নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জীবন হলো এক কাপ গরম চা আর একটি জ্বলন্ত সিগারেটের মতো। গরম চা এক সময় জুড়িয়ে যাবে, সিগারেটের তামাকও পুড়ে শেষ হয়ে যাবে।

পয়গম্বর

The woods are lovely, dark and deep, But I have promises to keep, And miles to go before I sleep, And miles to go before I sleep.---Robert Frost

পয়গম্বর › বিস্তারিত পোস্টঃ

অ্যাডভেঞ্চার ইন ক্যুবেক - পর্ব ৪

১৬ ই মে, ২০১৫ রাত ১২:২৪



পর্ব ১ view this link পর্ব ২ view this link এবং পর্ব ৩ view this link এর পর...

এবারের ক্যুবেক সিটির ট্যুরটা শুরু থেকেই বেশ পরিকল্পনা মাফিক ছিল বলেই হয়তোবা ট্যুর শুরুর দিনগুলো নির্দিষ্ট একটা ছকে বাঁধা ছিল। কিন্তু সব সময় সব কিছু ছকের ভেতর থাকবে বা থাকতে হবেই, এমনটাও কিন্তু নয়। তাই আজ যখন ভোর বেলা রওনা দিলাম মো মোরেন্সি ফলস দেখবো বলে, তখনও আমাদের ধারণাই ছিলনা যে আরও নর্থ-এর দিকে কত সুন্দর সব জায়গা রয়েছে এই ক্যুবেক সিটির আশেপাশেই।

নিউ ক্যুবেক সিটির 690 BOUL. RENE-LEVESQUE EST এন্টারপ্রাইজ থেকে রেন্ট করা গাড়ি তুলে নিয়ে হাইওয়ে ধরে ছুটে চললাম আমরা অভিযাত্রীর দল। সাথে থাকা জি.পি.এস -এ Montmorency Falls, 2490 Ave Royale, Québec, QC G1C 1S1 view this link ঠিকানাটা আগেই বসিয়ে নিয়েছিলাম। জি.পি.এস-এর মহিলা কণ্ঠ আমাদের পথ দেখিয়ে নিয়ে চললো। এখানে বলে রাখা ভালো, শুধু হাইওয়েতে নয় বরং ক্যুবেক সিটির ভেতরেও চলতে গিয়ে যে সমস্যার সম্মুখীন হলাম আমরা তা হলো ভাষা। এখানে প্রায় সব জায়গাতেই ফ্রেঞ্চ-এ সবকিছু লেখা। বিশেষ করে হাইওয়েতে সব ফ্রেঞ্চ। আমাদের মধ্যে ফিওনা শুধু ফ্রেঞ্চ জানে বলে এই যাত্রায় রক্ষা। তা নাহলে রাস্তার লেখা দেখে জায়গা খুঁজে পাওয়াটা কিন্তু বিশাল এক ঝামেলা!
মো মোরেন্সি ফলসের কিছু ছবি:











ওল্ড ক্যুবেক-এর শুধুমাত্র ট্যুরিস্ট স্পটগুলো ছাড়া বাকী মানুষজন এখানে খুব একটা ইংরেজি জানেনা। ফ্রেঞ্চ জানা না থাকলে ক্যুবেক প্রভিন্সের মানুষের সাথে ভাব বিনিময় আসলেই একটা কঠিন বিষয়! মজার বিষয় হলো ক্যুবেক সিটি থেকে আমরা যখন আরও নর্থ-এর দিকে যাচ্ছিলাম, একটা সময় ক্ষুধার তাড়নায় থামলাম গ্রামের এক স্যাণ্ডউইচের দোকানের সামনে। সেখানে দোকানের মালিক ভদ্রমহিলাকে কোনভাবেই যখন ইংরেজিতে বোঝাতে পারছিলামনা যে, আমি কি খেতে চাই, তখন আবারও ফিওনা এসে উদ্ধারকারীর ভূমিকা পালন করলো।

বিশ মিনিটের মধ্যেই আমরা পৌছে গেলাম Montmorency Falls এর কাছে। এবার আর কথা না বলে দেখে নেই Montmorency Falls এর অবর্ণনীয় সৌন্দর্য:























Montmorency Falls থেকে ১৩৮ নম্বর হাইওয়ে ধরে আরও ২০-৩০ মিনিট নর্থ-এ চলে এলাম। এবারের ডেস্টিনেশন Sainte-Anne-de-Beaupré. view this link আমি ভেবেছিলাম, ওল্ড ক্যুবেক সিটির ভেতরের নটরডেম ক্যাথেড্রাল-ই মনে হয় বড় কোন চার্চ। Sainte-Anne-de-Beaupré -তে এসে সেই ভুল ভাঙলো আমার। এর বিশালত্ব দেখে আমরা অভিযাত্রীরা স্তম্ভিত, বাকরূদ্ধ। ক্যামেররা শাটার ফেলতে ফেলতে ভেতরে গিয়ে ঢুকলাম এই ক্যাথেড্রালের ভেতরে। মাথা নষ্ট করা সৌন্দর্য দেখতে দেখতে তুলে নিলাম এর কিছু ছবি:






















ক্যাথেড্রাল থেকে বের হয়ে কাছাকাছি একটি লোকাল দোকান থেকে জেনে নিলাম কিভাবে Cap Tourmente National Wildlife Area -তে যেতে হবে। এবার আর হাইওয়ে না ধরে ক্যাথেড্রালের পাশেই Avenue Royale এর উপর নর্থ এর দিকে গাড়ি টান দিলাম। লোকাল রাস্তা ধরে ক্যুবেক-এর গ্রাম দেখতে দেখতে ২০ মিনিটের মাথায় পেঁছে গেলাম Cap Tourmente. view this link













Cap Tourmente আসার পর মনে হলো পাহাড়ী কোন ভূ-স্বর্গে চলে এসেছি। বিস্তীর্ণ এই এলাকাটি মূলত পাখি-প্রেমীদের জন্যে। বসন্তের শুরুতে হাজার হাজার পাখি এখানে এসে বিচরণ করছে। আমরা একটু ভেতরে ঢুকে গাড়ি পার্ক করলাম। তারপর ইনফরমেশন সেন্টার থেকে এই এলাকায় ঘোরাঘুরির প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করে নিয়ে ট্রেইল ধরে হেঁটে চললাম পাখি দেখার উদ্দেশ্যে। বিকাল ৫ টায় বন্ধ হয়ে যাবার আগ পর্যন্ত দু'চোখ ভরে উপভোগ করে নিলাম ক্যুবেকের অপার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য।
















শেষ করার আগে, যারা ক্যুবেক সিটিতে নতুন যাবেন, তাদের জন্যে ছোট্ট কয়েকটি টিপস:
১. ট্রেনে গেলে Via rail view this link এর 'এসকেপ' শ্রেণীতে সুলভে টিকেট পেতে হলে মাসখানেক আগেই টিকেট কেটে ফেলুন। একইভাবে বুকিংডটকম বা প্রাইসলাইনডটকম থেকেও হোটেল ভাড়া করে নিন বেশ আগে থেকেই। শ্যাঁতু ফ্রন্টনেকের কাছাকাছি আপার টাউনে হোটেল নেওয়াটাই ভালো। এক্ষত্রে গুগল ম্যাপের সহযোগিতা নিয়ে নিন।
২. ক্যুবেক সিটির শেষ ট্রেন স্টেশন হলো গাখ দ্যু প্যালে। এখান থেকে আপার টাউন হাঁটা পথ। ট্যাক্সিতে গেলে ওয়ান ওয়ে ৭.৫ ডলার বিল আসবে (টিপ ছাড়া)
৩. যেহেতু ক্যুবেক -এর অধিকাংশ অঞ্চল বছরের একটা দীর্ঘ সময় ঠাণ্ডায় ডুবে থাকে, কাজেই যাবার আগে আবহাওয়ার সংবাদটা জেনে নিন
৪. যাবার আগে টুকটাক কিছু প্রয়োজনীয় ফ্রেঞ্চ ভোকাবুলারি শিখে নিতে পারেন।
৫. এই ট্যুরে আমরা আইস হোটেলটি দেখতে যেতে পারিনি। কারণ সেটি মার্চ পর্যন্ত খোলা ছিল। view this link
৬. একইভাবে আমরা Canyon Sainte-Anne দেখতে পারিনি। কারণ সেটি ৯ মে পর্যন্ত বন্ধ। view this link
৭. মো মোরেন্সি ফলস-এ ১২ ডলার নেবে গাড়ি পার্কিং এর জন্যে।
৮. Cap Tourmente National Wildlife Area -তে জনপ্রতি এন্ট্রি ফি ৬ ডলার। গাড়ি পার্কিং ফ্রি।
৯. ওল্ড সিটিতে গাড়ি পার্কিং পাওয়াটা কঠিন। ওল্ড সিটির পুরোটাই আসলে পায়ে হাঁটা পথ। কাজেই গাড়ি নিয়ে ক্যুবেক সিটিতে ঢুকলে পার্কিং -এর বিষয়টা গুরুত্বপূর্ণ।
১০. ক্যুবেক সিটি'র এন্টারপ্রাইজ থেকে কমপ্যাক্ট সাইজের ভাড়া গাড়ি প্রতিদিন ফুয়েলসহ ৮০-৯০ ডলার পড়বে (এন্টারপ্রাইজ থেকে কেনা ইন্স্যুরেন্সসহ; আর ইন্স্যুরেন্স না কিনতে হলে আরও ৩০ ডলার কম পড়বে)।
১১. ক্যুবেক সিটি'র ভেতর খাবার একটু এক্সপেনসিভ। যদিও এখানেও টিমহর্টনস আর ম্যাকডোনাল্ডস রয়েছে।
১২ ক্যুবেক সিটির ভেতরে লোকাল RTC পাবলিক ট্রান্সপোর্ট -এর ব্যবস্থা আছে। view this link যদিও আগেই বলেছি, দূরে ঘুরতে গেলে সাথে গাড়ি থাকাটাই ভালো।
১৩. কিছু জায়গা ( যেমন Cap Tourmente National Wildlife Area ) জি.পি.এস মেশিন ট্র্যাক করতে পারেনা। সুতরাং লোকাল কারও থেকে হাইওয়ে ধরে যাবার রাস্তা ভালোভাবে বুঝে নিন।
১৪. viarail -এ জনপ্রতি রাউণ্ডট্রিপ ভাড়া পড়েছে ২২০ ডলার+ট্যাক্স
১৫. হোটেল জাখদাঁ-তে তিন রাতের জন্যে কুইনবেড (২ জন) রুমপ্রতি ২০০ ডলারের মতো পড়েছে
১৬. ক্যুবেক নিয়ে আরও ভিডিও এবং ছবি দেখার জন্যে এই ওয়েবসাইটে দেখতে পারেন > view this link

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই মে, ২০১৫ রাত ২:৩২

মনিরা সুলতানা বলেছেন: খুব সুন্দর বর্ণনা .।
জায়গা টা যেমন সুন্দর ছবি ও দিয়েছেন অসম্ভব সুন্দর সব .।
চমৎকার পোস্ট এ ভালো লাগা :)

১৬ ই মে, ২০১৫ রাত ৩:৫৪

পয়গম্বর বলেছেন: ধন্যবাদ মনিরাকে :)

২| ১৬ ই মে, ২০১৫ সকাল ১০:৪৬

আমিনুর রহমান বলেছেন:



কখন সুযোগ হবে কি না জানি না। তবে ট্রাই করবো যাওয়ার।

একটা পরিপুর্ন ভ্রমণ পোষ্ট ছিলো।

১৬ ই মে, ২০১৫ সকাল ১০:৪৯

পয়গম্বর বলেছেন: :)

৩| ০৬ ই জুলাই, ২০১৫ রাত ৮:৪৬

নুরুল পলাশ বলেছেন: খর‌চের বর্ণনায় খুব কস্ট‌লি ম‌নে হয়‌নি। অাবার সুপার লাইক দি‌তে হ‌চ্ছে।
এরপ‌রের সামার কোথায় ? ক্যাল‌গে‌রি বা ব্রি‌টিশ কলা‌ম্বিয়া হ‌লে ভাল হয়

০৮ ই জুলাই, ২০১৫ রাত ১০:১২

পয়গম্বর বলেছেন: এবার সামারে একটু ঘোরাঘুরির মধ্যেই আছি। সময়াভাবে ব্লগে আসা অথবা পোস্ট দেয়া হয়ে উঠছেনা। অথচ অনেকগুলো ভ্রমণ ব্লগ ড্রাফট হয়ে পড়ে আছে।

৪| ১১ ই জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১২:২১

অপেক্ষায় নাজির বলেছেন: আপনার ছবি নাই কেনো?

১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ২:২২

পয়গম্বর বলেছেন: না ভাই, আমার ছবি ব্লগে নেই।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.