![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ছেলেটি তখন ছোট। কতইবা বয়স। ৪ কি ৫। একটু একটু করে সবে বুঝতে শিখেছে। এইটুকো বয়সেই এক ঈদে মাকে কদমবুসি করায় দশ টাকা পেয়েছিল। মা তাঁর আঁচলে সবসময় কিছুনা কিছু টাকা রাখতেন, সেখান হতে।
সেই প্রথম টাকা পাওয়াতে তার মাথায় কদমবুসির মত সরল ব্যাপার খুবই সরল ভাবে গেঁথে যায়।
তার দুনিয়ায় মায়ের কাছে টাকা পাবার সবচেয়ে সহজ উপায় কদমবুসি করা।
কোন কটকটি ওয়ালা আসলে দৌড়ে মায়ের কাছে ছুটে যেতো। কদমবুসি করে যেকয়টি দাঁত বের করে হাসি দেয়া যায় তার সব কটি বের করে মা ভুলানো একটা স্বর্গ জয় করা হাসি দিতো।
অথবা মালাইবরফ ওয়ালা আসলে, সেই একই কায়দা। কদমবুসি, বিশ্ব জয়ী হাসি আর লাজুক মুখে হাত পাতা।
ছেলেটি যখন বেশ বড় হয়ে গেল, বিয়ের সানাই বাজছিল যেদিন, সেদিনও কদমবুসিতে মা তাকে ছোট বেলার মত ঐ দশ টাকা দিয়েই আশীর্বাদ করেছিলেন।
আজ ছেলেটি অনেক বড় হয়ে গিয়েছে। এখন সে আর দশজনের চেয়ে বেশ বুঝনেওয়ালা।
তাই সে বুঝে গিয়েছে তার এই ছোট্ট সংসারে মা তার স্ত্রীর জন্য বোঝা।
সংসারের সুখ শান্তির জন্যেই মাকে বৃদ্ধাশ্রমে দিতে হবে।
কোন একদিন চৈতালি দুপুরে, মাকে নিয়ে বয়স্ক ছেলেটি চলে গেল বৃদ্ধাশ্রমে।
কিন্তু রেখে আসা হলোনা আর মাকে।
অভ্যাসবশতই কদমবুসি করেছিল সে। মা তাঁর আশীর্বাদ হিসেবে দশ টাকার নোট আজো ধরিয়ে দিয়েছিলেন।
এই দশ টাকা তাকে ফিরিয়ে নিয়ে গিয়েছিলো শৈশবে।
কদমবুসির কোন স্মৃতি নয়, ঘোর লাগা জ্বরের রাতগুলো মনে করিয়ে দিয়েছিল তাকে।
©somewhere in net ltd.