বপূর্ণ। যে যত আগে তথ্য সংগ্রহ করে ন্যাশনাল ডেস্কে জানাতে পারবেন সেই এগিয়ে। অনেক টেলিভিশন চ্যানেলই এখন তাদের প্রতিনিধিদের কাছ থেকে এসএমএসে সংবাদ সংগ্রহ করছে। আগে স্ক্রল,পরে বিস্তারিত। সবাই ব্রেকিং জানতে চায়, ছোট করে। বিস্তারিত জানবে সময় হলে। মফস্বলে কাজ করে যেটা বুঝতে পারি- টেলিভিশন চ্যানেলগুলোর এখন বড় একটি সংবাদ উৎস হচ্ছে অনলাইন নিউজ পোর্টাল।
স্বজন, বন্ধু-বান্ধবদের অনেকেরই প্রশ্ন- টিভি সাংবাদিকতা করিনা কেন ? তাদেও যে কথাটি বলতে পারিনা, যা সাংবাদিকতার জন্য লজ্জাষ্কর। অনেক টেলিভিশন চ্যানেলেই নিয়োগ পেতে দিতে হচ্ছে মোটা অংকের ‘ডিপোজিট মানি’। ব্যতিক্রম অনলাইন সাংবাদিকতায়। যোগ্যতাই যেখানে প্রধান। যার প্রমাণ আমি নিজেই। ছোট জেলা ফেনীর জেলা প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করতে আমাকে ৫/৬ জনের সাথে তিন মাস প্রতিযোগীতা করতে হয়েছে। সে কি পরিমাণ মানসিক যন্ত্রনা বলে বোঝানো যাবেনা। অবশেষে যোগ্যতার বিচারে নিয়োগ আমারই হলো। খুশির বিষয় হলো যে তিন মাস প্রতিযোগীতা কওে ছিলাম নিয়োগ পাওয়ার পর সে সম্মানীও দিয়ে দেয়া হয়েছিল।
এফস্বলে অনলাইন সাংবাদিকতার বিপত্তির অন্যতম বিষয় হলো ভুঁইফোড় নিউজ পোর্টাল। এস নিউজ পোর্টালের প্রতিনিধিদের ভিড়ে মূলধারার অনলাইন নিউজ পোর্টালের সাংবাদিকদের পড়তে হয় বিপাকে। স্থানীয় সাংবাদিকদের সংগঠনে সদস্য পদ পেতে গেলে সমুক্ষীন হতে হয় সরকারী অনুমোদন ও নিবন্ধনের বিষয়ে। স্থানীয় সাপ্তাহিত পত্রিকার যে সম্পাদক অনলাইন পোর্টালের খবর দিয়ে তার সাংবাদিকতা টিকিয়ে রাখেন, তখন তিনিও মূলধারার অনলাইন পত্রিকার ২৪ ঘন্টার সংবাদকর্মীর বিরোধীতা করেন।
তবে আনন্দও পাই। যখন কোন পাঠক বলে- ডালিম, এখন আর পত্রিকা পড়তে ইচ্ছে হয়না। তোমাদের অনলাইন পোর্টালের বদৌলতে যখনের খবর তখন পাই, কাগজের পত্রিকা পড়ে মজা নাই।
©somewhere in net ltd.