![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
নিজের ওপর খুব অল্প বয়েস থেকেই বিভিন্ন ধরণের নিয়ন্ত্রণ আরোপ করে চলছি, বাঁধনহারা হবার বাসনা চিরকাল ছিল,আজো আছে, তবে আজকাল বেশ সাহস আর আত্মবিশ্বাস আছে মনে, বুঝে গেছি নিজেকে মেলে দিলেই ভালো, তাতে কার কী আসে আসে যায়, এটা ভাবার দরকার নেই, এখন তাই আমি এক উড়ন্ত, দুরন্ত পাখি নই-অভ্র, খুশিতে ভিজিয়ে দিতে, দুঃখে অশ্রু লুকোতে, আমি সত্যিই আজ দু্রন্ত, দুরন্ত অভ্র।
আজ দেশজুড়ে মহা উৎসাহে পালিত হয়েছে বসন্ত দিবস।
পহেলা ফাল্গুনে সবাই বেশ সাজুগুজু করে বার হয়েছে উৎসবে মিশে যেতে।
এই পর্বের এখানেই ইতি। চলুন এবার অন্য গল্পে যাই।
জ্বী, কানে তুলো গুজুন, চোখে টিনের চশমা পরে নিন। কারণ? জ্বী বলছি।
আগামিকাল (ফেব্রু ১৪) বিশ্ব ভালোবাসা দিবস!!
এই দিবসে প্রেমিক/প্রেমিকার (!?) জন্যে দামি গিফট উপহার দেয়া, সারাবেলা হাওয়ায় হাওয়ায় ঘুরে বেড়ানো ইত্যাদি সামাজিক এবং অসামাজিক কর্মকান্ডগুলো হাল ফ্যাশনের সূচক হয়ে দাঁড়িয়েছে।
পশ্চিমা বিশ্বের কারো উর্বর মস্তিষ্ক প্রসূত এই অতি বাণিজ্যিক চিন্তার সাথে আমাদের দেশের অসংখ্য তরুণের আলুর মত মিশে যাওয়া ইদানিং বেশ চমকপ্রদ।
এদেশে এসব আমদানি হবার আগে কেউ কাউকে ভালোবাসেনি, কিংবা, প্রকৃত ভালোবাসার মর্ম উপলব্ধি করতে পারেনি তেমন কোনো ইতিহাস পাওয়া যায় না।
বরং, সে কালের প্রেমগুলোর বাঁধন আজকের হাজার খানা প্রেমের মিলিত বাঁধনের চাইতে অধিক মজবুত ছিলো। কমিটমেন্ট ছিলো মনে রাখার মত।
কিন্তু, আজকের আমার মত অজস্র তরুনের বেহায়াপনায় দূষিত ছিলো না ওসব হৃদয়।
শিষ্টাচার ছিলো, ছিলো নিখাদ আবেগ। প্রত্যেকটা কথা, চিঠি কিংবা একটি লাল গোলাপে মিশে ছিলো গভীর ভালোবাসা। একে অন্যের প্রতি ছিলো তুলনাহীন সমর্পিত।
এবং, যখন, সব শেষে বিয়ের পর্ব আসতো, দেখা যেতো, খুব কৌশল করে সব ম্যানেজ করে বিয়ের আয়োজন করা হচ্ছে। অনেক সময় দুই পরিবারের কেউ জানতেই পারতো না যে, এটা রোমান্টিক বিয়ে।
আর, আজ, ছেলে মেয়ে তিন দিন পরেই রিলেশনশিপ স্ট্যাটাস পরিবর্তন করে, সপ্তাহ না ঘুরতেই বাসায় নিয়ে এসে পরিবারের সাথে আলাপ করিয়ে দেয়, আর মাস ঘুরতে না ঘুরতেই কক্টেইল পার্টি ছোঁড়ে ‘পটিয়ে’ বিছানায় নিয়ে যেতে পেরেছে সেই সাফল্য উদযাপনের।
এতকিছুর পরেও ঐ দুজনের বিয়ে হবে বা রিলেশন স্থায়ী হবে তার গ্যারান্টি বা ওয়ারেন্টি কোনোটাই নেই। বাসা বদল হলে, ইশকুল/কলেজ/ভার্সিটি বদল হলে, এমনকি স্যারের বাসার প্রাইভেট বদলালেও রিলেশনশিপ স্ট্যাটাসে থাকা প্রোফাইলের বদল ঘটে, এমনো আছে।
কলেজ, ভার্সিটি বা বিভিন্ন পর্যটন এলাকা হাত ধরে নির্লজ্জের মত ঘোরাঘুরি থেকে শুরু করে আরো অনেক রকম নোংরা এবং অশ্লীল কাজে পরিবেশ দূষিত করতে আজকাল জোড়ার কমতি পড়ে না।
ভ্যা. ডে-তে ফার্মেসি এবং আবাসিক বোর্ডিঙ্গের ব্যবসা তুঙ্গে থাকে। এসব নিয়ে কেউ কিছু বলতে গেলেই ক্ষ্যাত, ব্যাকডেটেড, অনাধুনিক, সংকীর্ণমনা ইত্যাদি নানা রকম কথা শুনতে হয়।
হালের হাওয়ায় গা ভাসিয়ে এসব কর্মকান্ডের পরিণতি যে কোন আস্তাকুঁড়েতে হবে, সেটা এসবে ডুবে মাতাল হয়ে যাওয়ারা নিজেও জানে না। এরা জীবনে সুখের দেখাও সহজে পায় না। কারণ, এদের বেশিরভাগই তো নিজের গার্লফ্রেন্ড/বয়ফ্রেন্ড কে বিয়ে করার সুযোগ পায় না বা করতে চায় না। অনেকে আবার প্রতিযোগীতা করে সম্পর্ক গড়ে তোলে বন্ধু মহলে সবচেয়ে ‘বেশি পটানো’ সফল প্রেমিক/প্রেমিকা হতে।
এসব জীবনে সুখ আসার সম্ভাবনা ক্ষীণ, সে আর না বললেও চলছে। বলার কথা যেসব অভিভাবকদের, তারা নিজেদের সন্তানের সীমাহীন স্বাধীনতার দোহাই দিয়ে এসব কার্যকলাপ নিয়ে কিছু বলতে নারাজ। সন্তান যখন আজীবন গুমরে কাঁদে, আর প্রায়শ্চিত্ত করার পথ খুঁজে খুঁজে দিশেহারা হয়ে আশ্রয় নেয় আরো ভয়ঙ্কর কোনো কিছুর, তখন আর আফসোসের মূল্য থাকে না। থাকে না ফিরে আসার কোনো পথ।
তখন, অপেক্ষা মৃত্যুর মাধ্যমে সব থেকে মুক্তি পাওয়ার।
এখন, পছন্দ আপনার, হাল ফ্যাশনে গা ভাসাবেন নাকি বাঁচবেন মানুষ হয়ে।
নিরাপদ ভালোবাসার শুভ কামনা।
©somewhere in net ltd.