![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
"কি খবর গল্পকার? "
পিয়াল কেবলই কফির কাপে চুমুক দিয়েছে। অমনি সহস্র বছরের পরিচিত কণ্ঠস্বর তার পিছনে বেজে উঠলো। এ সেই কণ্ঠস্বর যা একবার শোনার জন্য রাতের পর রাত গভীর আগ্রহ নিয়ে মোবাইলের পাশে বসে থাকতো।
আজ দীর্ঘ, নাহ পিয়ালের কাছে সুদীর্ঘ পাঁচটি বছর পর, শুনতে পারলো।
কি যন্ত্রণাময় গিয়েছে প্রথম একটি বছর।
তারপর ধীরে ধীরে সব স্বাভাবিক হয়ে গেছে। আর মোবাইলের পাশে প্রতিক্ষা করতে হয়নি তার।
সে ধরেই নিয়েছিল এ জীবনে আর সুপ্তার কন্ঠ শুনতে পারবেনা।
তাই এই সুদীর্ঘ পাঁচটি বছর পর হঠাত করে যখন সুপ্তার কন্ঠ তার পিছনে বেজে উঠলো, থতমত খেয়ে গেছে সে। ক্ষণিকের জন্য মনে হলো এ তার মনের ভুল হয়তো।
কিন্তু আবার সে কন্ঠ যখন বলে উঠলো " কি ব্যাপার গল্পকার? চিনতে পারছোনা বুঝি?" পিয়াল বুঝে গেল এ তার খেয়াল নয়, এ সত্যি।
কিছুটা সামলে উঠে নিয়ে পিছন ফিরে চাইলো। নিজেকে সম্পূর্ণ স্বাভাবিক রেখে বললো, "ওহ, সুপ্তা তুমি?"
পাশের চেয়ারটা এগিয়ে দিয়ে পুরো স্বাভাবিক স্বরে জিজ্ঞেস করলো, " তারপর, কেমন আছো?"
- এইতো যাচ্ছে দিনগুলি। তোমার কি খবর? কেমন আছো? বিয়ে করেছো? অনেক বিখ্যাত হয়ে গেছোতো।
- এত প্রশ্ন একসাথে করলে কোনটার উত্তর দিব?
- হুম্ম, আচ্ছা তোমার গল্পে কি আমাদের পুরানো স্মৃতি না টানলেই নয়?
- তোমার আমার গল্প ছাড়া বলবার মত আর কি গল্প আছে আমার কাছে?
- এতই যখন ভালবেসেছ তো ধরে রাখতে পারলে না কেন?
- কেউ যদি স্ব ইচ্ছায় চলে যায় তাকে কি ধরে রাখা যায়?
আবার সেই পুরানো দিনের মতই তাদের সেই কথার খেলা। পাঁচটি বছর পূর্বের কোন একদিন তাদের মাঝে আবার ফিরে এসেছে।
সবকিছু যেমন ধরে রাখা যায়না, তেমনি আজও পিয়াল পারলোনা সুপ্তাকে ধরে রাখতে।
সুপ্তা ধীর পায়ে হেটে চলে যাচ্ছে, খুব ধীরে মলিন মুখে। ভিতরে সুপ্ত এক আশা হয়তো পিয়াল তাকে ডাকবে।
সুপ্তার চলে যাওয়া দেখছে পিয়াল। চোখটা ঝাপসা হয়ে আসছে। খুব আশা নিয়ে ঝাপসা চোখে চেয়ে আছে, যদি সুপ্তা ফিরে আসে।
কেউ কাউকেই ডাকলোনা। কেউ কারও জন্যেই ফিরে আসলোনা। হয়তো আর কখনো ফিরেও আসবেনা তার।
আর কখনো ফিরে আসবার মত পথ তাদের নেই।
সময়ের পদক্ষেপ যে মানুষের পদক্ষেপের চেয়ে বেশী দ্রুততর হয়। বড় বেশীই নির্মম হয়। চাইলেই হারানো কিছু ফিরিয়ে আনা যায়না।
©somewhere in net ltd.