নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সত্যের সন্ধ্যানে সর্বদায় এগিয়ে

Md.Raihan sheikh

সাংবাদিক

Md.Raihan sheikh › বিস্তারিত পোস্টঃ

তরুণ সাংবাদিক রায়হান শেখ এর মতে এবার তরুণরা কেন অপরাধের ঝুকে

১৯ শে মে, ২০১৫ সকাল ১১:২৭


চাকরির বাজারের অবস্থা খুব অপরাধের ঝুকে তরুণরা।দেশের চাকরির বাজারের অবস্থা খুব খারাপ। কোথাও আশার আলো নেই। আমাদের দেশের সরকারগুলো মনভোলানো কথার বুলি ছেড়েই ক্ষান্ত। বেকারত্ব নিরসনে, কর্মক্ষম জনশক্তির জন্য কাজ সৃষ্টি বা সম্ভাবনাময় তরুণ সমাজকে কাজে লাগানোর কোনো সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা নেই। ব্যাপক ও বহুমুখি কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে দেশি-বিদেশী বিনিয়োগ খুবই অপ্রতুল। দেশীয় বিনিয়োগের মাধ্যমে কর্মবাজার সম্প্রসারণে সরকারগুলোর দূরদর্শী কোনো নীতিমালা নেই। এমনকি কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে রাজনৈতিক কোনো অঙ্গীকার নেই। এসব কারণে বেকার সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে সামাজিক অস্থিরতা ঠেকানোই বড় দায় হয়ে যাবে বলে অনেক বিশষজ্ঞদের ধারণা। বিভিন্ন গবেষণা থেকে দেখা গেছে যে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে বিশেষ করে শিল্পোৎপাদন ও কৃষিখাতে চাকরি সৃষ্টির তীব্রতা হ্রাস পাচ্ছে। প্রতিবছর ১৮ লাখ মানুষ নতুন জনশক্তি শ্রমবাজারে প্রবেশ করে। এর মধ্যে অধিকাংশই বেকার অথবা আংশিক বেকার থাকে।আন্তর্জাতিক শ্রমসংস্থা আইএলও-এর বৈশ্বিক কর্মসংস্থান প্রবণতা শীর্ষক সএক প্রতিবেদনে জানা গেছে, অর্থনৈতিক মন্দায় বিশ্বজুড়ে বেকারত্ব বাড়ছে। ফলে আগামী এক দশকে সরকারগুলোকে ৬০ কোটি নতুন চাকরির ক্ষেত্র সৃষ্টি করতে হবে। আইএলও-এর কর্মসংস্থান প্রতিবেদন প্রকাশের পর ঢাকায় ব্র্যাক সেন্টারে ‘বিশ্ব উন্নয়ন রিপোর্ট ২০১৩ : চাকরি’ শীর্ষক এক কর্মশালায় বক্তারা বলেন, তরুণরা চাহিদা মতো চাকরি না পেলে রাষ্ট্রে অস্থিরতা সৃুষ্টি হবে। মিশরসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে কর্মসংস্থান বিষয়ে বিক্ষোভ এবং অস্থিরতার প্রমান রয়েছে।আদমশুমারী ও গৃহগণনা অনুযায়ী, দেশে ১৫ থেকে ৫৯ বয়সী উপার্জনক্ষম মানুষ ৫৮ শতাংশ। জনশক্তি ও কর্মসংস্থান বিষয়ক তথ্য প্রতিবেদনে জানা গেছে- বাংলাদেশের বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর মোট জনশক্তির কমপক্ষে ২০ শতাংশ অল্পদক্ষ, যথার্থভাবে শিক্ষিত নয়। এক রির্পোটে জানা গেছে, কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে ৯৫ শতাংশ অবদান বেসরকারি খাতের। গত ১৫ বছরে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে সরকারের ভুমিকা ৪.৫ শতাংশ, বেসরকারি পর্যায়ে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে ৯৫.২ শতাংশ। বাকি ০.৩ শতাংশ কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে অলাভজনক খাতে। তারপরও আমাদের সরকারগুলোর দেশীয় শিল্প-বিকাশ নীতিতে কোনো উদারতা নেই। ভারতের সাহারার মতো কোম্পানীকে সর্বোত সুবিধা দিয়ে হাউজিং সমস্যা সমাধানে সরকারকে আগ্রহী ভুমিকায় দেখা গেছে। কিন্তু একই সুবিধা দিয়ে দেশের রিহাবভুক্ত হাউজিং কোম্পানীগুলোকে কাজ করার সুযোগ সৃষ্টিতে সরকারের উদারতা লক্ষ্য করা যায়না। দৈনিক আমাদের অর্থনীতির সম্পাদক ন্ঈামুল ইসলাম খান এক লেখায় উল্লেখ করেন, দেশের ব্যবসায়ীদের ডেকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী যদি দেশীয় বিনিয়োগে উৎসাহ দেন তাহলে ১০ বছরে পাল্টে যাবে দেশের চেহারা। আর ব্যবসায়ীদের অভিমত, দেশের ব্যবসায়ীদের সুযোগ দিলে ভারতের মতো দু-চারটা সাহারা গজিয়ে উঠা সময়ের ব্যাপার মাত্র।বেকারত্ব নিরসনে কর্মসংস্থান সৃষ্টির দায়িত্ব বর্তায় মূলত সরকারের ওপর। এ দায়িত্ব সরকার পালন করতে পারে বিভিন্ন উপায়ে Ñ ১. সরকারি চাকরি বা কাজ দিয়ে ২. কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করে ৩. বেসরকারি উদ্যোগী প্রতিষ্ঠানসমূহকে নির্দেশনা ও পৃষ্ঠপোষকতা প্রদানের মাধ্যমে বিনিয়োগের পরিবেশ সৃুষ্টি করে, ৪. বিদেশী বিনিয়োগ সৃষ্টির মাধ্যমে। সরকারের বিভিন্ন সেক্টরে কর্মকর্তা ও কর্মচারী মিলিয়ে সর্বমোট পদের সংখ্যা প্রায় ১১ লাখের মতো। এক হিসাবে দেখা গেছে, প্রতি বছর কর্মবাজারে প্রবেশ করে ৩০ লাখেরও বেশি শিক্ষিত তরুণ। সরকারি খাতে কর্মসংস্থান হয় তার একটি অংশ মাত্র। দেশে শিক্ষিত বেকারের সংখ্যাধিক্যের জন্য অনেকে দায়ী করেন দেশে বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থাকে। শিক্ষাবিদদের মতে, বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থার বদলে এমন শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করতে হবে, যে শিক্ষাব্যবস্থা উচ্চশিক্ষিত বেকার সৃষ্টি না করে, প্রয়োজনীয় কর্মক্ষম জনগোষ্ঠি তেরি করবে। তারা মূলত কারিগরী ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার কথাই ইঙ্গিত করেছেন।বিভিন্ন তথ্য প্রতিবেদনে দেখা গেছে, বিদ্যুৎ সমস্যা, গ্যাস সঙ্কট, কাঁচামালের মূল্য বৃদ্ধি, রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং চাদাবজির কারণে গত এক দশকে বন্ধ হয়েছে কয়েক হাজার কলকারখানা। সরকারি বেসরকারি পাটকল, চিনিকল, বস্ত্র কল এবং কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রি বন্ধ হয়েছে। এক তথ্যে দেখা গেছে, ৩শ ঢালাই কারখানা বন্ধ হওয়ার কারণে প্রায় ১ লাখ লোক কর্মসংস্থান হারিয়েছে। গত ১৫ বছরে আড়াই লাখ তাঁতি বাধ্য হয়ে পেশা ছেড়ে দিয়েছেন। তারউপর বার্ড ফ্লু সংক্রমনের কারণে দেশের লক্ষাধিক পোল্ট্রি শিল্পে নিয়োজিত কয়েক লাখ মানুষ কর্মহীন এবং পুঁজি ক্ষতিগ্রস্ত। দেশে আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে বেকারত্ব। অপরদিকে নতুন কর্মসংস্থানের ক্ষেত্র সৃষ্টি হচ্ছে না। ফলে দীর্ঘ হচ্ছে বেকার আর কর্মহীনের লাইন। শিক্ষাজীবন শেষ করে চাকরির অনিশ্চয়তা, অভিজ্ঞতার অজুহাত, নিয়োগে অনিয়ম, ঘুষ-দুর্নীতি, আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ সীমিত, বিদেশ গমন-শেয়ারবাজার অথবা ক্ষুদ্র বিনিয়োগে নিরাপত্তার অভাব গোটা কর্মবাজারকে অনিশ্চিত করে তুলেছে। ফলে বাড়ছে নানামুখি সামাজিক অপরাধ। তরুণ সমাজ কাজ না পেয়ে হতাশায় ডুবছে, জডিত হচ্ছে নানান অপকর্মে। মাদকতা, ইভটিজিং, হত্যা, খুন, ধর্ষণ, এসিড নিক্ষেপ, ছিনতাই, গুম ইত্যাদি অনৈতিক কাজে জড়িয়ে যাচ্ছে তরুণ সমাজ। এসব কারণে সামাজিক অস্থিরতা বাড়ছে।
বেকারত্ব নিরসনে দেশে এমন একটি অর্থনৈতিক অবস্থা সৃষ্টি করা দরকার যাতে উৎপাদনশীল খাতে, ক্ষুদ্র-মাঝারি এবং বৃহৎ বিনিয়োগ বৃদ্ধি পায়। শিল্প-কারখানা বৃদ্ধির ফলে কাজের সুযোগ বৃদ্ধি পাবে। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে কর্মমুখী শিক্ষাকে প্রাধান্য দেওয়া উচিত। নানা ধরনের প্রশিক্ষণের সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে, যাতে দক্ষ জনশক্তি গড়ে ওঠে। বেকারত্ব নিরসনে প্রয়োজন- ১. দেশের বেকার/কর্মহীন জনশক্তির সংখ্যা নির্ধারণ, ২. বেকার জনশক্তিকে শ্রেনীভুক্ত করণ- টেকনিক্যাল, নন-টেকনিক্যাল, দক্ষ, আধা দক্ষ, অদক্ষ, শ্রমিক শ্রেণী এসব ভাগে কারা কোন পেশায় কাজ করতে পারবে তার নির্দিষ্ট করণ, ৩. সরকারি কাজের ক্ষেত্রগুলো চিহ্নিত করণ, ৪. কোনো প্রতিষ্ঠান বন্ধ করার আগে সে প্রতিষ্ঠানে নিযুক্ত কর্মীদের বিকল্প কর্মসংস্থান ব্যবস্থা নিশ্চিত করণ, ৫. বেসরকারি উদ্যেক্তাদের ছোট বড় শিল্প প্রতিষ্ঠান খাতে বিনিয়োগে উৎসাহিত করণ, ৬. দেশের মানুষকে সাংগঠনিক ও সমবায়ী প্রক্রিয়ায় কাজ করতে উদ্ধুদ্ধ করণ, ৭. প্রত্যন্ত এলাকার মানুষ নিজেদের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পুঁজি একসাথে করে বৃহৎ পুঁজি গঠণের মাধ্যমে স্থানীয়ভাবে কৃষিভিত্তিক এবং উৎপাদনশীল শিল্প গড়ে তোলতে উদ্ধুদ্ধ করণ, ৮. শুধু চাকুরী নির্ভর না হয়ে যুবসমাজকে আত্ম-কর্মসংস্থানমূলক প্রকল্প স্থাপনে আকৃষ্ট করণ, ৯. প্রতিটি নিয়োগদাতা প্রতিষ্ঠানের অনভিজ্ঞ প্রবেশনারি লোক নিয়োগের কোটা নিশ্চিত করণ প্রভৃতি।আমাদের রয়েছে বিশাল সম্ভাবনাময় যুব সমাজ। যুব সমাজকে সঠিকভাবে প্রশিক্ষিত না করা গেলে সমাজে অস্থিরতা বাড়বেই। চাকরির বাজারে আসা বিপুল সংখ্যক শিক্ষিত তরুণ জনগোষ্ঠীকে চাকরির সংস্থান দিতে হলে গ্রামীণ এলাকায় উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করতে হবে। দেশের মোট বেকার যুব জনশক্তির সিংহভাগের বসবাস গ্রামাঞ্চলে।এক হিসাবে জানা যায়, দেশে বর্তমানে মাস্টার্স উত্তীর্ণ বেকার ১ লাখের বেশি, গ্রাজুয়েট ৫ লাখ, এইচএসসি পাশ ৭ লাখ, এসএসসি পাশ ১০ লাখ, ৮ম-১০ম শ্রেণী পাশ ৪০ লাখ এবং ৩য়-৫ম শ্যেণী পর্যন্ত স্কুল ত্যাগী ও বেকার প্রায় ২ কোটি। বাংলাদেশে নিরেট বেকারের সংখ্যা সরল হিসাবে প্রায় ৪ কোটি। ২০১৫ সালের মধ্যে ৫ থেকে ৬ কোটি লোক শ্রমবাজারে প্রবেশ করবে। বেকার সমস্যার এই কঠিন সঙ্কট নিরসনে আমাদের সুনির্দিষ্ট কোনো পরিকল্পনা নেই। কর্মসংস্থান যেকোনো দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সাথে জড়িত। এজন্য বহুমাত্রিক বিনিয়োগ দরকার। বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ বাড়ানো দরকার। আমাদের দেশে ইনফরমাল সেক্টরকে গুরুত্ব দেয়া হয়না। কিন্তু এই সেক্টরটিই সবচেয়ে বেশি কর্মসংস্থান সৃষ্টি করছে। অতএব বেকারত্ব নিরসনে ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টির কোনো বিকল্প নেই। তাই আমরা বেকার মুক্ত বাংলাদেশ চাই, নাকি শিক্ষিত বেকারে ভারাক্রান্ত দেশ চাই – এ বিষয়ে জাতীয় ঐক্যমত্য এখন সময়ের দাবী।ার কারনে আজ বেশির ভাগ তরুন অপরাধের ঝুকে পড়ছে। এ রকম হতে থাকলে আমদের দেশটা হবে অপরাধীর বাংলাশে।তাই বলি আসুন না এগিয়ে একটু তরুনদের ভাবিয়ে।দেশটাকে হতে না দিই অপরাধীর বাংলাশে।
লেখক: সাংবাদিক রায়হান শেখ
মোবাইল নং:০১৭৫০২৮১০৫৯

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.