নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সনেট কবি রচিত সনেট সংখ্যা এখন ১০০৪ (৫ জানুয়ারী ’১৯ পর্যন্ত) যা সনেটের নতুন বিশ্ব রেকর্ড, পূর্ব রেকোর্ড ছিল ইটালিয়ান কবি জিয়েকমো দ্যা ল্যান্টিনির, তাঁর সনেট সংখ্যা ছিল ২৫০।

সনেট কবি

রেকর্ড ভেঙ্গে রেকর্ড গড়ার দারুণ সখ। কিনতু এমন সখ পূরণ করা দারুণ কঠিন। অবশেষে সে কঠিন কাজটাই করে ফেল্লাম। সর্বাধীক সনেট রচনার সাতশত বছরের পূরনো রেকর্ড ভেঙ্গে নতুন রেকর্ড গড়লাম। এখন বিশ্বের সর্বাধীক সনেট রচয়িতা হাজার সনেটের কবি, ফরিদ আহমদ চৌধুরী।

সনেট কবি › বিস্তারিত পোস্টঃ

উম্মতের তিহাত্তর কাতার

১৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ সকাল ৯:৪৪



মহানবী (সাঃ) বলেছেন, বনি ইসরাঈলরা হয়েছে বাহাত্তর কাতার, তাঁর উম্মত হবে তিহাত্তর কাতার এর মধ্যে এক কাতার জান্নাতি আর বাহাত্তর কাতার জাহান্নামী। জান্নাতি তারা, যারা তিনি ও তাঁর সাহাবায়ে কেরামের অনুসারী। মহানবি (সাঃ) বলেছেন, যে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলল সে যেন জান্নাতে প্রবেশ করল।সব মুসলমান ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলে সে জন্য এক মুসলমান বলল, সব মুসলমান জান্নাতি কাতারে; অমুসলমান বাহাত্তর কাতার জাহান্নামী কাতারে। মহানবী (সাঃ) বিশ্বনবী হিসেবে সবাই তাঁর উম্মত। মুসলমান অমুসলমান সব তাঁর উম্মত। তবে মুসলমান তাঁর অনুসারী উম্মত। অমুসলমান তাঁর অনুসারী উম্মত নয়।আল্লাহ বলেছেন, ‘অমা আরসালনাকা ইল্লা রাহমাতাল্লিল আলামিন- আমরা আপনাকে জগৎ সমূহের জন্য রহমত ভিন্ন প্রেরণ করিনি’। আয়াত অনুযায়ী মহানবী (সাঃ) যদি সবার জন্য রহমত হয়ে থাকেন তবে আয়াত অনুযায়ী সবাই তাঁর উম্মত। মুসলমান অমুসলমান সবাই তাঁর উম্মত।কাজেই জান্নাতি-জাহান্নামী হিসেবে সব মুসলমান জান্নাতি এবং সবাই জান্নাতি কাতারে; জাহান্নামী বাহাত্তর কাতার অমুসলীম।যদি মোনাফেক না হয় তবে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ পাঠকারী কি দায়েমী জাহান্নামী হবে? যদি না হয় তবে সব ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ পাঠকারী জান্নাতি।
সব মুসলমান মহানবির (সাঃ) অনুসারী, তবে সাহাবায়ে কেরামের (রাঃ)ক্ষেত্রে তাদের কথা হলো তাঁরা পরস্পর যুদ্ধ করেছেন। এমনকি তাবেয়ী সাহাবার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছেন; আর কোরআনের আদেশ অনুযায়ী তাদের যুদ্ধর অনুসরন করে পরস্পর যুদ্ধে লিপ্ত হওয়া যাবে না।কাজেই সাহাবার অনুসরন হবে তাঁরা যে হাদিস বলেছেন সে হাদীসের অনুসরন। আবার হাদিস যদি কয়েক রকম হয় তবে অধিক গুরুত্বপূর্ণ সাহাবার বলা হাদিসের অনুসরন হবে, কম গুরুত্বপূর্ণ সাহাবার বলা হাদিসের অনুসরন হবে না। হবে না যেমন একই বিষয়ে হজরত আবু বকর (রাঃ) ও সাধারণ সাহাবা যদি ভিন্ন রকম হাদিস বলেন তবে আবু বকরের (রাঃ) হাদিস গ্রহণ করা হবে অন্য হাদিস বাদ যাবে।
কেউ যদি অহেতুক কোন সাহাবার বলা হাদিস প্রত্যাখ্যান করে তবে সে সাহাবার অনুসারী নয়। হাদিসের আমল না করা আর আমল করতে অস্বীকার করা এক কথা নয়।সংগত কারণে যদি কেউ কোন হাদিসকে জাল মনে করে তবে সে হাদিস অস্বীকারের কাতারে পড়ে না।আর কোরআনের সূত্রে কোন হাদিস কেউ অস্বীকার করলেও তা অস্বীকারের কাতারে পড়বে না।যেমন হজরত ফাতেমা (রাঃ) বলেছেন মহানবি (সাঃ) তাঁকে মহানবির (সাঃ) খেজুর বাগান দান করেছেন। কিন্তু সাক্ষীর অভাবে হজরত আবু বকর (রাঃ) হজরত ফাতেমার (রাঃ) হাদিস গ্রহণ করেননি। অন্যদিকে শীয়ারা তাঁকে হাদিস অস্বীকারকারীর কাতারে ফেলে দিল।আবার হজরত আলীকে (রাঃ) মহানবি (সাঃ) উত্তরাধীকারী মনোনয়ন করেছেন, এ সংক্রান্ত এক ব্যক্তির হাদিস হজরত আবু বকর (রাঃ), ওমর (রাঃ) ও ওসমান (রাঃ)গ্রহণ না করায় তাঁদেরকেও তারা হাদিস অস্বীকারকারী বলে।শীয়ারা আবু বকর(রাঃ), ওমর(রাঃ) ও ওসমানের(রাঃ) নাম তাদের সন্তানের নাম রাখে না।সাহাবায়ে কেরামকে (রাঃ) কাফির ফতোয়া প্রদানের কারণে শীয়া ও খারেজীদের অনেকে মুসলীম স্বীকার করে না।কিন্তু তাদের এ কান্ডকে আল্লাহ যদি ভুল হিসেবে সাব্যস্ত করে তাদেরকে ক্ষমা করে দেন তবে তারাও জান্নাতি কাতারে শামিল হতে পারে।আবার কেউ আল্লাহর কিছু গুণ স্বীকার বা অস্বীকার করে। যেমন কেউ বলে আল্লাহর আকার আছে, আর কেউ বলে আল্লাহর আকার নেই।কেউ বলে মহানবি (সাঃ) গায়েব জানেন, কেউ বলে মহানবি (সাঃ) গায়েব জানেন না। মহানবি (সাঃ) গায়েব জানেন এমন আকিদাকে কেউ আবার শিরক মনে করে। এসব বিষয় যদি আল্লাহ ভুল হিসেবে গণ্য করেন এবং নিয়তের উপর প্রাধান্য দিয়ে এদের ক্ষমা করেন তবে এরাও জান্নাতি কাতারে গণ্য হবে।
এখন ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলা লোক যদি দায়েমী জাহান্নামী না হয় তবে সব ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলা লোক জান্নাতি কাতারে সামিল হবে। কাজেই সব ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলা লোক এক কাতার আর সব ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ না বলা লোক বাহাত্তর কাতার সাব্যস্ত হবে।
তা’ছাড়া মহানবি (সাঃ)মুসলীম তিহাত্তর কাতার বলেননি।এখন উম্মত ও মুসলীম একই বিষয় সাব্যস্ত না হওয়ায় এটা বলার উপায় নেই যে মুসলীম তিহাত্তর কাতার হবে। কারণ মুসলীম শব্দের অর্থ আল্লাহর ইচ্ছার প্রতি আত্মসমর্পণ করা। তো একজনের ইচ্ছার প্রতি আত্মসমর্পণকারী সব একদল হওয়ার কথা বহুদল হওয়ার কথা নয়। কিন্তু উম্মত মানে দল। তো দল বিদল উপদল মিলে বহুদল হতে পারে। যেমন নিজ দল না হলেও সব জনগণ প্রধানমন্ত্রীর দল এবং প্রধানমন্ত্রীকে সমর্থন না করলেও সব জনগনের একজন প্রধানমন্ত্রী। এদিকে জনগণের যেমন আলাদা দল থাকে তেমনি প্রধানমন্ত্রীর নিজ দল থাকে।
বনি ইসরাঈল বাহাত্তর কাতার তারা সব এক গোত্রের। কিন্তু মহানবীর (সাঃ) উম্মত শুধু কুরাইশ নামক এক গোত্রের নয়। বরং এতে বহুগোত্র রয়েছে। আবার বনি ইসরাঈলের বাহাত্তর কাতারে কয় কাতার জাহান্নমী সেটা বলা হয়নি। কাজেই বনি ইসরাঈল আর মুসলমান এক কথা নয়। কারণ মুসলমান কোন গোত্র নয়।উম্মতও কোন গোত্র নয় এখানে শুধু বহু কাতার হওয়ার কথা বুঝানো হয়েছে।
এখন করনীয় হলো যারা সাহাবা স্বীকৃত। যাঁদের সাহাবা না হওয়ার কোন প্রমাণ নেই। তাঁদের সবার বর্ণীত হাদিসকে হাদিস স্বীকার করতে হবে। আর কোরআন হাদিস বিরোধী আকিদা থেকে দুরে থাকতে হবে। তাহলে জাহান্নামে পড়লেও মুক্তির উপায় থাকবে।
তথাপি একদল বলবে মুসলমানই তিহাত্তর কাতার হবে যদিও তাদের কথার স্বপক্ষে কোন প্রমাণ নেই। আল্লাহ যদি তাঁর বান্দাদেরকে মুসলীম স্বীকৃতি দিয়ে জান্নাতে দাখিল করেন তাতে কারো কিচ্ছু করার নেই। আল্লাহর ইচ্ছার বিপরীতে আল্লাহর বান্দাকে কে কি মূল্যায়ন করলো তা’মোটেও গুরুত্বপূর্ণ নয়।
ডঃ মরিস বুকাইলি বলেছেন, তওরাত যারা লিখেছেন তারা হজরত মুছা (আঃ) থেকে শুনে তওরাত লিখেননি। তারা তওরাত লিখেছেন লোক মুখে শুনে। যবুর যারা লিখেছেন তারা দাউদ (আঃ) থেকে শুনে যবুর লিখেননি। তাঁরা যবুর লিখেছেন লোক মুখে শুনে। ইঞ্জিল যারা লিখেছেন তারা ইছা (আঃ) থেকে শুনে ইঞ্জিল লিখেননি। তাঁরা ইঞ্জিল লিখেছেন লোক মুখে শুনে। হাদিসের কিতাব যারা লিখেছেন তাঁরা মোহাম্মদ (সাঃ) থেকে শুনে হাদিস গ্রন্থ লিখেননি তারা হাদিস গ্রন্থ লিখেছেন লোক মখে শুনে। তৌরাত যবুর ইঞ্জিল ও হাদিস গ্রন্থ সমূহের সাথে কোরআনের গ্রন্থ সংকলনগত দিকের মৌলিক পার্থক্য হলো কোরআন যিনি সংকলন করেছেন তিনি মোহাম্মদ (সাঃ) থেকে সরাসরি কোরআন শুনে মুখস্ত করেছেন। সেই সাথে অন্য যারা কোরআন মোহাম্মদ (সাঃ) থেকে শুনে মুখস্ত করেছেন তিনি তাঁদের সহায়তা গ্রহণ করেছেন। তা’ছাড়া তখন কোরআনের সূরা সমূহের লিখিত কপিও ছিল। তিনি লোক মুখে শুনা কথা লিখেননি।
কিন্তু কোরআন ছাড়া অন্য সব আশমানী কিতাব ও হাদীস লোক মুখে শুনা কথা। এখন লোক যদি মোহাম্মদের (সাঃ) নামে ভুল কথা বলে তবে হাদিসের কিতাবে ভুল থাকতে পারে যার দায় মোহাম্মদের (সাঃ) বা হাদিসের কিতাব লেখকের নয়। তা’ছাড়া মহানবী (সাঃ) নিজেও তাঁর নামে হাদিস বানিয়ে প্রচার করার সম্ভাবনার কথা বলেছেন। এখন তিহাত্তর কাতার সংক্রান্ত হাদিস যদি তেমন কিছু হয় তবে মুসলমানরা একে অপরকে জাহান্নামী বলার বেকার প্রতিযোগিতা করছে।

মন্তব্য ৬২ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৬২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ সকাল ১০:২৭

ইবিএস খাইরুল বলেছেন: আপনি যে পয়েন্ট ধরে কথা বলেছেন খুব গুরুত্বপূর্ণ। ধন্যবাদ।।

১৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ সকাল ১০:৩৪

সনেট কবি বলেছেন: মুসলমান একে অপরকে জাহান্নামী বলে যে কাদা ছোড়ছুড়ি করছে তা’বন্ধ হওয়া দরকার।

২| ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ সকাল ১০:৩০

ক্স বলেছেন: আল্লাহ্‌র রাসুলের (সঃ) অনুসরণ মানে হল কঠোরভাবে সুন্নত মেনে চলা, সুন্নত ইবাদতে গাফিলতি না করা। আমাদের জীবন যাপনে রাসূল (সঃ) যেসব নির্দেশনা দিয়েছেন, বিনা দ্বিধায় তা পালন করে যাওয়া এবং কঠোরভাবে তাকে অনুকরণ করা। কাজেই সেই তিয়াত্তর তম কাতারে নিজেকে শামিল করা কঠিন কিছু নয়।

১৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ সকাল ১০:৩৭

সনেট কবি বলেছেন: কে কি ব্ল্ল সেটা মুখ্য বিষয় নয়। মুখ্য বিষয় হলো আমি কি করলাম। আমি যদি মহানবির (সাঃ) অনুসারী হই তবে আমার জান্নাত প্রাপ্তির সম্ভাবনা পুরোদমেই থাকবে। আর পথ ছেড়ে বিপথে চলে গেলেতো বিপদে পড়তেই হবে।

৩| ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ সকাল ১১:১১

রাজীব নুর বলেছেন: ধর্ম খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
কাজেই নিরবে পরে গেলাম। এবং মন্তব্য থেকে দূরে থাকলাম।
তবে আমি কোরআন হাদীস পড়ি- যখনই আমার মন অশান্ত হয়।

১৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ সকাল ১১:২২

সনেট কবি বলেছেন: আমি ভাবছি মুসলমানদের কাদা ছোড়াছুড়ি কিভাবে বন্ধ করা যায়?

৪| ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ সকাল ১১:৩৮

আবু আফিয়া বলেছেন: তিহাত্তর ফেরকার সবাই দাবি করছে কেবল তারাই জান্নাতি, সবাই যদি জান্নাতি হয় তাহলে নাউযুবিল্লাহ রসূলের কথার বিপরীত হয়, তিহাত্তর ফেরকা জান্নাতি হতে পারে না, একটি ফেরকা জান্নাতি বা মুক্তিপ্রাপ্ত হবে এটাই মহানবী (সা।) বলেছেন। সেই ফেরকাটি কারা, যারা রসূল (সা) ও তাঁর সাহাবী (রা) এর অনুসরণে জীবন পরিচালনা করেন কেবল তারাই সেই ফেরকা হতে পারে। তাই শুধু দাবি করলেই হবে না, তাদের মাঝে মহানবী (সা) ও সাহাবীদের বৈশিষ্ট্য থাকতে হবে। সবার এক নেতা থাকতে হবে, বায়তুল মাল থাকতে হবে। শান্তিপ্রিয় হতে হবে, তারা কাউকে কাফের আখ্যায়ীত করার জন্য রাজপথে মিছিল মিটিং করবে না।

১৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ সকাল ১১:৪৭

সনেট কবি বলেছেন: আল্লাহ বলেছেন, ‘অলাতামুতুন্না ইল্লা ওয়া আনতুম মুসলিমুন- তোমরা মুসলিম না হয়ে মৃত্যু বরণ করবে না’। এতে বুঝাগেল মুসলিম হয়ে মৃত্যু বরণ করলে জাহান্নাম থেকে বাঁচা যাবে। কাজেই জাহান্নামী বাহাত্তর কাতার মুসলিম নয়। মুসলিম দাবী করলেও মুসলিম নয়। কারণ মুনাফিকদের মুসলিম দাবী আল্লাহ প্রত্যাখ্যান করে বলেছেন তারা মুসলিম নয় বরং মিথ্যাবাদী। কাজেই যাদের মুসলিম দাবী মিথ্যা নয় তরা অবশ্যই মুসলিম এবং তারা জান্নাতি। তারা জাহান্নামী নয়।

৫| ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ দুপুর ১২:৫৩

আবু আফিয়া বলেছেন: এখন আমাদেরকে দেখতে হবে প্রকৃত ইসলামের অনুসারী জান্নাতী দল কারা। একটি দল যে জান্নাতি হবে মহানবী (সা) এর এই হাদিসটি নিয়ে আমিও অনেক গবেষণা করছিলাম। অনেক আলেমের সাথে কথাও বলেছিলাম, যে দলের আলেমের সাথেই কথা হয়ছে সবাই নিজ দলকে মুক্তিপ্রাপ্ত বলছেন, তারাই সঠিক দল বলছেন। এতে আমি মারাত্মক বিভ্রান্তিতে পরে যাই। এরই মধ্যে কাদিয়ানী সম্প্রদায়ের একজন মাওলানা সাবেক ভাইসপ্রিন্সিপাল, জামেয়া আহমদিয়া বাংলাদেশ, শাহ মোহাম্মদ নুরুল আমীন- এর সাথে কথা হলে তিনি বলেন: এ বিষয়ে হাদীস স্পষ্ট যে, আল্লাহর রসূল বলেছেন শেষ যুগে ৭৩দল হবে, ৭২ জাহান্নামী হবে আর একটি দল জান্নাতি।’
কিন্তু ১৯৭৪ সালে পাকিস্তানের সংসদে কাদিয়ানীদেরকে নট মুসলিম ঘোষণা করা হয় আর এর কয়েক দিনের মধ্যেই পাকিস্তানের একটি জাতীয় দৈনিকে আলেমদের পক্ষ থেকে ঘোষণা দেয়া হয় আমরা ৭২দলের আলেমরা সবাই মিলে কাদিয়ানীদেরকে অমুসলিম ঘোষণা করে ইসলামের গণ্ডি থেকে বের করে দিলাম এবং তখন তারা এটাও ঘোষণা দিয়েছিল যে, ইসলামের ১৪শ বছরের ইতিহাসে এত বড় ইজমা আর কোন বিষয়ে হয়নি’।
কাদিয়ানী আলেম এই ঘটনার উল্লেখ করে আমাকে প্রশ্ন করলেন ‘আল্লাহর রসূল বলেছেন ৭২দল জাহান্নামী আর এক দল জান্নাতি হবে’। তারা অমুসলিম ঘোষণার মাধ্যমে একটি জাহান্নামী দল সনাক্ত করল, বাকী ৭১টি কোথায়? এটা তারা সনাক্ত করছেন না, করার প্রয়জনীয়তাও বোধ করছেন না। এর মানে সহজ, ৭২দল একদিকে আর এক দল অপর দিকে। এখন আপনিই বলেন আল্লাহর রসূল বলেছেন ৭২ দল হবে জাহান্নামী আর এক দল হবে জান্নাতি (সহি তিরমিযী, কিতাবুল ঈমান)। এক দিকে ৭২দল আর অপর দিকে কাদিয়ানী তাহলে এখন কোনটি জান্নাতি, ৭২ না একদল?’

কাদিয়ানী আলেমের এই প্রশ্ন শুনে আমি হতভম্ব হয়ে যাই, এখন এই প্রশ্নের উত্তরে কি বলতে হবে আমাকে যদি আপনারা কেউ একটু সাহায্য করেন।

১৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ দুপুর ২:৪৪

সনেট কবি বলেছেন: কাদিয়ানীদের যুক্তি মোক্ষম। কিন্তু কথা হলো কিয়ামততো এখনো হয়নি। আরো দল কি হবে না? এত তাড়াতাড়ি এরা ৭৩ দল পেয়ে গেল কেমন করে? সুতরাং সবটাই ধাপ্পাবাজী। কাদিয়ানীরা সঠিক দল এটা তারা মুসলমানদেরকে বুঝাতে সক্ষম হয়নি। যদি তেমনটা হতো তবে তাদেরকে কেউ অমুসলীম ঘোষণা করতোনা।
তাদের গুরু একের ভিতর তিন। এমন অদ্ভুত কান্ড কেউ কখনো দেখেনি। একই ব্যক্তি ইমাম মেহেদী, ইছা (আঃ) ও নবি। আর সে ব্যক্তি ইমাম মেহেদী যা করার কথাছিল তার কিছুই করতে পারেনি। কাজেই তাদের দাবী অসার। তথাপি তারা টিকে আছে কারণ তারা কিছু লোককে তাদের কথা বলতে সক্ষম হয়েছে। আমাদের এখানেও তাদের একজন ব্লগার আছে। সে খুব ভালোভাবে তার যুক্তি উপস্থাপনের চেষ্টা করে। যদিও সেটা গ্রহণযোগ্যতার মাত্রা পর্যন্ত পৌঁছেনা।
তাদেরকে বলতে হবে সহিহ তিরমিযীর ঐ হাদিস তিরমিযীর দৃষ্টিতে সহিহ। কিন্তু তিরমিযী নিজে যে সহিহ এ সংক্রান্ত কোন হাদিস নেই। এখন ঘটনা চক্রে যদি হাদিস খানাই হাদিস না হয় তবে তিহাত্তর দলেও প্রশ্ন নেই আর তোমাদের সঠিকতারও যুক্তি নেই। কাজেই এটা বাদ দিয়ে অন্য কোন যুক্তি থাকলে উপস্থাপন কর। আপনি সহিহ দলের কথা বলছিলেন। আপনার সে সহিহ দল কোনটি?

১৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৫:৪৩

সনেট কবি বলেছেন: ইমাম মেহেদীর আগমন হাদিস দ্বারা সাব্যস্ত। হাদিস এটাও বলেছে যে মুসলমানদের কেন্দ্রীয় নেতা কুরাইশ হবে। তো একজন ভারতীয় অকুরাই মির্জা গোলাম আহমদ কাদিয়ানী কি করে মসিলমানদের কেন্দ্রীয় ইমাম ইমাম মেহেদী হন? আমাদের দেশেও এদের অনেক লোক আছে, লোক জনদের ইসলামী জ্ঞানে ঘাটতি থাকায় এরা অনেককে ধোকা দিতে পারছে।

৬| ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ দুপুর ২:৫৫

সেলিম আনোয়ার বলেছেন: কালেমা তাইয়্যেবার অনুসারী গন জান্নাতী।

১৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ দুপুর ২:৫৯

সনেট কবি বলেছেন: মহানবি (সাঃ) আমাদেরকে সে কথাই জানিয়েছেন। কাজেই আমাদেরকে এর চেয়ে বেশী জাসার দরকার নেই। কারণ বেশী জানতে গেলে ঈমান ও আমানের ক্ষতি হয়। ধন্যবাদ প্রিয় কবি।

৭| ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৫:৫৫

আলোর পথে বিডি বলেছেন: দুনিয়া পরকালের কর্মক্ষেত্র। দুনিয়ায় মানুষের কাজের উপর ভিত্তি করেই আল্লাহ পরকালে জান্নাতে বা জাহান্নামে প্রবেশ করাবেন। পরকালে জাহান্নাম থেকে বেঁচে জান্নাত লাভ করাই চূড়ান্ত মুক্তি। আর সেই মুক্তির লক্ষ্যে প্রত্যেকের উচিত পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছ অনুযায়ী আমল করা। কুরআন ও হাদীছে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আল্লাহর রজ্জুকে দৃঢ়ভাবে ধারণ করার নির্দেশ থাকলেও মুসলমানগণ বিভিন্ন সময় আক্বীদা ও আমলের ক্ষেত্রে বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়েছে। আর সকল দলই নিজেদেরকে মুক্তিপ্রাপ্ত দল দাবী করেছে এবং অন্যদেরকে পথভ্রষ্ট বলে আখ্যায়িত করেছে। এই মতবিরোধপূর্ণ বিষয়ের ফায়ছালা কুরআন ও ছহীহ হাদীছের আলোকে আমাদের জেনে নেওয়া উচিত।

রাসূল (ছাঃ) মুক্তিপ্রাপ্ত দলের নাম বলেননি। বরং তিনি মুক্তিপ্রাপ্ত দলের বিভিন্ন গুণ ও বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করেছেন। ইবনু মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,

خَطَّ لَنَا رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ خَطًّا بِيَدِهِ ثُمَّ قَالَ هَذَا سَبِيْلُ اللهِ مُسْتَقِيْمًا، وَخَطَّ خُطُوْطًا عَنْ يَمِيْنِهِ وَشِمَالِهِ، ثُمَّ قَالَ هَذِهِ السُّبُلُ وَلَيْسَ مِنْهَا سَبِيْلٌ إِلَّا عَلَيْهِ شَيْطَانٌ يَدْعُو إِلَيْهِ ثُمَّ قَرَأَ قوله تعالى وَأَنَّ هَـذَا صِرَاطِيْ مُسْتَقِيْماً فَاتَّبِعُوْهُ وَلاَ تَتَّبِعُواْ السُّبُلَ فَتَفَرَّقَ بِكُمْ عَن سَبِيْلِهِ ذَلِكُمْ وَصَّاكُم بِهِ لَعَلَّكُمْ تَتَّقُوْنَ-

‘আমাদের জন্য রাসূল (ছাঃ) নিজ হাতে একটা দাগ টানলেন, অতঃপর বললেন, ‘এটা আল্লাহ তা‘আলার সোজা ও সঠিক রাস্তা। অতঃপর তাঁর ডানে ও বামে আরো কিছু দাগ টানলেন। তারপর বললেন, এগুলি অন্য রাস্তা যাদের প্রত্যেকটার শুরুতে শয়তান বসে মানুষদেরকে তার দিকে ডাকছে। তারপর আল্লাহর বাণী পড়লেন, ‘এটাই আমার সোজা ও সঠিক রাস্তা। সুতরাং তোমরা অবশ্যই এর অনুসরণ করবে এবং অন্যান্য রাস্তাসমূহের অনুসরণ করো না, তাহ’লে এ রাস্তাসমূহ তোমাদেরকে তাঁর রাস্তা থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলবে। তিনি এভাবেই তোমাদেরকে নির্দেশ দিলেন, যাতে তোমরা মুত্তাক্বী হ’তে পার’ (আন‘আম ৬/১৫৩)।[আহমাদ, নাসাঈ, হাকেম, মিশকাত হা/১৬৬; তাফসীরে ইবনে কাছীর সূরা আন‘আমের ১৫৩নং আয়াতের তাফসীর দ্রঃ।] এ হাদীছ থেকে প্রমাণিত হয় যে, মুক্তির জন্য একটি সঠিক রাস্তা ছাড়াও শয়তানের তৈরী বিভিন্ন ভ্রান্ত রাস্তা থাকবে।

অন্য হাদীছে রাসূল (ছাঃ) উম্মতে মুহাম্মাদীর বিভক্তির কথা উল্লেখ করে মুক্তিপ্রাপ্তদের বর্ণনা দিয়ে বলেন,

إِنَّ بَنِيْ إِسْرَائِيلَ تَفَرَّقَتْ عَلَى إِحْدَى وَسَبْعِيْنَ فِرْقَةً فَهَلَكَتْ سَبْعُوْنَ فِرْقَةً وَخَلَصَتْ فِرْقَةٌ وَاحِدَةٌ وَإِنَّ أُمَّتِيْ سَتَفْتَرِقُ عَلَى اثْنَتَيْنِ وَسَبْعِيْنَ فِرْقَةً فَتَهْلِكُ إِحْدَى وَسَبْعِيْنَ وَتَخْلُصُ فِرْقَةٌ قَالُوْا يَا رَسُوْلَ اللهِ مَنْ تِلْكَ الْفِرْقَةُ، قَالَ الْجَمَاعَةُ الْجَمَاعَةُ-

‘নিশ্চয়ই বনী ইসরাঈলরা ৭১ দলে বিভক্ত হয়েছিল। তাদের মধ্যে ৭০ দল ধ্বংস হয়ে গেছে এবং একটি দল নাজাত পেয়েছে। আর আমার উম্মত অচিরেই ৭২ দলে বিভক্ত হয়ে যাবে। তাদের মধ্যে ৭১ দল ধ্বংস হবে (জাহান্নামে যাবে) এবং একটি দল মুক্তিপ্রাপ্ত হবে। ছাহাবাগণ বললেন, মুক্তিপ্রাপ্ত দল কোন্টি? রাসূল (ছাঃ) বললেন, তারা একটি দল, তারা একটি দল’।[মুসনাদে আহমাদ হা/২৫০১; সিলসিলা ছহীহাহ হা/২০৪, সনদ হাসান।]
_______________________________________
মুক্তিপ্রাপ্ত দল কোনটি?
মুহাম্মাদ আবদুল ওয়াদূদ
http://at-tahreek.com/april2012/2-3.html

১৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:১৭

সনেট কবি বলেছেন: হাদিসকে সহিহ বলেছে মানুষ। আল্লাহ বা নবি (সাঃ) নন। যারা সহিহ বলেছেন তারা নবি (সাঃ) থেকে কোন হাদিস শুনেননি। তারা হাদিস শুনেছেন লোক মুখে। তারা হাদিস সহিহ বলেছেন অনুমান করে। কাজেই তাদের বলা সহিহ হাদিস আদতে হাদিস নাও হতে পারে। কজেই হাদিসকে যাচাই না করার বিকল্প নেই। কোন সহিহ হাদিস কেউ কি কারনে মাসয়ালা গ্রহণে গ্রহণ করেননি সেটাও খতিয়ে দেখতে হবে। যেমন প্রায় চাশত হাদিস দ্বারা সাব্যস্ত রাফঈ ইয়াদাইনের আমল হানাফীরা করে না। তারা বলে এ হাদিস মানসুখ। আমি একজনকে বলেছি মানসুখ হাদিস চারশত কেন চার হাজার হলেও মানা যাবে না। কারণ সেটা মানসুখ বা রহিত। কাজেই হাদিস সহিহ বলে জিগির তুল্লে হবে না। দেখতে হবে হাদিস চলমান আছে কি না। এমন সহিহ হাদিস অথচ এর ১০০ বছর আগের একজন পরহেজগার তাবেঈ ইমাম আবু হানিফা সে হাদিসের আমল করেনি। তখন প্রশ্ন জাগা স্বাভাবিক কেন তিনি এমন হাদিসের আমল করলেন না? কাজেই হাদিস শুধু সহিহ বল্লেই হবে না সেটা আমল যোগ্য আছে কিনা সে কথাও বলতে হবে।

৮| ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:০৬

আবু আফিয়া বলেছেন: আপনার লেখা অসাধারন। আমি মুগ্ধ। তবে আমি আপনার সব কথার সাথে একমত হতে পারছি না। প্রথমত আপনি বলেছেন কিয়ামত এখনো হয় নি তাই ইমাম মাহদী আসার প্রশ্নই আসে না। অথচ রসুলুল্লাহ্ (স.) বলেছেন কেয়ামতের আলামত দেখা গেলে ইমাম মাহদী আসবেন অর্থাৎ কিয়ামতের পূর্ব মুহুর্তে ইমাম মাহদী আসবেন তাই আপনার কথা হাদীসের বিপরীত হয়ে গেল। আর ৭৩ দলের কথা বলছেন যে, এখনো ৭৩ দল হয় নি। আমি যখন এ বিষয়টি কাদিয়ানী আরেকজন আলেমের নিকট উপস্থাপন করলাম তখন তারা দেখিয়ে দিলেন, এখন মুসলমানদের মাঝে ২০০ এর অধিক ফির্কা রয়েছে। তৃতীয়ত, আপনি বলেছেন, কাদিয়ানীরা মুসলমানদেরকে বুঝাতে সক্ষম হয় নি। এ প্রশ্নের উত্তরে কাদিয়ানী আলেম বলেছেন,মুসলমানদেরকে কাদিয়ানীরা যদি বুঝাতে সক্ষম না হতো তাহলে পৃথিবীর ২১০ টি দেশে ৩০ কোটি এর অধিক কাদিয়ানী আছে। এই ৩০ কোটি কাদিয়ানী পূর্বে কোন ধর্মের অনুসারী ছিল? আপনি বলছেন, ইমাম মাহদী ও ঈসা নবী এক ব্যক্তি নন। অথচ তারা হাদীস থেকে স্পষ্ট রেফারেন্স দিয়েছে যে, হাদীসে স্পষ্ট লেখা আছে , মহানবী(স.) বলেছেন: “লাল মাহদীয়্যূ ইল্লা ইসাবনা মারয়ামা” অর্থাৎ ঈসা ইবনে মারইয়াম-ই মাহদী(ইবনে মাজাহ, বাব শিদ্দাতুয যামান)। আপনি বলেছেন, তিরমিযী নিজে যে সহিহ এ সংক্রান্ত কোন হাদিস নেই। তাহলে আপনি তিরমিযী শরীফের সকল হাদীসের বিষয়ে সন্দেহ পোষণ করছেন। কাদিয়ানী আলেম বললেন, তাহলে আপনি তো পরে বুখারী, মুসলিম, আবু দাউদ, ইবনে মাযা এবং নিসায়ী -সকল হাদীস গ্রন্থকে অস্বীকার করে বসবেন। তাই আপনি কোন ফির্কার অনুসারী এবং কোন কোন হাদীস মানেন আর কোন কোন হাদীস মানেন না -এ বিষয়টি প্রথমে স্পষ্ট হলে ভাল হত।

১৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:২৮

সনেট কবি বলেছেন: আপনি খুব সুন্দর যুক্তি উপস্থাপন করেছেন। এমন খুরধার যুক্তির কারণেই কাদিয়ানিরাও প্রভাব বিস্তার করতে সক্ষম হচ্ছে। আমি কিয়ামত হওয়ার সাথে মাহদীর শর্ত জুড়ে দেইনি বরং ৭৩ দল হওয়ার কথা বলেছি। তো তারা ২০০ দলের তালিকা প্রকাশ করলেতো সেটা অনেক বেশী। কিন্তু কাদিয়ানীদের ইমাম কিন্তু কুরাইশ নয়। ইমাম কুরাইশ হবে এ হাদিস হজরত আবু বকরের (রাঃ) সময় কাল থেকে প্রতিপালিত হচ্ছে। আর আমি তিরমিযির সব হাদিস অসহিহ বলিনি, আমি বলেছি এর কোন কোন হাদিস অসহিহ হতে পারে। আর সেটা সব হাদিস সগ্রন্থের বেলায় হতে পারে। ডঃ মরিস বুকাইলি বোখারী শরিফের ভ্রুণ সংক্রান্ত একটি হাদিস ভুয়া বলেছেন। যেটা বোখারী (রাঃ) সহিহ বলেছেন। বুকাইলি বলেছেন প্রমাণ্য বিজ্ঞানের সাথে হাদিসটির মিল নেই। কাজেই হাদিস শুনলেই আমরা অজ্ঞান হয়ে ছুটি না। আগে বুঝতে চেষ্টা করি এটা আসলে হাদিস কিনা। আর এর সবচেয়ে বড় কারণ যিনি হাদিস গ্রন্থ লিখেছেন তিনি মহানবি (সাঃ) থেকে হাদিস শুনেননি। তিনি লোক মুখে শুনা হাদিস লিখেছেন।

৯| ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:০৪

আবু আফিয়া বলেছেন: লেখককে ধন্যবাদ জানাই দ্রুত উত্তর দেয়ার জন্য। আপনি বলেছিলেন: কিন্তু কথা হলো কিয়ামততো এখনো হয়নি। এর উত্তরে কাদিয়ানীরা বলেছেন, কিয়ামত সংঘটিত হলে তো পারমানবিক বোমায় পৃথিবীর সকল প্রাণী নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। তখন খালি মাঠে ইমাম মাহদীর তো কোন কাজ নেই। এ যুক্তি আমি খণ্ডন করতে পারি নি। অতএব আপনিও মানছেন, কিয়ামতের পূর্বে ইমাম মাহদী আসবেন। আর ঈসা(আ.) ও ইমাম মাহদী এক ব্যক্তি -এ কথাও যেহেতু হাদীস দ্বারা প্রমানিত তাই আমি অস্বীকার করিনি, আপনিও নিশ্চয়ই একমত না হলে উত্তর দিতেন। উপরের সকল প্রসঙ্গ ৭২ আর ৭৩ দল নিয়ে, এর মাঝে আপনি কুরায়শ বংশ টেনে এনে প্রসঙ্গ অন্য দিকে ঘুরানোর চেষ্টা করছেন না তো? কাদিয়ানীরা যে হাদীসই উপস্থাপন করে, আপনারা সেটাকেই দূর্বল বা জাল বলার চেষ্টা করেন। তবে আপনার দৃষ্টিতে সঠিক হাদীস কোনগুলো তা কিন্তু বলছেন না। আপনি ড. মরিস বুকাইলির উদ্ধৃতি দিচ্ছেন অথচ কুরআন হাদীস থেকে কোন যুক্তি উপস্থাপন করছেন না। বিষয়টি আমার কাছে বোধগম্য নয়। তাই কাদিয়ানীরা উপরোক্ত যে যে বিষয়ে উত্তর দিয়েছে সেগুলো খণ্ডন করে আপনি আমাকে উপকার করেন। এরপর নাহয় কুরায়শ নিয়ে আলোচনা করা যাবে।

১৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৪৩

সনেট কবি বলেছেন: ঈসাবনে মারিয়মই মাহদী এ সংক্রান্ত হাদিস আমি আগে শুনিনি। এ প্রথম শুনলাম। মাহদী কিয়ামতের আগেই আসবেন এটা ঠিক আছে। তিহাত্তর কাতার ও মাহদি প্রসঙ্গ ভিন্ন। একজনের হাদিস ৭২ ও ৭৩ হলে বুঝাই যাচ্ছে শুনায় কম-বেশী আছে। এখন ইবনে মাজায় এ হাদিস আছে কি না আগে দেখতে হবে। হাদিস পাওয়া গেলে দেখতে হবে হাদিস কতটা সহিহ। ইবনে মাজার সহিহ বলাতে ভুল হয়নি সেটাইবা কেমন করে বলি? আমি কাদিয়ানীদের অনেক কিছুই জানার চেষ্টা করেছি। কিন্তু ইনিই ইমাম মাহদী এটা বুঝতে পারিনি।
কাদিয়ানিরা ৩০ কোটি হয়েছে এটা ভালো দিক। হিন্দুরা যেমন আমাদের বেহেশতে ভাগ বসাবেনা। তেমন আমারাও কাদিয়নীদের বেহেশতে ভাগ বসাব না। কিন্তু আমরা তাদের দলভুক্ত হতে হলে তাদের সঠিকতার বিষয় আমাদে বোধগম্য হতে হবে।

১৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ৮:০৪

সনেট কবি বলেছেন: মির্জা গোলাম আহমদ নিজেকে মাহদী দাবী করেছে, তার দাবীর সত্যতার প্রমাণ কি? তার এক অনুসারী বলেছে এ দাবী করে অন্যরা যেখানে বিলুপ্ত হয়েছে সেখানে তারা ভালোভাবে টিকে আছে। এটা আমার নিকট সবল প্রমাণ মনে হয়নি। আর জনাব মাহদীর কর্মস্থল হওয়ার কথাছিল মক্কা। অথচ তিনি সেখানে ঢুকতেই পারেননি। তিনি এলেন মুসলমানের কপাল ফিরাতে। সেখানে কোন কিছু না করেই তিনি মরে গেলেন। অথচ মহানবি (সাঃ) কি করেছেন সেটা সবাই জানে। এমন একটা অকামা লোককে কি করে মাহদী মানা যায়?

১০| ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ৮:৫৮

আবু আফিয়া বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে।
আমি বাধ্য হয়ে একজন কাদিয়ানী আলেমকে বারবার বিরক্ত করছি আপনার প্রশ্নের উত্তর দেবার জন্য। তিনি মীর্যা গোলাম আহমদ কাদিয়ানী সাহেবের কয়েকটি এমন বিষয় বললেন যা আজ পর্যন্ত আমি অন্য কোন ব্যক্তির মাঝে খুঁজে পাই নি।
প্রথমত: তিনি খ্রীষ্টানদের তৃত্ববাদী মতবাদ খণ্ডন করেছেন এবং পবিত্র কুরআন, হাদীস এবং বাইবেল থেকে প্রমান করেছেন যে, বণী ইসরাঈলী নবী হযরত ঈসা(আ.) মৃত্যু বরণ করেছেন তথা খ্রীষ্টানদের বিশ্বাসমতে খোদার পুত্র খোদা ঈসা(আ.) মারা গেছে এবং তাঁর কবর কাশ্মিরের শ্রীনগরে বিদ্যমান, -মসীহ হিন্দুস্তান মেঁ, ইযালায়ে আওহাম নামে দু’টি পুস্তকে তিনি তা স্পষ্টভাবে প্রমান করেছেন। অতএব খ্রীষ্টধর্মকে তিনি গোড়া থেকে কর্তন করে দিয়েছেন যা গত ১৪০০ বছর ধরে কেউ করতে পারে নি।

দ্বিতীয়ত: মুসলমানদের ধর্মবিশ্বাস যে, আল্লাহ্ আর কথা বলেন না, ওহী-ইলহাম বন্ধ। কিন্তু মীর্যা সাহেব বললেন, আল্লাহ্ আমার সাথে কথা বলেন এবং আমার প্রতি ওহী ইলহাম হয় এভাবে একাধারে ২৭ বছর তিনি ওহী ইলহামের মাধ্যমে পবিত্র কুরআনের তফসির হিসেবে ৮৮ টি পুস্তক রচনা করেছেন যা রূহানী খাযায়েন নামে পরিচিত এবং পড়ে শেষ করতে প্রায় ২ বছরের অধিক সময় লাগে। বিশেষ করে তাঁর রচিত বারাহীনে আহমদীয়া ৫খণ্ড এবং ইসলামী নীতিদর্শন পুস্তক পড়ে লক্ষ লক্ষ মানুষ তাঁর হাতে দীক্ষা নিয়েছেন। এবং যারা তাঁর দীক্ষা নিয়েছেন তাদের দোয়া গৃহীত হবারও হাজার হাজার প্রমান আছে।

তৃতীয়ত: তিনি ভারতবর্ষের এক গণ্ডগ্রামে অচেনা এক মানুষ ছিলেন। এখন পৃথিবীর প্রায় সকল দেশে তিনি পরিচিত ও সমাদৃত। তিনি ১০০ বছর পূর্বে আল্লাহর কাছ থেকে জেনে ভবিষ্যদ্বাণী করে বলেন, আল্লাহ্ আমাকে বলেছেন “মে তেরী তাবলীগকো যামিনকে কিনারো তাক পোহচাউঙ্গা তথা আমি তোমার প্রাচারকে পৃথিবীর প্রান্তে প্রান্তে পৌঁছে দিব। ২১০টি দেশে আহমদিয়াত ছড়িয়ে যাওয়া তার ভবিষ্যদ্বাণীরই পূর্ণতা। এছাড়া তিনি মিথ্যা হলে পবিত্র কুরআনের সূরা আল হাক্কা অনুযায়ী আল্লাহ্ তাঁকে স্বয়ং ধ্বংশ করে দিতেন কিন্তু তিনি আল্লাহর পক্ষ থেকে হবার দাবীর পর মহানবীর জীবনীর মাপকাঠিতে ২৩ বছরের বেশি তথা ২৭ বছর জীবন লাভ করেছেন।
চতুর্থত: তিনি আল্লাহর পক্ষ থেকে ভবিষ্যদ্বাণী করে বলেছিলেন “পৃথিবীতে এক সতর্ককারী এসেছে কিন্তু পৃথিবী তাকে গ্রহন করে নি তবে আল্লাহ তাকে গ্রহণ করবেন আর বিরাট বিরাট আক্রমনের মাধ্যমে তাঁর সত্যতার প্রমান দিবেন”। পবিত্র কুরআনেও আল্লাহ বলেছেন “আমি রসুল না পাঠিয়ে কোন জনপদ ধ্বংস করি না”-(সূরা বনী ইসরাঈল, আয়াত ১৫)। অতএব তাঁর ভবিষ্যদ্বাণী এবং আল্লাহ্ তা’লার বানী অনুযায়ী রসূল আগমন না করে থাকলে মুসলিম বিশ্বে মুসলমানরা কেন খ্রীষ্টানদের হাতে ধ্বংশ হচ্ছে? কেন আফগানিস্তান, ইরাক, লিবিয়া ও সিরিয়ার মত মুসলিম অধ্যুষিত দেশগুলোর মুসলমানরা ধ্বংস হচ্ছে? কেন এসকল মুসলিম জনপদ ধ্বংস হচ্ছে? নিশ্চয়ই সতর্ক না করে আল্লাহ ধ্বংস করেন নি। কে সেই সতর্ককারী? মীর্যা সাহেব না হলে অন্য কোন আল্লাহর পক্ষ থেকে আগমনকারী ব্যক্তির নাম বলুন। না পারলে মীর্যা সাহেবকে মেনে নিন। -এই হল কাদিয়ানী আলেমের বক্তব্য।
তাদের এই যক্তিগুলোকে আমি কীভাবে ফেলে দিতে পারি বলুন?

১৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১০:০৭

সনেট কবি বলেছেন: কোরআনে তার আগমন বিষয়ে কোন ভবিষ্যৎবাণী নেই। হাদিসেও নেই। তারমানে তিনি ভারতে আসবেন এমন কিছু। তো তার সম্পর্কে আল্লাহ যখন এমন বলার প্রয়োজন মনে করেননি। তো তাকে আমাদের কেন প্রয়োজন হবে? কোরআন বলেছে উহা মোত্তকিদের জন্য হেদায়েত। আমরা যদি মোত্তাকী হই তবে কোরআন আমাদেরকে তার দিকে হেদায়েত করবে। কাজেই আমাদেরকে মোত্তাকী হওয়ার শর্ত পূরণ করতে হবে নতুবা হেদায়েত পাওয়া যাবে না।

১৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১০:২৬

সনেট কবি বলেছেন: আল্লাহ্ আমাদেরকে সত্য জানার ও মানার সৌভাগ্য দিন- আমীন। আমার ঢাকায় দু’কাঠা জায়গা আছে। এলাকার নাম উত্তর নন্দীপাড়া (ত্রিমোহনী) ইমাম বাগ। সেখানে আমার একটা ইসলামী গবেষণা কেন্দ্র স্থাপনের ইচ্ছা। তো যদি সেটা শুরু করতে পারি তবে সেখানে আপনার আহমদী আলেমকে ডেকে তাদের দাবীর পক্ষের যুক্তি লিখিত আকারে উপস্থাপন করতে বলব। এরপর বিরোধী পক্ষের আলেম ডেকে সে গুলো লিখিত আকারে খন্ডন করতে বলব। এভাবে পক্ষে বিপক্ষে দলিল উপস্থাপনের মাধ্যমে প্রকৃত সত্য উৎঘাটনের চেষ্টা করব। এরপর যে সত্য বেরিয়ে আসবে তা ছাপিয়ে লোকদের খেদমতে উপস্থাপন করব। এখন আপনি দো করবেন যেন কাজটা দ্রুত শুরু করতে পারি।

১১| ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ৯:৪০

নাঈম জাহাঙ্গীর নয়ন বলেছেন: ভালো পোষ্ট, আমার কাছে একটা ফ্যাক্ট ছিল, বাহাত্তর কাতার আর তেহাত্তর কাতার নিয়ে। আপনার পোষ্টটি আমাকে সুন্দর একটা সুরাহা এনে দিল।

শুভকামনা আপনার জন্য

১৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১০:১৭

সনেট কবি বলেছেন: নিজে যা বুঝি সেটা সবার সাথে শেয়ার করার চেষ্টা করি। যেন ভুল-ভ্রান্তি থাকলে বেরিয়ে আসে। যেন ভুল থাকলে সংশোধন করে নিতে পারি।

১২| ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১১:০৪

বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: মুসলমানদের ক্যাচাল কমানোর চিন্তা ও চেষ্টা ভালো মানসিকতা। আমাদের পীরদের আরেকটু উদার হতে হবে। বাপজান বলেছেন, দাদাজান বলেছেন - এর দিন শেষ। সহীহ হাদীস, কুরআন ব্যাখ্যা করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। যদি ওয়াহাবীজম সত্য হয় তাহলে সেটাই মানতে হবে, যদি আরবী নিয়্যত, মিলাদ ইসলামে আগে থেকে না থাকে তাহলে বর্জন করতে হবে...

১৬ ই এপ্রিল, ২০১৮ সকাল ৮:০৭

সনেট কবি বলেছেন: যেটা সত্য সেটাই মানতে হবে। সবাই নিজেদেরকে সত্য বলছে। এখন যে আসল সত্য সেটা যথাযথভাবে নির্ণয় না করে গ্রহণ করা যাচ্ছে না। কারন এটা ভুল ছেড়ে আরেকটা ভুল গ্রহণের ঝুঁকি কে নিতে চাইবে? সহিহ হাদিস বলতে যা বুঝানো হচ্ছে। সে সব হাদিসকে মহানবি (সাঃ) বা তাঁর সাহাবায়ে কেরাম সহিহ বলেননি। যারা সহিহ বলেছেন তাদেরকেও মহানবি (সাঃ) ও তাঁর সাহাবায়ে কেরাম (রাঃ) সহিহ বলেননি। তো যার নিজের সহিহ হওয়ার গেরান্টি নেই তার সহিহ বলার গুরুত্ব কতখানি। কাদিয়ানিরা সহিহ হাদিস দিয়ে তাদের মত সহিহ প্রমাণ করছে তো তাদের মতটাইবা গ্রহণকরা হবে না কেন? তাদের কি দোষ?

১৩| ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১১:১৭

আলোর বার্তা বলেছেন: বাহাত্তর আর তিয়াত্তরের কাঁদা ছুড়াছুড়ি থাকতো না যদি সবাই ইমাম মাহদীর আগমণের বিষয়টা গুরুত্বসহকারে তাহকিক করতো। কিন্তু মুসলিম আলেম সমাজের অধিকাংশ ধর্মব্যবসায় মত্ত্ব। মাহদী আসলো কিনা তাদের ভ্রূক্ষেপ নেই।
বিষয়টি কেন গুরুতা্বপূর্ণ আমি যদি বুঝিয়ে বলি তাহলে বুঝবেন।
রাসুল (সাঃ) বনী ইসরাঈলের যে ৭২ বনাম ১ এর কথা বললেন তখন সেই মুক্তিপ্রাপ্ত একটি দল ছিল ঈসাবনু মরিয়মের অনুসারীরা। উনার আগমণের আগপর্যন্ত তারা ৭১ দলে বিভক্ত ছিল। তিনি এসে করেছেন ৭২তম দল।
মুসা (আঃ) এর ১৩০০ বছর পর ঈসা (আঃ) এসে বনী ইসরাঈলের যেসব রোগের যে যে চিকিৎসা করেছেন, মুহাম্মদ (সাঃ) এর ১৩০০ বছর পর ইমাম মাহদী (আঃ) এসে মুসলমানদের অনুরুপ রোগের সে সে চিকিৎসা করবেন। এই সাদৃশ্য থাকার কারণে হাদিসে রাসুল (সাঃ) বলেছেন, “ওয়া লাল মাহদীও ইল্লা ঈসাবনু মরিয়ম” অর্থাৎ “ইষাবনু মরিয়ম ব্যতিরেকে মাহদী নাই”।
আপনি দেখুন মুসলমানদের মাঝে কোন দলটির প্রতিষ্ঠা হয়েছে ইমাম মাহদীর হাতে। বর্তমানে দলের অভাব নাই। ইসলাম যখন ৭২ দলে বিভক্ত ছিল তখন ১৮৮৯ সালে ইমাম মাহদী দাবিদার কাদিয়ান নিবাসী হযরত মির্যা গোলাম আহমদ সাহেব আল্লাহর নির্দেশ অনুযায়ী বাইয়াত শুরু বরেন ও সেই ৭৩ তম দল প্রতিষ্ঠা করেন। ইদানীং এই দলটি ৭২ দল কর্তৃক অমুসলিম ফতোয়াপ্রাপ্ত হয়ে ৭২ থেকে স্বতন্ত্র আলাদা হয়ে হাদিসের সত্যতা আরো স্পষ্ট করেছে।
“ঈসা ও মাহদী অভিন্ন হাদিসের বিশুদ্ধতা”
لا مهدي إلا عيسى بن مريم
ঈসা ইবনে মরিয়ম ব্যতিরেকে কোন মাহদী নাই

[সূনানে ইবনে মাজাহ, কিতাবুল ফিতন, বাবু শিদদাতুজ জামান, অধ্যায় নং- ২৪, হাদীস নং- ৪০৩৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ কর্তৃক প্রকাশিত ৩য় খন্ড, পৃষ্ঠা- ৫০৭-৫৫০৮)।

হাদিস যয়ীফ হবার যত মানদন্ড আছে তার কোনোটাতেই এই হাদিস যয়ীফ না।
অন্য যয়ীফ হাদিসগুলোর যয়ীফ হবার কারণ হিসেবে কোনো বর্ণনাকারীর চারিত্রিক/মানসিক/আধ্যাত্মিক দুর্বলতা অথবা মাঝখানে বর্ণনাকারীর অনুপস্থিতি দেখানো হয়।
কিন্তু এই হাদিসটির ক্ষেত্রে তেমনটি নয়। কেবলমাত্র "আকাশে জীবিত ঈসা নামবেন" আর "মাহদী উম্মত থেকে হবেন" ধারণার বশবর্তী হয়ে এই হাদিসটিকে যয়ীফ বলা হয়।
মুহাদ্দিসগণ মাহদী সংক্রান্ত হাদীসগুলোর স্ববিরোধিতা, রাবী (বর্ণনাকারীদের) ব্যাপারে বিভিন্ন মতবাদ পোষণ করলেও নিম্নোক্ত হাদীসটির শুদ্ধতা ও বিশুদ্ধতার ব্যাপারে অভিন্ন মত পোষণ করেছেন।

কেননা এর রাবী (বর্ণনাকারী) মুহাম্মদ ইবনে খালিদ আলজুনদি (রহ.) বিশ্বস্ত, প্রখর মেধাসম্পন্ন ও দেয়ানতদার ব্যক্তি ছিলেন। কেননা তাঁর কাছ থেকে স্বয়ং হযরত ইমাম শাফেয়ী (রহ.)-এর মতো সূক্ষ্ম চিন্তাশীল, প্রজ্ঞাবান সম্পন্ন মানুষ এই হাদীসটিসহ অন্যান্য আরও অসংখ্য হাদীস সংগ্রহ করেছেন। এছাড়া হযরত ইবনে মঈন (রহ.) এই (বর্ণনাকারী) মুহাম্মদ ইবনে খালিদ আলজুনদি (রহ.)-কে বিশ্বস্ত ও আস্থাসম্পন্ন আখ্যা দিয়েছেন। (তাহযীবুত তাহযীব, খন্ড: ০৯, পৃষ্ঠা: ১৪৪)। ইবনে মঈন কেমন ব্যক্তি যার সর্ম্পকে এমন কথাও বলা হয়, কুল্লু হাদীসিন লা ইয়ারিফুহু ইবনু মাঈনিন ফালায়সা হুয়া হাদিসুন” অর্থাৎ যে হাদীসকে ইবনে মঈন জানে না তা হাদীসেই নয়। (তাহযীবুত তাহযীব, পৃষ্ঠা: ১৭০-১৮০)।
সুতরাং এমন ব্যক্তি যে রাবীকে বিশ্বস্ত ও আস্থা সম্পন্ন আখ্যা দিয়েছেন তার বর্ণনাকৃত হাদীস সর্ম্পকে কোন প্রকারের সন্দেহ থাকতে পারে না।

এছাড়া যখনই ঈসা ইবনে মরিয়ম সংক্রান্ত আলোচনা হাদীসে এসেছে এর সাথে মাহদী সংক্রান্ত আলোচনাও দেখা যায়। আবার তাদের কাজের মাঝে, যুগের মাঝে অসংখ্য মিলও পরিলক্ষিত হয়। এমনও বিভিন্ন হাদীস রয়েছে যেখানে মাহদী ঈসার সাথে মিলিত হয়ে ইহুদীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার কথাও আছে। তাই এই বিষয়গুলো সুস্পষ্টরূপে প্রমাণ করছে মসীহ ও মাহদী (আ.) একই সত্ত্বা এবং তাদের যুগ ও সময়কাল এক ও অভিন্ন।
বিস্তারিত জানতে আগ্রহীদের জন্য- ইমাম মাহদী সম্পর্কে জানুন

১৬ ই এপ্রিল, ২০১৮ সকাল ৮:১৩

সনেট কবি বলেছেন: আমি উভয় পক্ষের কথা শুনেছি। আহমদীদের কথা শুনলে মনে হয় তাদের কথা ঠিক। আবার তাদের বিরোধীদের কথা শুনলে মনে হয় তাদের কথা ঠিক। এজন্য আমি এ বিষয়ে নিবিঢ় গবেষণা করতে চাই। জানতে চাই আসলে কার কথা ঠিক। এরপর যে সত্য প্রাপ্ত হব তা সবাইকে জানাতে চাই। এখন যদি একমাত্র আহমদীরা সঠিক দল হয়ে থাকে তবে তাদের দোয়া আল্লাহ কবুল করার কথা। তো তাদের দীনদার লোকদেরকে বলুন আমার কাজের সাফল্যের জন্য দোয়া করতে; দেখি কি ফল আসে!

১৬ ই এপ্রিল, ২০১৮ সকাল ১০:০৩

সনেট কবি বলেছেন: ইমাম মাহদীর পরিচয়
নাম ও বংশ :
ইমাম মাহদীর প্রকৃত নাম ‘মুহাম্মদ‘। (আবু দাউদ, হাদিস নং ৩৬০১)। উপনাম : আবু আব্দুল্লাহ / আবুল কাশেম। উপাধি : মাহদি (আ)।
হাদিসে এসেছে, মাহদি আমার বংশে ফাতেমা’র সূত্রধরে আগমন করবে। (আবু দাউদ, হাদিস নং ৩৬০৩/৪২৮৪)।
হাদিসে আরো এসেছে “মাহদি আমার বংশে হবে। কোনো এক রজনীতে মহান স্রষ্টা তাঁকে ঐশ্বর্য দান করবেন ও সংশোধন করবেন।” (সুনানে ইবনে মাজাহ, বিশৃঙ্খলা অধ্যায়; হাদিস নং ৪০৮৫, সনদ সহিহ) ।
উম্মুল মু’মিনীন হযরত আয়েশা (রা) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূল (সা) বলেছেন, আশ্চর্য হচ্ছি এ ভেবে যে, আমার উম্মতের মধ্য হতে একটি দল বায়তুল্লায় আশ্রয় নেয়া এক ব্যক্তিকে আক্রমণ করতে অগ্রসর হবে। যখন তারা মরুপ্রান্তর পাড়ি দেবে তখন তাদেরকে জমিনের ভেতর ধসে দেয়া হবে।” (সহিহ বুখারি, ব্যবসা অধ্যায়, বাজার পরিচ্ছেদ এবং সহিহ মুসলিম, হা/২৮৮২ ফেতনা অধ্যায়, তিরমিযী হা/১২৭৬) ।
.
এখানে বায়তুল্লায় আশ্রয় নেয়া এক ব্যক্তি বলে ইমাম মাহদি (আ)-কেই বুঝানো উদ্দেশ্য। কারণ তিনি কুরাইশী এবং কেয়ামত পূর্বমুহূর্তে আল্লাহ তায়ালার সম্মানিত খলিফা হয়ে আসবে।
.
জন্ম ও জন্মভূমি
.
তিনি স্বাভাবিকভাবে মানুষের মতই মাতাপিতার ওরসে জন্ম লাভ করবেন। তাঁর জন্মস্থল নিয়ে মতভেদ রয়েছে। তবে কানজুল উম্মাল কিতাবের (হা/৩৯৬৭১) একটি রেওয়ায়েত দ্বারা বুঝায় যে, তাঁর জন্মস্থল হবে ‘মদিনা‘।
.
তবে হযরত ইবনে উমর (রা) হতে বর্ণিত আছে যে, তিনি বলেন “হে কূফাবাসী তোমরা ইমাম মাহদি’র আগমনে অত্যন্ত সৌভাগ্যবান।” এতে এও বুঝা যায় যে, ‘কূফা‘ শহর তাঁর জন্মস্থল হতে পারে। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বাহ, হা/৩৩১২১ এবং ৩৮৭৯৮)।
.
ইমাম মাহদির বৈশিষ্ট্য
.
তাঁর শারিরীক গঠন মাধ্যম। ললাট দীপ্তিময়, উজ্জ্বল, ডাগর চক্ষুবিশিষ্ট। সম্মুখের উজ্জ্বল দাঁতগুলো ফাঁকা। ঘন দাড়ি বিশিষ্ট। সাদা ঢিলেঢালা পোশাক পরিধান করবেন ইত্যাদি। তখন তাঁর বয়স থাকবে চল্লিশ। (তাবারানী ফিল-কাবীর, হা/৭৪৯৫; এর সনদ দুর্বল হলেও ভিন্ন হাদিস দ্বারা এসব সমর্থিত) ।
.
হাদিসে আরো এসেছে “মাহদি আমার বংশধর। তিনি উজ্জ্বল ললাটের ও বাঁকা নাসিকা বিশিষ্ট হবেন। পৃথিবীকে ন্যায় নীতি ও ইনসাফ দ্বারা ভরপুর করে দেবেন। তিনি সাত বছর শাসন করবেন।” (সুনানে আবু দাউদ : হা/৪২৮৫; এর সনদ সহিহ) ।
.
যুগে যুগে ভণ্ড মাহদি
.
বিভিন্ন হাদিসে ইমাম মাহদি (আ) এর আবির্ভাবের সুসংবাদ থাকায় একশ্রেণীর অসাধু লোক নিজেদের “মাহদি” দাবি করে বসে। কখনো কখনো সাম্রাজ্যবাদিরাও এদের ভন্ডামির পেছনে মদদ যুগিয়েছে। ভারত উপমহাদেশের কাদিয়ানী ফেতনার প্রতিষ্ঠাতা মির্যা গোলাম আহমদ ১৮৯১ সালে নিজেকে ইমাম মাহদী দাবি করে। জোরদার ভাবে প্রচারও করত। যদিও পরবর্তীতে তথা ১৯০১ সালে হঠাৎ ‘নবী’ দাবি করে বসে। সারা দুনিয়া জানে যে, মির্যা গোলাম আহমদ কাদিয়ানী (১৮৪০-১৯০৮ ইং) কাদের আশীর্বাদপুষ্ট এবং কেন!
পাকিস্তানে ১৯৭৪ সালে তাদের রাষ্ট্রীয় ভাবে অমুসলিম ঘোষণা দেয়ার পর থেকে বর্তমানে এ কাদিয়ানী জামাতের হেড কোয়ার্টার ব্রিটেনে এবং ইস্রাইলের হাইফা শহরে।
মূলধারার সব মুসলমানের দৃষ্টিতে কাদিয়ানি জামাত হযরত মুহাম্মদ (সা)-এর পরে মির্যা কাদিয়ানিকে ‘নবী এবং রাসূল’ বিশ্বাস করার কারণে একটি ভ্রান্ত জামাত ও কাফির গোষ্ঠী হিসেবে সাব্যস্ত। অনুরূপ কাদিয়ানিদের মতেও দুনিয়ার দেড় শত (১৫০,০০,০০,০০০) কোটী মুসলমান সবাই মির্যা কাদিয়ানিকে স্বীকার না করায় কাফের।
কাদিয়ানি জামাতের সাবেক দ্বিতীয় ওয়াল্ড লিডার মির্যা বশিরুদ্দিন মাহমুদ তার লেখিত ‘আয়নায়ে ছাদাকাত‘ পুস্তকের ৩৫ নং পৃষ্ঠায় পরিষ্কার লিখেছেন, “যেসব মুসলমান মাসীহ মাওঊদ তথা মির্যা কাদিয়ানির বায়েতে শামীল হবেনা, যদিও সে মাসীহে মাওঊদের নাম শুনতে না পায়; সে কাফির এবং ইসলাম থেকে খারিজ। এটাই আমাদের আকিদা বিশ্বাস।”
(এ হিসেবে বুঝা গেল, কাদিয়ানিদের দৃষ্টিতে অ-কাদিয়ানি সব মুসলিম ‘কাফির’। নাউজুবিল্লা।)
.
কে হবেন ইমাম মাহদি?
.
“মাহদি” শব্দের অর্থ পথপ্রদর্শক। কেয়ামত পূর্বমুহূর্ত তিনি মুসলিম জাতির প্রাণ রক্ষা ও সহায়তা করবেন বিধায় তাকে মাহদি উপাধি প্রদান করা হয়েছে।
.
যুগে যুগে যেসব স্বার্থান্বেষী মহল নিজে বা অন্যকে “মাহদি” বানিয়ে দাঁড় করিয়ে তামাশার পথ বেচে নিয়েছে, তাঁরা আজ ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে। তাই জনস্বাধারণের অবগতির জন্য বেসিক্যলি দু’চারটে কথা বলা দরকার। মনে রাখবেন, হযরত ইমাম মাহদি (আ) তিনি কোনো নবী নন, ফেরেশতাও নন। তাঁর নামের শেষাংশে দোয়াস্বরূপ “আলাইহিস সালাম” যোগ করা হয়। যেমন হযরত খিজির, বিবি মারিয়াম, বিবি আছিয়া প্রমুখ মহামানবদের নামের শেষাংশে করা হয়। তিনি কুরাইশ বংশে হযরত ফাতেমা’র আওলাদ হতে আসবেন। হাদিসে এসেছে “আল্লাহ তায়ালা আমার বংশ হতে এক ব্যক্তিকে প্রেরণ করবেন। আমার নামেই তাঁর নাম, তাঁর পিতার নাম আমার পিতার নামেই থাকবে।”
(সহিহ আল-জামে, হা/৫০৭৩, মুসনাদে আহমদ ৩/২৬-২৭, তিরমিযী, হা/২২৩২)।
ইমাম মাহদি (আ) তিনি বায়তুল্লাহ শরিফেই আত্মপ্রকাশ করবেন। দাজ্জাল আর হযরত মসীহে ঈসা এবং প্রতিশ্রুত ইমাম হযরত মাহদি সবার সময়কাল একই হবে। প্রতিশ্রুত ইমাম হযরত মাহদি’র জীবদ্দশাতেই বিশ্বে ইসলামী স্টেট প্রতিষ্ঠা হবে, তিনি ৭/৮/৯ বছর খেলাফত করবেন অতপর স্বাভাবিকভাবে ইন্তেকাল করবেন। যারা উপরুল্লিখিত আলোচনাদি স্মরণে রাখবেন তারা আমৃত্যু ভণ্ডদের প্রতারণায় কিছুতেই বিভ্রান্ত হবেননা।
হাদিসে বিশ্বনবীর ভবিষৎবাণী
ইমাম মাহদি (আ) কেয়ামত পূর্বমুহূর্তে বায়তুল্লাহ শরিফে আশ্রয় নেবেন। দুশমন তাঁকে হত্যা করার জন্য বায়তুল্লাহ শরিফে আক্রমণ করবে।
১- সহিহ মুসলিম শরিফে (হা/২৮৮৪) এবং মুসনাদে আহমদ কিতাবে (হা/২৪৭৮২) এসেছে “আশ্চর্যজনক ব্যাপার হল, আমার উম্মতের একটি দল বায়তুল্লায় আশ্রয় নেয়া এক কুরাইশীকে হত্যাকরার জন্য অগ্রসর হবে। দলটি মরুভূমিতে অবস্থানরত অবস্থায় ভূমিকম্পের সম্মুখীন হবে।” উল্লেখ্য, এখানে “কুরাইশী” বলে ইমাম মাহদি (আ)-ই উদ্দেশ্য।
২- হাদিসে এসেছে “আসমান থেকে এক ব্যক্তির নামধরে ডাকা হবে। তাঁকে কোনো নিম্নশ্রেণীর মানুষ প্রত্যাখ্যান করবেনা, কোনো বিত্তশালী ও ক্ষমতাবান লোকেও অগ্রাহ্য করবেনা।”
(মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বাহ, হা/৩৭৭৫৫, হাদিসটি হাসান স্তরের হাদিস)।
৩- হযরত ইবনে মাসউদ (রা) থেকে বর্ণিত, সূর্যের মাঝে যখন একটি আশ্চর্যজনক চিহ্ন প্রকাশ পাবে, ইমাম মাহদি তখনি আত্মপ্রকাশ করবেন।
(মুসান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক, হা/২০৭৭৫, ইমাম বুখারীর উস্তাদ ইমাম নাঈম ইবনে হাম্মাদ, হাদিস নং ৯৫১; হাদিসটির সনদ সহিহ) ।
এখানে ইমাম মাহদি (আ)-এর আত্মপ্রকাশ করার কথা সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে।
৪- হাদিসে এসেছে, রাসূলেপাক (সা) বলেছেন “শেষ যামানায় এক ব্যক্তি খলিফা হয়ে আসবেন। তিনি মানুষের মাঝে সম্পদ বণ্টন করবেন।
(সহিহ মুসলিম, ফেতনা অধ্যায়, মুসনাদে আহমদ, ৩/৮০)।
৫- হযরত আয়েশা (রা) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূল (সা) বলেছেন, আশ্চর্য হচ্ছি এ ভেবে যে, আমার উম্মতের মধ্য হতে একটি দল বায়তুল্লায় আশ্রয় নেয়া এক ব্যক্তিকে আক্রমণ করতে অগ্রসর হবে। যখন তারা মরুপ্রান্তর পাড়ি দেবে তখন তাদেরকে জমিনের ভেতর ধসিয়ে দেয়া হবে।”
(সহিহ বুখারি, ব্যবসা অধ্যায়, বাজার পরিচ্ছেদ এবং সহিহ মুসলিম, হা/২৮৮২ ফেতনা অধ্যায়, তিরমিযী হা/১২৭৬) ।
এখানে বায়তুল্লায় আশ্রয় নেয়া এক ব্যক্তি বলে ইমাম মাহদি (আ)-কেই বুঝানো উদ্দেশ্য। কারণ তিনি কুরাইশী এবং আল্লাহ তায়ালার খলিফা।
.
৬- হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন : শেষ যামানায় আমাদের বংশ হতে তিন ব্যক্তি আগমন করবেন। ছাফফাহ, মানসূর এবং ইমাম মাহদি।
(বায়হাক্বী, দালায়েলুন নবুওয়াত ৬/৫১৪, তারিখে বাগদাদ ১/৬৩, তারিখে ইবনে কাসীর ৬/২৫১, হাকিম ৪/৫১৪)
৭- হাদিসে এসেছে, রাসূলেপাক (সা) বলেছেন : আমার উম্মতের মাঝে মাহদির আত্মপ্রকাশ হবে। তিনি সর্বনিম্ন সাত বছর আর সর্বোচ্চ নয় বছর শাসনকার্য পরিচালনা করবেন।
(সুনানে ইবনে মাজাহ, ইমাম মাহদি পরিচ্ছেদ, হা/৪০৮৩; হাদিসটির সনদ সহিহ) ।
৮- বিশিষ্ট তাবেয়ী ও বুখারীর অন্যতম বর্ণনাকারী হযরত মুহাম্মদ ইবনে শিরীন (রহ) হতে বর্ণিত যে, “ইমাম মাহদি (আ) এ উম্মতের মধ্য থেকেই আসবেন। তিনি হযরত ঈসা (আ)-এর ইমামতি করবেন। “
(মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বাহ, হা/৩৮৮০৪)
৯- বিশিষ্ট তাবেয়ী ও বুখারীর অন্যতম বর্ণনাকারী হযরত সাঈদ ইবনে মুছাইয়্যেব (রহ) বলেন, শেষ যামানায় মানুষ নানা দল-উপদলে বিভক্ত হবে। পরস্পরে মতবিরোধ ছড়িয়ে পড়বে। আসমানের দিগন্তে একটি ঝুলন্ত হাত প্রকাশ পাবে আর আসমান থেকে আহবান করবে যে, ওই ব্যক্তিই তোমাদের নেতৃত্বদানকারী মহান পুরুষ।”
(ইমাম বুখারীর উস্তাদ ইমাম নাঈম ইবনে হাম্মাদ, হাদিস নং ৯৭২; হাদিসটির সনদ সহিহ) ।
১০- হাদিসে এসেছে “তোমাদের মধ্য হতে তিনটি দল ধনভাণ্ডার নিয়ে সংঘাতে লিপ্ত হবে। সবাই নিজেদের ইমাম মাহদি (আ)-এর অনুসারী হওয়ার দাবি করবে। এদের একটি দল টিকে থাকবে। … যখন তোমরা তাঁদের নেতাকে দেখতে পাবে তখন তাঁর হাতে বাইয়াত নেবে। যদিও শীতল বরফের উপর হামাগুড়ি দিয়ে যেতে হয়, তবুও। অবশ্যই এ ব্যক্তিই আল্লাহ তায়ালার খলিফা ইমাম মাহদি।”
(সুনানে ইবনে মাজাহ, হা/৪০৮৪; হাদিসটির সনদ সহিহ, তাযকিরাহ : ৫৭৫, ইমাম তাহের পাটনী)।
.
হাদিসে আরো এসেছে, রাসূলেপাক (সা) বলেছেন “শেষ যামানায় এক ব্যক্তি খলিফা হয়ে আসবেন। তিনি মানুষের মাঝে সম্পদ বণ্টন করবেন।
(সহিহ মুসলিম, ফেতনা অধ্যায়, মুসনাদে আহমদ, ৩/৮০)।
আশাকরি ইমাম মাহদি (আ) এর আগমন নিয়ে ইসলামী জ্ঞানশূন্য একশ্রেণীর কথিত আধুনিক বন্ধুদের তাবৎ সন্দেহ ও সংশয় নিরসন হবে। যারা বুখারি এবং মুসলিম শরিফে ইমাম মাহদি (আ)-এর আলোচনা না থাকার দাবি তোলে থাকেন তাদের সেই অজ্ঞতাজনিত দাবিও এবার ফিরিয়ে নেবেন।
ইমাম মাহদি বিষয়ক হাদিসগুলোর মান
যুগশ্রেষ্ঠ মুহাদ্দিস ও মুফাসসির সর্বজনখ্যাত আল্লামা জালালুদ্দীন সুয়ূতী (রহ) ইমাম মাহদীর আগমন সংক্রান্ত হাদীসসমূহ সংকলন করে একটি আলাদা পুস্তিকাই লিখে গেছেন। যা তার الحاوي للفتاوي (হাভী লিল-ফাতাওয়া) গ্রন্থের ২য় খন্ডে রয়েছে। তাতে ২১৩-২৪৭ পৃষ্ঠা পর্যন্ত মোট ৩০ পৃষ্ঠাব্যাপী ইমাম মাহদী সংক্রান্ত হাদীসসমূহ সংকলিত হয়েছে। এরপর সুয়ূতী (রহ) লিখেছেন : আবুল হাসান মুহাম্মাদ ইবনে হুসাইন বলেন, “ইমাম মাহদীর আগমন সংক্রান্ত হাদীসসমূহ মুতাওয়াতির।”
হাফেয ইবনে হাজার (রহ) ফাতহুল বারীতে (৬/৫৬৯) লিখেছেন, “আবুল হাসান ‘মানাকিব আশ-শাফেয়ী’-তে লিখেছেন, ইমাম মাহদী নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উম্মত হবেন এবং ঈসা (আ) তার পিছনে নামায পড়বেন। তার আগমন সংক্রান্ত হাদীসসমূহ মুতাওয়াতির।”
সুতরাং ইমাম মাহদীকে অস্বীকার করার অর্থ, মুতাওয়াতির হাদীস দ্বারা প্রমাণিত অকাট্য বিষয়কে অস্বীকার করা। অতএব এ ধরনের চিন্তা ও বিশ্বাস থেকে বেঁচে থাকা জরুরি।
আরেকটি কথা হল, কোনো হাদিস সহিহ বা দুর্বল হওয়ার মানদণ্ড কিন্তু বুখারি মুসলিম বুঝায়না। যারা এ দুটিকে হাদিস সহিহ হবার মানদণ্ড বানিয়ে রাখেন তা তাদের ব্যক্তিগত ব্যাপার। কারো মনগড়া ব্যাপার নিয়ে আমি তর্কে জিততে চাইনা। কারণ, হাদিস সহিহ অথবা দুর্বল হয় সনদের বিশুদ্ধতার উপর ভিত্তি করে।
কোনো হাদিসের সনদ তথা বর্ণনা সূত্র যদি ক্রুটিযুক্ত হয়, তখন সেটি সহিহ বুখারি বা মুসলিম শরিফে স্থান নেবার পরেও যেমন সহিহ হিসেবে আখ্যায়িত হবেনা, তেমনি কোনো বিশুদ্ধ সূত্রে বর্ণিত হাদিস যদি অন্য কোনো হাদিস গ্রন্থে পাওয়া যায়, তখন সেটিকে দুর্বল বা অনিরাপদ বলা যাবেনা। এটাই ঊসূলে হাদিস।
আল্লাহপাক আমাদের সবাইকে হক্ব বুঝার পর তা গ্রহণ করার তাওফিক দিন, আমীন।
লেখক, মাওলানা নূরুন্নবী।
তাকমিল : দারুলউলুম আল হোসাইনিয়া ওলামাবাজার সোনাগাজি, ফেনী।

১৬ ই এপ্রিল, ২০১৮ সকাল ১০:৫২

সনেট কবি বলেছেন: কেউ বলেছেন ইমাম মাহদী এসেছে, কেউ বলেছেন আসেনি। উভয় পক্ষ হাদিসের দলিল উপস্থাপন করেছেন। কাজেই এখন উভয় পক্ষকে নিয়ে বসতে হবে এবং নিরপেক্ষভাবে সত্য নির্ণয় করতে হবে। এ ছাড়া আমি কোন বিকল্প পথ দেখছি না। আহমদীদের বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ সেগুলো তাদেরকে খন্ডন করতে পারতে হবে।

১৪| ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৮ সকাল ১০:১২

মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
সোজা কথা জান্নাতী হতে হলে নবী কারীম (সা:) এর উম্মত হিসাবে ধর্মের সব বিষয় সুন্দর করে পালন করতে হবে।


ধন্যবাদ।

১৬ ই এপ্রিল, ২০১৮ সকাল ১০:১৮

সনেট কবি বলেছেন: এটাই একশভাগ ঠিক কথা- প্রিয় কবি।

১৫| ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৮ সকাল ১১:২৪

আলী নওয়াজ খান বলেছেন: পবিত্র কুআনের আলোকে মুক্তিপ্রাপ্ত মানুষ তারাই যারা মহানবীর (স';) আনুগত্যতা করেছেন এবং করছেন । আর যারা প্রকৃত মহানবীর অনুসারী তাদের বৈশিষ্ট্যের কথা পবিত্র কুরআনে এভাবে বর্ণিত হয়েছে ।
مُحَمَّدٌ رَسولُ اللَّهِ ۚ وَالَّذينَ مَعَهُ أَشِدّاءُ عَلَى الكُفّارِ رُحَماءُ بَينَهُم ۖ [সুরা ফাতহ ২৯ আয়াত ]
প্রকৃতপক্ষে তারাই মহানবীর সাথে আছের যারা কাফের মুশরিকদের ব্যাপারে হবেন কঠিন ও কঠোর এবং নিজেরা পরস্পর দয়াবান।

এখন একটু ভেবে চিন্তা করে দেখুন, কোন সম্প্রদায় বা কাদের মধ্যে এই বৈশিষ্ট্য রয়েছে ।

১৬ ই এপ্রিল, ২০১৮ দুপুর ১:১৩

সনেট কবি বলেছেন: কাফির মুশরিকদের প্রতি কঠোর আর নিজেদের প্রতি দয়াবান যে কারা সেটাইতো বুঝা মুশকিল। সৌদি আরব কাফির মুশরিকদের সাথে সুসম্পর্ক রাখে। ইরানও কাফির মুশরিকদের সাথে সুসম্পর্ক রাখে। তবে কি তুর্কিরা তেমন যেমন আপনি বলছেন। যাক যা বলতে চাইবেন সেটা মনের কোনে লুকিয়ে নো রেখে খোলাসা করে বলাই ভালো। কারণ সত্য গোপন করাও কিন্তু পাপ।

১৬| ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৮ সকাল ১১:৪২

আলোর বার্তা বলেছেন: আমার ওপরের কমেন্টের শেষে আগ্রহীদের জন্য একটি লিংক দিয়েছিলাম।
সে বা যারা জানতে আগ্রহী তারা ঐখানে মাহদী সংক্রান্ত সব প্রশ্নের উত্তর পাবেন।

১৬ ই এপ্রিল, ২০১৮ দুপুর ১:০৮

সনেট কবি বলেছেন: আপনার লিংক ধরে গিয়ে আপনাদের বক্তব্য পেলাম। সেই সাথে আপনাদের বিরোধীদের বক্তব্যও পেলাম। আপনাদের বিরুদ্ধ মতও কিন্তু একেবারে দূর্বল নয়। আপনারাদেরকে যেমন অন্যরা অমুসলিম বলে তেমনি আপনারাও আপনাদের বিরোধীদেরকে কাফির বলে। এখন যারা জান্নাতের ঠিকানা প্রয়োজন তাদের নিজেদের দেখতে হবে জান্নাতের ঠিকানা আসলে কোনটি?

১৬ ই এপ্রিল, ২০১৮ দুপুর ১:৩৯

সনেট কবি বলেছেন: খাতামুন্নাবি বা নবুয়ত খতম বা নবুয়তের পরিসমাপ্তি কে ভিন্ন ব্যাখ্যা দিয়ে মির্জা গোলাম আহমদ নিজেকে নবি দাবী করে। যদি নবুয়তের পরি সমাপ্তি না হয় তবে যারা মহানবির (সাঃ) পর নবুয়তের দাবী করেছে হজরত আবু বকর (রাঃ) কেন তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করলেন? এভাবে আহমদীদের ক্ষেত্রে অনেকগুলো কেন এর উত্তর যথাযথ ভাবে মিলে না। সংগত কারণে লোকেরা আহমদী হতে পাছে না।

১৭| ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৮ সকাল ১১:৫২

দেশ প্রেমিক বাঙালী বলেছেন: @ আবু আফিয়া আপনি বার বার কাদিয়ানী হুজুরকে টানছেন কেন? আপনি কি কাদিয়ানীতে নাম লিখিয়েেছন? এখানে একজন কাদিয়ানী আছে সে হচ্ছে আলোর বার্তা কাদিয়ানীরা ইসলামরে মধ্যে সবচেয়ে ভয়ঙ্কর কারণ ওরা মহানবী হযরত মুহাম্মদ (স) কে শেষ নবী হিসেবে স্বীকার করেনা। যা মৌলিক বিষয়গুলোর একটি। মহনবী (স) কে অস্বীকার করা মানে তারা পুরাপুরি ইসলাম থেকে বিচ্যুত অর্থাৎ অমুসলিম। এরা অতিসূক্ষভাবে মুসলিমদের বিভ্রান্ত করে কোরআন হাদিসের রেফারেন্স দিয়ে যদিও তাদের রেফারেন্স সঠিক নয়। কোনআন হাদিসে অগাধ পান্ডিত্য থাকেলে এবং আরবী ভাষায় পূর্ণ দখল থাকলে তখন আপনি আমি তাদের এই সূক্ষ ভন্ডামি ধরতে পারবো নচেৎ নয়। সুতরাং কাদিয়ানীদের থেকে সাবধান!!!!


সনিট কবি আপনার এই বিষয়ে জ্ঞানের অনেক ঘাটতি আছে। আপনি যে, নিবিঢ় গবেষণা করতে চান সে যোগ্যতা কি আপনার আছে? আমার মনে হয় আপনার সে যোগ্যতা নেই কারণ কোরআন হাদিস নিয়ে গবেষনা করতে হলে আরবী ভাষায় উপর আপনার ১০০ ভাগ পান্ডিত্য থাকতে হবে। আরবদের স্থানীয় ভাষারীতি জানতে হবে, রাসুল (স) ও তার সাহাবীদের বিষয়ে বিস্তর জ্ঞান থাকতে হবে, ইজমা কিয়াসের উপর জ্ঞান থাকতে হবে সর্বোপরি ইসলামের সমসাময়িক বিষয়েও অগাধ জ্ঞান থাকতে হবে।


ধর্মের এসব বিষয় নিয়ে লিখে আপনি অন্যদের মধ্যে মতবিরোধ তথা সন্দেহের সৃষ্টি করছেন। সনেট লেখা আর ধর্মনিয়ে লেখা একনয়।

১৬ ই এপ্রিল, ২০১৮ দুপুর ১২:৫৩

সনেট কবি বলেছেন: আমি একক নয় বরং যৌথ গবেষণা করতে চাই। আমার জ্ঞানের ঘাটতি থাকলে যার জ্ঞানের ঘাটতি নেই তার জ্ঞান দ্বারা সে ঘাটতি দূর হবে। ইসলামী ফাউন্ডেশনের কোরআনুল কারিমের অনুবাদ দেখেছি, তাতে ভুল নেই বল্লেই চলে। তাতে দেখেছি অসংখ্য জ্ঞানী-গুণী রয়েছে। এভাবে জ্ঞানী-গুণীদের জড়ো করে গবেষণা করতে পারলে আশাকরা যায় ভালো ফল পাওয়া যাবে। আমার আব্বা একটা টিনের ছাপরা ছোট মসজিদ তৈরী করে ছিলেন। সেটাই এখন আলিশান রাজকীয় মসজিদ। প্রতিষ্ঠান তৈরী করলে এভাবেই অনেকে তাতে যুক্ত হয়। আর এভাবেই এর থেকে ভালো কিছু বেরিয়ে আসে।
আমি চাচ্ছি মুসলমানদের ভুল ভ্রান্তিগুলো বেরিয়ে আসুক। আমার নতুন করে মতবিরোধ বা সন্দেহ সৃষ্টির কিছু নেই। কারণ মুসলমানরা এমনিতেই মতবিরোধ ও সন্দেহে হাবুডুবু খাচ্ছে। আমি পোষ্ট দিয়েছি তাতে দু’জন কাদিয়ানীদের পক্ষে বক্তব্য উপস্থাপন করেছে। তাতে কারো সন্দেহ সৃষ্টি হলে কি করার আছে? তারাতো এমনিতেও তাদের বক্তব্য প্রচার করে চলছে। এবং তারা এটা করবেই। বাংলাদেশে তাদের অসংখ্য মসজিদ রয়েছে। বহু মানুষ তাদের পতাকা তলে এর মধ্যে সমবেত হয়েছে। আপনি তাএদর মত কিছুটা খন্ডন করার চেষ্টা করেছেন।
ব্লগ উম্মুক্ত মত প্রকাশের মাধ্যম। এখানে যার যা মনে আসে উপস্থাপন করে। আলোচনা সমালোচনার মাধ্যমে সঠিকটা বেরিয়ে আসে। এখানে কারো মত প্রকাশে বাধা সৃষ্টি সঠিক কাজ নয়।

১৮| ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৮ দুপুর ১২:৩৯

মোঃ খুরশীদ আলম বলেছেন: মন্তব্য করতে রাজি নাই।
তবে শুধু এটা বলব , “ তারাকতু ফি কুম আম রাইনে লা তাদিল্লু মা তামাচ্ছাকতু বিহিমা, কিতাবাল্লাহি ওয়া সুন্নাতা রাসূলিহী। “
- বিদায় হজ্বের ভাষণে নবীজীর উক্তি
তোমাদের জন্য ২টি বস্তু রেখে গেলাম। যত দিন আকড়ে থাকবে পথভ্রষ্ট হবে না ১) আল্লাহর কিতাব তথা আল কুরআন ও ২) রাসুলের সুন্নাহ।
সুন্নাতের ‍উপর আমলের কোন বিকল্প নাই।

১৬ ই এপ্রিল, ২০১৮ দুপুর ১২:৫৯

সনেট কবি বলেছেন: সবাই কোরআন ও সুন্নাহ মেনেই মতবিরোধের কথা বলে। আলোর বার্তার লিংক ধরে ইউটিউবে গিয়ে আলেমদের কোরআন হাদিস ভিত্তিক আলোচনা দেখে আসলাম। তারা একেক জন একেক কথা বলেন। গ্রামে গিয়ে দেখি সবাই বলছে আমরা আল্লাহ ও তাঁর রাছুলেরে (সাঃ) মানি। তো একরকম উৎস মেনে তারা বহু রকম কাজ করে। আবার এটা নিয়ে ঝগড়াও করে। সমস্যাটা এখানেই।

১৯| ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৮ দুপুর ১২:৫৮

জুনায়েদ বি রাহমান বলেছেন: এসব বিষয়াদি নিয়ে আলোচনা হওয়া ভালো। বেকুব'রা বিভ্রান্ত হবে। আর যারা নিজেদের বিবেকবুদ্ধি কাজে লাগাবে তারা সত্যমিথ্যা যাচাই করে উৎকৃষ্ট পথ গ্রহণ করবে।

ধন্যবাদ আপনাকে।

১৬ ই এপ্রিল, ২০১৮ দুপুর ১:০৪

সনেট কবি বলেছেন: আলোচনা বন্ধ করা যায় না। কোথায় বসে আপনি কার মুখ বন্ধ করবেন? ইউটিউবে গিয়ে দেখেন সবাই ভিডিওতে কথা বলছে। আর একেক জন কোরআন হাদিসের একেক রকম ব্যাখ্যা দিচ্ছে। এখন গ্রহণ ও বর্জন প্রত্যেকের নিজের দায়িত্ব। কারণ ভালো মন্দ ফল সবার নিজেকে ভোগ করতে হবে। তবে আমি কি গ্রহণ করব আর কি বর্জন করব সেটা আমাকে বুঝে শুনে করতে হবে। আমার একটা বইতে এ বিষয় যুক্ত করেছি। সেজন্য ব্লগারদের মতামত জেনে নিলাম। যেন বিষয়ের প্রয়োজনীয় সংস্কার ও সংশোধন করা যায়।

২০| ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৪:৪৩

আবু আফিয়া বলেছেন: দেশপ্রেমিক ভাই, আপনি বলেছেন: “কাদিয়ানীরা ইসলামের মধ্যে সবচেয়ে ভয়ঙ্কর কারণ ওরা মহানবী হযরত মুহাম্মদ (স) কে শেষ নবী হিসেবে স্বীকার করেনা। যা মৌলিক বিষয়গুলোর একটি। মহনবী (স) কে অস্বীকার করা মানে তারা পুরাপুরি ইসলাম থেকে বিচ্যুত অর্থাৎ অমুসলিম।” প্রথমত কারো ব্যাপারে ভাল করে না জেনে মন্তব্য করা ঠিক নয়। কাদিয়ানীরা কি মানে এবং তাদের বিশ্বাস কি বিষয়ে তারা অনেক আগেই স্পষ্ট করেছেন। তাদের সাথে আমি চলা ফেরা করেছি, তাদের মসজিদে গিয়ে স্বয়ং দেখেছি, আমি তাদের মাঝে ইসলাম ভ্ন্নি অন্য কিছু লক্ষ্য করি নি।
তাদের পক্ষ থেকে জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত বিজ্ঞাপনের কপিও আছে, এদেশে কাদিয়ানীদের বিরুধীতা যখন তুঙ্গে তখনই কাদিয়ানীদের পক্ষ থেকে একাধিক জাতীয় দৈনিক পত্রিকার মাধ্যমে দেশবাসীকে জানানো হয়েছে তাদের ধর্ম বিশ্বাস কী? সে সময়ে তারা স্পষ্টভাবে তারা উল্লেখ করেছেন, তাদের প্রতিষ্ঠাতার একটি লেখা যে, ‘আমরা ঈমান রাখি, আল্লাহতায়ালা ছাড়া কোন মাবুদ নাই এবং সৈয়্যদনা হজরত মুহাম্মদ মুস্তফা (সা.) আল্লাহ্র রসূল ও খাতামুল আম্বিয়া। আমরা ঈমান রাখি, ফিরিশতা, হাশর, জান্নাত এবং জাহান্নাম সত্য এবং আমরা আরও ঈমান রাখি, কোরআন শরীফে আল্লাহতায়ালা যা বলেছেন এবং আমাদের নবী (সা.) থেকে যা বর্ণীত হয়েছে উল্লিখিত বর্ণনানুসারে তা সবই সত্য। আমরা আরও ঈমান রাখি, যে ব্যক্তি এই ইসলামী শরীয়ত থেকে বিন্দুমাত্র বিচ্যুত হয় অথবা যে বিষয়গুলো অবশ্য করণীয় বলে নির্ধারিত তা পরিত্যাগ করে এবং অবৈধ বস্তুকে বৈধকরণের ভিত্তি স্থাপন করে সে ব্যক্তি বেঈমান এবং ইসলাম বিরোধী। আমি আমার জামাতকে উপদেশ দিচ্ছি তারা যেন বিশুদ্ধ অন্তরে পবিত্র কলেমা ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ’-এর প্রতি ঈমান রাখে এবং এই ঈমান নিয়ে মৃত্যুবরণ করে’ (আইয়্যামুস সুলেহ পুস্তক, পৃষ্ঠা, ৮৭)।
এছাড়া খতমে নবুওত প্রসঙ্গে কাদিয়ানীরা তাদের প্রকাশিত বিজ্ঞাপনে বলেন, “আমাদের বিরুদ্ধে খতমে নবুওত না মানার মিথ্যা অভিযোগ তোলা হচ্ছে। খতমে নবুওত সম্বন্ধে আমাদের বক্তব্য খুবই স্পষ্ট। মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) হলেন ‘খাতামান নবীঈন’। আরবী ভাষায় ‘খাতাম’ শব্দের যত অর্থ আছে সব অর্থেই আমরা মহনবী (সা.)-কে ‘খাতামান নবীঈন’ বলে মান্য করি। সর্বশেষ শরীয়ত-বাহক নবী হিসেবেও তিনি ‘শেষ নবী’ আর নবুওতের উৎকর্ষের শেষ মার্গ অর্জনকারী হিসেবেও তিনিই ‘শেষ নবী’। আমরা ‘খাতামান নবীঈন’ উপাধির সেই একই ব্যাখ্যা মান্য করি যা উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়েশা সিদ্দিকা (রা.) বর্ণনা করে গেছেন। দেওবন্দী মাদ্রাসা ও মতবাদের প্রতিষ্ঠাতা, উপমহাদেশের প্রখ্যাত আলেম মাওলানা মুহাম্মদ কাসেম নানুতবী সাহেব ‘খতমে নবুওতের’ যে বিশ্লেষণ প্রদান করেছেন তার সাথে আমরা সম্পূর্ণ একমত।
আমরা কলেমা, নামায, রোযা, হজ ও যাকাত তথা ইসলামের সব মৌলিক শিক্ষা মানি ও পালন করার চেষ্টা করি। কেবল তাই নয়, সারা পৃথিবীতে শুধুমাত্র আমরাই এক খলীফার নেতৃত্বে ইসলাম প্রচারে রত আছি এবং বিপুল সংখ্যায় অ-মুসলমানকে মুসলামান বানানোর সৌভাগ্য লাভ করছি।
আমাদের সাথে অন্যান্য মুসলমানদের পার্থক্য কেবল মহানবীর (সা.) একটি ভবিষ্যদ্বাণীর পূর্ণতাকে কেন্দ্র করে। মহনবী (সা.) বলে গেছেন, শেষ যুগে মুসলমানদেরকে ঐক্যবদ্ধ করার জন্য সারা পৃথিবীতে ইসলামের চূড়ান্ত বিজয়ের লক্ষ্যে রসুলুল্লাহর উম্মতে এক মহান নেতা ‘ইমাম মাহদী (আ.)’-এর আবির্ভাব ঘটবে। আহমদি মুসলমানরা বিশ্বাস করে, রসুল করিম (সা.)-এর ভবিষ্যদ্বাণী অনুযায়ী সেই প্রতিশ্রুত ইমাম মাহদী ইতোমধ্যে আবির্ভূত হয়ে পরলোকবরণ করেছেন। তার পবিত্র নাম হজরত মির্যা গোলাম আহমদ কাদিয়ানী (আ.)। আর অন্যান্য মুসলমানরা বিশ্বাস করেন ইমাম মাহদী (আ.) আসবেন ঠিকই কিন্তু এখনও আসেন নাই। একদল বলছেন, হজরত ইমাম মাহদী (আ.) এসে গেছেন আর অন্য দল বলছেন এখনও আসেন নাই। বিষয়টি এতটুকুই” (জনকণ্ঠ, ৮/০১/০৪ প্রথম পৃষ্ঠা ও মানবজমিন, ৯/০১/০৪ প্রথম পৃষ্ঠা দ্রষ্টব্য)।
জাতীয় পত্রিকায় প্রকাশিত বিজ্ঞাপনটি থেকে স্পষ্ট হয়, আহমদিয়া জামাত মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বশেষ শরীয়তদাতা নবী হিসেবে মনে প্রাণে বিশ্বাস করেন। আর এমনটাই আহমদিয়া জামাতের বিভিন্ন বই-পুস্তকে দেখা যায়। তাদের বিষয়ে আমরা জানি না বলে কত কিছুই না মনে করি।
দেশপ্রেমিক ভাই, আল্লাহ আপনাকে বিবেক বুদ্ধি দিয়েছেন, তাই এটাকে কাজে লাগান, অযথা কারো ব্যাপারে মন্দ ধারনা হৃদয়ে পোষণ করাটা ইসলামের শিক্ষার বাহিরে।
আমি কাদিয়ানী না অন্য কিছু বিষয় সেটা না, বিষয় হচ্ছে কারো বিষয়ে প্রকৃত জ্ঞান না থাকলে হয় আমি চুপ থাকব আর না হয় জানার চেষ্টা করব। আমরা শুধু হুজুরদের মুখে তাদের বিষয়ে একটা বাক্য শুনি আর তাহল কাদিয়ানীরা কাফের, জানার চেষ্টা করি না এই ভেবে যে হুজুর বলেছেন তা কি মিথ্যা হবে। অথচ আল্লাহ রসূল বলেছেন যদি কেউ কাউকে কাফের বলে আর সে যদি তা না হয় তাহলে যে বলেছে কথাটা তার দিকেই যাবে’। তাই আবারো বলছি, কারো বিষয়ে না জেনে মন্তব্য করাটা ঠিক নয়।

১৬ ই এপ্রিল, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৩০

সনেট কবি বলেছেন: কাদিয়ানীরা নাকি তারা ছাড়া অন্য সব মুসলমানকে কাফির বলে, এ বিষয়ে আপনি কি জানেন?

২১| ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:১৯

আবু আফিয়া বলেছেন: আমি আমার জীবনে তাদের কাউকে কখনও অপরাপর মুসলমানদেরকে কাফের বলতে শুনি নি।

১৬ ই এপ্রিল, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:২১

সনেট কবি বলেছেন: জানিনা সব কি তবে অপপ্রচার?

২২| ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৩০

আবু আফিয়া বলেছেন: আমার মনে হয় অপপ্রচার ছাড়া কিছুই নয়, একদিকে অপপ্রচার করছে আর অপর দিকে দিনের পর দিন কাদিয়ানীদের সংখ্যা বৃদ্ধিই পাচ্ছে।

১৬ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ৮:২২

সনেট কবি বলেছেন: সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়া কোন ব্যাপার নয়। হিন্দু, বোদ্ধ, খ্রিস্টান ও নাস্তিকের সংখ্যাও কিন্তু কম নয়। এখন খ্রিস্টান সবচেয়ে বেশী বলে আমরা সবাই কিন্তু খ্রিস্টান হয়ে যাইনি। আর খ্রিস্টানরাও কিন্তু স্বর্গের আশা করে।

২৩| ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ৮:৪৯

আবু আফিয়া বলেছেন: সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়া অবশ্যই একটি বিষয়, মহানবী (সা।) প্রথমে একা ছিলেন, তার পর কি হয়েছে? ইসলামকে সত্য বলে লোকেরা গ্রহণ করেছে, দিন দিন সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে, ইসলাম জয়যুক্ত হয়েছে, তাই সংখ্যায় বৃদ্ধি পাওয়া এটাও অনেক বড় একটি বিষয়। ইসলামের ছায়াতলে যেভাবে লোকেরা আশ্রয় নিচ্ছে অন্যান্য ধর্মগুলোতে কিন্তু এখন সেভাবে আশ্রয় নিচ্ছে না। আর স্বর্গের আশা কে না করে বলুন। কাদিয়ানী মাওলানা শাহ মোহাম্মদ নুরুল আমীন এর মোবাইল নম্বর পাঠাচ্ছি তাদের বিষয়ে আরো কোন কিছু জানার থাকলে এই মাওলানার সাথে কথা বলে নিয়েন (০১৭৯০৬০৫০২৬)।

আপনাকে অনেক ধন্যবাদ, আপনার এই লেখার মাধ্যমে কাদিয়ানীদের বিষয়ে যা জানা ছিল না তাও জানতে পারলাম। তাদের বেশ কয়েকজন আলেমের সাথে কথা বলার সুযোগ হয়েছে। বই পুস্তক পড়েছি ও পড়ছি। তাই আপনার প্রতি রইল কৃতজ্ঞতা।

১৭ ই এপ্রিল, ২০১৮ সকাল ৮:০৮

সনেট কবি বলেছেন: কাদিয়নীরা যদি সত্যবাদী হয় তবে তাদেরকে সত্যবাদী প্রমাণ করা দরকার। আমি পড়াশুনা করেছি ঢাকার মিরহাজিরবাগে অবস্থিত তা’মিরুল মিল্লাত মাদ্রাসায়। আমি একটা ইসলামী গবেষণা কেন্দ্র স্থাপন করতে চাই। আমার প্রথম প্রোগ্রাম হবে কাদিয়ানী ও কাদিয়ানী বিরোধী বিতর্ক। প্রক্রিয়াটা হবে কাদিয়ানীরা প্রমাণ সহ তাদের সত্যতার দাবী উপস্থাপন করবে। তা’মিরুল মিল্লাতে সেটা দেওয়া হবে জবাব প্রদানের জন্য। তা’মিরুল মিল্লাতের জবাব কাদিয়ানিদের দেওয়া হবে। তারা আবার পাল্টা জবাব দিবে। এভাবে যদি কাদিয়ানী পক্ষ জয়যুক্ত হয়, তাহলে অন্য সবাই ভুল প্রমাণীত হবে। কারণ তারা সবাই কাদিয়ানীদেরকে অমুসলিম বলে ছিল। কিন্তু যদি কাদিয়ানী পক্ষ পরাজিত হয়, তাহলে আমার কাজ বেড়ে যাবে। এরপর আমি শুরু করব আহলে হাদিস ও আহলে হাদিস বিরোধী বিতর্ক। এখানে যদি আহলে হাদিস পরাজিত হয়। তারপর শুরু করব শীয়া ও ছুন্নী বিতর্ক। সবচেয়ে বড় কথা এ বিতর্কগুলোকে আমি পুস্তকে পরিণত করার ইচ্ছা রাখি। সেই সব বই পড়ে জনগণ ঠিক করবে তারা কোন দিকে যাবে।
আমি আমার প্রতিষ্ঠানের ফান্ড সংগ্রহের জন্য ইস্তেখারা করে ছিলাম। আমাকে জানানো হলো, এ বিষয়ে যারা করজে হাসানা প্রদান করতে চায় তাদের কাছ থেকে করজে হাসানা গ্রহণ করতে। অতঃপর তারা তাদের জাকাতের টাকা দিয়ে উক্ত করজে হাসানা প্ররিশোধ দেখাবে। কারণ ঋণশোধ জাকাত প্রদানের একটি ক্ষেত্র। গবেষণা কেন্ত্র কিন্তু জাকাত প্রদানের ক্ষেত্র নয়। এজন্য গবেষণা কেন্দ্র ঋণ গ্রহণ করবে। জাকাতের টাকায় সে ঋণ পরিশোধ হবে।
আমি যে কাজটা চাচ্ছি সেটা অবশ্য দরকার। মির্জা সাহেব আমাদের কেউ নন। তিনি সত্য প্রমাণীত হলে আমরা তাঁর দলভূক্ত হয়ে জান্নাতে যেতে চাই। আর তিনি মিথ্যা প্রমাণীত হলে তাঁর দল থেকে দূরে থেকে আমরা জাহান্নাম থেকে বাঁচতে চাই। জাকাতের টাকায় যদি সত্য মিথ্যা নির্ণয়ের কার্যক্রম চালু করা যায় সেটা মুসলিম জাতির জন্য অবশ্য মঙ্গলের হবে।
আপনি মাওলানার সাথে আমি যা বল্লাম সে বিষয়ে আলোচনা করবেন। তিনি যদি ভয় পেয়ে যান তাহলে বুঝবেন তাদের মধ্যে ঝামেলা আছে। আর যদি ভয় না পান তাহলে মনে করবেন তিনি নিজ দৃষ্টিতে সঠিক। কাজেই অন্যের সাথে লড়বার মত সক্ষমতা তাঁর রয়েছে। আপনার আলোচনার কি ফর হয় সেটা আমাকে জানাবেন। আল্লাহ আপনাকে সত্য উৎঘাটনের সহায়তা প্রদানের তাওফিক দান করুণ- আমিন।
আমি মাওলানা ফরিদ আহমদ চৌধুরী। মোবাইল- ০১৭০৬০৩৭৭৪৮

২৪| ১৭ ই এপ্রিল, ২০১৮ দুপুর ১:২৭

নাঈমুর রহমান আকাশ বলেছেন: হযরত ইমাম মাহ্‌দী (আঃ)-এর সত্যতার প্রমাণ

আহ্‌মদীয়া জামাতের প্রতিষ্ঠাতা হযরত মির্যা গোলাম আহ্‌মদ (আঃ) দাবী করেছেন যে, আল্লাহ্‌ তা’আলা তাকে ইমাম মাহ্‌দী ও মসীহ্‌ মাওউদ হিসেবে প্রেরণ করেছেন। বিগত ১৮৮৯ খৃস্টাব্দে তথা ১৩০৬ হিজরী হতে একশত বছরের অধিক সময় ধরে আহ্‌মদীয়া জামা'ত ইসলামের শ্বাশত বাণী প্রচার করে চলেছে। ইতিমধ্যে এই আধ্যাত্মিক সংগঠন পৃথিবীর শতাধিক দেশে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। শত বাধা-বিপত্তি সত্বেও আল্লাহ্ ‌তা’আলার বিশেষ অনুগ্রহে এই সংগঠন সাফল্যের পর সাফল্য অর্জন করে বিশ্বব্যাপী ইসলাম ভিত্তিক ‘উম্মতে ওয়াহেদা’ প্রতিষ্ঠার লক্ষে নিরবচ্ছিন্নভাবে প্রচেষ্টা করে যাচ্ছে। অনেকে প্রশ্ন করেন যে, আহ্‌মদীয়া জামাতের প্রতিষ্ঠাতার দাবীর সত্যতার প্রমাণ কি? সংক্ষেপে এ সম্বন্ধে কয়েকটি প্রমাণ নীচে উল্ল্যেখ করা হলো। আশা করি সত্য-সন্ধানী সুধীবৃন্দ বিষয়টি উম্মুক্ত হৃদয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখবেন। এ সম্বন্ধে প্রধানতঃ যে পাঁচটি বিষয়ের দিকে সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই সেগুলো হলোঃ

১. দাবীকারক পাক-পবিত্র শিক্ষা সহকারে এসেছেন কি না?
২. তিনি বড় বড় নিদর্শনসহ আগমন করেছেন কি না- যেগুলো সার্বিকভাবে কেউই মোকাবেলা করতে পারে না?
৩. ধর্মীয় গ্রন্থাবলীতে বর্ণিত ভবিষ্যদ্বাণী সমূহ সার্বিকভাবে দাবীকারকের উপর প্রযোজ্য হয় কিনা এবং ভবিষ্যদ্বাণীগুলো যথার্থভাবে পূর্ণ হয়েছে কি না?
৪. যে সময় বা যুগে তাঁর আবির্ভাব ঘটেছে সেই যুগের অবস্থাবলী কোন সংস্কারকের আবির্ভাবের সাক্ষ্য বহন করে কি না?
৫. দাবীকারকের ব্যক্তি-চরিত্র ‘তাকওয়া’ এবং আধ্যাত্মিক আকর্ষণ শক্তি উচ্চ পর্যায়ের অন্তর্ভুক্ত কিনা?

আহ্‌মদীয়া জামাতের প্রতিষ্ঠাতা ঘোষণা করেছেন,

‘সমগ্র কুরআন মজীদে মোটামুটি সেই সকল স্বতঃসিদ্ধ কথাই বর্ণিত রয়েছে যেগুলো দ্বারা আল্লাহ্‌র তরফ হতে আদিষ্ট কোন ব্যক্তির (মামুর মিনাল্লাহ্‌-এর) সত্যতার সন্ধান পাওয়া যায়। এখন যে ব্যক্তি ঈমান আনা আবশ্যক মনে করে সে যেন এই পাঁচটি বিষয়ের দ্বারা আমাকে পরীক্ষা করে’। (আল-হাকাম)

এই নিবন্ধে উপরোক্ত পাঁচটি বিষয়ের প্রেক্ষিতে কয়েকটি সাক্ষ্য-প্রমাণ সম্পর্কে সংক্ষেপে উল্ল্যেখ করা হলো। বিস্তারিত জানার জন্যে সংশ্লিষ্ট ধর্মগ্রন্থাবলী, অন্যান্য গ্রন্থাবলী এবং ইতিহাস ভিত্তিক বাস্তব ঘটনাবলী দ্রষ্টব্য। (উল্লেখ্য যে, পবিত্র কুরআনের আয়াত নম্বরসমূহে ‘বিসমিল্লাহ্‌’-যুক্ত আয়াতকে এক নম্বর আয়াত ধরে গণনা করা হয়েছে কেননা উক্ত আয়াত সংশ্লিষ্ট সূরারই অবিচ্ছেদ্য অংশ)।
১। পবিত্র শিক্ষাসহ আগমনের প্রমাণঃ

ক. সূরা জুমুআঃ ৩ নম্বর আয়াতে যে চারটি উদ্দেশ্যে হযরত মুহাম্মদ (সঃ)-এর আবির্ভাবের উল্ল্যেখ রয়েছে উক্ত ৪টি বিষয় ঐ সূরার ৪ নম্বর আয়াত অনুযায়ী আখেরী যুগে আগমনকারী হযরত ইমাম মাহ্‌দী ও মসীহ্‌ মাওউদ (আঃ)-এর জন্যও প্রযোজ্য।
খ. সূরা সাফঃ ৭ আয়াতে আগমনকারী মহাপুরুষকে ‘আহ্‌মদ’ নামে অভিহিত করা হয়েছে। ‘আহ্‌মদ’ অর্থ ‘প্রশংসাকারী’ এবং ‘জামালী’ বা সৌন্দর্য প্রকাশক গুণাবলীর জন্যে প্রযোজ্য।
গ. ইমাম মাহ্‌দী (আঃ) সংক্রান্ত হাদীসে বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি আধ্যাত্মিক নেতা হবেন (ইমামাম মানহ্‌দীয়ান) ন্যায়-বিচারক (হাকামান আদলান), ত্রিত্ববাদী ক্রুশীয় বিশ্বাসের মুলোৎপাটন করবেন (ইয়াকসারুস সালীব), ‘শূকর’ বধ করবেন (ইয়াকতুলুল খিনজির) অর্থাৎ শূকর তুল্য অপত্রিতা এবং নোংরামী দূরীভূত করবেন এবং ‘শূকর তুল্য’ দুষ্ট প্রকৃতির কিছু কিছু লোক তাঁর দোয়ার মাধ্যমে দৃষ্টান্তমূলকভাবে ঐশী শাস্তি ভোগ করবে এবং শান্তিবাদী নীতির অনুসরণ করবেন। (মসনদ আহ্‌মদ বিন হাম্বল ও অন্যান্য হাদীস)
ঘ. পবিত্র কুরআনে ধর্মীয় স্বাধীনতার মৌলিক নীতি দ্ব্যার্থহীনভাবে ঘোষিত হয়েছে (বাকারাঃ ২৫৭) এবং এই নীতি অনুযায়ী হযরত মির্যা গোলাম আহ্‌মদ (আঃ) ঘোষণা করেছেন,

‘অসির কাজ আমি মসী দ্বারাই করেছি’

আল্লাহ্‌ তা’আলা তাঁকে সুলতানুল কলম তথা লেখনী সম্রাট উপাধি দ্বারা ভূষিত করেছেন। তিনি দৃপ্ত কণ্ঠে ঘোষণা করেছেন,

আমার ধর্মীয় বিশ্বাসের সংক্ষিপ্ত সার হলো- “লা ইলাহা ইল্লালাহু মুহাম্মাদুর রসুলুল্লাহ”। (তৌজিয়ে মারাম পৃঃ ২৩)

২। ঐশী-নিদর্শনমূলক প্রমাণঃ

ক. সূরা কিয়ামাহঃ ৯-১০ ও তাকভীরঃ ২ আয়াতের আলোকে এবং দারকুতনী হাদিসে বর্ণিত ভবিষ্যদ্বাণী অনুযায়ী হযরত ইমাম মাহ্‌দী (আঃ) তাঁর দাবীর সত্যতার নিদর্শন রূপে চন্দ্র ও সূর্যের বিশেষ গ্রহণ ১৮৯৪ খৃস্টাব্দে পূর্ব গোলার্ধে এবং ১৮৯৫ খৃস্টাব্দে পশ্চিম গোলার্ধে সংঘটিত হয়ে বিশ্বাবাসীকে তাঁর আগমন বার্তা জানিয়ে দিয়েছে। এই অপূর্ব ঘটনা সম্পর্কে প্রাচীন ধর্ম গ্রন্থাবলীতেও উল্ল্যেখ রয়েছে। (মথি ২০:২৯-৩০, প্রকাশিত বাক্য ৬-১, ভগবত পুরানঃ ১৩ স্কন্দ)
খ. সূরা হাক্কাঃ ৪৫-৪৮ আয়াতে বলা হয়েছে যে, আল্লাহ্‌র নামে মিথ্যা বানিয়ে বললে তিনি মিথ্যাবাদীকে কঠোর শাস্তি দান করেন এবং কোন মানুষ সেই মিথ্যা দাবীকারককে ঐশী শাস্তি হতে রক্ষা করতে পারবে না।
গ. সূরা জ্বিনঃ ২৭-২৮ আয়াতে আল্লাহ্‌ তা’আলা বলেছেন যে, তাঁর মনোনীত বান্দাকে তিনি অদৃশ্য সম্বন্ধে জানাতে পারেন। হযরত মসীহ্‌ মাওউদ (আঃ) ওহী ইলহাম লাভের দাবী করেছেন এবং সেগুলো পবিত্র কুরআনের শিক্ষার অধীনে প্রাপ্ত।
ঘ. সূরা বাকারাঃ ৯০, আলে ইমরানঃ ৬২ এবং জুমুআঃ ৭ আয়াতে সত্যাসত্য নিরূপণের জন্য বিনীত দোয়ার মাধ্যমে ঐশী-মীমাংসার পদ্ধতি (মুবাহালা) বর্ণিত হয়েছে। ভবিষ্যদ্বাণী অনুযায়ী হাজার হাজার নিদর্শন প্রকাশিত হয়েছে, বিরুদ্ধবাদীগণ ধ্বংস প্রাপ্ত হয়েছে এবং বহু নিদর্শন ভবিষ্যতে পূর্ণ হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে। আহ্‌মদীয়া জামাতের ইতিহাস পাঠ করলে এই সকল বিষয়ে সম্যকভাবে জানা যাবে।
ঙ. খৃস্ট-ধর্মাবলম্বীদের জন্য বিশেষ ঐশী নিদর্শনাবলীঃ পাদ্রী আব্দুল্লাহ আথমের সঙ্গে ভারতবর্ষের অমৃতসরে ১৫ দিন ব্যাপী বাহাস (১৮৯৩ইং), তাঁর সম্পর্কে প্রাপ্ত ইলহাম ভিত্তিক ভবিষ্যদ্বাণী এবং ভবিষ্যদ্বাণীর শর্তানুযায়ী আথমের মৃত্যু। পাদ্রী হেনরী মার্টিন ক্লার্ক কর্তৃক মিথ্যা মোকদ্দমা এবং পরিণামে হযরত মির্যা সাহেবের সম্মানজনক বিজয়ের নিদর্শন।
পাঞ্জাবের খৃস্ট সমাজের তৎকালীন লর্ড বিশপ রেভারেন্ড জর্জ লেফ্রাই সাহেবের প্রতি চ্যালেঞ্জ এবং লেফ্রাই সাহেবের টাল বাহানা (১৯০০ ইং)।
শ্রীনগরের খানইয়ার মহল্লায় হযরত ঈসা (আঃ)-এর কবর সম্পর্কে ঘোষণা (১৮৯৫ ইং) এবং ‘মসীহ্‌ হিন্দুস্তান মে’ ও খৃস্টধর্ম সংক্রান্ত অন্যান্য পুস্তকাবলী প্রণয়ন ও প্রকাশ এবং অন্যান্য নিদর্শনাবলী।
চ. হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের জন্য বিশেষ ঐশী নিদর্শনাবলীঃ
১. পণ্ডিত লেখরাম পশোয়ারীর মৃত্যু সম্পর্কিত ভবিষ্যদ্বাণী (১৮৯৩ ইং) এবং উক্ত ভবিষ্যদ্বাণীর যথাসময়ে পূর্ণতা (১৮৯৭ ইং)।
২. স্বামী দয়ানন্দ সরস্বতী সম্পর্কিত ভবিষ্যদ্বাণী এবং তাঁর মৃত্যু (১৮৮৩ ইং)।
৩. পণ্ডিত ইন্দ্রমোহন মোরাদাবাদীর চ্যালেঞ্জ গ্রহণ এবং তাঁর পশ্চাদাপসরণ (১৮৮৫ ইং)।
৪. ‘শুভ-চিন্তক’ পত্রিকার পরিচালক সোমরাজ, পণ্ডিত ইচ্ছর চন্দ্র এবং পণ্ডিত ভগ্যরামের প্লেগ জনিত মৃত্যু (১৯০৭ ইং) এবং অন্যান্য নিদর্শনাবলী।
ছ. শিখদের জন্য বিশেষ নিদর্শনাবলীঃ
১. হযরত মির্যা সাহেব (আঃ) ১৮৯৫ ইং সনে ‘ডেরা বাবা নানক’ নামক স্থানে গমন করেন এবং বাবা নানকের মুসলমান হওয়ার প্রমাণ পেশ করেন। ‘সৎ বচন’ নামক পুস্তক প্রণয়ন ও প্রকাশ করতঃ অকাট্য দলিল দ্বারা প্রমাণ করা হয়েছে যে শিখ গুরু ‘বাবা নানক’ মুসলমান ছিলেন।
২. পাঞ্জাবের শিখ রাজপুত্র রাজা দিলীপ শিং সম্পর্কিত ভবিষ্যদ্বাণীর পূর্ণতা।
জ. বিরুদ্ধবাদী মৌলবী ও অন্যান্যদের জন্য বিশেষ নিদর্শনাবলীঃ
১. বাটালা নিবাসী মৌলবী মুহাম্মদ হোসেন সাহেবের জন্য প্রদর্শিত ঐশী নিদর্শন।
২. হুশিয়ারপুর নিবাসী মির্যা আহ্‌মদ বেগ ও তাঁর কন্যা মুহাম্মদী বেগম সংক্রান্ত ভবিষ্যদ্বাণী এবং তদনুযায়ী আহ্‌মদ বেগের মৃত্যু।
৩. ঝিলামের ফৌজদারী আদালতে জনৈক করমদীন কর্তৃক মামলায় হযরত মির্যা সাহেবের বেকসুর খালাস, ঝিলাম গমনের ফলে বিপুল সম্বর্ধনা এবং বহুলোকের বয়আত গ্রহণ। কাদিয়ানের মসজিদে মোবারকে আসার পথে বিরুদ্ধবাদীদের দেওয়াল নির্মাণ এবং ঐশী প্রতিশ্রুতি মোতাবেক দেওয়াল ভেঙ্গে ফেলার জন্য আদালত কর্তৃক নির্দেশ প্রদান। মৌলবী রসূল বাবা লিখিত ‘হায়াতে মসীহ্‌’ পুস্তকের বিষয় খণ্ডন করতঃ ‘ইতমামে হুজ্জত’ নামক পুস্তকের প্রণয়ন ও প্রকাশ।
সাদুল্লাহ্‌ লুধিয়ানবীর বিরোধিতাপূর্ণ ব্যবহার এবং উহার ফলশ্রুতি। হযরত সাহেব কর্তৃক ইসলামের শিক্ষা ও সৌন্দর্য, ইসলামের শ্রেষ্ঠত্ব ও মহা বিজয়, ইসলামের কল্যাণময় আশীষ ধারার চির প্রবহমানতা, ইসলামের পুনরুত্থান ও পুনর্জাগরণ, ইসলামের বিরুদ্ধে আনীত সর্ব প্রকার অপবাদের খন্ডন এবং ইসলামের শ্রেষ্ঠত্ব প্রতিষ্ঠার্থে বাস্তব-সম্মত পদক্ষেপপূর্ণ পুস্তকাবলী প্রণয়ন ও প্রকাশ।
ঝ. ভারতবাসীদের জন্য বিশেষ নিদর্শনাবলীঃ
১. পাঞ্জাবে মহামারী রূপে প্লেগের আক্রমণের ভবিষ্যদ্বাণী, আহ্‌মদীয়া জামাতের সদস্যদের প্লেগের আক্রমণ হতে অব্যাহতি লাভ সম্পর্কিত ভবিষ্যদ্বাণী।
২. লাহোরে অনুষ্ঠিত ‘সর্বধর্ম সম্মেলন’ (১৮৯৭ ইং) এবং উহাতে পঠিত প্রবন্ধের শ্রেষ্ঠত্ব। (‘ইসলামী উসুল কি ফিলসফি’)
ঞ. আফগানিস্তানের জন্য বিশেষ নিদর্শনঃ সাহেবযাদা সৈয়দ আবদুল লতিফ সাহেব এবং মৌলবী আব্দুর রহমান সাহেবের শাহাদাত বরণ সম্পর্কিত ভবিষ্যদ্বাণী।
ট. ইরানের জন্য বিশেষ নিদর্শনঃ কিসরার রাজ প্রাসাদ তথা ইরানের ‘কম্পন অবস্থা’ (বিপ্লব অবস্থা) সম্পর্কিত ভবিষ্যদ্বাণীর পূর্ণতা।
ঠ. রাশিয়া, ইউরোপ ও আমেরিকার জন্য বিশেষ নিদর্শনঃ
১. রাশিয়ার তদানীন্তন সম্রাট জার সম্পর্কিত ভবিষ্যদ্বাণীর পূর্ণতা।
২. রাশিয়ার ভবিষ্যত সংক্রান্ত ভবিষ্যদ্বাণী।
৩. আমেরিকান পাদ্রী আলেকজান্ডার ডুই সম্পর্কিত ভবিষ্যদ্বাণী।
৪. ইংল্যান্ডের ধর্মযাজক জন হুগ স্মিথ পিগট সম্পর্কিত ভবিষ্যদ্বাণী।
৫. ইয়াজুজ ও মাজুজ সংক্রান্ত ভবিষ্যদ্বাণীর পূর্ণতা।
৬. প্রথম ও দ্বিতীয় মহাযুদ্ধ সম্পর্কিত ভবিষ্যদ্বাণী।
৭. ইসলামের প্রতি ইউরোপীয়দের আকৃষ্ট হওয়ার ভবিষ্যদ্বাণী।
ড. বাঙ্গালীদের জন্য বিশেষ ঐশী নিদর্শনঃ বঙ্গভঙ্গ আন্দোলন সম্পর্কিত ভবিষ্যদ্বাণীর পূর্ণতা (১৯১১ ইং)।
ঢ. মধ্য প্রাচ্যবাসীদের জন্য বিশেষ ঐশী নিদর্শনঃ
১. ঈদুল আযহার দিনে আরবী ভাষায় ‘খুতবা ইলহামীয়া’ প্রদান (১৯০০ ইং)।
২. ১৮৯৭ খৃষ্টাব্দে তুরষ্কের কনসলের সংগে সাক্ষাৎকালে তুরস্কের সুলতানের আসন্ন বিপদাবলী সম্পর্কে ভবিষ্যদ্বাণী।
৩. আরবী ভাষায় জনৈক বাগদাদী মৌলবীর আপত্তির জবাব।
৪. ‘লুজ্জাতুন নূর’ নামক পুস্তকের মাধ্যমে আরব, সিরিয়া, বাগদাদ, ইরাক ও খোরাসানের আলেমদিগকে সুসংবাদ প্রদান।
৫. আরবী ভাষায় ঐশী সাহায্যে ব্যুৎপত্তি লাভ, চল্লিশ হাজার ‘শব্দমূল’ শিক্ষা এবং ২০ খানা আরবী পুস্তক প্রণয়ন।
ণ. চীন ও জাপানের জন্য বিশেষ ঐশী নিদর্শনঃ প্রাচ্যে দুইটি রাজনৈতিক শক্তির বিকাশের ভবিষ্যদ্বাণী এবং উহা জাপান ও চীনের অভ্যূদয়ের মাধ্যমে পূর্ণ হয়েছে।
ত. পাকিস্তানের জন্য বিশেষ ঐশী নিদর্শনঃ
১. পাকিস্তানে হিজরত সম্পর্কিত ভবিষ্যদ্বাণী।
২. পাকিস্তানের প্রধান মন্ত্রী জুলফিকার আলী ভূট্টো এবং প্রেসিডেন্ট জিয়াঊল হকের প্রচন্ড বিরোধিতা এবং তাদের শোচনীয় পরিণতি সম্পর্কিত ভবিষ্যদ্বাণীর পূর্ণতা।
থ. বিশ্ববাসীর জন্য বিশেষ নিদর্শন ও জামাতের চূড়ান্ত সাফল্যঃ
১. ১৮৬৪ ইং সনে স্বপ্নে হযরত রসূল করীম (সঃ)-এর দর্শন লাভ এবং প্রত্যাদিষ্ট সংস্কারক হওয়ার পূর্বাভাস। ১৮৬৮ ইং সনে ইলহাম লাভ করেন ‘বাদশা তেরে কাপড়োঁ ছে বরকত ঢুণ্ডেঙ্গে’ অর্থাৎ বাদশা তোমার বস্ত্র হতে আশীর্বাদ অনুসন্ধান করবেন।
২. বিশেষ সূর্য ও চন্দ্র গ্রহণের ভবিষ্যদ্বাণীর পূর্ণতা, উল্কাপাত ও নক্ষত্রের উদয়।
৩. পাঁচটি বিশেষ ঐশী নিদর্শনমূলক ভবিষ্যদ্বাণী। (তাজাল্লিয়াতে ইলাহিয়া)
৪. ‘সুলতানুল কলম’ হিসেবে প্রাপ্ত ঐশী উপাধী।
৫. কবূলিয়াতে দোয়া সম্পর্কিত ঘটনাবলী এবং জামা ও পাগড়ীতে রক্তবর্ণ চিহ্নের ঘটনা।
৬. স্বীয় জীবন, কার্যাবলী ও সাফল্য, মৃত্যু এবং ‘কুদরতে সানিয়া’ হিসাবে খেলাফতের অব্যাহত ধারা, ওসীয়্যত ব্যবস্থা প্রবর্তন।
৭. ‘মুসলেহ মাওউদ’ সংক্রান্ত ভবিষ্যদ্বাণীর পূর্ণতা।
৮. বিরুদ্ধবাদীদের সকল চক্রান্তের অবসান এবং তিন শতাব্দীর মধ্যে বিশ্বব্যাপী আহ্‌মদীয়া জামাতের মাধ্যমে ইসলামের মহাবিজয়ের ভবিষ্যদ্বাণী।

৩. ১। ধমীয় গ্রন্থাবলীতে বর্ণিত ভবিষ্যাদ্বাণীসমূহের পূর্ণতার সাক্ষ্য প্রমাণঃ

পবিত্র কুরআনে সূরা জুমুআতে তাঁর আবির্ভাব হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)-এর দ্বিতীয় আগমন বলে অভিহিত করা হয়েছে। সূরা সাফে তাঁকে ‘আহ্‌মদ’ বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। সূরা নূরে ‘ঈসা-সদৃশ’ খলীফা হিসাবে ইংগিত করা হয়েছে। সূরা কাহাফে তাঁকে ‘যুল কারনায়ন’ বলা হয়েছে। হাদীসের গ্রন্থাবলীতে তাঁকে কখনও ‘ইমাম মাহ্‌দী’, কখনও ‘ঈসা ইবনে মরিয়ম’, ‘ইবনে মরিয়াম’, ‘খলীফাতুল্লাহিল মাহ্‌দী’ বলা হয়েছে। হিন্দুদের শাস্ত্রাদিতে কলি যুগের জন্য প্রতিশ্রুত মহাপুরুষকে ‘কল্কি অবতার’ এবং বৌদ্ধ ধর্মে ‘মৈত্তেয়’ বলা হয়েছে। তিনি পার্শী ধর্মে ‘মসীদর বহরমী’, ‘সুসান’ এবং ‘পবিত্র আহ্‌মদ’ নামে তিনি পরিচিত, খৃষ্টানদের জন্য তিনি ‘মনুষ্য পুত্র ঈসা’ নামে এবং শিখ ধর্মে ‘রেশাদ’ ও ‘মাহ্‌দীমীর’ বলে অভিহিত। বস্তুতঃ সকল ধর্মের অনুসারীদের জন্য শেষ যুগে তিনি এক ও অভিন্ন ঐশী সংস্কারক হবেন। একই যুগে ভিন্ন ভিন্ন ব্যক্তি প্রত্যাদিষ্ট হওয়ার প্রশ্ন বর্তমান যুগের প্রেক্ষাপটে অযৌক্তিক এবং হাস্যকর। হাদীসে বর্ণিত হয়েছে, ‘মাহ্‌দী ঈসা ইবনে মরিয়ম ব্যতীত অপর কেহ নহেন’। (ইবনে মাজা)

পবিত্র কুরআনের কয়েকটি রেফারেন্স দৃষ্টান্ত হিসেবে নীচে উল্ল্যেখ করা হলোঃ (এ গুলোর বিস্তারিত বিশ্লেষণ, হাদীসের উক্তি ইত্যাদি বিষয়ে জানার জন্য হযরত মির্যা সাহেব (আঃ)-এর লেখা ৮৮ খানা পুস্তক এবং আহ্‌মদীয়া সাহিত্য, পত্র-পত্রিকাদি দ্রষ্টব্য)।

ক. বূ্রুজী’ আবির্ভাবঃ সূরা জুমুআঃ ৪ আয়াতে আধ্যাত্মিক অর্থে বুরুজীভাবে হযরত মুহাম্ম (সাঃ)-এর দ্বিতীয় আবির্ভাবের ভবিষ্যদ্বণী রয়েছে। এ সম্বন্ধে বুখারী শরীফে বর্ণিত হাদীস ‘লাও কানাল ঈমানু মোয়ালিৱকান ইনদা সুরাইয়া লানালাহু রেজালুন মিনহা-উলায়েঁ প্রণিধানযোগ্য।
খ. খেলাফতের প্রতিশ্রুতিঃ সূরা নূরঃ ৫৬ আয়াতে খিলাফত প্রতিষ্ঠার ঐশী প্রতিশ্রুতি রয়েছে যা বিশেষভাবে ইসলামের আর্বিভাব-যুগে খোলাফায়ে রাশেদীনের মাধ্যমে এবং আখেরী যুগে ইমাম মাহ্‌দী ও মসীহ্‌ মাওউদ (আঃ)-এর মাধ্যমে বাস্তবায়িত হয়েছে। এ সম্বন্ধে মেশকাত ও অন্যান্য হাদীস দ্রষ্টব্য।
গ. আবির্ভাব কালঃ সূরা সিজদাঃ ৬ আয়াত অনুযায়ী ইসলাম ধর্ম প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর (সহী হাদীস অনুযায়ী প্রথম তিনশত বছর ইসলামের গৌরবময় যুগ) এক হাজার বছরে উহা আকাশে উঠে যাবে। অর্থাৎ ১০০০ + ৩০০ বছর = ১৩০০ বছর পর উপরের (ক) ক্রমিকে বর্ণিত সূরা জুমুআর ভবিষ্যদ্বাণী অনুয়ায়ী আকাশ হতে ধরাপৃষ্ঠে ঈমানকে আনয়নের জন্য প্রতিশ্রুত মহাপুরুষের আগমন অবধারিত। ফলতঃ চৌদ্দশত হিজরীর প্রারম্ভেই আহ্‌মদীয়া জামাতের প্রতিষ্ঠাতা ঐশী নির্দেশে তাঁর দাবী পেশ করেছেন।
ঘ. বিশ্ব বিজয়ের প্রতিশ্রুতিঃ সূরা সাফঃ ১০, ফাতাহঃ ২৯-৩০, তাওবাঃ ৩৩ প্রভৃতি আয়াত এবং সংশ্লিষ্ট হাদীস ও বুযূর্গানে উম্মতের অভিমত দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, ‘প্রতিশ্রুত মসীহ্‌’ এবং প্রতীক্ষিত মাহ্‌দী’ (আঃ)-এর মাধ্যমে আখেরী যুগে ইসলাম প্রচার ব্যবস্থা সুসংগঠিত হবে এবং ঐশী সাহায্যের দ্বারা ইসলাম বিশ্ব-বিজয়ী হবে।
ঙ. ইমাম মাহ্‌দী (আঃ)-এর বংশ, নাম, দৈহিক গঠন এবং আর্বিভাব স্থানঃ আনআমঃ ২১, সাফঃ ৭, জুমুয়াঃ ৪, ইয়াসিনঃ ২১-২৬ এবং সংশ্লিষ্ট হাদীসের ভবিষ্যদ্বাণী এবং বুযূর্গানে উম্মতের অভিমতের আলোকে বিষয়টির প্রকৃত তাৎপর্য পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে যে, আহ্‌মদীয়া জামাতের প্রতিষ্ঠাতার মাধ্যমে ভবিষ্যদ্বাণীসমূহ পূর্ণতা লাভ করেছে।
চ. চরম বিরোধিতা সম্পর্কিত ভবিষ্যদ্বাণীসমূহঃ সূরা বাকারাঃ ২৯৫ ইয়াসিনঃ ৩১, বুরুজঃ ৮-১২, আনআমঃ ১১ এবং সংশ্লিষ্ট হাদীসের ভবিষ্যদ্বাণী অনুযয়ী সমকালীন অহঙ্কারী-দাম্ভিক আলেমগণ আহ্‌মদীয়া জামাতের বির্বদ্ধে বিষোদগার করে চলেছে। এর দ্বারাও দাবীকারকের সত্যতাই প্রমাণিত হয়।

৩.২। অন্যান্য ধর্ম গ্রন্থের ভবিষ্যদ্বাণীসমূহের পূর্ণতার প্রমাণসমূহঃ

বিশ্বজনীন ধর্ম হিসাবে ইসলামই একমাত্র ধর্ম যা পৃথিবীর অন্যান্য ধর্ম এবং ধর্মীয় মহাপুরুষদিগকে সত্য বলে স্বীকৃতি দিয়েছে (লাকাদ বায়াসনা ফিকুলিৱ উম্মতির রাসূল- ইউনুসঃ ৪৮)। অবশ্য একথা সত্য যে, বিভিন্ন কারণে অতীতের গ্রন্থাবলী সংরক্ষিত হয় নাই এবং তার ফলে অনেক ক্ষেত্রে এগুলো বিকৃতি এবং হস্তক্ষেপের শিকার হয়েছে। এতদসত্বেও প্রাচীন ধর্ম গ্রন্থাবলীতে অল্প বিস্তর ভবিষ্যদ্বাণী দেখতে পাওয়া যায় যেগুলো দ্বারাও ‘আখেরী তথা কলি যুগ’ এবং সেই যুগের মহাপুরুষের বিভিন্ন লক্ষণ ও চিহ্নাবলীর উল্ল্যেখ দেখতে পাওয়া যায় যেগুলো বর্তমান কালে পূর্ণতা লাভ করেছে। সংক্ষেপে কয়েকটি ভবিষ্যদ্বাণীর বরাত উল্ল্যেখ করলাম।

ক. হিন্দু ও বৌদ্ধ ধর্মের ভবিষ্যদ্বাণীঃ ‘আহ্‌মদ’ নামক ঋষি তাঁর আত্মিক পিতার আদর্শ অনুযায়ী আসবেন (অথর্ব বেদ ২০ কান্ড, ১৯৫ সুক্ত)। আহ্‌মদের আবির্ভাব স্থলের নাম হবে কদন (অথর্ব বেদ, ৯৭ সুক্ত)। সেই সময়ে বিশেষ চন্দ্র ও সূর্যগ্রহণ হবে (মহাভারত বনপর্ব, ভাগবৎপুরাণ-৯৩ স্কন্ধ)। মহাভারতের ৯ম পর্ব ৯৯০-৯৯৯ অধ্যায়গুলোতে কলিযুগের বিভিন্ন চিহ্ন ও লক্ষণসমূহ বর্ণিত হয়েছে যেগুলো বর্তমান যুগে পূর্ণ হয়েছে। গীতার একাদশ অধ্যায় ‘শ্রীকৃষ্ণের বিশ্বরূপ’ সম্পর্কে যে সকল বিষয় বর্ণিত হয়েছে সেগুলো কলিযুগের মহাপুরুষ সম্পর্কে যথোপযুক্তভাবে প্রযোজ্য। বৌদ্ধ ধর্ম গ্রন্থ ‘অনাগত ভবিষ্য’ অনুযায়ী শেষ যুগে ‘মৈত্তেয়’ আসার ভবিষ্যদ্বাণী রয়েছে। ‘জৈনষ্টাকাতনী’ নামক বৌদ্ধ গ্রন্থে বর্ণিত আছে যে, শেষ যুগে আগমনকারী মহাপুরুষের নাম ‘এমদ’ হবে।
খ. পার্শী ধর্মের ভবিষ্যদ্বাণীঃ ‘পবিত্র আহ্‌মদ নিশ্চয় আগমন করবেন’ (যেন্দাবেস্তা, ৯ম খন্ড)। শেষ যুগে একজন ত্রাণকর্তার আবির্ভাব হবে (গাথা)। শাহ রহমতুল্লা (মসীহদর বহরমী বা সুসান নামে) এক পবিত্র পুরুষের আবির্ভাব হবে (সুস্তনাম সাসান পঞ্চমঃ ৩১-৩৩ শ্লোক)।
গ. ইহুদী ও খৃষ্টধর্মের ভবিষ্যদ্বাণীঃ মসীহ্‌ একজন রসূল হবেন এবং তাঁর রাজত্ব কাল হাজার বছর স্থায়ী হবে (তালমুদ)। ‘প্রতিশ্রুত মসীহ মারা যাবেন এবং তাঁর রাজত্ব পুত্র ও পৌত্রের উপর বর্তাবে’ (তালমুদ)। বিদ্যুত যেমন পূর্ব দিক পর্যন্ত প্রকাশ পায় তেমনি মনুষ্য-পুত্রের আগমন হবে (মথি ২৪:২৭)। মানুষের গায়ে ব্যাথাজনক দুষ্টক্ষতের সৃষ্টি হলো ... সমুদ্রের জীবগণ মরলো ... প্রচণ্ড ভূমিকম্প হলো ... (প্রকাশিত বাক্য ১৬:২-২১)। উল্লেখ্য যে খৃষ্টধর্ম গ্রন্থের ২৯৬টি স্থানে শেষ যুগে মনুষ্যপুত্র মসীহ্‌ অর্থাৎ হযরত ইসা (আঃ)-এর আবির্ভাবের ভবিষ্যদ্বাণী রয়েছে।
ঘ. শিখ-মতবাদের আলোকেঃ তিনি প্রকৃত সিদ্ধগুরুর শিষ্য হবেন (গুরুগ্রন্থ সাহেব, রাগ তালংগ, মোহাল্লা-১)। সেই মহাপুরুষ পাঞ্জাবের বাটালা অঞ্চলে জমিদার পরিবারে আবির্ভূত হবেন (ভাইবালা জনম শাখী) তিনি ‘রেশাদ’ নামে অভিহিত হবেন যার অর্থ ‘খোদার প্রিয়’ এবং ‘নৈকট্য প্রাপ্ত’ (ভাইবালা জনম শাখী)। চন্দ্র ও সূর্য তাঁর আগমন বার্তা ঘোষণা করবে (গুরু গ্রন্থ সাহেব, মোহাল্লা- ৭, ঝুলনা- ৪)। এক অবতার অর্থাৎ মাহ্‌দীমীর প্রেরিত হবেন। তিনি রাক্ষস বধ করবেন, সমগ্র বিশ্বে খ্যাতি লাভ করবেন... (গুরা গোবিন্দ সিং, ১০ম গ্রন্থ, চব্বিশ অবতার অধ্যায়)।

৪। আবির্ভাব যুগের অবস্থাবলীর সাক্ষ্য প্রমাণঃ

ক. আখেরী যামানার বিশেষ নিদর্শনাবলীর প্রকাশঃ সূরা তাকভীরঃ ২-১৯, ইনফিতার, ইনশিকাক, যিলযাল, বুরুজ, কারিয়াহ এবং সংশ্লিষ্ট হাদীসের ভবিষ্যদ্বাণীর আলোকে পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, কতকগুলো বিশেষ ঘটনা, চিহ্নাবলী এবং নিদর্শন প্রকাশিত হয়েছে যদ্বারা ‘আখেরী যুগ’ সুষ্পষ্টরূপে চিহ্নিত হয়েছে।
খ. ইয়াজুজ মাজুজ ও দাজ্জাল সংক্রান্ত ভবিষ্যদ্বাণীঃ সূরা আম্বিয়াঃ ৯৬-৯৮, কাফঃ ৫-৬ ও ৯৫-৯৯ এবং সংশ্লিষ্ট হাদীসের ভবিষ্যদ্বাণী সম্বলিত তথ্যাবলী হতে একদিকে যেমন ইয়াজুজ-মাজুজ ও দাজ্জালের ফেতনা ফ্যাসাদ সম্পর্কে জানা যায়, অপরদিকে সেই ফেতনা হতে রক্ষাকারী প্রতিশ্রুত মসীহ্‌ (আঃ)-এর আগমন সম্পর্কেও জানা যায়। ‘দাজ্জাল’ বলতে ত্রিত্ববাদী মতবাদ এবং ‘ইয়াজুজ-মাজুজ’ বলতে পাশ্চ্যত্যের দু’টি প্রধান সামরিক রাজনৈতিক জোট এবং উহাদের ফেতনার কথা বলা হয়েছে।
গ. ‘আযাব’ সংক্রান্ত ঐশী নীতির আলোকেঃ সূরা বনী-ইস্রায়েলঃ ১৬-১৭; রহমানঃ ৩২-৪৬, যিলযাল এবং সংশ্লিষ্ট হাদীসের ভবিষ্যদ্বাণী অনুযায়ী ঐশী আযাব হতে উদ্ধারকারী ইমাম মাহ্‌দী ও মসীহ্‌ মাওউদ (আঃ)-এর আগমন পৃথিবীব্যাপী অগণিত আযাব ও ঐশী শাস্তিমূলক নিদর্শনের ক্রমবর্ধমান প্রকাশ সম্পর্কে সমুজ্জ্বল সাক্ষ্য বহন করছে।
ঘ. ইহুদী জাতির পুনঃ একত্রীকরণ সংক্রান্ত প্রতিশ্রুতিঃ সূরা বনী ইস্রায়েলঃ ১০৫, আম্বিয়াঃ ৯৮, ১০৬ এবং সংশ্লিষ্ট হাদীস অনুযায়ী আখেরী যুগের অন্যতম বিশেষ নিদর্শন এবং সনাক্তকারী ঘটনা হিসেবে ‘ইস্রায়েল’ নামক ইহুদী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা (১৯৪৯ ইং) এবং দু’হাজার বছর পর ইহুদীদের পুনঃএকত্রিত হওয়ার ঘটনা জ্বলন্ত সাক্ষ্য বহন করছে যে, বর্তমান যুগই প্রতিশ্রুত মসীহ্‌ (আঃ)-এর যামানা।
ঙ. হাদীসের বিভিন্ন ভবিষ্যদ্বাণীতে আখেরী যুগের অবস্থা এবং সনাক্তকারী বিশেষ চিহ্ন ও ঘটনাবলী সম্পর্কে উল্ল্যেখ করা হয়েছেঃ যানবাহন হিসেবে উটের ব্যবহার উঠে যাবে, ধর্মীয় জ্ঞান এবং যথাযথ অনুশীলনের তীব্র অভাব হবে, সৎকাজ হ্রাস পাবে, ঝগড়া-বিবাদ বৃদ্ধি পাবে, বেশী বেশী ভূমিকম্প হবে, বাদ্য-যন্ত্র এবং গায়িকা নারীর প্রাধান্য হবে, দলনেতা ফাসেক হবে, ইসলামের মাত্র নাম এবং কুরআনের মাত্র অক্ষর অবশিষ্ট থাকবে, মসজিদগুলি বাহ্যিক আড়ম্বরপূর্ণ হবে কিন্তু হেদায়াত শূণ্য হবে, আলেমগণ আকাশের নীচে নিকৃষ্টতম জীব হবে এবং ফেৎনা ফাসাদ ছড়াবে, আমানতের ব্যাপকভাবে খেয়ানত করা হবে, মানুষ অত্যধিক অত্যাচারী ও অহংকারী হবে, ব্যাভিচার বৃদ্ধি পাবে, সুদের ব্যাপক প্রচলন হবে, ধর্মকে দুনিয়ার পশ্চাতে রাখা হবে, অবৈধ সন্তান জন্মের হার বৃদ্ধি পাবে, উষ্ট্রচালকও বড় বড় অট্টালিকা নির্মাণ করবে, মুসলমানগণ ৭৩ দলে বিভক্ত হবে। (যার মধ্যে একটি ব্যতীত সকলে ঝগড়া-বিবাদের আগুনে থাকবে, ইত্যাদি ইত্যাদি।) বলা অনাবশ্যক যে, বর্তমান যুগ বিশেষতঃ বিগত ১০০ বছরের পৃথিবীর ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে যে, এই সকল ভবিষ্যদ্বাণী পূর্ণ হয়েছে এবং এখনও এগুলোর বহিঃপ্রকাশ চতুর্দিকে পরিব্যাপ্ত রয়েছে।

৫। দাবী-কারকের ব্যক্তি-চরিত্র এবং ‘তাকওয়া’ ভিত্তিক প্রমাণঃ

ক. দাবী-কারকের সত্যতা নিরূপণের অন্যতম মাপকাঠি হিসেবে দাবীর পূর্বেকার জীবনের পবিত্রতা, সত্যবাদিতা এবং সাধূতার সাক্ষ্য-প্রমাণের কথা পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে। (সূরা ইউনুসঃ ১৭)
খ. হযরত মির্যা সাহেবের দাবীর পূর্ববর্তী জীবন কিরূপ ছিল সে সম্বন্ধে তাঁর ঘোরতর বিরুদ্ধবাদী মৌলবী মুহাম্মদ হুসেন বাটালবী সাহেব লিখেছেন, মির্যা সাহেব মুহাম্মদী শরীয়াতে দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত এবং পরহেযগার ও মুত্তাকী। (ইশয়াতুস সুন্নাহ, ৬ষ্ঠ বর্ষ, ৯ম সংখ্যা)
গ. সমকালীন পত্রিকার মন্তব্য প্রণিধান যোগ্যঃ ‘চরিত্রের দিক দিয়ে মির্যা সাহেবের সমগ্র জীবনে ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র কালিমার চিহ্নও পরিলক্ষিত হয় না। তিনি এক পরম পবিত্র ও মুত্তাকী জীবন যাপন করেছেন’ (অমৃতসর থেকে প্রাকাশিত ‘উকিল’ ৩১ মে, ১৯০৮ইং)
ঘ. হযরত মির্যা সাহেব (আঃ) ঘোষণা করেছেন,

‘কে আছে যে আমার জীবনীতে কোন দোষ-ত্রুটি বের করতে পারে’? (তাযকেরাতুশ শাহাদাতায়ন)

ঙ. হযরত মির্যা গোলাম আহ্‌মদ ইমাম মাহ্‌দী (আঃ) তাঁর দাবীর সত্যতা অনুধাবন করার জন্য একটি সহজ পন্থা হিসেবে ‘ইস্তেখারা’ দোয়ার প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করতঃ সকলের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছেন (‘নিশানে আসমানী’ পুস্তক, প্রকাশকাল ১৮৯২ইং)। আল্লাহ্‌ তা’আলার বিশেষ অনুগ্রহ এবং কল্যাণে শত-সহস্র লোক ইস্তেখারার মাধ্যমে আহ্‌মদীয়া জামাতের প্রতিষ্ঠাতার দাবীর সত্যতার স্বপক্ষে সন্দেহাতীত প্রমাণ পেয়ে আহ্‌মদীয়া জামাতে বয়আত গ্রহণ করেছেন।

উপসংহারঃ উদাত্ত আহ্বান

সুস্পষ্ট ভবিষ্যদ্বাণী অনুযায়ী ইমাম মাহ্‌দী (আঃ)-এর আগমন ঘটেছে। তাঁর দাবীর সত্যতা প্রমাণিত হয়েছে বাস্তব ঘটনা ও নিদর্শনাবলী দ্বারা। তিনি ইসলামের পুনঃপ্রতিষ্ঠা ও প্রচার, ইসলামের শ্রেষ্ঠত্ব ও বিশ্ব-বিজয়কে বাস্তবে প্রতিপন্ন করার জন্য খিলাফত ভিত্তিক একটি সুসংবদ্ধ জামা'ত গঠন করেছেন। আল্লাহ্‌ তা’আলার ফযলে আহ্‌মদীয়া মুসলিম জামা'ত প্রথম প্রতিষ্ঠা শতাব্দী অতক্রম করেছে ২২শে মার্চ ১৯৮৯ সালে। উল্লেখ্য যে, হযরত ইমাম মাহ্‌দী (আঃ)-এর ভবিষ্যদ্বাণী অনুযায়ী তাঁর আর্বিভাবের পর হতে তিনশত বছরের মধ্যে বিশ্বব্যাপী ইসলামের মহাবিজয় এবং প্রচার সুসম্পন্ন হবে। উক্ত ভবিষ্যদ্বাণী অনুযায়ী প্রথম শতাব্দী অতিক্রান্ত হয়েছে আহ্‌মদীয়াতের প্রতিষ্ঠা শতাব্দী হিসাবে এবং আগামী দ্বিতীয় শতাব্দী (১৯৮৯-২০৮৯ খৃঃ) ও তৃতীয় শতাব্দী (২০৮৯-২১৮৯ খৃঃ) হবে আহ্‌মদীয়া জামাতের মাধ্যমে ইসলামের বিশ্ব-বিজয়ের শতাব্দী’।

হযরত ইমাম মাহ্‌দী (আঃ) ঘোষণা করেছেন,

হে লোক সকল! শুনে রাখ যে, ইহা সেই খোদার ভবিষ্যদ্বাণী যিনি আকাশ ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন। তিনি এই জামা'তকে জগতের সমস্ত দেশে বিস্তৃত করবেন এবং যুক্তি-প্রমাণ ও নিদর্শনের মাধ্যমে সকলের উপর প্রাধান্য দান করবেন। .... আজকের দিন হতে তৃতীয় শতাব্দী পার হবে না, যখন ঈসা নবীর (আঃ) অপেক্ষারত কি মুসলমান কি খৃষ্টান সম্পূর্ণ নিরাশ ও হতাশ হয়ে (ঈসার আকাশ হইতে অবতরণের) এই মিথ্যা বিশ্বাসকে পরিত্যাগ করবে এবং পৃথিবীতে তখন একই ধর্ম (ইসলাম) হবে এবং একই ধর্ম নেতা (হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)) হবেন। আমি কেবল বীজ বপন করতে এসেছি। অতএব আমার দ্বারা বীজ বপন করা হয়েছে। এখন এই বীজ বৃদ্ধি প্রাপ্ত হবে এবং ফুলে ফলে সুশোভিত হবে। কেহ ইহাকে রোধ করতে সক্ষম হবে না। (তাযকেরাতুস-শাহাদাতায়ন, ১৯০৪ সনে প্রকাশিত)

হযরত রসূল করীম (সঃ) বলেছেন,

‘ইমাম মাহ্‌দী প্রকাশিত হওয়ার সংবাদ পাওয়া মাত্রই তার বয়আত করিও, যদি বরফের উপর হামাগুড়ি দিয়েও যেতে হয়। নিশ্চয় তিনি আল্লাহ্‌র খলীফা ইমাম মাহ্‌দী’। (ইবনে মাজা)

‘তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি তাঁকে (ইমাম মাহ্‌দীকে) পাবে, সে যেন তাঁর উপর ঈমান আনে এবং তাঁকে আমার সালাম পৌছিয়ে দেয়’। (কনজুল উম্মাল)

‘যে ব্যক্তি যুগ-ইমামের হাতে বয়আত না করে ইহ জগৎ ত্যাগ করেছে, সে জাহেলিয়তের মৃত্যুবরণ করেছে’। (মুসলিম, মসনদ আহ্‌মদ বিন হাম্বল)

হযরত রসূল আকরাম (সঃ)-এর নির্দেশাবলীর আলোকে আহ্‌মদী মুসলমানগণ হযরত ইমাম মাহ্‌দী (আঃ) কে মেনেছে এবং তাঁর প্রতিষ্ঠিত আহ্‌মদীয়া জামাতের মাধ্যমে ইসলামের খেদমতে আত্মনিয়োগ করেছে। যদি পবিত্র রসূল (সাঃ)-এর ঐরূপ নির্দেশ না থাকতো তাহলে তারা কখনই উপরোক্ত দাবীকারকের কথায় কর্ণপাত করতো না।

আহ্‌মদীয়া জামাতের উন্নতি সম্পর্কে আল্লাহ্‌ তা’আলা হযরত মির্যা সাহেবকে (আঃ) সম্বোধন করে বলেন,

‘আমি তোমাকে ইসলামের এক বিরাট জামা'ত দান করব’ (বারাহীনে আহ্‌মদীয়া গ্রন্থের ৪র্থ খন্ডে ৫৫৬ পৃষ্ঠা এবং তাযকেরা গ্রন্থের ১০৭ পৃষ্ঠা)

তিনি আরও বলেছেন,

‘ইসলামের পূনরায় সেই সজীবতা ও উজ্জ্বলতার দিন আসবে যা পূর্বে ছিল এবং সেই সূর্য পুনরায় স্বীয় গৌরব সহকারে উদিত হবে যেমন পূর্বে উদিত হয়েছিল’ (ফতেহ্‌ ইসলাম)

আল্লাহ্‌ তা’আলা তাঁকে জানিয়েছেন,

‘আমি তোমার প্রচারকে বিশ্বের প্রান্তে প্রান্তে পৌছাবো’।

হযরত মির্যা সাহেব (আঃ) বলেছেনঃ

খোদা তা’আলা আমাকে বারংবার জানিয়েছেন যে, তিনি আমাকে বহু সম্মানে ভূষিত করবেন এবং মানুষের হৃদয় আমার প্রতি ভক্তিতে আপ্লুত করে দিবেন। তিনি আমার অনুসারীগণের জামা'তকে সারা বিশ্বে বিস্তৃত করবেন এবং তাদেরকে সকল জাতির উপর জয়যুক্ত করবেন। আমার অনুসরণকারীগণ এরূপ অসাধারণ জ্ঞান ও তত্ত্ব-দর্শিতা লাভ করবে যে, তারা নিজ নিজ সত্যবাদিতার জ্যোতিতে এবং যুক্তিপূর্ণ প্রমাণ ও নিদর্শনাবলীর প্রভাবে সকলের মুখ বন্ধ করে দিবে। সকল জাতি এই নির্ঝর হতে তৃষ্ণা নিবারণ করবে এবং আমার সংঘ ফল-ফুলে সুশোভিত হয়ে দ্রুত বর্ধমান হবে এবং অচিরেই সারা জগৎ ছেয়ে ফেলবে। বহু বাধা-বিঘ্ন দেখা দিবে এবং পরীক্ষা আসবে কিন্তু খোদা সেগুলোকে পথ হতে অপসারিত করে দিবেন এবং আপন প্রতিশ্রুতি পূর্ণ করবেন। (তাজাল্লিয়াতে ইলাহিয়া পৃষ্ঠাঃ ২২)

-মুহাম্মদ খলিলূর রহমান সৌজন্যে : পাক্ষিক ‘আহ্‌মদী’ ৩০ এপ্রিল, ১৯৮৯ইং

১৭ ই এপ্রিল, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:২৩

সনেট কবি বলেছেন: আপনার বক্তব্য অনুযায়ী, যেহেতু ইমাম মাহদী এসে গেছেন সেহেতু ইমাম মাহদী আসার কোন সম্ভাবনা নেই। তথাপি লোকেরা অধির আগ্রহে ইমাম মাহদীর জন্য অপেক্ষা করছে। সেটাও হাদীসের কারণেই। কাবায় ইমাম মাহদী আশ্রয় নিবেন। তাঁকে যারা আক্রমণ করতে যাবে তারা মাটিতে ধ্বসে যাবে। ইমাম মাহদী সৈয়দ বংশের হবেন। এসবের সাথে মির্জা সাহেবের মিল নেই। এক ধরনের হাদিসের সাথে তিনি মিলেন অন্য ধরনের হাদিসের সাথে তিনি মিলেন না। এখন তবে ইস্তেখারাই সম্বল। কিন্তু ইস্তেখারাতেও যদি সমাধান না মিলে, তখন বুঝতে হবে কপাল খারাপ।
আমি ভাবছি। শুধুই ভাবছি। মাহদী আসলেন, চলে গেলেন, লোকেরা তাঁর দলে সামিল হলো না, এটা তবে কি হলো? এখন যে সব হাদিসের সাথে মির্জা সাহেবের দাবীর গরমিল সে সব হাদিসের তবে কি উত্তর? আমার বাবা মারা গেলেন। তাঁর মৃত্যু চেহারা নূরানী হয়ে গেল। অথচ মির্জা সাহেবের দাবী অনুযায়ী তেমন হওয়ার কথা ছিলনা। চরমোনাই পীরের এক মুরীদ বলল, সে মৃত পীরের সাথে সরাসরি কথা বলে। আমি এক পীর থেকে বিস্ময়কর কান্ড নিজে দেখেছি। নিজের চোখ আর কানকেতো আর অস্বীকার করা যায় না। চরমোনাই পীরের এক মুরীদ বল্ল, সে এস্তেখারা করে চরমোনাই পীরের মুরীদ হয়েছে। আহমদীরা ইস্তেখারা করে আহমদী হয়। এস্তেখারার এ কান্ডকীর্তিওতো বুঝা মুশকিল।

১৭ ই এপ্রিল, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:১৫

সনেট কবি বলেছেন: এক আহমদী বিরোধী বলল, মির্জা সাহেব বলেছিলেন, তিনি যদি মিথ্যাবাদী হন তবে যেন তিনি কলেরায় মারা যান। তারপর তিনি নাকি কলেরায় মারা গিয়ে নিজেকে মিথ্যাবাদী প্রমাণ করেছেন!

১৭ ই এপ্রিল, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৩৭

সনেট কবি বলেছেন: আপনার প্রমাণ সমূহ কর্তন যোগ্য। হয়ত আপনি নিজেও তা’ বুঝেন।

১৮ ই এপ্রিল, ২০১৮ ভোর ৬:৪৮

সনেট কবি বলেছেন: জনাব আকাশ, আপনি এস্তেখারার কথা বলেছেন। আজ আমি সেটা করেছি। চারটা স্বপ্নের মাধ্যমে আমাকে আপনাদের কথা বুঝানো হয়েছে। প্রথম ও চতুর্থ স্বপ্নের মাধ্যমে বলা হয়েছে আপন মুসলমান ভাইকে ধোকা দিয়ে অমুসলমান বানানোর দায়ে কওমে লুতের কাতারবন্দী করে আপনাদেরকে জাহান্নামে ফেলা হবে।
দ্বিতীয় স্বপ্নে আপনাদের উত্থানকে বলা হয়েছে মুসলমানদের ঈমানের পরীক্ষা।এক্ষেত্রে আপনাদের ভাষায় আপনাদেরকে দাজ্জাল বলা হয়েছে। দাজ্জালকে যেমন অনেক ক্ষমতা দেওয়া হবে মুসলমানদের ঈমান পরীক্ষার জন্য, তেমনি আপনাদের উত্থান ঘটছে মুসলমানদের ঈমান পরীক্ষার জন্য।এটা আপনাদের সঠিকতার প্রমাণ নয়। অতঃপর প্রকৃত মাহদীর আবির্ভাবে আপনাদের সব লোক যখন মাহদীর দলে চলে আসবে তখন আপনাদের গুরুরা সব হারিয়ে দিশেহারা হয়ে যাবে।
তৃতীয় স্বপ্নে বলা হয়েছে আপনারা ইহুদী সৃষ্ট। বনু কোরায়জার প্রতিশোধের অংশ হিসেবে মুসলমানদের মাঝে বিভেদ তৈরীর জন্য আপনাদের উত্থান ঘটানো হয়েছে। সংগত কারণে বিপদে আপদে খ্রিস্টানদেরকে সাথে নিয়ে ইহুদীরা আপনাদের পাশে থাকছে।

১৮ ই এপ্রিল, ২০১৮ ভোর ৬:৫৫

সনেট কবি বলেছেন: আপনাদের ভাষায় জান্নাত-জাহান্নাম আপনাদের হাতে। যারা আপনাদেরকে মানবে তারা জান্নাতে যাবে আর যারা আপনাতেরকে মানবে না তারা জাহান্নামে যাবে। আর খুরধার যুক্তি দিয়ে আপনারা মুসলমানের ঈমান সত্তর বার মারবেন সত্তরবার আল্লাহ আবার সে ঈমান জিন্দা করবেন অবশেষে একাত্তর বারের সময় মুসলমান ঈমানের সাথে মরবে। কাজেই আপনারা মুলত দাজ্জাল।

২৫| ১৮ ই এপ্রিল, ২০১৮ দুপুর ১২:২৮

নাঈমুর রহমান আকাশ বলেছেন: আস্তে, এতো উত্তেজিত হলে আপনার দ্বিতীয় স্ট্রোক হবে।
আপনি বলছিলেন যে যুক্তি দরকার। আমি যুক্তি দিলাম। মহানবী মুহাম্মদ (সা.) এর কাছেও অমুসলিমরা যুক্তি চেয়েছিলো। তিনি (সা.) যুক্তি দেয়ার পরে তাদের জবাবটা এরকমই ছিলো:
আপনার প্রমাণ সমূহ কর্তন যোগ্য। হয়ত আপনি নিজেও তা’ বুঝেন।
আপাতত একজন ইহুদীকে কোরআন ও ইসলামের দাওয়াত দিলে সেও এমনই কিছু বলে (নিজে দেখেছি)।
আমরা বলি না যে আহমদীয়াতে না আসলে সবাই জাহান্নামে যাবে। এটা আপনাদের বানোয়াট কথা। আমি নিজের ব্লগে এ সম্পর্কে বহু বলেছি। পড়লে জানতেন। তবে আপনি শুধুমাত্র প্রচলিত বিশ্বাসের জের ধরেই এগোতে চাচ্ছেন, সুতরাং আপনি বেয়াদবিমূলক কমেন্ট করা ছাড়া আর কিছুই করেন না আমার ব্লগে। মুসলমানদের মধ্যে যদি ক্রুটি না থাকতো, বিশ্বে মুসলিম দেশগুলো সবচেয়ে দুর্দশাগ্রস্ত হয়ে থাকতো না আজ।
আপনারা আপনাদের কাজ চালাতে থাকুন। খোদা তা'আলার অশেষ রহমতে আহমদীয়াতের অগ্রগতি আপনারা থামাতে পারবেন না।

১৮ ই এপ্রিল, ২০১৮ দুপুর ১:৫৭

সনেট কবি বলেছেন: আল্লাহর রহমত আপনাদের সাথে থাকলে আপনাদের কেউ থামাতে পারবে না- এটা একশত ভাগ সঠিক কথা। মুসলমানদের দূর্গতির কারণ আহমদীয়াতে যোগদান না করা নাকি এর পিছনে অন্য কারণ আছে সেটাও দেখা দরকার। তো এখন সবচেয়ে বেশী উন্নতির মাঝে রয়েছে ইহুদী। এখন তারা যদি বলে ইহুদী না হওয়াই দূর্গতির মূল কারণ তখন কি বলা যাবে? মহানবির (সাঃ) সময়েও মুসলমানেরা দূর্গতিতে ছিল আবার সুগতিতে ফিরেছে। আবার সাহাবায়ে কেরামের (রাঃ) সময়ে নিজেদের মধ্যে যুদ্ধে তাদের যথেষ্ট দূর্গতি হয়েছে।
আপনি প্রমাণে এক্কেবারে খারাপ দেননি। তো সবচেয়ে বড় যেটা আমার মনে ধরেছে, সেটা হলো এস্তেখারা। তো তাতে ফল আসলো নেগেটিভ। যাক এস্তখারা আমি আরো করব। কারণ আপনাদের ব্যাপারে আমার আগ্রহ রয়েছে। অবশ্য মুখোমুখি কয়েক দিন আলোচনা করতে পারলে ভালো হতো। তবে আপনারা আপনাদের বিষয়ে যথেষ্ট আন্তরিক। এটা একটা ভালো দিক।
আপনি প্রমাণ দিয়ে রেখেছেন। আমি যদি চাকুরী ছেড়ে ঢাকায় উঠতে পারি তবে এ নিয়ে কাজ করতে পারব। আমি যদি সত্য উৎঘাটনের কাজে নামি তবে তার সাথে চাকুরী করা যাবে না বলেই মনে করি। সে জন্য সংসার চালানোর মতো বিকল্প আয়ের পথ তৈরী হতে হবে। আজ আপনার একটা কথায় দারুণ ভালো লাগছে। আর তা’ হলো আহমদীয়াতে যোগদান না করলেও জান্নাতে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সে যাই হোক আমি যদি ঠিক বুঝতেপারি যে এটাই সঠিক। তবে সঠিকতাকে গ্রহণ করাতে আমার কখনো আপত্তি নেই। তবে কোনটা যে সঠিক সেটাতো আমাকে আগে বুঝতে হবে। কারণ আর যাই হোক আমি মোনাফেক হতে পারব না।

১৮ ই এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৫:৪৫

সনেট কবি বলেছেন: হাদিসের কথা অনুযায়ী যদি পবিত্র মক্কায় ইমাম মাহদী প্রকাশ পান। হাদীস অনুযায়ী তাঁর বিরুদ্ধে লড়তে গিয়ে যদি একটা বিশাল সৈন্য বাহিনী মাটিতে ডেবে যায়। অর্থাৎ যদি প্রমাণ হয়েই পড়ে ইনিই ইমাম মাহদী। তখন আহমদীরা কি করবে? তারা কি বর্তমান মাহদীর আনুগত্যে অটল থাকবে, না নতুন মাহদীর আনুগত্য গ্রহণ করবে?

১৯ শে এপ্রিল, ২০১৮ সকাল ৭:৩২

সনেট কবি বলেছেন: মাহদী হবেন পারসিক বংশের সৈয়দ। তারমানে তিনি মহানবীর (সাঃ) বংশ ও পারসিক বংশের মিলিত রূপ হবেন। মির্জা সাহেব পারসিক বংশের এটা ঠিক থাকলেও তিনি মহানবির (সাঃ) বংশের নন। একজন আহমদী আলেমও বললেন দুয়ে দুয়ে চার মিলবে না। কিন্তু কিছু মিলবে কিছু মিলবে না সেটাইবা কেমন করে হয়? মানুষের সন্দেহের কারণ সেখানেই। মহানবির (সাঃ) গ্রহণ যোগ্যতার একটি বড় কারণ আল কোরআন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.