নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন পরীক্ষার্থী...
কলমে রয়েছে যথেষ্ট কালি, কলমটা হাতের আঙ্গুলে আঙ্গুলে এদিক ওদিক ঘুরছে, কিন্তু কোনভাবেই লিখতে চাইছে না মন। বড্ড ভারী হয়ে আছে মন। ঝুড়িতে জমা হয়েছে দুমড়ানো মোছড়ানো অনেকগুলো কাগজ । পুনরায় লিখতে চাইলেই মনে হচ্ছে ফেলে দেয়া কাগজে কী যেন হারিয়ে গেছে ! প্রতিটা কাগজে যেন মনের একটা অংশ পড়ে যাচ্ছে! মন ধীরে ধীরে ক্ষীণ হয়ে আসছে। ঘুম হয় নি তবুও যেন গভীর এক স্বপ্ন দেখেছি । কলিং বেল বেজে উঠলো। কে আসলো এই অসময়, মাঝরাতে? দরজা খুলে দেখে একটা মেয়ে, খুব হাঁপাচ্ছে।
- ভাইজান আমার সোয়ামী এক্সিডেন্ট করেছে, এক্সিডেন্ট করছে আমার সোয়ামী... কাঁদতে কাঁদতে মেয়েটি চোখ ফুলিয়ে ফেলেছে, চেহারায় বড্ড বেশি অস্থিরতা ।
- একটু দাঁড়ান, আমি আসছি । খুব স্থির এবং শান্ত গলায় বললাম।
আমি ভেতরে গিয়ে শার্টটা পরে বের হতে গিয়ে মনে হলো ঝুড়িতে আরেকটা মোছড়ানো কাগজ জমা হয়েছে, হয়তো হয়নি । আমি ঝুড়ি থেকে চোখ ফিরিয়ে বের হলাম । মেয়েটা আমাকে নিয়ে গণ হাসপাতালের দিকে ছুটছে । হাসপাতালে গিয়ে আমি ভেতরে ঢুকে মেয়েটার স্বামীকে খুঁজতে লাগলাম। বুঝতে পারছি না হঠাত আমার কেন এতো অস্থিরতা ! মেয়েটা পেঁছন থেকে বললো, এখানে আমার সোয়ামী নাই, উনি মর্গে। টাকার জন্য হাসপাতালের লোকেরা তাকে ছাড়ছে না। আমি বলেছিলাম, আমার শরীরের বদলে আমার সোয়ামীর দেহটা আমাকে দেন, কিন্তু তারা নাক সিটকিয়ে টাকা আনতে বললো।
তখন প্রথম আমার চোখে পড়লো মেয়েটির অতি দারিদ্র্যতা । খুব অল্প কাপড়ে গুটিসুটি করে নিজেকে ডেকে রেখেছে। আমি টাকা পরিশোধ করে তার স্বামীর লাশটা ছাড়িয়ে দিলাম । সৎকারের যাবতীয় ব্যবস্থা করে বাসায় ফিরে আসলাম। আমি ফিরে আসার সময় অতি দারিদ্র্যতার পরিবেষ্টিত মেয়েটা আমার কাছে আর কিছুই চায় নি, যেন এটুকুই যথেষ্ট, যেন এটুকুই তার দুবেলা দুমুঠো খাবার, যেন এটুকুই তার গুজে থাকার ঘর, যেন এটুকুই যথেষ্ট কাপড় নিজেকে পুরো ঢেকে রাখতে।
সকালে সুস্মিতার ডাকে আমার ঘুম ভাঙ্গলো, আমি জেগে দেখি সুস্মিতা পাশে বসে আছে । আমি জিজ্ঞেস করলাম, আমি কী রাতে কোথাও গিয়েছিলাম ? সুস্মিতা বললো, তুমি আবারও সেই স্বপ্ন দেখেছো, কিন্তু স্বপ্নটা কী তুমি আজকেও আমাকে বলবে না, আমি নিশ্চিত।
আমি ঝুড়িটার দিকে তাকিয়ে আছি, ঝুড়ি থেকে মোছড়ানো একটি কাগজ বাইরে পড়ে আছে। আমি উঠে সেই কাগজটা হাতে নিয়ে খুলে দেখি আমার হাতে লেখা- তুমি মানুষ নও । বিপরীত দিক থেকে যেন কেউ আমাকে বলছে ।
২৩ শে জানুয়ারি, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:৫৫
কথাকথিকেথিকথন বলেছেন: হুম!
২| ১৮ ই জানুয়ারি, ২০২২ রাত ১১:৪৮
আহমেদ জী এস বলেছেন: কথাকথিকেথিকথন,
হুম.... অনেকদিন পরে দোমড়ানো- মোচড়ানো কাগজগুলি মেলে ধরলেন! সেখানে একটি গল্পের দেখা মিললো যে গল্প মানবতার স্পর্শ মাখানো। স্বপ্নেই এমনটা সম্ভব ( বাস্তবেও কি মাঝে মাঝে হয়না? ) যেখানে বিগত মানুষেরা তাদের ইচ্ছে পুরণের খেলায় মাতে!
২৩ শে জানুয়ারি, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:৫৭
কথাকথিকেথিকথন বলেছেন:
সুন্দর বলেছেন। বাস্তবেও হয় হয়তো তা আড়ালেই থেকে যায়।
৩| ১৯ শে জানুয়ারি, ২০২২ দুপুর ১:৫৮
নীল আকাশ বলেছেন: আসলেই বিগত দিনের মানুষ। আজকাল এত মানব দরদী লোকজন পাওয়া যায় নাকি?
ফ্রয়েড বলেছে মানুষের মনে অবদমিত ইচ্ছেরা স্বপ্নে ফিরে আসে।
ধন্যবাদ।
২৩ শে জানুয়ারি, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:৫৭
কথাকথিকেথিকথন বলেছেন:
ভালো বলেছেন।
©somewhere in net ltd.
১| ১৮ ই জানুয়ারি, ২০২২ রাত ১০:৫৯
শায়মা বলেছেন: হুম বিগত মানুষ।
বিগত মানুষেরাই অন্তরে লুকিয়ে থাকে।