নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ড. আনিসুর রহমান ফারুক, জন্ম বাংলাদেশে। একজন আজন্ম একাডেমিক। আন্তর্জাতিক ব্যবসায় বিষয়ে দুটি পিএইচডি অর্জন করে এখন আছি ফিনল্যান্ডের ইউনিভার্সিটি অব ভাসাতে, এসোসিয়েট প্রফেসর হিসেবে। একাডেমিক গবেষণার পাশাপাশি এখন ধর্ম নিয়ে পড়াশুনা আর লেখালেখির চেষ্টা করছি।

সংকীর্ণ হৃদয়

সংকীর্ণ হৃদয় › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভারবাহী গাধা কারা! তাদের কী বৈশিষ্ট্য?

০৫ ই অক্টোবর, ২০২২ রাত ১১:১১


যাদেরকে আল্লাহর কিতাব তওরাত বহন করার দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল, অতঃপর তারা কখনো এটা বহন (অনুসরণ) করেনি, তাদের দৃষ্টান্ত সেই গাধার মতো যে কেবলই পুস্তকের সুবিধাবঞ্চিত ভারবাহী (যে এর থেকে কোনো কল্যাণই লাভ করতে পারল না), যারা আল্লাহর আয়াতসমূহকে অস্বীকার করে, তাদের দৃষ্টান্ত তার চেয়েও নিকৃষ্ট। আল্লাহ জালেম সম্প্রদায়কে পথ প্রদর্শন করেন না। (আল জুমুয়া, আয়াত ৫)

আহলে কিতাব যাদেরকে আল্লাহর কিতাব দ্বারা সম্মানিত করা হয়েছিল, যাদের মধ্যে একজন সম্মানিত নবির উপর সে কিতার অবতীর্ণ হয়েছিল, যে কিতাবে মুহাম্মদ (স) এর আগমন, তাঁর নিদর্শন আর বৈশিষ্ট্য সব কিছুই পরিষ্কারভাবে বিবৃত ছিল, সেই কিতাব তাদের অধিকারে থাকার পরও তারা মুহাম্মদ (স) এবং তাঁর নবুয়ত্ব, আল্লাহর নতুন কিতাব কোরান ও সত্যধর্ম ইসলামকে অস্বীকার করে যাচ্ছিল। তাদের কাছে সত্য কিতাব তাওরাত থাকার পরেও সেটা তাদের কোনোই কাজে আসল না। তারা সেই কিতাবের সত্যবর্ণনাকেও গ্রহণ করতে পারল না। তাদের জন্য তাই তাওরাত ও তাওরাতের জ্ঞান কোনোটাই কাজে আসল না। তারা তো ঠিক সেই নির্বোধ গাধা, যে গাধা কেবল তার মালিকের বোঝা-ই বহন করে। সে বোঝার মধ্যে কী আছে তার কোনো ধারণাও যেমন তার নেই, তেমনি সেই বোঝার মধো যদি কল্যাণকর কিছু থাকেও, যেমন জ্ঞানবাহী কিতাব, সেটা থেকে কোনো কল্যাণ পাওয়ার বা হাসিল করার চিন্তাচেতনা সামর্থও তার নেই।

ব্যাপারটা তো ঠিক একই রকম দাঁড়ালো। আমরা মুসলমান দাবিদাররা বংশানুক্রমে আল্লাহ পাক এর সত্যকিতাব কোরআন লাভ করেছি। আমরা খুবই খুশি, আমরা খুবই প্রীত। আমাদের অহংকারের শেষ নেই। আমরা মুসলমান। আমরা আল্লাহ পাক এর কাছে কৃতজ্ঞ। বাহ! আর কী চাই! আমরাও গাধা! মারহাবা! প্রত্যেকের বাসায় লাল গিলাবে ঢাকা একখানা পবিত্র কিতাব তার চেয়েও বেশি পবিত্রতার প্রতীক হয়ে শোভা পাচ্ছে আলমিরাতে। আমরাও গাধার মতো আত্মতৃপ্ত এই ভেবে যে, মালিক তাঁর দামি জিনিস আমার উপর চাপিয়ে নিশ্চিন্ত। আমার কত বড় সৌভাগ্য যে, আমার মালিক আমাকেই পছন্দ করে নিয়েছেন তাঁর মূল্যবান জিনিস সযত্নে বহন করার জন্য। আমি বহন করেই খুশি।

বৃহত্তর অর্থে সকল মুসলমানই ভারবাহী গাধা, যারা কোরানের আলো পেয়েও নিজে অন্ধকারেই থেকে গেল। আলো তার জীবনকে আলোকিত করতে পারল না। তাদের উপমা ঐ ব্যক্তির মত যে আগুন জ্বালাল; এরপর যখন আগুন তার চারপাশ আলোকিত করল, তখন আল্লাহ তার দৃষ্টিশক্তি কেড়ে নিলেন এবং তাঁকে ছেড়ে দিলেন। কোরআনে এসেছে-

এদের উদাহরণ হলো সে ব্যক্তির মতো, যে (অন্ধকারে) আগুন জ্বালাতে চাইলো, যখন তা তাঁর গোটা পরিবেশটাকে আলোকোজ্বল করে দিলো, তখন (হঠাৎ করে) আল্লাহ তাদের আলোটুকু ছিনিয়ে নিলেন এবং তাদের অন্ধকারে ফেলে রাখলেন যে, তারা কিছুই দেখতে পেলো না। এদের অবস্থা হচ্ছে, এরা (কানেও) শোনে না, (চোখেও) দেখে না, কথাও বলতে পারে না। (বাকারা: ১৭-১৮)

সুতরাং আপনি গাধা, আমি গাধা, আর যারা এই আলোকবর্তিকা থেকে একটুও আলো নিতে পারল না, তারা কোরআনের ভারবাহী গাধা।

এখন চিন্তার বিষয় হলো, আমরা কি গাধার মতো খুশিখুশি, বাকি জীবনটা গাধার জীবন নিয়েই কাটিয়ে দিবো, নাকি জ্ঞানগর্ভ কোরানের জ্ঞান দিয়ে নিজের জীবনকে আলোকিত করব, একজন নামধারী মুসলমান না হয়ে কোরানধারী মুসলমান, প্রকৃত মুসলমান হব!

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.