নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সৌভিকের চিন্তাচর্চা

চারিদিকে দেখো চাহি হৃদয় প্রসারি

সৌভিক ঘোষাল

পেশায় সাহিত্যের শিক্ষক। মতাদর্শে মার্কসবাদী। কোলকাতার বাসিন্দা

সৌভিক ঘোষাল › বিস্তারিত পোস্টঃ

বৈদিক যুগ

১৭ ই আগস্ট, ২০১১ রাত ৮:৩৩





বৈদিক যুগের সময়সীমা ১৫০০ খ্রীষ্টপূর্ব থেকে ৫০০ খ্রীষ্টপূর্ব পর্যন্ত। এই যুগটি দুটি ভাগে বিভক্ত। আদি বৈদিক বা ঋক বৈদিক যুগ, যার সময়সীমা ১৫০০ থেকে ১০০০ খ্রীষ্টপূর্ব অব্দ। পরবর্তী বৈদিক যুগ এর সময়সীমা ১০০০ থেকে ৫০০ খ্রীষ্টপূর্ব অব্দ অবধি সময়কাল। সাম, যজুঃ ও অথর্ববেদ, বিভিন্ন ব্রাহ্মণ ও উপনিষদ সাহিত্য এই যুগের আকরগ্রন্থ।

আদি বৈদিক ও পরবর্তী বৈদিক যুগ এর বৈশিষ্ট্য অনেকটাই আলাদা। সেগুলি এক এক করে লক্ষ্য করা যাক। এর মাধ্যমে দুই যুগের নিজস্ব বৈশিষ্ট্য এবং পারস্পরিক ভিন্নতা একই সঙ্গে আমাদের কাছে ধরা পড়বে।

• ঋকবেদের এলাকা ভারতের উত্তর পশ্চিমাঞ্চল, পাকিস্থান, আফগানিস্থানের অংশ। পরবর্তী বৈদিক যুগে আর্যরা আরো পূর্ব ও দক্ষিণে বিস্তার লাভ করে। ঋকবেদের যুগে সিন্ধু ছিল প্রধান নদী, পরবর্তী বৈদিক যুগে গঙ্গা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। আগুন দিয়ে বন পুড়িয়ে কৃষি ও বসতি বিকাশের কথা পরবর্তী বৈদিক সাহিত্যে পাওয়া যায়।

• ঋকবেদের যুগে কৃষির গুরুত্ব অনেক কম, পশুপালন সেখানে সবচেয়ে গুরুত্বে প্রতিষ্ঠিত। কিন্তু পরবর্তী বৈদিক যুগে কৃষি প্রধান জীবিকা।

• ঋকবেদের যুগে লোহার ব্যবহার বিকাশ লাভ করে নি, সেটা পরবর্তী বৈদিক যুগের ব্যাপার। অন্যান্য ধাতু যেমন তামা, সোনা, ব্রোঞ্জ এর ব্যবহার দুই যুগেই ছিল।

• ঋকবৈদিক সমাজ কৌম নির্ভর। পশুপালনভিত্তিক সমাজে বড় রাজা না থাকাই স্বাভাবিক। সেখানে রাজাকে গোপতি হিসেবে উল্লিখিত হতে দেখা যায়। তবে ঋকবেদে ভরত গোষ্ঠী ও তার রাজা সুদাস এর রাজ্যজয়ের কথা আছে, যিনি দশটি গোষ্ঠীর মিলিত শক্তিকে পরাজিত করেছিলেন। ঋকবেদ অন্যান্য গোষ্ঠীর ওপর ভরত গোষ্ঠীর আধিপত্যর ইঙ্গিত দেয় । পরবর্তী বৈদিক যুগে কৃষির বিকাশ, অস্ত্রে লোহার ব্যবহার শক্তিশালী ও বিস্তৃত এলাকায় প্রভাব বিস্তারকারী গোষ্ঠী/গোষ্ঠীপতির বিকাশ সম্ভব করে তুলেছে। বাজপেয়, রাজসূয়, অশ্বমেধ যজ্ঞের উল্লেখে এর প্রমাণ আছে।

• ঋকবেদ এবং পরবর্তী বৈদিক যুগে রাজকার্য পরিচালনার ক্ষেত্রে রাজা ছাড়াও সভা ও সমিতি নামে দুটি সংস্থার কথা পাওয়া যায়। সভা মূলত অভিজাতদের ব্যাপার আর সমিতিতে বিভিন্ন গোষ্ঠীপতিরা যেতেন।

• আদি বৈদিক যুগে বর্ণ ব্যবস্থার কঠোরতা ছিল না । একটি মাত্র স্তোত্রে ব্রাহ্মণ রাজন্য বৈশ্য শূদ্রর উল্লেখ আছে। তবে সেকালে সমাজে মূল বিভাজন ছিল আর্য ও দস্যু/দাস(অনার্য)। আর্যরা ব্রাহ্মণ রাজন্য ও বৈশ্যতে বিভাজিত ছিল। নারীদের মর্যাদা অনেক বেশি ছিল। তারা জ্ঞানচর্চা ও উৎপাদনের কাজে অংশ নিতেন। পরবর্তী বৈদিক যুগে বর্ণ ব্যবস্থার কাঠিন্য দেখা যায়। ব্রাহ্মণ ও রাজন্যরা ছিল সম্পদ ও প্রতিপত্তিশালী। বৈশ্যরা ছিল কৃষক ও বলি অর্থাৎ রাজস্ব প্রদানকারী এবং শূদ্ররা ছিল কঠোর শ্রমের কাজে নিযুক্ত। আদি বৈদিক যুগে বর্ণ ব্যবস্থা বংশানুক্রমিক ছিল না, পরবর্তী বৈদিক যুগে তা বংশানুক্রমিক হয়ে পড়ে। নারীর অবস্থানও পরবর্তী বৈদিক যুগে অনেক হীন হয়ে যায়। বিদ্যাচর্চা ও উৎপাদনের কাজ থেকে সরে এসে তারা পুরুষের মনোরঞ্জনকারী এবং সন্তান উৎপাদনের যন্ত্র হিসেবে উল্লিখিত হয়।

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ১৭ ই আগস্ট, ২০১১ রাত ৮:৪২

ক্রন্দসী বলেছেন: আরো বিস্তারিত লিখবেন ভাই।আপনার পরবর্তী পোস্টের অপেক্ষায় আছি।

২| ১৭ ই আগস্ট, ২০১১ রাত ৮:৪৩

নষ্ট কবি বলেছেন: নারীর অবস্থান এর কথা টা নিয়ে দ্বিমত আছে- বাকি গুলো ভালোই লাগলো

১৮ ই আগস্ট, ২০১১ রাত ১০:০৭

সৌভিক ঘোষাল বলেছেন: যদি আপনার দ্বিমতের জায়গাটা একটু পরিস্কার করেন, তাহলে উপকৃত হব। হয়ত আমার অনুসন্ধানের নতুন ক্ষেত্র খুলবে। আপনি নিশ্চয় খেয়াল করেছেন আদি বৈদিক আর পরবর্তী বৈদিক যুগে নারীর সামাজিক অবস্থানে বদল এর দুটো ভিন্ন ছবির কথা আমি বলেছি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.