নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মাদকাশক্তি ও সমাজ এবং আমাদের করণীয়

আমি শেষ কথা বলতে চাই সমাজ তুমি আগে ঠিক হও পরে আমি ঠিক হই।

শাম

আজকাল মানুষের মধ্যে সহ্য করার ক্ষমতা কমে গেছে । অতি অল্পে তারা বিক্ষিপ্ত হয়ে যায় । তাছাড়াও লোক দেখানো ভাব

শাম › বিস্তারিত পোস্টঃ

রবীন্দ্রনাথের গানের কলি- কৃষ্ণকলি আমি তারেই বলি

১৫ ই নভেম্বর, ২০১০ রাত ১:৫৪

কৃষ্ণকলি আমি তারেই বলি

কৃষ্ণকলি আমি তারেই বলি, কালো তারে বলে গাঁয়ের লোক।

মেঘলাদিনে দেখেছিলেম মাঠে কালো মেয়ের কালো হরিণ‐চোখ।

ঘোমটা মাথায় ছিলনা তার মোটে, মুক্তবেণী পিঠের’পরে লোটে।

কালো? তা সে যতই কালো হোক, দেখেছি তার কালো হরিণ‐চোখ।



ঘন মেঘে আঁধার হল দেখে ডাকতেছিল শ্যামল দুটি গাই,

শ্যামা মেয়ে ব্যস্ত ব্যাকুল পদে কুটির হতে ত্রস্ত এল তাই।

আকাশ‐পানে হানি যুগল ভুরু শুনলে বারেক মেঘের গুরুগুরু।

কালো? তা সে যতই কালো হোক, দেখেছি তার কালো হরিণ‐চোখ।



পূবে বাতাস এল হঠাৎ ধেয়ে, ধানের ক্ষেতে খেলিয়ে গেল ঢেউ।

আলের ধারে দাঁড়িয়েছিলেম একা, মাঠের মাঝে আর ছিল না কেউ।

আমার পানে দেখলে কিনা চেয়ে, আমি জানি আর জানে সেই মেয়ে।

কালো? তা সে যতই কালো হোক, দেখেছি তার কালো হরিণ‐চোখ।



এমনি করে কাজল কালো মেঘ জ্যৈষ্ঠমাসে আসে ঈশান কোণে।

এমনি করে কালো কোমল ছায়া আষাঢ়মাসে নামে তমাল‐বনে।

এমনি করে শ্রাবণ‐রজনীতে হঠাৎ খুশি ঘনিয়ে আসে চিতে।

কালো? তা সে যতই কালো হোক, দেখেছি তার কালো হরিণ‐চোখ।



কৃষ্ণকলি আমি তারেই বলি, আর যা বলে বলুক অন্য লোক।

দেখেছিলেম ময়নাপাড়ার মাঠে কালো মেয়ের কালো হরিণ‐চোখ।

মাথার পরে দেয়নি তুলে বাস, লজ্জা পাবার পায়নি অবকাশ।

কালো? তা সে যতই কালো হোক, দেখেছি তার কালো হরিণ‐চোখ।



আকাশভরা সূর্য-তারা

আকাশভরা সূর্য‐তারা, বিশ্বভরা প্রাণ,

তাহারি মাঝ্খানে আমি পেয়েছি মোর স্থান,

বিস্ময়ে তাই জাগে আমার গান॥

অসীম কালের যে হিল্লোলে জোয়ার‐ভাঁটায় ভুবন দোলে

নাড়ীতে মোর রক্তধারায় লেগেছে তার টান,

বিস্ময়ে তাই জাগে আমার গান॥

ঘাসে ঘাসে পা ফেলেছি বনের পথে যেতে,

ফুলের গন্ধে চমক লেগে উঠেছে মন মেতে,

ছড়িয়ে আছে আনন্দেরই দান,

বিস্ময়ে তাই জাগে আমার গান।

কান পেতেছি, চোখ মেলেছি, ধরার বুকে প্রাণ ঢেলেছি,

জানার মাঝে অজানারে করেছি সন্ধান,

বিস্ময়ে তাই জাগে আমার গান॥



বহু যুগের ও পার হতে

বহু যুগের ও পার হতে আষাঢ় এল আমার মনে,

কোন্ সে কবির ছন্দ বাজে ঝরো ঝরো বরিষনে॥

যে মিলনের মালাগুলি ধুলায় মিশে হল ধূলি

গন্ধ তারি ভেসে আসে আজি সজল সমীরণে॥

সে দিন এমনি মেঘের ঘটা রেবা নদির তীরে,

এমনি বারি ঝরেছিল শ্যামলশৈলশিরে।

মালবিকা অনিমিখে চেয়ে ছিল পথের দিকে,

সেই চাহনি এল ভেসে কালো মেঘের ছায়ার সনে॥



আজি তোমায় আবার

আজি তোমায় আবার চাই শুনাবারে

যে কথা শুনায়েছি বারে বারে॥

আমার পরানে আজি যে বাণী উঠিছে বাজি

অবিরাম বর্ষণধারে॥

কারণ শুধায়ো না, অর্থ নাহি তার,

সুরের সঙ্কেত জাগে পুঞ্জিত বেদনার।

স্বপ্নে যে বাণি মনে মনে ধ্বনিয়া উঠে ক্ষণে ক্ষণে

কানে কানে গুঞ্জরিব তাই

বাদলের অন্ধকারে॥



মনে রবে কি না রবে আমারে

মনে রবে কি না রবে আমারে সে আমার মনে নাই।

ক্ষণে ক্ষণে আসি তব দুয়ারে, অকারণে গান গাই॥

চলে যায় দিন, যতখন আছি পথে যেতে যদি আসি কাছাকাছি

তোমার মুখের চকিত সুখের হাসি দেখিতে যে চাই—

তাই অকারণে গান গাই॥

ফাগুনের ফুল যায় ঝরিয়া ফাগুনের অবসানে—

ক্ষণিকের মুঠি দেয় ভরিয়া, আর কিছু নাহি জানে।

ফুরাইবে দিন, আলো হবে ক্ষীণ, গান সারা হবে, থেমে যাবে বীন,

যতখন থাকি ভরে দিবে নাকি এ খেলারই ভেলাটাই—

তাই অকারণে গান গাই॥



মরণ রে তুঁহুঁ মম শ্যামসমান

মরণ রে, তুঁহুঁ মম শ্যামসমান।

মেঘবরণ তুঝ, মেঘজটাজূট,

রক্তকমলকর, রক্ত‐অধরপুট,

তাপবিমোচন করুণ কোর তব

মৃত্যু‐অমৃত করে দান॥

আকুল রাধা‐রিঝ অতি জরজর,

ঝরই নয়নদউ অনুখন ঝরঝর—

তুঁহুঁ মম মাধব, তুঁহুঁ মম দোসর,

তুঁহুঁ মম তাপ ঘুচাও।

মরণ, তু আও রে আও।



ভুজপাশে তব লহ সম্বোধয়ি,

আঁখিপাত মঝু দেহ তু রোধয়ি,

কোর‐উপর তুঝ রোদয়ি রোদয়ি

নীদ ভরব সব দেহ।



তুঁহুঁ নহি বিসরবি, তুঁহুঁ নহি ছোড়বি,

রাধাহৃদয় তু কবহুঁ ন তোড়বি,

হিয়‐হিয় রাখবি অনুদিন অনুখন—

অতুলন তোঁহার লেহ।



গগন সঘন অব, তিমিরমগন ভব,

তড়িতচকিত অতি, ঘোর মেঘরব,

শালতালতরু সভয়‐তবধ সব—

পন্থ বিজন অতি ঘোর।



একলি যাওব তুঝ অভিসারে,

তুঁহুঁ মম প্রিয়তম, কি ফল বিচারে—

ভয়বাধা সব অভয় মুরতি ধরি

পন্থ দেখায়ব মোর।



ভানু ভণে, ‘অয়ি, রাধা, ছিয়ে ছিয়ে

চঞ্চল চিত্ত তোহারি।

জীবনবল্লভ মরণ‐অধিক সো,

অব তুঁহুঁ দেখ বিচারি।’

সকরুণ বেণু বাজায়ে কে যায়

মন্তব্য ০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.