নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জীবন হলো এক কাপ গরম চা আর একটি জ্বলন্ত সিগারেটের মতো। গরম চা এক সময় জুড়িয়ে যাবে, সিগারেটের তামাকও পুড়ে শেষ হয়ে যাবে।

পয়গম্বর

The woods are lovely, dark and deep, But I have promises to keep, And miles to go before I sleep, And miles to go before I sleep.---Robert Frost

পয়গম্বর › বিস্তারিত পোস্টঃ

আপনিকি কানাডা\'র নতুন অভিবাসী হয়ে আসছেন? তাহলে এই লেখাটি আপনারই জন্যে - পর্ব ১০

২১ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ৯:৩৭


কানাডা’র নতুন অভিবাসীদের জন্যে আমার লেখা পর্ব ১ থেকে ৯ ইতিমধ্যে সামহোয়্যারইন ব্লগে প্রকাশিত হয়েছে। বিগত পর্বগুলোতে কানাডা আসার পর একজন নতুন ইমিগ্র্যান্ট কি কি করবেন তা নিয়ে আমার রিয়েল টাইম অভিজ্ঞতা নিয়ে বিশদ আলোচনা করা হয়েছে। অর্থাৎ এককথায় বলতে গেলে উল্লেখিত পর্বগুলো কানাডা’র একজন নতুন অভিবাসীর জন্যে ’গাইড’ হিসেবে কাজ করেছে।
পর্ব ১ থেকে ৯ তে আমি কানাডাতে বসবাসের সুবিধা এবং ভালো দিকগুলো নিয়ে আলোচনা করেছি। কানাডার সুন্দর বাড়ি, সুন্দর গাড়ি, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আর আকর্ষণীয় নারী-পুরুষ দেখা শেষ হলে যারা কানাডা’র রিয়েল চ্যালেঞ্জিং লাইফে প্রবেশ করবেন, আজকের পর্বটি মূলত: তাদেরই জন্যে। কাজেই আজকের পর্বটিকে কে ভালো দিক বলা যাবে কিনা জানিনা। তবে আজ এমন কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে চাই, যা একজন নতুন বাংলাদেশী কানাডা’র ইমিগ্র্যান্ট-এর চলার পথে সহায়ক হবে। আজকের কথাগুলো কানাডার টরন্টোতে বসবাসরত বাংলাদেশিদের জীবন থেকে কিছু কেস স্টাডি নিয়ে আমি লেখার চেষ্টা করেছি। তাই সবগুলো বিষয়কে যেমন জেনারালাইজড করা ঠিক হবেনা তেমনি কানাডায় বসবাসরত বাংলাদেশিদের অধিকাংশই আসলেই কেমন আছেন, তার ক্ষুদ্র একটি ফ্লেভার হয়তোবা পাওয়া যাবে।

১. কানাডায় বাংলাদেশি কমিউনিটি এবং বাংলাদেশিদের সামাজিক অবস্থা:
আমার এক বার্মিজ বন্ধু আছে যার নাম হিউয়াং। হিউয়াং প্রায় এক দশক হলো টরন্টোর বাসিন্দা। বেশ চটপটে এবং আমুদে। তাকে একদিন জিজ্ঞেস করলাম, ”চাইনিজদের চায়না টাউন আছে, কোরিয়ানদের কোরিয়ান টাউন -এরকম প্রতিটা দেশের মানুষ তাদের নিজেদের কমিউনিটি তৈরি করে নিয়েছে টরন্টোর বুকে। বার্মিজদের কমিউনিটিটা টরন্টোর কোন অঞ্চলে?” উত্তরে হিউয়াং বললো, বার্মিজদের কোন কমিউনিটি নেই। যদিও প্রচুর বার্মিজ টরন্টোর বুকে বাস করে, কিন্তু তাদের কোন টাউন বা এলাকা নেই, সবাই ছড়িয়ে ছিটিয়ে। আর এর কারণ হিসেবে হিউয়াং বললো, বার্মিজরা খুবই হিংসুটে। তারা অন্যের ভালো দেখতে পারেনা। একজন ভালো করছে দেখলেই সবাই তার পেছনে লাগে কিভাবে তাকে টেনে নিচে নামানো যায়। হিউয়াং আমাকে পাল্টা প্রশ্ন করলো, ”টরন্টোতে তোমাদের বাংলাদেশিদের কি অবস্থা?” আমি হাসিমুখে তার মুখের ওপরে ডাহা মিথ্যা কথা ঝেড়ে দিলাম। বললাম, বাংলাদেশিরা তোমাদের বার্মিজদের মতো নয়। তারা একজন আর একজনকে সাহায্য করে, বিপদে এগিয়ে আসে।” মনে মনে বললাম, ”টরন্টোর বাংলাদেশিরা বার্মিজদের থেকে কোন অংশে কম যায়না, তারাতো বাংলাদেশে বসবাসরত বাংলাদেশীদের থেকেও আর এক স্তর নিচু মানসিকতার।” এখানে তারা এক অসুস্থ প্রতিযোগীতায় নেমেছে যেন। একজনের ভালো আরএকজন কোনভাবেই সহ্য করতে পারেনা। টরন্টোর এই বাংলাদেশিরা তাদের দুইহাতের যথার্থ প্রয়োগ ঘটাতে তাই চরম পটিয়শী। তারা নিজের একহাত অন্যের পশ্চাৎদেশে ঢোকানোর চেষ্টায় সদা সচেষ্ট আর আরএক হাত নিজের পশ্চাৎদেশে দিয়ে রাখে যেন অন্যকেউ আবার এই পশ্চাৎদেশ মেরে না বসে। এরা অন্যকে হেল্প করার থেকে মিসগাইড করতে ওস্তাদ। আর যদিওবা হেল্প করে, তাতেও স্বার্থ জড়িত। আপনাকে একগুণ হেল্প করে দশগুণ ফায়দা তুলে নেবে।

২. প্রফেশনাল জবের ব্যাপারে হতাশা:
বাংলাদেশী কানাডিয়ান ইমিগ্র্যান্টদের বয়স হিসেব করলে দেখবেন, তারা সবাই প্রায় ত্রিশ বছর বা তার আশেপাশে বা তার ওপরে। বাংলাদেশে থাকতে কেউ ছিলেন ডাক্তার, কেউ ইঞ্জিনিয়ার, কেউ ব্যাংকার ইত্যাদি অর্থাৎ চাকুরীতে তারা সকলেই মিড লেভেলে ছিলেন। টরন্টোতে আসার পর তাদের সেই প্রেস্টিজিয়াস জবটি আর নেই। এখন তারা কেউ হোটেলের কর্মচারী, কেউবা গ্যাস স্টেশনে পেট্রোল বিক্রি করেন, আবার কেউ সেলেস্টিকা/ কসমেটিকার লেবার অর্থাৎ একশত ভাগ কামলা। বাংলাদেশে থাকতে যে কাজ এবং কাজের মানুষগুলোকে তারা কোনদিন গণ্য করেননি, নিচু চােখে দেখেছেন, সেই একই কাজ কিন্তু তারা টরন্টো এসে করছেন! যদিও অনেকেই বলেন, কোন জবকেই ছোট করে দেখার কিছু নেই, সব জব সমান। কিন্তু রিয়েলিটিটা ভিন্ন। দীর্ঘদিন ধরে এই কামলা জব করতে করতে এবং প্রফেশনাল জব না পাওয়ার ব্যাথায়, আক্ষেপে স্কিলড মানুষগুলোর মাঝে হতাশার জন্ম হয়, তাদের আত্মবিশ্বাসে চিড় ধরে। কারণ বয়সতো আর থেমে নেই। আর এরই মাঝে কপালবশত: কারও যদি প্রোফেশনাল জব লেগে যায়, তাহলেতো তিনি সবার চক্ষুশূল। সবাই তাকে জেলাস করবেই করবে। ছোটবেলা থেকে কানাডার এডুকেশন সিস্টেম/ স্কুলিং দিয়ে না গেলে ভালো জব পাওয়াটা আসলেই সোজা ব্যাপার নয়। কানাডা সরকার ইমিগ্রেশন ভিসা দিয়েই খালাস। বাংলাদেশের স্কিলড পপুলেশন কানাডায় আসার পর তাদের স্ব স্ব ক্ষেতে প্রফেশনাল জব পাবে কিনা, সেটা নিয়ে কানাডা সরকারের তথ্য এবং সহযোগীতা থাকলেও চরম সত্যিটি হলো বাংলাদেশের এই স্কিলড পপুলেশন এখানে এসে লেবার পপুলেশনে পরিণত হচ্ছে দিন দিন। বাংলাদেশীদের খুবই ক্ষুদ্র একটি অংশই কেবল পারছে এই লেবার কাজ থেকে বের হয়ে প্রফেশনাল জব ম্যানেজ করতে। সেটিও তাদের ক্ষেত্রে রাতারাতি হয়নি, ক্ষেত্র বিশেষে ৫-৭ বছর তো লেগেই গিয়েছে। ডাক্তারদের অবস্থা এখানে আরও খারাপ। কানাডায় ডাক্তারির লাইসেন্স পাবার চাইতে খালি পায়ে অক্সিজেন ছাড়া হিমালয়ে ওঠাও আমার ধারণা অনেক সহজ কাজ। কানাডা’র কঠিন জীবনযাত্রা এবং প্রফেশনাল জব পাবার অনিশ্চয়তার কারণেই আমি অনেক বাংলাদেশিকে দেখেছি এখানে আসার পর এই কঠিন জীবন দেখে বাংলাদেশে ফিরে গিয়েছেন।

৩. বাটি চালান থিওরি:
টরন্টোর বাংলাদেশী ঘিঞ্চি বস্তি ড্যানফোর্থের টিসডেল, ক্রিসেন্ট টাউন, মেসি এলাকাগুলোর হাই রাইজ বিল্ডিংগুলোর জন্যে আমার নিজস্ব একটি থিওরি রয়েছে। সেটি ”বাটি চালান” থিওরি হিসেবেই খ্যাত। ব্যাপারটা একটু খোলাসা করা যাক। ড্যানফোর্থেও ওইসব হাই রাইজ বস্তির যারা ভাবী আছেন, তারা পাশের বাসার ভাবীকে বাটিতে তরকারি রেঁধে পাঠান। পাশের বাসার ভাবীও বিনিময় সৌজন্যতা বশত: পাঠানো বাটিতে তরকারি ভরে সেই বাটি প্রথম ভাবীকে চালান করে দেন। এভাবেই শুরু হয়ে যায় ”বাটি চালান”। এর ব্যাপকতা অনেক বেশি যেটা বাটির মুখোশের আড়ালে প্রথমে বোঝা কঠিন। এই বাটি চালাচালি থেকে ভাবীদের বন্ধুত্ব হয়, আসা যাওয়া বাড়ে, শুরু হয় পার্টি-সার্টি। ধীরে ধীরে ভাবীকূলে ঘনিষ্টতা বাড়ে। শুরু হয় দুনিয়ার মানুষদের নামে গীবত। রান্নার আলোচনার ফাঁকে আরও থাকে কিভাবে স্বামীকে বশে রাখা যাবে, কোন ভাই দেখতে হ্যাণ্ডসাম এবং তার নিজের স্বামীটি দিন দিন উজবুকে পরিণত হচ্ছে, কে বাড়ি কিনেছে, কে গাড়ি কিনেছে, কোন ভাবী সুন্দর শাড়ি-গহনা কিনেছে ইত্যাদি। বাটি চালান থিওরি দিয়ে কিন্তু সংসারে গেঞ্জাম লাগিয়ে দিয়ে স্বামী-স্ত্রী’র ছাড়াছাড়ি পর্যন্ত করিয়ে দেয়া সম্ভব! বাটিচালান কার্যক্রমে অংশগ্রহণকারী ভাবীরা আবার সামারে নিয়মিত একসাথে বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানে ঘোরাঘুরি করে থাকেন। আর তাদের মুখে একটি কথা খুব শোনা যায়, ”ভাবী, আমি কিন্তু বাংলাদেশিদের সাথে একদমই মিশিনা। সবাই নিচু মানসিকতার, কেউ কারও ভালো চায়না।” বাটি চালান থিওরিতে বিশ্বাসী ভাবীদেরকে আমার মাঝে মাঝে জিজ্ঞেস করতে মন চায়, ভাবী, আয়নার সামনে কোনদিন দাঁড়িয়ে নিজের চেহারাটা একটু ভালো করে দেখেছেন? দেখেন প্লীজ, তাহলে আপনাদের নিজেদের চারিত্রিক ও মানসিক দৈন্যতা চোখে পড়লেও পড়তে পারে।

৪. পলিটিক্স এবং সমিতি সমাচার:
কথায় বলে, ”ঢেঁকি স্বর্গে গেলেও ধান ভানে”। টরন্টো এবং মন্ট্রিয়লের কিছু মানুষকে দেখলে আমার সত্যিই হাসি পায়, অবাক লাগে। তারা এবং তাদের পরিবার কানাডাতে স্থায়ীভাবে বসবাস করেও তারা আওয়ামীলীগ আর বিএনপি নিয়ে নিজেদের মধ্যে দলাদলিতে ব্যস্ত। দেশ থেকে দূরে থাকলেও বাংলাদেশের অসুস্থ রাজনীতি তাদেরকে পিছু ছাড়েনি। তারা দেশে যায়, আওয়ামী বিএনপির বড় নেতা নেত্রীদের সাথে ছবি তোলে, তারপর সেই ছবি টরন্টোর কমিউনিটি পত্রিকায় বড় করে ছাপায়। তারা বরিশাল, নোয়াখালী, সিলেট সমিতি করে, সেখানে বিভিন্ন পোস্ট পদবীর জন্যে লালায়িত থাকে, মারামারি করে। আমার প্রশ্ন হলো, এগুলো করে কি লাভ হয় তাদের? বুঝলাম যে, বাংলাদেশে যখন তারা ছিলেন একটা সময়, এসব রাজনীতি বা সমিতির ধান্দাবাজি করে প্লট দখল, ব্যবসাবাণিজ্য করা, এলাকার ক্ষমতালাভ ইত্যাদি করা যেতো। কিন্তু কানাডাতেতো এসব তারা করতে পারবেননা। কারণ এখানে দুর্নীতি করাটা এতটা সহজ নয়। তাহলে আমার প্রশ্ন, কিসের লোভে তারা তাদের কানাডাতে তাদের কষ্টার্জিত অর্থ ব্যয় করে এইসব বাংলাদেশের নোংরা রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত থাকছেন?

৫. ল্যাঙ্গুয়েজ ব্যারিয়ার এবং কমিউনিকেশন:
কানাডায় প্রফেশনাল জব পাবার ক্ষেত্রে এখানকার এডুকেশন সিস্টেমে না পড়াসহ অন্যান্য কারণগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো ল্যাঙ্গুয়েজ ব্যারিয়ার এবং কমিউনিকেশন। আমাদের দেশের শিক্ষিত কিংবা আধাশিক্ষিত শিক্ষকরা কোনদিন বুকিশ ইংরেজি আর কঠিন গ্র্যামার ছাড়া আর কি শিখিয়েছেন? অথচ এখানকার চলতি ভাষায় কথা বলা এবং অন্য আরএকজন কানাডিয়ান ইংরেজিতে কথা বলতে পারার মানুষের সাথে সঠিক কমিউনিকেশন থাকাটা অত্যন্ত জরুরী। এখানকার কাস্টম, কালচার, রীতি-নীতি জানাটাও সমান গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের অনেকের ধারণা আমরা খুব ভালো ইংরেজি জানি বা বলতে পারি। সত্যিই কি তাই?

৬. পিএই ডি বনাম বর্ন-কামলা:
আমার পরিচিত রফিক ভাই। খুবই অমায়িক মানুষ। তিনি জাপান থেকে টরন্টো এসেছেন পিএইচডি শেষ করে। কিন্তু দু:খের বিষয় হলো তিনি তার ফিল্ড-এ কোন কাজ পাচ্ছেননা। এদিকে বউ-বাচ্চা নিয়ে সংসারতো চালাতে হবে! তাই তিনি একজন বাংলাদেশি মালিকের রেস্টুরেন্টে কাজ নিলেন। রেস্টুরেন্টের মালিক শামসু মিঞা। তিনি অনেক পড়াশুনা করা মানুষ। বাংলাদেশ থেকে ইন্টারমিডিয়েট পাশ করতে পারেননাই। বছর দশেক আগে দালাল ধরে টরন্টো চলে এসেছেন। তারপর টরন্টোতে রিফিউজি ক্লেইম করে এখানেই মাটি কামড়ে পড়ে ছিলেন। লেখাপড়া না জানলেও শামসু মিঞা গতরে খাটতে পারেন ভালোই। দিন-রাত পরিশ্রম করে তিনি এখন টরন্টোতে একটা বিশাল বাড়ির মালিক, চালান টয়োটা লেক্সাস রিসেন্ট মডেলের বিলাশবহুল গাড়ি। এইতো কিছুদিন আগেই নিজের মেয়ের ২০ তম জন্মদিনে মেয়েকে একটা মার্সিজিড গাড়ি গিফট করলেন আর অনুষ্ঠানের আয়োজন করলেন। সেই অনুষ্ঠানের স্থানে মার্সিডিজ গাড়িটাকে এমনভাবে রেখে ডিসপ্লে করালেন যে, সবাই বলতে বাধ্য হলো, বাপরে বাপ, কি দামী গাড়ি! শামসু মিঞা এখন এলাকার গণ্যমান্য লোক, বিভিন্ন সমাজ সেবা, সমিতি -এগুলোতে এখন তিনি প্রধান অতিথি, প্রেসিডেন্ট। গত মাসে হজ্ব করে নিজের নামের আগে ডিগ্রী লাগিয়ে নিয়েছেন ”আলহাজ্জ”। আবার সম্প্রতি নিজের ছোট ছেলের সুন্নতে খাতনা অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ থেকে উড়িয়ে এনেছিলেন একঝাঁক শিল্পীকে। এই শামসু মিয়ার অনেকগুলোর রেস্টুরেন্টের একটিতেই পিএইচডি রফিক ভাই ক্যাশিয়ার হিসেবে কাজ করেন।

”বাংলাদেশ ছেড়ে কানাডা আসাটা কি আপনার সঠিক সিদ্ধান্ত ছিল? এবং কানাডার ব্যাপারে এতগুলো নেগেটিভ কথা জেনেও কেন বাংলাদেশের ভালো চাকরী ছেড়ে কানাডা আসলেন?” এ দু’টি কথাটা জিজ্ঞেস করেছিলাম বাংলাদেশী ডাক্তার এবং বর্তমানে টিম হর্টনস চা-কফির দোকানের বিক্রেতা ৩৭ বছর বয়সী রবিন ভাইকে। উত্তরে তিনি বলেছিলেন, ”আপাদমস্তক দুর্নীতিগ্রস্থ বাংলাদেশের অসুস্থ পরিবেশে আমি না হয় ৩৭ টা বছর পার করেছি। আমার তিন আর চার বছর বয়সী ছোট বাচ্চাদু’টিকে একটা দিনও ওই পরিবেশে পার করাতে চাইনা। কাজেই কানাডা আসার পর আমি যতদিন না নিজের মনমতো জব পাই, ততদিন আমি চা বিক্রেতা হিসেবেই খুশি।”

বিশেষ দ্রষ্টব্য:
কানাডা'র ইমিগ্রেশন প্রসেসিং খুব কঠিন কিছু কি? এটা সত্যি যে, ইমিগ্রেশন প্রসেসিং সময়সাপেক্ষ এবং কষ্টসাধ্য ব্যাপার। কিন্তু অসম্ভব নয়! সামহোয়্যারইন ব্লগের পয়গম্বরের ব্লগ এবং ফেসবুকের পেজটি Facebook page: Click This Link Email: [email protected] আপনার সাথেই আছে ইমিগ্রেশন প্রসেসের প্রতিটি স্টেপে, প্রতিটি সমস্যার আন্তরিক সমাধানে। কানাডা'র ইমিগ্রেশন নিয়ে টেনশন একেবারেই ঝেড়ে ফেলে দিন মাথা থেকে। ফেসবুকের এই পেজে শেয়ার করুন আপনার কানাডা'র ইমিগ্রেশন সংক্রান্ত যেকোন প্রশ্ন অথবা সমস্যা। ব্লগ এবং ফেসবুকের এই প্ল্যাটফরমে আমি চেষ্টা করবো সঠিক রেফারেন্স নির্ভর তথ্যটি আপনাকে জানানোর। ইমেইলেও যোগাযোগ করতে পারেন আপনার সুনির্দিষ্ট প্রশ্নটি লিখে: [email protected]

Facebook page: Click This Link
Email: [email protected]

পর্ব ৯ view this link
পর্ব ১১

শুভকামনা রইলো আপনার জন্যে।

মন্তব্য ২৭ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (২৭) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ১০:১৮

শুভ_ঢাকা বলেছেন: তথ্যপূর্ণ সুন্দর একটা লিখা উপহার দেওরার জন্য আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ।

২২ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ২:৪৮

পয়গম্বর বলেছেন: ব্লগে সাথে থাকার জন্যে ধন্যবাদ।

২| ২১ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ১০:১৯

কাজী আবু ইউসুফ (রিফাত) বলেছেন: চোখ রাখলাম ------সামনে আরো লেখা দেখার অপেক্ষায় ।

২২ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ২:৫০

পয়গম্বর বলেছেন: আমার ইমিগ্রেশন বিষয়ক পোস্টগুলোতেও চোখ রাখবেন আশাকরি। আর ফেসবুকে সময় করে ঘুরে আসবেন view this link

৩| ২২ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ২:২১

সোহানী বলেছেন: আয়নার সামনে কোনদিন দাঁড়িয়ে নিজের চেহারাটা একটু ভালো করে দেখেছেন? দেখেন প্লীজ, তাহলে আপনাদের নিজেদের চারিত্রিক ও মানসিক দৈন্যতা চোখে পড়লেও পড়তে পারে।

২২ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ২:৫০

পয়গম্বর বলেছেন: সোহানী কেমন আছেন? কেমন চলছে সবকিছু? মন্তব্যের জন্যে ধন্যবাদ।

৪| ২২ শে জুলাই, ২০১৬ সকাল ৮:২৭

মোস্তফা কামাল পলাশ বলেছেন:

আপনার বাটি চালান থিওরি পইড়া প্রায় ১ মাস পরে কোন ব্লগে মন্তব্য করার জন্য লগইন করতে হলো। পরিচিত বন্ধু বান্ধব যারা দেশে লাখ টাকার বেশি বেতনে চাকুরি করতেছে সেও দিন রাত প্যারা দেয় কানাডা আসার জন্য। আপনি যে উদাহারণ লিখেছে ব্লগে সেই একই কথা শুনাই তাদের কিন্তু বিশ্বাস করে না। এক বড় ভাই আজ থেকে ৭ বছর পূর্বে বাংলাদেশে ১ লাখ টাকার চাকুরি করত। কানাডা আসার পরে গত ৭ বছরেও চাকুরি পায় নাই। আবার নতুন করে পড়া লেখা কারে কানাডার ডিগ্রী যোগাড় করলো। অথচ সেই একই বাংলাদেশি ডিগ্রী সে অর্জন করেছে ১৫ বছর পূর্বে। হয়ত এখন চাকুরি পাবে। আগামী মাস থেকে চাকুরি খুজা শুরু করবো হয়ত। ভয়ে আছি /:)

লেখার জন্য ধন্যবাদ।

২২ শে জুলাই, ২০১৬ বিকাল ৫:২০

পয়গম্বর বলেছেন: ছোটবেলায় পড়েছিলাম, মানুষের বেঁচে থাকার জন্যে মৌলিক চাহিদাগুলো হলো: অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা, শিক্ষা ইত্যাদি। কানাডাতে আপনি সবগুলো মৌলিক চাহিদাই খুব ভালোভাবে পূরণ করতে পারবেন। কিন্তু শুধু এই প্রফেশনাল জব পাওয়াটাই কঠিন বিষয়।

৫| ২২ শে জুলাই, ২০১৬ দুপুর ১২:২০

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: আমি নিজেও কানাডায় থাকি, এবং কানাডার অভিজ্ঞতাগুলো নিয়ে সিরিজ করছি।

আমি যে এলাকায় থাকি সেখানে কানাডিয়ান বেশি, প্রবাসিদের সাথে ওঠাবসা কম। তবে এসব খবর ঠিকই কানে আসে। আপনি যা বললেন হুবুহু তাই শুনেছি। এয়াপোর্টে একবার মায়ের টরন্টো প্রবাসি বান্ধবীর সাথে দেখা হয়েছিল। মা বলছিলেন, "তোমাদের ওখানে তো অনেক প্রবাসী, সব মিলেমিশে মজায় থাকো, আমরা একা পরে আছি।" খালাম্মা অবাক করে দিয়ে বললেন, "আরেহ না! তেমন মিল নেই। দেশের মতো এখানেও সবাই দল পাকিয়ে, মারামারি কাটাকাটি অবস্থা হয়ে যায় অনেক সময়!" আমি কি ভীষন অবাক হয়েছিলাম যে বিদেশে তো মানুষের নিজের দেশের মানুষের ওপরে মায়া বেড়ে যাওয়ার কথা! কিন্তু একি শুনলাম আমি!

আর বাটি চালান নিয়ে যা বললেন তাতে +++। এসব মহিলার কুটিল, নিন্দাপরায়ন, ক্লামজি ব্যবহারের কারনে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়, যেন বাংলাদেশের মেয়েরা এরকমই!! আপনি যা বললেন দেশেও ফ্ল্যাট, বাচ্চার স্কুলের ভাবীরা তা করেন কিন্তু বিদেশে তো সামলে চলা উচিৎ! আমার মা বলেন, "দেশে খারাপ কিছু করলে ফ্যামিলির বদনাম, আর এখানে খারাপ কিছু করলে দেশের বদনাম!" বেদবাক্যের মতো মাথায় রাখি কথাটা এবং সেভাবেই চলি।
তবে নিঃসন্দেহে অনেক প্রবাসী কঠোর পরিশ্রম এবং মার্জিত ব্যবহারের মাধ্যমে দেশের সুনাম বয়ে আনছেন। যারা বিদেশে থেকে বাংলাদেশে ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করছেন তাদের প্রতি করুনা।

লেখা অনেক ভালো এবং গোছানো ছিল। আপনি অনেক ভালো একটা কাজ করছেন। অনেক মানুষ সাহায্য পাচ্ছেন ও পাবেন নিঃসন্দেহে।
ভালো থাকুন, সর্বদা হাসতে থাকুন।

২২ শে জুলাই, ২০১৬ বিকাল ৫:২২

পয়গম্বর বলেছেন: ব্লগে সাথে থাকার জন্যে ধন্যবাদ।

৬| ২৩ শে জুলাই, ২০১৬ সকাল ৯:৫০

প্রামানিক বলেছেন: নদীর এই পাড় কহে ওই পাড়ে কত যে সুখ। তেমনই আপনার লেখা পড়ে আইডিয়া হলো। কানাডায় যারা থাকে তাদের মনে করেছিলাম কত যে সুখে আছে, কিন্তু আপনার লেখা পড়ে সে ভুল ভাঙল।

২৩ শে জুলাই, ২০১৬ সকাল ১০:১৮

পয়গম্বর বলেছেন: রিয়েলটাইম এক্সপেরিয়েন্স নিয়ে লেখাটি গোছানোর চেষ্টা করেছি। ব্লগে সাথে থাকার জন্যে প্রামাণিক ভাইকে ধন্যবাদ।

৭| ২৩ শে জুলাই, ২০১৬ দুপুর ১২:৩১

সাইফুল ইসলাম হৃদয় বলেছেন: কানাডা যাওয়ার খুব আগ্রহ ছিল । কিন্তু আপনার লেখাটা পড়ার পর আগ্রহ কমে গেল। ধন্যবাদ এরকম সুন্দর একটা পোস্ট দেওয়ার জন্য।

২৩ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ৮:২৫

পয়গম্বর বলেছেন: প্রায় প্রতিটি বিষয়েই "ভালো" এবং "মন্দ" বলে দু'টি বিষয় রয়েছে। কানাডায় যারা ইমিগ্রেশনের চেষ্টা করছেন বা আসছেন, তাদেরও জানা প্রয়োজন ভবিষ্যতে তাদের জন্যে কোনটি মঙ্গল, কোনটি নয়। এমন কোন বিষয় নয় যে, দেশের সবকিছু ছেড়ে কানাডা আসতেই হবে। আবার এটাও সত্যি যে, ফার্স্ট ওয়ার্ল্ড কান্ট্রি কানাডা'তে আসলে ভবিষ্যত প্রজন্মের ভাগ্য বদলে যাবে। কাজেই ইমিগ্রেশনের চেষ্টা করতে দোষ নেই। ইমিগ্রেশন হলে চলে আসবেন, তারপর কানাডা'তে থাকতে ইচ্ছে হলে থাকবেন, না হলে দেশে ফিরে যাবার পথতো সবসময়ই খোলা রয়েছে, তাইনা?

৮| ২৩ শে জুলাই, ২০১৬ বিকাল ৪:৫৯

তামান্না তাবাসসুম বলেছেন: যদিও বাইরে সেটেল করার ইচ্ছা নাই। তবে লিখাটা ভাল লাগলো। অনেক কিছু জানলাম।ধন্যবাদ :)

২৩ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ৮:২৮

পয়গম্বর বলেছেন: মন্তব্যের জন্যে ধন্যবাদ তাবাসসুম।

৯| ২৫ শে জুলাই, ২০১৬ সকাল ১১:২৯

হানিফঢাকা বলেছেন: আপনার লেখাটা পড়লাম। খুবই ইনফরমেটিভ। একটা জিনিশ জানার ছিল তা হচ্ছে কানাডাতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের গড় আয় ব্যায়ের একটা আনুমানিক ধারনা পেতে চাচ্ছি যেমনঃ

১। যারা অড জব করে তারা প্রতি মাসে সাধারণত গড়ে কি রকম আয় করে?
২। যারা হোয়াইট কালার জব করে তাদের গড়ে মাসে আয় কত?
৩। মোটামোটি বেশ ভালভাবে থাকতে গেলে সেখানে মাসে কি রকম ব্যয় হতে পারে। অর্থাৎ জীবন যাত্রার ব্যয় কি রকম?

আমি জানি পেশা/ স্থান, কোম্পানি ইত্যাদি ভেদে এর তারতম্য আছে। তারপরেও মিড লেভেলের যদি আয় ব্যায় সম্পর্কে একটা ধারনা দিতেন তাহলে এই ব্যাপারে একটু জানতে পারতাম।

আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ সুন্দর একটা সিরিজ লেখার জন্য।

২৫ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ৮:৫১

পয়গম্বর বলেছেন: ব্লগে সাথে থাকার জন্যে ধন্যবাদ। আমার উত্তরগুলো মিডল ক্লাস ফ্যামিলি এবং অডজব করার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য:
১. সরকারী নিয়মে ট্যাক্সে/ সিন নম্বরে কাজ করলে অডজবে প্রতি ঘন্টা ন্যূনতম ১১.২৫ কানাডিয়ান ডলার করে পাওয়া যায়। রেস্টুরেন্ট/ গ্যাসস্টেশনগুলোতে হয়তো খুব বেশি হলে ১৪-১৫ ডলার পর্যন্ত ঘন্টাপ্রতি পাওয়া যায়। এবং স্ট্যার্ন্ডার্ড হলো প্রতি সপ্তাহে ৪০ ঘন্টা সর্ব্বোচ্চ একজন মানুষ কাজ করবে। ট্যাক্সে নূন্যতম বেতনে সপ্তাহে ৪০ ঘন্টা কাজ করলে একজন ব্যক্তি মাসে ট্যাক্স কাটার পর আনুমানিক ১৮০০-২০০০ ডলার আয় করতে পারে।
২. যদি ট্যাক্সে কাজ না করে অথবা আংশিক ট্যাক্সে কাজ করে বাকীটা ক্যাশে কাজ করা যায় এবং ৪০ ঘন্টার পরিবর্তে ৬০-৭০ ঘন্টা কাজ করা যায়, তাহলে ৩০০০-৩৫০০ ডলার পর্যন্ত আয় করা সম্ভব।
৩. যারা প্রয়েশনাল জব করে, তাদেরকে অবশ্যই ট্যাক্সে কাজ করতে হয়। এক্ষেত্রে ট্যাক্স কাটার পর তাদের হাতে সামান্যই থাকে। তাদের মাসিক আয় নির্ভর করছে তাদের প্রফেশনের ওপরে। তবে আনুমানিক বলতে গেলে প্রতিবছরে তাদের আয় ৪০ হাজার ডলার থেকে ওপরের দিকে। কানাডাতে এমন অনেক মানুষ আছেন যারা সোমবার থেকে শুক্রবার ৯-৫ টা প্রফেশনাল জব করেন আবার উইকএন্ডে একটা অডজব-ও করেন।
৪. মিডলেভেলের গড় ব্যয় এক বাচ্চা+ স্বামী-স্ত্রী নিয়ে থাকা, খাওয়া, যাতায়াত ইত্যাদি সবকিছুসহ আনুমানিক ২০০০-২২০০ ডলার।

১০| ২৬ শে জুলাই, ২০১৬ দুপুর ১২:৪০

হানিফঢাকা বলেছেন: ধন্যবাদ আপনার উত্তরের জন্য। আমি এটাই জানতে চাচ্ছিলাম।

যারা সরকারী নিয়মে ট্যাক্সে/ সিন নম্বরে অড জব করেন তাদের আয় ব্যয় ত প্রায় সমান। তার মানে রেগুলার অড জব করলে মাস শেষে হাতে তেমন কিছু থাকেনা। সুতরাং সপ্তাহে ৬০-৭০ ঘণ্টা কাজ করতে হবে। এই পরিমাণ সময়ে কাজ বাংলাদেশে করলে এর চেয়ে বেশী টাকা ইনকাম করা সম্ভব, কিন্তু সমস্যা হচ্ছে এই ধরনের ব্যাবস্থা/ সুযোগ বাংলাদেশে নাই বললেই চলে।

ভাল থাকবেন।

২৬ শে জুলাই, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৫৫

পয়গম্বর বলেছেন: প্রতিমন্তব্যের জন্যে ধন্যবাদ। টরন্টোতে স্বামী-স্ত্রী দু'জন মিলে ৪০ ঘন্টা করে কাজ করতে পারলে ভালো ইনকাম করা যায়। টরন্টোতে সুবিধা হলো, এখানে মানুষ একই সাথে ২-৩ জায়গায় অড জব/ জব করে। আমি এমন ব্যক্তিকেও চিনি যে সপ্তাহে ৭ দিন ৭ টি ভিন্ন রেস্টুরেন্টে কাজ করে। অবশ্য ডাউনটাউন টরন্টোতে অন্যান্য জায়গার থেকে কাজ পাবার সম্ভাবনা বেশি। এখানে একজন পিজা/ অন্যান্য খাবার ডেলিভারী ড্রাইভারের গড় আয় ৩০০০-৩৫০০ ডলার/মাস। ট্যাক্সি এবং উবার চালকদেরও ভালো ইনকাম টরন্টোতে।

১১| ২৭ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ২:২১

মারজানি বলেছেন: ভাইয়া, আপনার এ লেখাটি ভালো লাগলো। আপনার আগের পর্বগুলো আমি ধীরে ধীরে পড়ছি। আর অপেক্ষায় থাকলাম আপনার ইমিগ্রেশন নিয়ে লেখা পোস্টগুলোর জন্যে।

২৭ শে জুলাই, ২০১৬ সকাল ৯:০৮

পয়গম্বর বলেছেন: আপনার মন্তব্যের জন্যে ধন্যবাদ আপু। বিগত পর্বগুলো একটু ভালোভাবে পড়লেই আপনি কানাডা'র নতুন ইমিগ্র্যান্ট বিষয়ক তথ্যগুলো জানতে পারবেন। একইসাথে খুব শীঘ্রই কানাডা'র ইমিগ্রেশন প্রসেসিং নিয়ে আমার ধারাবাহিক লেখাগুলোতে সাথে থাকলে কানাডা'র ইমিগ্রেশন বিষয়ক তথ্যগুলো আশাকরি জানতে পারবেন।

১২| ৩০ শে জুলাই, ২০১৬ সকাল ১০:২০

সোহানী বলেছেন: পয়গম্বর সাহেবদেরীতে হলেও সময় নিয়ে উত্তরটা দিলাম আপনার প্রতিটি পয়েন্টের.....

১. কানাডায় বাংলাদেশি কমিউনিটি এবং বাংলাদেশিদের সামাজিক অবস্থা: জনাব পয়গম্বর সাহেব আপনার একথার সাথে আমি একমত নই কিছুতেই। ভালো মন্দ সব দেশেই সবখানেই আছে। আপনার চেনা কয়জনের অভিজ্ঞতা দিয়ে কানাডার সব বাংলাদেশীদের এক কাতারে ফেলে উল্টো আপনি দেশের বদনাম করছেন। যারা অন্যের পশ্চাৎদেশে হাত ঢোকানোর চেষ্টায় থাকে তাদের থেকে সিম্পল দূরে থাকাইতো একমাত্র পথ.... কারন তাদের সংখ্যা হাতে গোনা কয়জন, আপনি তাদের পশ্চাৎদেশ খুজঁতে গেলে তারাতো আপনাকে ছেড়ে দিবে না তাই না!!!

২. প্রফেশনাল জবের ব্যাপারে হতাশা: হাঁ ঠিক, চাকরীর ব্যাপারে চরম সত্যিটি হলো বাংলাদেশের এই স্কিলড পপুলেশন এখানে এসে লেবার পপুলেশনে পরিণত হচ্ছে। আপনি কি মনে করেন কানাডা সরকার না বুঝে এটা করছে? তারা জেনে বুঝে দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা নিয়েই এটা করছে কারনটা সবাই না জানলে ও আপনার জানা উচিত। আমেরিকার ওপি বা ডিবির মাধ্যমে অশিক্ষিত আধা শিক্ষিত লেবার এনে কি হাল ওদের দেশের তা নিশ্চয় সবার জানা.......

৩. বাটি চালান থিওরি: প্রথমেই আপনি চায়না বা কোরিয়ান টাউনের কথা বলেছেন, হাঁ ঠিক সেরকমই ড্যানফোর্থ, যা বাংলা টাউন নামে পরিচিত। এখনো চায়না বা কোরিয়ান টাউনের মতো বড় না হলে ও পরিচয় দেয়ার মতো একটি জায়গাতো অামাদের আছে তাই নয় কি। কানাডার মূল ব্যবসার ৮০ ভাগই চায়নীজ বা কোরিয়ানদের। তাদের সমান হতে গেলে আমাদের আরো একশ বছর লাগবে। তারপরও বলবো পচাঁ মাছ, শুকনা পুই শাক বা বাংলা সংস্কৃতি এ ড্যানফোর্থ ধরে রেখেছে। টরন্টোর বাংলাদেশী ঘিঞ্চি বস্তি ড্যানফোর্থের টিসডেল, ক্রিসেন্ট টাউন, মেসি এলাকাগুলোর হাই রাইজ বিল্ডিংগুলোর কথা বলছেন..... হাঁ ওটা সত্যিকারের বাংলা এলাকা। এখানে বাটি চালান হয়, দেশে ফেলে আসা জীবন নিয়ে গল্প হয়, কুটনামী, গীবত, শাড়ি-গয়নার গল্প সবই হয়। তবে এখন বলুন দেশের কোথায় এসব নেই??? যে সংসারে সামান্য বাটি চালান দিয়ে যদি সংসার ভাংতে পারে সে সংসারতো নাই করা উচিত..... এমনই ঠুনকো আপনাদের সংসার!!!! আর শুনুন, ওই ভাবীরাই ধরে রেখেছে দেশের সংস্কৃতি, ধর্ম, আচার-আচরন কারন বাচ্চারা যখন দেখে তার ক্লাসের বান্ধবী ১৬ বছর বয়সে ডেট করছে তখন এ ভাবীদের কালচারই তা থেকে তাদের রক্ষার চেস্টা করে। তারা এ ধরনের বাটি চালান দেয় নিজস্ব কমিউনিটি তৈরী করতে। ইন্ডিয়ানদের হাইকমিশন বা বড় বড় চেলারা তাদের কালচার ধরে রাখতে প্রানপন চেস্টা করে আর আমাদের এ সামান্য বাটি চালান ভাবীরা তা করে যাচ্ছে দিনের পর দিন। মেইনস্ট্রিত বিল্ডিং এ ইন্ডিয়ানদের সাথে থেকে কাক ময়ুরের পাখা লাগালেই ময়ুর হওয়া যায় না।

৪. পলিটিক্স এবং সমিতি সমাচার:
হাঁ সত্য। হাজারটা সমিতি... বিএনপি, আওয়ামীলীগ.... দলাদলি.... এটা আমাদের মজ্জাগত। যারা করে তারা করুক তাতে সাধারন দেশীদেরতো কোন সমস্যা নেই। নাকি আপনিও ক্ষমতা চান!!!

৫. ল্যাঙ্গুয়েজ ব্যারিয়ার এবং কমিউনিকেশন: হাঁ ইংরেজী একটা বড় সমস্যা যার কারনে আমরা চাকরীর বাজারে মার খাচ্ছি তবে কানাডিয়ান ইংলিশ না হলে ও দেশে মানুষ চেষ্টা করে যাচ্ছে...... আমরা হয়তো পারবো না বাট আমাদের নেক্সট্ জেনারেশান পারবে .....আর কানাডিয়ান সরকার তাই চায়।

৬. পিএই ডি বনাম বর্ন-কামলা: ভালো উদাহরন দিয়েছেন.... দেশের দিকে তাকান কয়টা মন্ত্রী এমপি এসএসসি এর গন্ডী পেরিয়েছে আর তাদের আন্ডারে কত ডজন পিএইচডি চাকরী করে। শুধু কানাডায় করলেই শামসু মিঞার দোষ...!!!!!!!! যারা আগে আসবে তারা সে সুবিধা নিবেই আর রফিক সাহেব ও হয়তো ১০ বছর পর এ জায়গায় দাড়িঁয়ে যাবে....

শেষে একটা গল্প বলি... আমার একজন পরিচিত আপু কানাডায় আসার আগে নেটে পরিচিত এক কানাডিয়ান দেশি ভাইয়ের কাছ থেকে পরামর্শ নিত। তো সে ভাই একসময় সে আপুকে খুব ইনিয়ে বিনিয়ে দেখতে চাইলো, ভদ্রলোকের হয়তো ধারনা ছিল আপু খুব সুন্দরী অল্প বয়স্কা কেউ, তারপর তাকে হয়তো দেখে হতাশ হয়ে পরে তার কাছে টাকা ধার চাইলো!!!! আপু তার মোটিভ খুব ভালোভাবেই ধরতে পারলো.......... ''আয়নার সামনে কোনদিন দাঁড়িয়ে নিজের চেহারাটা একটু ভালো করে দেখেছেন? দেখেন প্লীজ, তাহলে আপনাদের নিজেদের চারিত্রিক ও মানসিক দৈন্যতা চোখে পড়লেও পড়তে পারে।''.......... আপনি ভালোতো জগত ভালো.... ভালো থাকুন।।।

১৩| ১৭ ই আগস্ট, ২০১৬ রাত ৯:১৯

কেএসরথি বলেছেন: বাটি চালান থিওরী পড়ে হাসব না কাদব, বুঝতেসি না =p~

১৮ ই আগস্ট, ২০১৬ ভোর ৬:৫৪

পয়গম্বর বলেছেন: কে এস রথি! অনেকদিন পর আপনার দেখা পেলাম! কেমন আছেন?

১৪| ১৩ ই জুলাই, ২০১৭ বিকাল ৪:৪৯

সালেহ উর রাহমান বলেছেন: আপনি বললেন, "টরন্টোতে স্বামী-স্ত্রী দু'জন মিলে ৪০ ঘন্টা করে কাজ করতে পারলে ভালো ইনকাম করা যায়। টরন্টোতে সুবিধা হলো, এখানে মানুষ একই সাথে ২-৩ জায়গায় অড জব/ জব করে। আমি এমন ব্যক্তিকেও চিনি যে সপ্তাহে ৭ দিন ৭ টি ভিন্ন রেস্টুরেন্টে কাজ করে। অবশ্য ডাউনটাউন টরন্টোতে অন্যান্য জায়গার থেকে কাজ পাবার সম্ভাবনা বেশি। এখানে একজন পিজা/ অন্যান্য খাবার ডেলিভারী ড্রাইভারের গড় আয় ৩০০০-৩৫০০ ডলার/মাস। ট্যাক্সি এবং উবার চালকদেরও ভালো ইনকাম টরন্টোতে"।
আমি জানতে চাই, কানাডা তে দুইজন পার টাইম জব করলে কি লিভিং কোসট মিটিএ কিছু সেভ করতে পারব? অইখানকার বাসা ভাড়া কত আর দুজন চলতে যাতায়াত ও খওয়া বাবদ কত খরচ হতে পারে? আনুমানিক? দয়া করে জানাবেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.